দিলীপ সরদেশাই

ভারতীয় ক্রিকেটার

দিলীপ নারায়ণ সরদেশাই (উচ্চারণ; মারাঠি: दिलीप सरदेसाई; জন্ম: ৮ আগস্ট, ১৯৪০ - মৃত্যু: ২ জুলাই, ২০০৭) তৎকালীন পর্তুগীজ ভারতের মারগাঁও এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ভারতীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। ভারত ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৬১ থেকে ১৯৭২ সময়কালে ভারতের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

দিলীপ সরদেশাই
১৯৬৭ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে দিলীপ সরদেশাই
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামদিলীপ নারায়ণ সরদেশাই
জন্ম(১৯৪০-০৮-০৮)৮ আগস্ট ১৯৪০
মারগাঁও, পর্তুগীজ ভারত
মৃত্যু২ জুলাই ২০০৭(2007-07-02) (বয়স ৬৬)
মুম্বাই, ভারত
ডাকনামসার্দি-সিং
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি
ভূমিকাব্যাটসম্যান
সম্পর্করাজদীপ সরদেশাই (পুত্র); সাগরিকা ঘোষ (পুত্রবঁধূ)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১০৩)
১ ডিসেম্বর ১৯৬১ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট২০ ডিসেম্বর ১৯৭২ বনাম ইংল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৬১ - ১৯৭৩বোম্বে
১৯৬১ - ১৯৬৫অ্যাসোসিয়েটেড সিমেন্ট কোম্পানি
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৩০ ১৭৯
রানের সংখ্যা ২,০০১ ১০,২৩০
ব্যাটিং গড় ৩৯.২৩ ৪১.৭৫
১০০/৫০ ৫/৯ ২৫/৫৬
সর্বোচ্চ রান ২১২ ২২২
বল করেছে ৫৯ ৭৯১
উইকেট
বোলিং গড় ৬৯.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ২/১৫
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৪/– ৮৫/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১২ নভেম্বর ২০১৯

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ভারতীয় ক্রিকেটে মুম্বই দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে বোলিং করতেন ‘সার্দি-সিং’ ডাকনামে পরিচিত দিলীপ সরদেশাই

শৈশবকাল সম্পাদনা

পর্তুগীজ ভারতের মারগাঁও এলাকায় দিলীপ সরদেশাইয়ের জন্ম। সেখানকার নিউ এরা হাইস্কুলে অধ্যয়ন করেছিলেন।[১] ১৯৫০-এর দশকের সূচনাকাল পর্যন্ত তার কিশোর বয়সে ঐ এলাকায় কোন ক্রিকেট উপযোগী পরিবেশ বিরাজমান ছিল না। ১৯৫৭ সালে তার পরিবারে বোম্বেতে চলে আসে। এ পর্যায়ে তার বয়স ছিল ১৭ বছর।[২] সেখানে তিনি উইলসন কলেজে ভর্তি হন। কোচ ম্যানিয়া নায়েকের সুনজরে পড়েন।[৩]

১৯৫৯-৬০ মৌসুমে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতা রুহিতন বাড়িয়া ট্রফিতে প্রথমবারের মতো উল্লেখযোগ্য সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। ৮৭ গড়ে ৪৩৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন তিনি।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯৬০-৬১ মৌসুম থেকে ১৯৭২-৭৩ মৌসুম পর্যন্ত দিলীপ সরদেশাইয়ের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। গোয়ায় জন্মগ্রহণকারী ভারত দলের একমাত্র খেলোয়াড় তিনি। প্রায়শঃই তাকে স্পিন বোলিংয়ের বিপক্ষে ভারতের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানরূপে চিত্রিত করা হয়ে থাকে। তবে, ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের স্বভাবসূলভ স্পিনের বিপক্ষেই অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতে দেখা যায়।[৪][৫]

