চাঁপাইনবাবগঞ্জ

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের একটি শহর

চাঁপাইনবাবগঞ্জ হলো বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার একটি জেলা শহর। এ শহর মহানন্দা নদীর তীরে অবস্থিত এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাচাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার প্রশাসনিক সদর। এর মোট আয়তন ৩২.৯০ বর্গকিলোমিটার (১২.৭০ মা) এবং জনসংখ্যা ২,০১০,০০ জন।[] চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রচুর আম পাওয়া যায় এবং এখানে দেশের সবচেয়ে বড় আমের বাজার বসে বলে একে আমের শহর বলা হয়ে থাকে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়ক ও রেলপথে রাজশাহী এবং ঢাকাসহ বাংলাদেশের অন্যান্য শহরের সাথে সংযুক্ত।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ
নবাবগঞ্জ
শহর
মহানন্দা সেতু
ডাকনাম: আমের শহর
বিভাগরাজশাহী
জেলাচাঁপাইনবাবগঞ্জ
উপজেলাচাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর
সরকার
 • ধরনপৌরসভা
 • শাসকচাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা
আয়তন
 • মোট৩২.৯০ বর্গকিমি (১২.৭০ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০২২)
 • মোট২,০১,০০০
 • জনঘনত্ব৬,১০০/বর্গকিমি (১৬,০০০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলবাংলাদেশ সময় (ইউটিসি+৬)

ইতিহাস

সম্পাদনা

২০০১ সালের ১লা আগস্ট সরকারিভাবে নবাবগঞ্জের নাম পরিবর্তন করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ করা হয়। পূর্বে এই এলাকা নবাবগঞ্জ নামে পরিচিত ছিল। চাঁপাইনবাবগঞ্জ নামকরণ সম্পর্কে জানা যায়, প্রাক-ব্রিটিশ আমলে এ অঞ্চল ছিল মুর্শিদাবাদের নবাবদের বিহারভূমি এবং এর অবস্থান ছিল বর্তমান সদর উপজেলার দাউদপুর মৌজায়। নবাবরা (বিশেষ করে নবাব আলী বর্দি খানের নাম পাওয়া যায়) তাদের পাত্র-মিত্র ও পরিষদ নিয়ে এখানে শিকার করতে আসতেন বলে এ স্থানের নাম হয় নবাবগঞ্জ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ নামের ইতিবৃত্ত নবাব আমলে মহেশপুর গ্রামে চম্পাবতী মতান্তরে ‘চম্পারানী বা চম্পাবাঈ’ নামে এক সুন্দরী বাঈজী বাস করতেন। তার নৃত্যের খ্যাতি আশেপাশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং তিনি নবাবের প্রিয়পাত্রী হয়ে ওঠেন। তার নামানুসারে এই জায়গার নাম ‘চাঁপাই”। এ অঞ্চলে রাজা লখিন্দরের বাসভূমি ছিল। লখিন্দরের রাজধানীর নাম ছিল চম্পক। চম্পক নাম থেকেই চাঁপাই। ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর (১৮৮৫-১৯৬৯ খ্রি) বাংলা সাহিত্যের কথা গ্রন্থের প্রথম খণ্ডে বর্ণিত লাউসেনের শত্রুরা জামুতিনগর দিয়ে গৌড়ে প্রবেশ করে। বর্তমান ভোলাহাট উপজেলার জামবাড়িয়া পূর্বে জামুতিনগর নামে পরিচিত ছিল। এসবের ওপর ভিত্তি করে কোনো কোনো গবেষক চাঁপাইকে বেহুলার শ্বশুরবাড়ি চম্পকনগর বলে স্থির করেছেন এবং মত দিয়েছেন যে, চম্পক নাম থেকেই চাঁপাই নামের উৎপত্তি হয়েছে ।

রাজধানী ঢাকা থেকে ৩২০ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং রাজশাহী থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার পশ্চিম দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ অবস্থিত। এটি ২৪º২৫΄ উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২৪º৪৩΄ উত্তর অক্ষাংশ পর্যন্ত এবং ৮৮º০৫΄ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ থেকে ৮৮º২৬΄ দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। এর মোট আয়তন ৩২.৯০ বর্গকিলোমিটার।

জনসংখ্যা

সম্পাদনা

২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী চাঁপাইনবাবগঞ্জের মোট জনসংখ্যা ১৮০,৭৩১ জন।[] যার মধ্যে ৮৬,০১২ জন পুরুষ এবং ৯৪,৭১৯ জন মহিলা। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৫,৪৯৩ জন লোক বসবাস করে। নারী পুরুষের লিঙ্গ অনুপাত ৯৬ঃ১০০। এ শহরের মোট খানা রয়েছে ৩৯৪২২টি এবং সাক্ষরতার হার ৬০.৮% (৭ বছরের উর্দ্ধে)।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "23: Area, Household, Population and Literacy Rate of the Cities, 2011"। Population & Housing Census-2011 [আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১] (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। জাতীয় প্রতিবেদন (ইংরেজি ভাষায়)। ভলিউম ৩: Urban Area Rport, 2011। ঢাকা: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। মার্চ ২০১৪। পৃষ্ঠা XI। ১১ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  2. "4.1.24 Chapai Nawabganj"। Population & Housing Census-2011 [আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১] (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। জাতীয় প্রতিবেদন (ইংরেজি ভাষায়)। ভলিউম ৩: Urban Area Rport, 2011। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। মার্চ ২০১৪। পৃষ্ঠা ৭২,৭৩। ১১ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