জন হজেস

অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার

জন রবার্ট হজেস (ইংরেজি: John Hodges; জন্ম: ১১ আগস্ট, ১৮৫৫ - মৃত্যু: ১৭ জানুয়ারি, ১৯৩৩) লন্ডনের নাইটসব্রিজ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ বোলার ছিলেন। বামহাতে মিডিয়াম রাউন্ড আর্ম বোলিংয়ের পাশাপাশি নিচেরসারিতে বামহাতে ব্যাটিং করতেন জন হজেস

জন হজেস
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামজন রবার্ট হজেস
জন্ম(১৮৫৫-০৮-১১)১১ আগস্ট ১৮৫৫
নাইটসব্রিজ, লন্ডন, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১৭ জানুয়ারি ১৯৩৩(1933-01-17) (বয়স ৭৭)
মেলবোর্ন, ভিক্টোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনবামহাতি মিডিয়াম রাউন্ড আর্ম
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ )
১৫ মার্চ ১৮৭৭ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট৩১ মার্চ ১৮৭৭ বনাম ইংল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা
রানের সংখ্যা ১০ ৭৫
ব্যাটিং গড় ৩.৩৩ ১২.৫০
১০০/৫০ ০ / ০ ০ / ০
সর্বোচ্চ রান ২২
বল করেছে ১৩৬ ৪৫৭
উইকেট ১২
বোলিং গড় ১৪.০০ ১৬.৫০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ২/৭ ৩/১১
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ০ / ০ ১ / ০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৯ অক্টোবর ২০১৭

ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয় যে, ১৭ জানুয়ারি, ১৯৩৩ তারিখে ৭৭ বছর বয়সে আশ্রিত দেশ অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া প্রদেশের মেলবোর্নে জন হজেসের দেহাবসান ঘটে। তার মৃত্যুর বিষয়টি অদ্যাবধি অজ্ঞাত রয়ে গেছে। তবে তারিখের বিষয় সম্পর্কে ক্রীড়া ঐতিহাসিকগণ একমত পোষন করেছেন।

প্রারম্ভিক জীবন সম্পাদনা

বামহাতি ব্যাটসম্যান ও ফাস্ট মিডিয়াম, রাউন্ড আর্ম বোলার ছিলেন জন হজেস। ভিক্টোরিয়ার কলিংউড জেলার সুপরিচিত ক্যাপুলেটস ক্লাবের পক্ষে হজেস ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন। ক্লাব ক্রিকেটে কিছু দারুণ ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের অল্প কিছুকাল পরই ১৮৭৬-৭৭ মৌসুমে রিচমন্ড ক্রিকেট ক্লাবে যোগদান করেন। এরপর ভিক্টোরিয়া দলের সদস্য হন।

তার বোলিংয়ে পেস ও গতিশীলতা উভয়েরই সংমিশ্রণ ছিল। মাঝেমধ্যে বলকে তীক্ষ্ণভাবে সুইং করানোয় দক্ষতা প্রদর্শন করতেন। তবে এগুলোতে তিনি ধারাবাহিতা বজায় রাখতে পারেননি। পূর্বেকার চমৎকার সাফল্যগাঁথা অংশগ্রহণকৃত দুইটি প্রতিনিধিত্বমূলক খেলায় খুব কমই প্রয়োগ করতে পেরেছিলেন।

খেলোয়াড়ী জীবন সম্পাদনা

ক্ষণপ্রভা ও খেলোয়াড়ী জীবনের স্বল্পতার কারণে অন্যতম স্বল্প পরিচিত অস্ট্রেলীয় খেলোয়াড়ের মর্যাদা লাভ করেছেন। নিজ উপনিবেশের পক্ষে খেলার পূর্বেই টেস্ট খেলার অপ্রত্যাশিত অর্জন লাভ করেন।

শুধু তাই নয়, ১৮৭৭ সালে মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের প্রথম খেলার মাধ্যমে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে জন হজেসের।