১৯৬০-৬১ মৌসুমে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার লক্ষ্যে দল নির্বাচনকল্পে সম্মিলিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্যরূপে তাকে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ভারতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর সভাপতির দায়িত্বে নিয়োজিত লালা অমরনাথ তার ব্যাটিংয়ে বিমোহিত হন। সরদেশাইকে প্রথম একাদশে রাখা হয়। নভেম্বর, ১৯৬০ সালে পুনেতে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয় তার। খেলার একমাত্র ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৯৪ মিনিটে ৮৭ রানের মূল্যবান ইনিংস উপহার দেন। এছাড়াও, ফিল্ডিংয়ে নেমে হানিফ মোহাম্মদের ক্যাচ তালুবন্দী করেছিলেন তিনি।[৬] পরবর্তী খেলায় বোর্ড সভাপতি একাদশের সদস্যরূপে খেলেন। চতুর্থ টেস্টের পূর্বে একই দলের বিপক্ষে ২৬০ মিনিটে ১০৬ রানের অপরাজিত সেঞ্চুরি করেন।[২][৭] তৃতীয় উইকেটে বিজয় মেহরা’র সাথে ১৩৪ রান করেন।[৮]

১৯৬১ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত সর্বমোট ১৩ মৌসুম রঞ্জী ট্রফিতে বোম্বে দলের পক্ষে খেলেছেন তিনি।[৯] তন্মধ্যে ১০বার তার দল চূড়ান্ত খেলায় অংশ নেয়। এ পর্যায়ে কোনবারই পরাজয়ের সম্মুখীন হয়নি তার দল। ১৯৬৭ সালে চূড়ান্ত খেলায় রাজস্থানের বিপক্ষে ১৯৯ রান তুলেছিলেন তিনি। দুই বছর পর সেমি-ফাইনালে একই দলের বিপক্ষে কৈলাস গত্তানি তাকে মানকড়ীয় পন্থায় রান আউটের শিকারে পরিণত করেছিলেন। ১৯৭২-৭৩ মৌসুমে জনপ্রিয় রঞ্জী ট্রফির চূড়ান্ত খেলায় মাদ্রাজের বিপক্ষে সর্বশেষ প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন। খেলাটি তৃতীয় দিনের প্রথম বল পর্যন্ত মাঠে গড়িয়েছিল।[১০] তিনবার ঘরোয়া ক্রিকেটে মৌসুমে সহস্রাধিক প্রথম-শ্রেণীর রান সংগ্রহ করেছিলেন। তন্মধ্যে, ১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে খেলোয়াড়ী জীবনের সর্বোচ্চ ১,৪২৯ রান তুলেছিলেন। এ পর্যায়ে মঈন-উদ-দৌলা গোল্ড কাপ প্রতিযোগিতায় অ্যাসোসিয়েটেড সিমেন্ট কোম্পানির সদস্যরূপে ইন্ডিয়ান স্টারলেটসের বিপক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২২২ রান সংগ্রহ করেছিলেন।[১১]

১৯৬১-৬২ মৌসুমে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে খুব কমই সফলতার স্বাক্ষর রেখেছিলেন তিনি। তাসত্ত্বেও, বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলায় গুজরাতের বিপক্ষে ২৮১ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ত্রিশটি টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন দিলীপ সরদেশাই। ১ ডিসেম্বর, ১৯৬১ তারিখে কানপুরে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২০ ডিসেম্বর, ১৯৭২ তারিখে দিল্লিতে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৬১-৬২ মৌসুমে ইংল্যান্ড দল ভারত, পাকিস্তান ও সিলন সফরে আসে। ডিসেম্বর, ১৯৬১ সালে কানপুরের গ্রীন পার্ক স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে অংশ নেন। ঐ টেস্টে আক্রমণধর্মী স্ট্রোক খেলোয়াড়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন তিনি।[১২] উদ্বোধনী ইনিংসে ২৮ রান তুলেন। স্পিনার টনি লকের বলে থার্ড ম্যান অঞ্চল দিয়ে বাউন্ডারি মারার প্রাক্কালে লেট কাটের চেষ্টাকালে হিট আউটে পরিণত হন।[১৩] ঐ মৌসুমের শেষদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন করেন। পাঁচ টেস্টে নিয়ে গড়া ঐ সিরিজের তিন টেস্টে অংশ নেন। প্রস্তুতিমূলক খেলায় বার্বাডোসের বিপক্ষে অধিনায়ক নরি কন্ট্রাক্টরের সাথে ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমেছিলেন। ঐ খেলায় সরদেশাইয়ের আউটের পর চার্লি গ্রিফিথের বলে মাথায় গুরুতর আঘাত পান।[১৪] কন্ট্রাক্টরের আঘাতের ফলে সরদেশাইয়ের টেস্ট দলে খেলার সুযোগ পান। ব্রিজটাউনের কেনসিংটন ওভালে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে ৩১ ও ৬০ রান তুলেছিলেন। তবে, পরের খেলাতেই উভয় ইনিংসে শূন্য রানের সন্ধানে পান। ফলশ্রুতিতে, দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ টেস্টের সিরিজে ৪৪৯ রান করেন। তন্মধ্যে, পঞ্চম ও চূড়ান্ত টেস্টে ৭৯ ও ৮৭ রান করে ফলো-অনে নিপতিত অবস্থায় ভারত দলকে ড্রয়ের পথে নিয়ে যান।

১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে নিউজিল্যান্ড দল ভারত গমন করে। বোম্বের ব্রাবোর্ন স্টেডিয়ামে সফরকারীদের বিপক্ষে দ্বি-শতক হাঁকান। এরপর দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলা মাঠে বেশ দ্রুতলয়ে শতরানের ইনিংস খেলে দলের জয়ের ভিত রচনা করেন। তবে, তার এ অপরাজিত দ্বি-শতকের কল্যাণে ভারত দল জয়ের কাছাকাছি পর্যায়ে ছিল। ১৯৬৬-৬৭ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলেন। এরপর ১৯৬৭ সালে ইংল্যান্ড গমন করেন। কিন্তু লর্ডসে আঘাতের ফলে মাঠের বাইরে অবস্থান করতে হয় ও হেডিংলিতে প্রথম টেস্টে অংশগ্রহণ করা থেকে বঞ্চিত হন। সুস্থ হবার পর লর্ডসে অনুষ্ঠিত সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে খেলতে নামেন। কিন্তু আঙ্গুলে আঘাত পেলে এ সফরে আর কোন খেলায় অংশ নিতে পারেননি তিনি। ১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হন। কিন্তু এবারো আঘাতের কারণে দুই টেস্ট পর বাদ পড়েন। সামগ্রিকভাবে এ সফরটি তার জন্যে বেশ হতাশাব্যঞ্জক ছিল।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন সম্পাদনা

১৯৭০-৭১ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরকালেই তার খেলোয়াড়ী জীবনে ফিরে আসার কথা জানান দেয়। কিংস্টনের সাবিনা পার্কে সিরিজের প্রথম টেস্টে ভারতের সংগ্রহ ৭৫/৫ থাকাবস্থায় মাঠে নামেন। সরদেশাই ২১২ রান তুলে দলের সংগ্রহকে ৩৮৭ রানে নিয়ে যান। পোর্ট অব স্পেনের কুইন্স পার্ক ওভালে সিরিজের পরের টেস্টে ১১২ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে ভারতের প্রথম জয়ে নেতৃত্ব দেন। চতুর্থ টেস্টে ৭০/৬ অবস্থায় আবারও ১৫০ রানের ইনিংস খেলেন। এ সিরিজে ৬৪২ রান তুলে নতুন ভারতীয় রেকর্ড গড়েন। তবে, পাঁচদিন পরেই সুনীল গাভাস্কার রেকর্ডটি নিজের করে নেন।

এ সিরিজেই ভারতে দল প্রথমবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জয়ে সক্ষমতা দেখায়। দল নির্বাচকমণ্ডলীর সভাপতি বিজয় মার্চেন্ট সরদেশাইকে ভারতীয় ক্রিকেটের নবজাগরণকারীরূপে আখ্যায়িত করেন। ১৯৭১ সালে ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের মাধ্যমে আরও একটি সিরিজ জয় করে ভারত দল। এরপর আর একটি টেস্টে অংশে নেন। ১৯৭২-৭৩ মৌসুম শেষে অবসর গ্রহণ করেন।

খেলার ধরন সম্পাদনা

১৯৭০-৭১ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দিলীপ সরদেশাইকে সর্বশেষ সুযোগ প্রদান করা হয়েছিল। দলে অন্তর্ভুক্ত হয়ে নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে করেছিলেন তিনি। অবিস্মরণীয় ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শন করে ১৯৭১ সালে ভারতীয় ক্রিকেটে নবজাগরণকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। সঠিক ও খাঁটিমানের খেলোয়াড় হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন তিনি। স্পিনের বিপক্ষে খেলতেই অধিক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। কিন্তু, ওয়েস্ট ইন্ডিজে পেসের বিপক্ষে নিজেকে মেলে ধরতে সচেষ্ট হন। বারবার তিনি ভারত দলকে খেলায় ফিরিয়ে আনতে তৎপরতা দেখান।

ওভালে ৫৪ ও ৪০ রানের ইনিংস খেলে ভাগবত চন্দ্রশেখরের নেতৃত্বাধীন ভারত দলকে বিজয়ীর ভূমিকায় নিয়ে যান। সাধারণতঃ রক্ষণাত্মক ভঙ্গীমায় খেলতেন। তবে,দলের প্রয়োজনে আক্রমণাত্মক ঢংয়েও আত্মপ্রকাশ করতেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের অন্যতম দ্রুততম শতরানের ইনিংস খেলেন। কানপুরে ৭৯ রান করার পর ফলো-অনের কবলে থাকা ভারত দলে ৮৭ রান তুলে রক্ষা করেন।

অর্জনসমূহ সম্পাদনা

সার্দি-সিং নামে পরিচিত ছিলেন। ১৯৭০-৭১ মৌসুমে সফলতম সফরের প্রাক্কালে বিমানবন্দরে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি মন্তব্য করেন যে, আমি এখানে রান সংগ্রহ করতে এসেছি। আমি আরও কিছু সাথে করে নিয়ে যেতে চাই। ৮ আগস্ট, ২০১৮ তারিখে গুগল সার্চ ইঞ্জিনে সরদেশাইয়ের ৭৮তম জন্মদিনকে ঘিরে ডুডল প্রকাশ করে।[১৫][১৬]

২০০৯ সালে গোয়া সরকারের ক্রীড়া ও যুব সম্পর্কিত পরিচালক দিলীপ সরদেশাই ক্রীড়া দক্ষতা পুরস্কার প্রবর্তন করে। সাংবার্ষিকাকারে ২৯ আগস্ট তারিখে জাতীয় ক্রীড়া দিবসে এ পুরস্কার দেয়া হয়। পুরস্কারে সরদেশাইয়ের ব্রোঞ্জ নির্মিত প্রতিকৃতি, সনদ ও ২০০,০০০ রূপি দেয়া হয়।[১৭] পূর্ববর্তী বছরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যে-কোন প্রতিযোগিতায় গোয়ার ক্রীড়াবিদকে এ পুরস্কারের জন্যে মনোনীত করা হয়।[১৮]

পরিসংখ্যান সম্পাদনা

দ্বি-শতক
শতক

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। আনুমানিক ১৯৪৫ সালে নন্দিনী পন্তের সাথে পরিচিত হন।[১৯] পরীক্ষা সম্পন্ন হবার পর কোন এক ছুটির দিনে মুম্বইয়ের বেরি রেস্তোরাঁয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকাবস্থায় একত্রে সময়ে কাটান। পরবর্তীতে ১৯৬১-৬২ মৌসুমে ক্যারিবীয় সফরে উভয়ে যান। এর একবছর পর উভয়ে বৈবাহিক সূত্রে আবদ্ধ হন।[১৯][২০] নন্দিনী পন্ত সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে ৩৫ বছর কর্মরত ছিলেন ও পরবর্তীতে ২০১৫ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় চলচ্চিত্র সনদ সংস্থার সদস্যরূপে দায়িত্ব পালন করেন।[২১][২২]

সরদেশাইয়ের কাকাতো ভাই স্বপনদেব রাজপুতানা দলের সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে উইকেট-রক্ষণে অংশ নিতেন।[২৩][২৪] রাজদীপ নামীয় পুত্র ও দুই কন্যা সন্তানের জনক তিনি। তন্মধ্যে রাজদীপ টেলিভিশনে সাংবাদিকতা ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালে ক্রিকেটে ব্লুধারী হন।[২৫] সরদেশাইয়ের কন্যা সোনালী ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।[২৬]

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর মুম্বই ও গোয়ায় সমান সময় অতিবাহিত করতেন। জুন, ২০০৭ সালে বুকে গুরুতর ব্যথা অনুভব করলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এ পর্যায়ে তিনি কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন ও ডায়ালাইসিস করতে হয়। ২ জুলাই, ২০০৭ তারিখে ৬৭ বছর বয়সে মুম্বইয়ে দিলীপ সরদেশাইয়ের দেহাবসান ঘটে।[২৭][২৮] পরদিন রাজদীপ মুম্বইয়ের চন্দনদী শ্মশানে দাহ করেন।[২৯]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Pandya, Haresh (১৬ জুলাই ২০০৭)। "Obituary: Dilip Sardesai"The Guardian (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৮ 
  2. Menon, Suresh (২০১৫)। "Luck by Talent"। Wisden India Almanack 2015 (ইংরেজি ভাষায়)। Bloomsbury Publishing। আইএসবিএন 9789384898465। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৮ 
  3. Waingankar, Makarand (২২ মার্চ ২০১২)। "Dilip Sardesai: The renaissance man of Indian cricket"The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৮ 
  4. "Spin vs Pace:Graham Thorpe outlines on how to tackle spin"BBC। ৪ আগস্ট ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৫ আগস্ট ২০১৮ 
  5. "India Test batsman Sardesai dies"BBC। ২ জুলাই ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ৩ জুলাই ২০০৭ 
  6. "Indian Universities v Pakistanis, Pakistan in India 1960/61"CricketArchive। ১ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৮ 
  7. "Indian Board President's XI v Pakistanis, Pakistan in India 1960/61"CricketArchive। ১৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৮ 
  8. "Another Draw in Pakistan's Tour"। The Indian Express। ১০ জানুয়ারি ১৯৬১। পৃষ্ঠা 10। 
  9. "First-Class Matches Played by Dilip Sardesai (179)"CricketArchive। ২২ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৮ 
  10. Cricket archive
  11. "Moin-ud-Dowlah Gold Cup Tournament 1964/65 (Final)"। ৩ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৮ 
  12. "India Fields Strong Batting Side"। The Indian Express। ১ ডিসেম্বর ১৯৬১। পৃষ্ঠা 10। 
  13. "Umrigar Still at Crease with Century"। The Indian Express। ৩ ডিসেম্বর ১৯৬১। পৃষ্ঠা 8। 
  14. Williamson, Martin (৬ ডিসেম্বর ২০১৪)। "The bouncer that ended a career"ESPNcricinfo (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৮ 
  15. "Dilip Sardesai's 78th Birthday"Google (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৮ 
  16. "Google honours Dilip Sardesai with doodle"International Cricket Council। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৮ 
  17. "Clifford to receive Dilip Sardesai Award"O Heraldo। heraldgoa.in। ২৯ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ আগস্ট ২০১৮ 
  18. "Sports – DSYA"Government of Goa। ৩০ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ আগস্ট ২০১৮ 
  19. "How Dilip Sardesai wooed his future wife"Cricket Country (ইংরেজি ভাষায়)। ২৯ ডিসেম্বর ২০১৪। ৮ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৮ 
  20. Vaidya, Nishad Pai (৮ আগস্ট ২০১৫)। "Dilip Sardesai: 10 facts about India's Renaissance Man"Daily News and Analysis। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৮ 
  21. Sardesai, Nandini (২ জুলাই ২০১৭)। "Nandini Sardesai: Growing old without a companion"Mid Day (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৮ 
  22. "Nandini Sardesai"The Times of India। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৮ 
  23. Mukherjee, Abhishek (৮ আগস্ট ২০১৪)। "10 things you need to know about Dilip Sardesai"Cricket Country (ইংরেজি ভাষায়)। ১০ আগস্ট ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৮ 
  24. ক্রিকেটআর্কাইভে Sopan Sardesai (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
  25. Pratihary, Anupam (৮ ডিসেম্বর ২০১৭)। "Q&A: Dhoni is the hero of my 'Democracy's XI' - Rajdeep Sardesai"Reuters। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৮ 
  26. "Google Doodle remembers cricket legend Dilip Sardesai on his birthday"The Statesman। ৮ আগস্ট ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৮ 
  27. "Dilip Sardesai dies at 66"ESPNcricinfo (ইংরেজি ভাষায়)। ২ জুলাই ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৮ 
  28. "Dilip Sardesai passes away"Rediff.com। ২ জুলাই ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৮ 
  29. Karhadkar, Amol (৩ জুলাই ২০০৭)। "Tearful farewell to Sardesai"Hindustan Times (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৮ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা