খালিয়াজুড়ি উপজেলা
খালিয়াজুড়ি উপজেলা বাংলাদেশের নেত্রকোণা জেলার একটি প্রশাসনিক এলাকা।
খালিয়াজুড়ি | |
---|---|
উপজেলা | |
![]() মানচিত্রে খালিয়াজুড়ি উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°৪২′০″ উত্তর ৯১°৭′৩০″ পূর্ব / ২৪.৭০০০০° উত্তর ৯১.১২৫০০° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | ময়মনসিংহ বিভাগ |
জেলা | নেত্রকোণা জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ২৯৭.৬৪ বর্গকিমি (১১৪.৯২ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[১] | |
• মোট | ৯৪,৬৬০ |
• জনঘনত্ব | ৩২০/বর্গকিমি (৮২০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৩৪.৫০% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৩০ ৭২ ৩৮ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট ![]() |
অবস্থান ও আয়তন
সম্পাদনা২৪°-৪১´ উত্তর অক্ষাংশ ও৯১°-০৪´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে খালিয়াজুরী উপজেলা । এই উপজেলার উত্তরে মোহনগঞ্জ উপজেলা ও সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলা, দক্ষিণে কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলা, পূর্বে সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলা, পশ্চিমে মদন উপজেলা।
প্রশাসনিক এলাকা
সম্পাদনাখালিয়াজুড়ি উপজেলায় বর্তমানে ৬টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম খালিয়াজুড়ি থানার আওতাধীন।[২]
ইতিহাস
সম্পাদনা১৮৯৬ খ্রীস্টাব্দে খালিয়াজুরী কেন্দুয়া থানার একটি ফাড়ি থানা স্থাপন করা হয়। ১৬ জুন ১৯০৬ খ্রীঃ খালিয়াজুরী পুনাঙ্গ থানায় রূপনেয়।
সপ্তম পর্যায়ে ১৯৮৩ সালে ২৮ ডিসেম্বর খালিয়াজুরীকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয়ে ছিল।
কথিত আছে খালিয়াজুরীতে এক সময় কামরূপের রাজধানী প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। চর্তুদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে জিতারী নামক জনৈক সন্ন্যাসী কর্তৃক অধিকৃত হলে এ অঞ্চল কমরূপের শাসনচ্যুত হয। পরবর্তীকালে খালিয়াজুরী পরগনা ভাটি অঞ্চলের অধীশ্বর ঈশাখার শাসনেছিল। এ ভাটি মহাল তৎকালে সরকার বাজুহা জলকর মহালের অর্ন্তগত ছিল। ঈশাখাঁর মৃত্যুর পর এ পরগনা তার পরিষদ মজলিশদের হস্তগত হয়েছিল। অষ্টাদশ শতাব্দীতে এ পরগনা মজলিশদের হাত থেকে হোমবংশীয়দের শাসনাধীন হয়ে পড়ে। ১৭৮৭ খ্রীস্টাব্দে ময়মনসিংহ জেলা বন্দোবস্তের সময় এ পরগনা রামশংকর চৌধুরী, জয় প্রসাদ চৌধুরী, অনুপ নারায়ণ চৌধুরী, মহনরায় চৌধুরী, মানিকরাম চৌধুরী, আবুওয়াল্লা চৌধুরী, মুহাম্মদ গহুর, মুহাম্মদ রুশন ও মুহম্মদ রঞ্জি এই কয়জন এ পরগনার মালিক ছিল।
১২০৪ বঙ্গাব্দে মালিকগন ঋণগস্থ হয়ে পরগনার আট আনা হিস্যা খাজে ওয়াসাল নামক এক আম্মানীর কাছে ৫০০১/- টাকায় বিক্রি করে দেয়। বাকী আট আনা খাজে ওয়াসীলের কাছেই ৯বছর মেয়াদে ইজারা পত্তন দেয়। ১২১৫ বঙ্গাব্দে মালিকগন এই আট আনা জমিদারী ধানকুড়ার রামকৃষ্ণ ও রাজকৃষ্ণ রামের কাছে বিক্রি করেদেয়। আম্মানী খাজে ওয়াসিলের মৃত্যুর পর তার দু’ কন্যা আট আনা জমিদারীর মালিক হয়। এই কন্যাদ্বয়ের এক কন্যা চার আনা অংশ করটিয়া জমিদার সায়াদত আলী খাঁ-র নিকট ২২০০০/- টাকায় বিক্রি করে। অন্য কন্যার অংশ রামকৃষ্ণ ও রাজকৃষ্ণ রায়ের উত্তরাধিকারী গিরিশ ও গোবিন্দ বাবুর কাছে ৩২০০০/- টাকায় বিক্রি করেদেয়। এভাবে ধানকুড়ার জমিদারগন খালিয়াজুরী পরগনার ১২ আনা ও কয়টিয়ার জমিদার চার আনা জমিদারীর মালিক ছিল।
জনসংখ্যার উপাত্ত
সম্পাদনামুসলমান, হিন্দু ও খ্রিস্টান এ তিন’ ধর্মের লোকের খালিয়াজুরী উপজেলায় বসবাস করে। মুসলমানরা সুন্নী সম্প্রদায়ের।হিন্দুদের নমঃদাস পদবীধারীর সংখ্যাই বেশি। উচ্চ বর্ণের হিন্দুর সংখ্যা কম। কথিত আছে মৈয়মনসিংহ গীতিকার মহুয়া গীতিনাট্যের নায়ক নদের চাঁদের বাড়ি খালিয়াজুরী ছিল।
শিক্ষা
সম্পাদনাখালিয়াজুরী উপজেলার শিক্ষার হার ৩৫.৬৮%। শিক্ষার হার কম।
অর্থনীতি
সম্পাদনানৌকা তৈরি এ অঞ্চলের অন্যতম দারু শিল্প। দারু শিল্পীরা শুধু নৌকাই তৈরি করেন না নৌকায় খোদাই করে কারু কাজও করেন। অনেক নৌকা ময়ুরের আকৃতি করে তৈরি হয়। অনেক নৌকা বিভিন্ন রং দিয়ে রঞ্জিত করা হয়। খালিয়াজুরীর প্রধান কৃষিপণ্য ধান। মাছধরা খালিয়াজুরী অঞ্চলের অন্যতম আয়ের উৎস। ১২,১২৮টি জেলে পরিবারের ৩৬,৩৫৪ জন মানুষ মাছ ধরার সঙ্গে সম্পৃক্ত। সমগ্র উপজেলায় ১২৪২টি সরকারী পুকুর ও ২৫টি জল মহাল রয়েছে। এ উপজেলার প্রতিবছর ২৪৬০ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়। স্থানীয় চাহিদা পুরনোর পর বাকী মাছ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে যায়।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
সম্পাদনা- উকিল মুন্সী – বাঙালী বাউল সাধক
- মোস্তাফা জব্বার – বাংলা কিবোর্ড বিজয় এবং বাংলা সফটওয়্যার বিজয়য়ের উদ্ভাবক
- মোহাম্মদ হাদিস উদ্দিন – সাবেক পুলিশ প্রধান ও রাষ্ট্রদূত
বিবিধ
সম্পাদনাখালিয়াজুরী উপজেলার বার্ষিক একমাত্র বিনোদন নৌকা বাইচ । বছরের শ্রাবণ মাসের শেষ দিনে মনষাপুজা উপলক্ষে সে নৌকা বাইচের আয়োজন হয়। সে নৌকা বাইচের দীর্ঘ বছর ধরে আয়োজন করে আসছে ইছাপুর ও খলাপাড়া গ্রামবাসী। নৌকা বাইচে পুরস্কারের ব্যবস্থা রয়েছে। যে সকল গ্রামের নৌকাবাইচের দল অংশ নেয় সে দলের পে সমগ্র গ্রাম বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করে। যেন সমস্ত গ্রামবাসীর মান- সম্মান সে প্রতিযোগিতার সঙ্গে জড়িত। সম্প্রতিকালে খালিয়াজুরীর নৌকাবাইচে মন্ত্রী, আমলারা অতিথি হিসেবে আসেন।
আরও দেখুন
সম্পাদনাগ্যালারি
সম্পাদনা-
খালিয়াজুড়ি উপজেলার প্রকাশ নাথ পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (১ জুন ২০১৪)। "এক নজরে খালিয়াজুরি"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৫।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "ইউনিয়নসমূহ - খালিয়াজুড়ি উপজেলা"। khaliajuri.netrokona.gov.bd। জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ২৮ নভেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ ডিসেম্বর ২০২০।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনাএই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |