কোশি প্রদেশ

নেপালের প্রদেশ
(কোশি প্রদেশের গভর্নর থেকে পুনর্নির্দেশিত)

কোশি প্রদেশ (নেপালি: कोशी प्रदेश; প্রস্তাবিত নাম: কোশী বা পূর্বাঞ্চল) নেপালের সাতটি প্রদেশের মধ্যে একটি। ২০১৫ সালের ২০ সেপ্টেম্বর দেশটির নতুন সংবিধান গৃহীত হবার মধ্য দিয়ে নেপালের পূর্বাঞ্চলীয় এ প্রদেশটি গঠিত হয়।[] প্রাদেশিক রাজধানী বিরাটনগর ছাড়াও প্রদেশটিতে দমক, ধরান, ইটহরী, ইনরুয়া ও বির্তামোডের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহর এবং এভারেস্ট পর্বত, কাঞ্চনজঙ্ঘা, আমা দবলম প্রভৃতি পর্বত রয়েছে। প্রদেশটির পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে নেপালের বৃহত্তম নদী – কোশী। এ প্রদেশ থেকে প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি সভার ২৮ জন এবং প্রাদেশিক সভার ৫৬ জন সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকেন।[]

কোশি প্রদেশ
कोशी प्रदेश
প্রদেশ
নেপালের মানচিত্রে প্রদেশ নং ১-এর অবস্থান
নেপালের মানচিত্রে প্রদেশ নং ১-এর অবস্থান
টেমপ্লেট:Province No. 1 districts labelled map
প্রদেশ নং ১
স্থানাঙ্ক: ২৬°২৭′১৫″ উত্তর ৮৭°১৬′৪৭″ পূর্ব / ২৬.৪৫৪১৭° উত্তর ৮৭.২৭৯৭২° পূর্ব / 26.45417; 87.27972
দেশ   নেপাল
গঠন২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫
রাজধানীবিরাটনগর[]
বৃহত্তম শহরবিরাটনগর
সরকার
 • শাসকপ্রদেশ নং ১-এর সরকার
 • গভর্নরপরশুরাম খাপুং
 • মুখ্যমন্ত্রীহিকমত কুমার করকি (সিপিএন ইউএমএল)
 • উচ্চ আদালতবিরাটনগর হাই কোর্ট
 • প্রাদেশিক পরিষদকোশি প্রাদেশিকসভা (৯৩ আসন বিশিষ্ট)
 • সংসদীয় আসন২৮ টি
আয়তন
 • মোট২৫,৯০৫ বর্গকিমি (১০,০০২ বর্গমাইল)
এলাকার ক্রম২য়
সর্বোচ্চ উচ্চতা৮,৮৪৮ মিটার (২৯,০২৯ ফুট)
সর্বনিন্ম উচ্চতা৭০ মিটার (২৩০ ফুট)
জনসংখ্যা (২০১১)
 • মোট৪৫,৩৪,৯৪৩
 • ক্রম৩য়
 • জনঘনত্ব১৮০/বর্গকিমি (৪৫০/বর্গমাইল)
 • ঘনত্বের ক্রম৪র্থ
বিশেষণপূর্বালী ও নেপালী
সময় অঞ্চলএনপিটি (ইউটিসি+৫:৪৫)
ভৌগোলিক কোডNP-ON
আনুষ্ঠানিক ভাষানেপালি (৪৩.০৭%)
অন্যান্য ভাষা
এইচডিআই০.৫৫৩ (মধ্যম)
সাক্ষর‍তা৭৩.৬৮%
লিঙ্গানুপাত৯১.৪৮ /১০০ (২০১১)
ওয়েবসাইটp1.gov.np

প্রদেশটির উত্তরে রয়েছে চীনের তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল, পূর্বে ভারতের সিকিমপশ্চিমবঙ্গ রাজ্য, দক্ষিণে বিহার আর পশ্চিমে রয়েছে নেপালের বাগমতী প্রদেশমধেশ প্রদেশ[][][] ২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী অঞ্চলটিতে প্রায় ৪.৫ মিলিয়ন মানুষ বাস করে এবং সেখানকার জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১৭৫.৬ জন।[]

ইতিহাস

সম্পাদনা
 
১৯৪২ সালে নেপালের পূর্বাঞ্চলীয় জেলাসমূহ

রানা রাজবংশের পতনের সময় নেপাল মোট ৩২ টি জেলায় বিভক্ত ছিল। এগুলোর মধ্যে পূর্ব নেপাল (বর্তমান কোশি প্রদেশ) এর অন্তর্ভুক্ত জেলাগুলো হচ্ছে:

১৯৫৬ সালে নেপালের পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলোকে নিয়ে একটি অঞ্চল গঠন করা হয়, যার নাম রাখা হয় অরুণ ক্ষেত্র। অরুণ ক্ষেত্র গঠিত হয়েছিল মোট পাঁচটি জেলার সমন্বয়ে। এর মোট আয়তন ছিল ৭,০০০ বর্গমাইল (১৮,০০০ কিমি) এবং জনসংখ্যা ছিল প্রায় ১১ লক্ষ।[] অরুণ ক্ষেত্রের অন্তর্ভুক্ত জেলাগুলো হলো:

  1. বিরাটনগর জেলা (সুনসরী, মোরঙ)
  2. ধনকুটা জেলা (ধনকুটা, সঙ্খুয়াসভা)
  3. তাপ্লেজুঙ জেলা (তাপ্লেজুঙ, পাঁচথর)
  4. মেচী জেলা (ইলাম, ঝাপা)
  5. ভোজপুর জেলা (ভোজপুর, খোটাঙ)

১৯৬২ সালে প্রশাসনিক ব্যবস্থা সংস্কার করে ক্ষেত্র প্রথা বিলুপ্ত করা হয় এবং সমগ্র নেপালকে ৭৫ টি জেলায় বিভক্ত করা হয়। কয়েকটি করে জেলা নিয়ে একেকটি অঞ্চল গঠিত হয়।[] ১৯৭২ সালে ৩টি অঞ্চল ও ১৬ টি জেলা নিয়ে পূর্বাঞ্চল বিকাস ক্ষেত্র গঠন করা হয়।

২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি মন্ত্রীসভার বৈঠকে বিরাটনগরকে প্রদেশ নং ১-এর অন্তর্বর্তীকালীন রাজধানী ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ৬ মে প্রাদেশিক পরিষদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য বিরাটনগরকেই রাজধানী হিসেবে বহাল রাখার পক্ষে ভোট দেন। ফলে বিরাটনগর স্থায়ীভাবে প্রদেশ নং ১-এর রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি পায়।[]

 
প্রদেশ নং ১-এর ভূ-সংস্থান

প্রদেশ নং-১ এর আয়তন ২৫,৯০৫ কিমি[] এটি তিনটি ভৌগোলিক অঞ্চলে বিভক্ত: উত্তরে হিমালয়, মাঝে পাহাড়ী অঞ্চল এবং দক্ষিণে তরাই অঞ্চল। পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত তরাই অঞ্চল মূলত পলি মাটি দ্বারা গঠিত। কোশী নদীর পশ্চিমে এবং মহাভারত পর্বতশ্রেণিশিবালিক পর্বতশ্রেণির মাঝে অবস্থিত উপত্যকাটি ভিতরি তরাই বা দাঙ উপত্যকা নামে পরিচিত। নিম্ন হিমালয় পর্বতশ্রেণীশিবালিক পর্বতশ্রেণি সহ বিভিন্ন উচ্চতার পাহাড়, উপত্যকা ও অববাহিকা নিয়ে পাহাড়ী অঞ্চল গঠিত হয়। এই অঞ্চলের কিছু অংশ কৃষি কাজের উপযোগী, আর বাকি অংশ অনুপযোগী। অন্যদিকে, উত্তরের বেশ কিছু পর্বতশ্রেণি নিয়ে গঠিত হয় হিমালয় অঞ্চল। এগুলোর মধ্যে মহালঙ্গুর, কুম্ভকর্ণ, উম্ভেক, লুম্বা সুম্বা, জনক ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। পৃথিবীর উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্ট (৮৮৪৮ মিটার) এবং ৩য় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কাঞ্চনজঙ্ঘা (৮৫৯৮ মিটার) এ প্রদেশেই অবস্থিত।

জলবায়ু

সম্পাদনা

প্রদেশ নং ১-এর বিভিন্ন অঞ্চলের জলবায়ুতে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। প্রদেশটি প্রধানত ৩টি ভৌগোলিক অঞ্চলে বিভক্ত: তরাইয়ের নিচু ভূমি, পাহাড়ি অঞ্চল এবং হিমালয়ের উঁচু ভূমি।

প্রদেশটির উত্তরাঞ্চলে গ্রীষ্মকাল অপেক্ষাকৃত শীতল এবং শীতকালে প্রচণ্ড শীত থাকে। আর দক্ষিণাঞ্চলে গ্রীষ্মকাল গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এবং শীতকাল শীতল হয়ে থাকে। জলবায়ুগতভাবে প্রদেশের দক্ষিণাঞ্চল, বিশেষত তারাইয়ে বেশ উষ্ণ এবং আর্দ্র জলবায়ু বিরাজ করে। নেপালের পূর্বাঞ্চলে বছরে প্রায় ২,৫০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। প্রদেশ নং ১-এ পাঁচটি ঋতু রয়েছে: বসন্ত, গ্রীষ্ম, মুনসুন, শরৎ এবং শীতকাল

প্রদেশ নং ১-এর কিছু নির্বাচিত অঞ্চলের গড় তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাত
স্থান আগস্ট জানুয়ারি বার্ষিক বৃষ্টিপাত (মিমি/ইঞ্চি) তথ্যসূত্র
(°ফা) (°সে) (°ফা) (°সে)
দমক ৯৪ / ৮২ ৩৪ / ২৮ ৭৪ / ৪৭ ২৩ / ৮ ২৬১৮ /১০৩.০৭ [১০]
ধরান ৮৫.১/৭২.৩ ২৯.৫/২২.৪ ৬৮.৪/৪৪.৪ ২০.২/৬.৯ ১৪১৬/৫৫.৭ [১১]
বিরাটনগর ৮৩.১ ২৮.৪ ৬০.৮ ১৬ ১৫৪৯.৮/৬১ [১২]
ভদ্রপুর ৮২.২ ২৭.৯ ৬১.২ ১৬.২ ২৩৫১.৯/৯২.৬ [১৩]
ধনকুটা ৭৬.৫ ২৪.৭ ৫৪.৫ ১২.৫ ১৮০৯.৫/৭১.২ [১৪]
খাঁদবারী ৭৪.৮ ২৩.৮ ৫২ ১১.১ ২০৪০.৭/৮০.৩ [১৫]
ইলাম ৭১.৮ ২২.১ ৫০.৯ ১০.৫ ২৫৫১.৫/১০০.৫ [১৬]
ভোজপুর ৬৯.১ ২০.৬ ৪৬.৮ ৮.২ ২২৯০.৪/৯০.২ [১৭]
খুম্বু পাসাংলামু ৫৬.১/৩৮.৩ ১৩.৪/৩.৫ ৩৩.৮/-০.৮ ১/-১৮.২ ৬৪৫/২৫.৪ [১০]
 
দক্ষিণ দিক থেকে এভারেস্ট এবং লোৎসে শৃঙ্গের দৃশ্য
 
নেপাল থেকে দৃশ্যমান কাঞ্চনজঙ্ঘার দক্ষিণ-পশ্চিম অংশ
পর্বত/শৃঙ্গ মিটার ফিট শাখা টীকা
এভারেস্ট পর্বত ৮,৮৪৮ ২৯,০২৯ খুম্বু মহালঙ্গুর   বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বত শৃঙ্গ
কাঞ্চনজঙ্ঘা ৮,৫৮৬ ২৮,১৬৯ উত্তর কাঞ্চনজঙ্ঘা   ৩য় উচ্চতম শৃঙ্গ
লোৎসে ৮,৫১৬ ২৭,৯৪০ এভারেস্ট গ্রুপ   ৪র্থ উচ্চতম শৃঙ্গ
মাকালু ৮,৪৬৩ ২৭,৭৬৬ মাকালু মহালঙ্গুর   ৫ম উচ্চতম শৃঙ্গ
চো ওইয়ু ৮,২০১ ২৬,৯০৬ খুম্বু মহালঙ্গুর   ৬ষ্ঠ উচ্চতম শৃঙ্গ
গ্যাচুঙ কাঙ ৭,৯৫২ ২৬,০৮৯ খুম্বু মহালঙ্গুর  
নুপচে ৭,৮৬১ ২৫,৭৯১ এভারেস্ট গ্রুপ  
কুম্ভকর্ণ পর্বত ৭,৭১১ ২৫,২৯৯ কুম্ভকর্ণ কাঞ্চনজঙ্ঘা  
কাব্রু ৭,৪১২ ২৪,৩১৮ সিঙ্গালিলা কাঞ্চনজঙ্ঘা  
কিরাত চুলী ৭,৩৬৫ ২৪,১৬৩ কাঞ্চনজঙ্ঘা  
নঙপাই ৭,৩৫০ ২৪,১১৪ খুম্বু মহালঙ্গুর  
চামলাঙ ৭,৩২১ ২৪,০১৯ বরুণ মহালঙ্গুর   বিশ্বে ৭৯ তম
পুমোরী ৭,১৬১ ২৩,৪৯৪ খুম্বু মহালঙ্গুর   প্রথম আরোহন করা হয় ১৯৬২ সালে
বরুণৎসে ৭,১২৯ ২৩,৩৮৯ বরুণ মহালঙ্গুর   প্রথম আরোহন করা হয় ১৯৫৪ সালে
আমা দব্লম ৬,৮১২ ২২,৩৪৯ বরুণ মহালঙ্গুর   "মা ও তার গলার হার"
কাঙতেগা ৬,৭৮২ ২২,২৫১ বরুণ মহালঙ্গুর   প্রথম আরোহন করা হয় ১৯৬৩ সালে
চো পোলু ৬,৭৩৫ ২২,০৯৬ বরুণ মহালঙ্গুর   প্রথম আরোহন করা হয় ১৯৯৯ সালে
লিঙট্রেন ৬,৭১৪ ২২,০২৮ খুম্বু মহালঙ্গুর   প্রথম আরোহন করা হয় ১৯৩৫ সালে
নুম রি ৬,৬৭৭ ২১,৯০৬ বরুণ মহালঙ্গুর   প্রথম আরোহন করা হয় ২০০২ সালে
খুম্বুৎসে ৬,৬৪০ ২১,৭৮৫ খুম্বু মহালঙ্গুর   এভারেস্টের পশ্চিমে প্রথম পর্বত
থমসের্কু ৬,৬২৩ ২১,৭২৯ বরুণ মহালঙ্গুর   প্রথম আরোহন করা হয় ১৯৬৪ সালে
পাঙবোচে ৬,৬২০ ২১,৭১৯ কুটাং হিমাল  
তাবোচে ৬,৫৪২ ২১,৪৬৩ খুম্বু মহালঙ্গুর   প্রথম আরোহন করা হয় ১৯৭৪ সালে
মেরা শৃঙ্গ ৬,৪৭৬ ২১,২৪৭ হিমালয়  
চোলাৎসে ৬,৪৪০ ২১,১২৯ খুম্বু মহালঙ্গুর   তাবোচের সাথে সংযুক্ত
কুসুম কাঙ্গুরু ৬,৩৬৭ ২০,৮৮৯ বরুণ মহালঙ্গুর  
অম্বিগোইচান ৬,৩৪০ ২০,৮০১ বরুণ মহালঙ্গুর  
কঙদে রি ৬,১৮৭ ২০,২৯৯ বরুণ মহালঙ্গুর  
ইমজা ছে ৬,১৬০ ২০,২১০ খুম্বু মহালঙ্গুর   আইল্যান্ড পিক নামে পরিচিত
লোবুচে ৬,১৪৫ ২০,১৬১ খুম্বু মহালঙ্গুর  
নিরেখা ৬,০৬৯ ১৯,৯১১ খুম্বু মহালঙ্গুর  
পোকালদে ৫,৮০৬ ১৯,০৪৯ খুম্বু মহালঙ্গুর  
খুম্বিলা পর্বত ৫,৭৬১ ১৮,৯০১ মহালঙ্গুর   অজেয়
কালা পাথর ৫,৫৪৫ ১৮,১৯২ খুম্বু মাহ  
গোকিও রি ৫,৩৫৭ ১৭,৫৭৫ হিমালয়  
মেরা শৃঙ্গ হতে দক্ষিণ দিকের দৃশ্য

এ অঞ্চলে বেশ কিছু নদী রয়েছে। এগুলো হিমালয় থেকে উৎপন্ন হয় এবং দক্ষিণ অভিমুখে বয়ে চলে। কোশী নদী হচ্ছে এ অঞ্চলের প্রধান নদী। সাতটি উপনদী মিলিত হয়ে কোশী নদী গঠন করে বলে একে সপ্তকোশীও বলা হয়। প্রদেশ নং ১-এর প্রধান নদীগুলো হল:

সংরক্ষিত বনাঞ্চল

সম্পাদনা

প্রশাসনিক বিভাগ

সম্পাদনা

প্রদেশটিতে মোট ১৩৭টি স্থানীয় প্রশাসনিক একক রয়েছে। এর মধ্যে একটি মহানগরী, ২টি উপ-মহানগরী, ৪৬টি পৌর এলাকা এবং ৪৪টি গ্রামীণ এলাকা (গাঁওপালিকা) বিদ্যমান।

প্রদেশ নং ১ মোট ১৪টি জেলা নিয়ে গঠিত। এগুলো হলো:

প্রশাসন

সম্পাদনা

প্রদেশ নং ১-এর প্রাদেশিক পরিষদ – প্রদেশ সভায় মোট ৯৩টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে ৫৬ জন প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে এবং বাকি ৩৭ জন আনুপাতিক হারে নির্বাচিত হন। নেপালের প্রথম প্রাদেশিক নির্বাচন ২০১৭ সালের ২৬ নভেম্বর ও ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

প্রদেশ সভা

সম্পাদনা

২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি প্রদেশ সভার প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ওম প্রকাশ সরবাগী।[১৮] সে বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি প্রদীপ কুমার ভান্ডারী স্পিকার পদে[১৯] এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি সরস্বতী পোখরেল ডেপুটি স্পিকার পদে[২০] বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

 
রাজনৈতিক দল প্রত্যক্ষ আনুপাতিক মোট
নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি ৪৬ ২০ ৬৬
নেপালি কংগ্রেস ১৩ ২১
সঙ্ঘীয় সমাজবাদী ফোরাম, নেপাল
রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি
সঙ্ঘীয় লোকতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় মঞ্চ
স্বতন্ত্র -
মোট ৫৬ ৩৭ ৯৩
সূত্র: নেপালের নির্বাচন কমিশন ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১০ নভেম্বর ২০২২ তারিখে

যোগাযোগ ব্যবস্থা

সম্পাদনা

সড়ক পথ

সম্পাদনা

প্রদেশ নং ১-এর প্রায় সব জেলাই সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় সংযুক্ত। তবে, উঁচু এলাকাগুলোর কিছু কিছু রাস্তা এখনো পাঁকা করা হয়নি। বর্ষাকালে এই রাস্তাগুলোর পরিস্থিতি বেশ খারাপ হয়ে যায়। ঝাপা, মোরঙ প্রভৃতি তরাই অঞ্চলের তুলনায় পার্বত্য অঞ্চলগুলোতে যান চলাচল অনেকটাই কম। প্রদেশ নং ১-এর প্রধান মহাসড়কগুলো হল:

আকাশ পথ

সম্পাদনা
 
লুকলার তেনজিং-হিলারী বিমানবন্দর
ফরবেশগঞ্জ-বিরাটনগর
ফরবেশগঞ্জ
বাথনহা


যোগবনী
ইন্দো-নেপাল সীমান্ত
বুদ্ধনগর
বিরাটনগর

এ অঞ্চলে অনেকগুলো অভ্যন্তরীণ বিমান পরিবহন সেবা ও বিমানবন্দর রয়েছে। এগুলো হল:

  1. ভোজপুর বিমানবন্দর, ভোজপুর
  2. বিরাটনগর বিমানবন্দর, বিরাটনগর
  3. কাংগেল ডাঁডা বিমানবন্দর, কাংগেল, সোলুখুম্বু
  4. মন মায়া বিমানবন্দর, খোটাঙ
  5. থামখর্ক বিমানবন্দর, খোটাঙ বাজার
  6. লামিডাঁডা বিমানবন্দর, লামিডাঁডা, খোটাঙ
  7. তেনজিং-হিলারী বিমানবন্দর, লুকলা, সোলুখুম্বু
  8. ফাপ্লু বিমানবন্দর, ফাপ্লু, সোলুখুম্বু
  9. রুমজাটার বিমানবন্দর, রুমজাটার, ওখলঢুঙ্গা জেলা
  10. স্যাঙবোচে বিমানবন্দর, স্যাঙবোচে, সোলুখুম্বু
  11. তাপ্লেজুঙ বিমানবন্দর, তাপ্লেজুঙ, সঙ্খুয়াসভা জেলা
  12. তুমলিঙ্গটার বিমানবন্দর, তুমলিঙ্গটার, সঙ্খুয়াসভা জেলা
  13. ভদ্রপুর বিমানবন্দর, ভদ্রপুর, ঝাপা
  14. ধরান বিমানবন্দর (প্রস্তাবিত)

ভারতীয় রেল নেপালে ১৩ কিলোমিটার রেল লাইন স্থাপন করেছে, যা বাথনাহা রেলওয়ে স্টেশনের সাথে সংযুক্ত। বাথনাহা হচ্ছে ভারতের বিহার রাজ্যের আরারিয়া জেলার একটি গ্রাম। বুধানগর হল নেপালের ফরবেশগঞ্জ–বিরাটনগর অঞ্চলের প্রথম রেল স্টেশন, যা বাথনাহা রেল স্টেশন থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। বিরাটনগরকেও এ পথে যুক্ত করার জন্য রেলপথটি সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।[২১][২২]

জনসংখ্যা

সম্পাদনা

প্রদেশ নং ১-এ ধর্ম বিশ্বাস

  হিন্দু ধর্ম (৬৬.৬৩%)
  ইসলাম (৩.৫৯%)
  অন্যান্য ধর্মাবলম্বী বা ধার্মীক নয় (০.৩৯%)

নেপালের ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী প্রদেশ নং ১-এর মোট জনসংখ্যা ৪৫,৪৩,৯৪৩ জন। এর মধ্যে ৫২% (অর্থাৎ, ২৩,৬৮,৪০৭ জন) নারী।[২৩] প্রদেশটিতে মোট ৯,৯২,৪৪৫টি পরিবার আছে।[২৪]

প্রদেশ নং ১-এর অধিকাংশ অধিবাসী হিন্দু ধর্মাবলম্বী। প্রদেশটির মোট জনসংখ্যার ৬৭% হিন্দু, ১৭% কিরাটি, ৯% বৌদ্ধ, ৪% মুসলিম এবং ১% অন্যান্য ধর্মের অনুসারী।

নেপালি ভাষা প্রদেশটির লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা এবং সংখ্যা গরিষ্ঠ মানুষের মুখের ভাষা। প্রদেশটির প্রায় ৪৩% মানুষ এ ভাষায় কথা বলে। মৈথিলি ভাষায় কথা বলে ১১% অধিবাসী। অন্যান্য ভাষার মধ্যে লিম্বু, তামাং এবং থারু প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

জাতিসত্তা

সম্পাদনা

এই প্রদেশের বৃহত্তম নৃগোষ্ঠী হল ছেত্রী। প্রদেশের মোট জনসংখ্যার ১৫% লোক এ গোষ্ঠীর অন্তর্গত। বাকি জাতিগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: বাহুন (১২%), রায় (১১%), লিম্বু (৮%) এবং তামাং (৫%)। বাকি ১৬% অন্যান্য জাতিভুক্ত।

শিক্ষা

সম্পাদনা

প্রদেশটির ৭১.২২% মানুষ শিক্ষিত (অর্থাৎ, লিখতে ও পড়তে সক্ষম)।[২৫]

আরো দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "प्रदेश १ राजधानी: विराटनगरको पक्षमा दुईतिहाई, नाम टुंगो लागेन" [Province No. 1 Capital: Two third of MLA voated in faviour of Biratnagar]। annapurnapost.com (নেপালী ভাষায়)। Annapurna Post। ৬ মে ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ৭ মে ২০১৯ 
  2. "Nepal Provinces"। statoids.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৬-০৩-২১ 
  3. "EDITORIAL: Important step"। The Himalayan Times। ১ সেপ্টেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
  4. "Biratnagar celebrates its status of provincial capital"thehimalayantimes.com। ১৯ জানুয়ারি ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০১৮ 
  5. "Locals intensify protest in Dhankuta after Biratnagar named as provincial HQ"kathmandupost.ekantipur.com। ১৯ জানুয়ারি ২০১৮। ১৮ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০১৮ 
  6. "Nepal government announces Provincial Capitals and Chiefs"ddinews.gov.in। ১৭ জানুয়ারি ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০১৮ 
  7. "Province 1: Call for opportunities in land of great promise"। Kantipur Publications Pvt. Ltd.। ১২ আগস্ট ২০১৫। ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ 
  8. नेपालको जिल्ला प्रशासन पुनर्गठनको रिपोर्ट, २०१३ (পিডিএফ) (নেপালী ভাষায়)। নেপাল: নেপাল সরকার। পৃষ্ঠা ৩১, ৩২, ৩৩। ২৪ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুলাই ২০২০ 
  9. "Memorial Step of King Mahendra in 1st Poush 2017 BS"reviewnepal.com। ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ 
  10. "Nepal Travel Weather Averages (Weatherbase)"Weatherbase। ২০২০-০৯-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২৮ 
  11. "Nepal Travel Weather Averages (Dharan)"Weatherbase। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২৮ 
  12. "Nepal Travel Weather Averages (Biratnagar)"Weatherbase। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২৮ 
  13. "Nepal Travel Weather Averages (Bhadrapur)"Weatherbase। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২৮ 
  14. "Nepal Travel Weather Averages (Dhankuta)"Weatherbase। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২৮ 
  15. "Nepal Travel Weather Averages (Khandbari)"Weatherbase। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২৮ 
  16. "Nepal Travel Weather Averages (Ilam)"Weatherbase। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২৮ 
  17. "Nepal Travel Weather Averages (Bhojpur)"Weatherbase। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৪-২৮ 
  18. "First Province Assembly meeting of Province 1 today" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৪-০১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-২৩ 
  19. "Pradeep Bhandari named Province 1 speaker" (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৮-০৩-২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৩-২৩ 
  20. "Province 1 endorses Saraswoti Pokhrel's candidacy for deputy speaker"Kathmandu Tribune। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮। ১ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মার্চ ২০১৮ 
  21. "Indian locomotive arrives in Biratnagar for test run"KMG। ৪ নভেম্বর ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ 
  22. "Railway Transit for Cargo Bound for Biratnagar, Nepal via Jogbani, India"সাসেক। ২৫ এপ্রিল ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ 
  23. "Province No. 1 Demographics"। ২৫ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০২০ 
  24. "Distribution of Household and Population by Sex for Province and Type of Local Unit" (পিডিএফ)। Central Bureau of Statistics (Nepal)। ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০২০ 
  25. "Province-Wise Literacy Rate of 5 Years and Above Population in 2011 AD" (পিডিএফ)। ৩০ জুন ২০১৮। ১১ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০২০