ইতিহাসের প্রথম টেস্ট সম্পাদনা

তিনি খুবই খাঁটো প্রকৃতির বোলিং করেছিলেন। এরফলে বেশ কয়েকজন ইংরেজ ব্যাটসম্যান বলকে মাঠের বাইরে নিয়ে যেতে সক্ষমতা দেখিয়েছেন। বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত বোলার ফ্রাঙ্ক অ্যালান ওয়ার্নাম্বুল থেকে মেলবোর্নে এসে খেলতে অস্বীকৃতি জানালে ইতিহাসের উদ্বোধনী খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ ঘটে জন হজেসের।

ফ্রাঙ্ক অ্যালানের সময়ের অভাব থাকায় অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলার প্রথম বল বোলিং করার সৌভাগ্য হয়। তবে এ বলে তিনি উইকেট লাভ করতে পারেননি। সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে উল্লেখ করাহয় যে, আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তগ্রহণের ফসলস্বরূপ ইংরেজ ব্যাটসম্যান হেনরি জাপ। বল মোকাবেলা করা অবস্থায় বেইল স্থানচ্যুতি ঘটলেও স্কয়ার লেগ অঞ্চলে দণ্ডায়মান আম্পায়ার বেন টেরির নজর এড়িয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে জাপ আউট হওয়া থেকে রক্ষা পান।

হজেস তার প্রথম টেস্টে তিন উইকেট দখল করেন। তন্মধ্যে জন সেলবি দুইবার তার শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। তাস্বত্ত্বেও দুই সপ্তাহ পর অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্ট খেলার যোগ্যতা লাভ করেন।

দ্বিতীয় টেস্টে তিনি আরও তিন উইকেট পান। এবার অ্যান্ড্রু গ্রীনউড দুইবার তার শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। উভয় খেলায় তিনি মাত্র দশ রান সংগ্রহ করেছিলেন। দুইবার শূন্য রানে আউট হন। সর্বোচ্চ রান তুলেন আট।

অবসর সম্পাদনা

প্রতিনিধিত্বমূলক খেলায় অংশগ্রহণের নয় মাস পর ডিসেম্বর, ১৮৭৭ সালে ভিক্টোরিয়ার পক্ষে অভিষেক ঘটে তার।[১] পরের বছর ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বিতীয় ও সর্বশেষবার রাজ্য দলের পক্ষে খেলেন জন হজেস।

এরপর থেকেই তার খেলার মান ক্রমশঃ অবনতির দিকে যেতে থাকে। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে চলে আসার পর ক্যাপুলেট দলের পক্ষে খেলতে থাকেন।

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

হজেস পেশায় ব্যবসায়িক সূত্রে জুতা প্রস্তুতকারক ছিলেন। ফেব্রুয়ারি, ১৮৮৪ সালে রিচমন্ড আদালতে আসেন। তার বিরুদ্ধে অশালীন ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগ থেকে মুক্তিলাভের পর প্রতিবেশীদের প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।

ইতিহাসের উদ্বোধনী টেস্টের অন্যতম অংশগ্রহণকারী টম হোরান জানুয়ারি, ১৯১১ সালে হজেসের সাথে স্বাক্ষাতের সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরেন। তার ভাষ্যমতে খুব সম্ভবতঃ দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে চলে গেছেন হজেস।

তবে তার জীবন সম্পর্কে বিক্ষিপ্তভাবে জানা যায়। শুরুর দিককার ক্রিকেটার হওয়া স্বত্ত্বেও জীবনের অধিকাংশ সময়ই নিষ্ঠুর দারিদ্র্যতার মাঝে সময় কাটিয়েছেন তিনি।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

আরও দেখুন সম্পাদনা

আরও পড়ুন সম্পাদনা

  1. The Oxford Companion to Australian Cricket published by Oxford University Press (1996)
  2. Australian Cricket – The Game and the Players published by Hodder & Stoughton (1982)
  3. ABC Guide to Australian Test Cricketers published by Queen Anne Press (1994)

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা