ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাসমূহ
ইন্দো-ইউরোপীয় বা হিন্দ-ইউরোপীয় ভাষাসমূহ (ইংরেজি: Indo-European languages) হল পশ্চিম ও দক্ষিণ ইউরেশিয়ার স্থানীয় একটি ভাষা পরিবার। এটি উত্তর ভারতীয় উপমহাদেশ এবং ইরানীয় মালভূমির ভাষাসমূহের সাথে অধিকাংশ ইউরোপের ভাষাসমূহ নিয়ে গঠিত। এই পরিবারের কিছু ইউরোপীয় ভাষা যেমন, ইংরেজি, ফরাসি, পর্তুগিজ, রুশ, ডেনীয়, ওলন্দাজ ও স্পেনীয় ভাষাসমূহের আধুনিক যুগে উপনিবেশবাদের দরুণ বিস্তার ঘটেছে এবং বর্তমানে অনেক দেশে এই ভাষাগুলোতে কথা বলা হয়ে থাকে। ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাপরিবারটিকে বিভিন্ন শাখা বা উপ-পরিবারে বিভক্ত করা হয়, যেগুলোর মধ্যে আটটি শাখা এখনও বিদ্যমান, যথা: আলবেনীয়, আর্মেনীয়, বাল্টো-স্লাভীয়, কেল্টীয়, জার্মানীয়, হেলেনীয়, ইন্দো-ইরানীয় এবং ইতালীয়; এবং বাকি ছয়টি শাখা বর্তমানে বিলুপ্ত।
| |
---|---|
ভৌগোলিক বিস্তার | প্রাক্-ঔপনিবেশিক যুগ: ইউরেশিয়া, এবং উত্তর আফ্রিকা; বর্তমান: বিশ্বব্যাপী। |
ভাষাগত শ্রেণীবিভাগ | বিশ্বের ভাষা পরিবারসমূহের অন্যতম একটি |
প্রত্ন-ভাষা | প্রত্ন-ইন্দো-ইউরোপীয় |
উপবিভাগ |
|
আইএসও ৬৩৯-২/৫ | ine |
গ্লটোলগ | indo1319[১] |
ইউরেশিয়াতে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাসমূহের বর্তমানকালীন বণ্টন:
অনা-ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাসমূহ
ফুটকিওয়ালা/ডোরাকাটা অঞ্চলগুলো দ্বারা বহুভাষিকতা প্রচলিত থাকা জায়গাসমূহ নির্দেশিত করা হয়েছে (মানচিত্র পরিবর্ধন করলে বেশি দৃশ্যমান হবে।) | |
নোটসমূহ |
|
বর্তমানে এই ভাষা-পরিবারের সবচাইতে বেশি কথিত ভাষাসমূহ হল ইংরেজি, হিন্দুস্তানি, স্পেনীয়, বাংলা, ফরাসি, রুশ, পর্তুগিজ, জার্মান, ফার্সি, পাঞ্জাবি; উল্লিখিত প্রতিটি ভাষারই ১০কোটির চাইতে বেশি বক্তা আছে। কিন্তু, আবার অনেক ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাই সংখ্যায় ছোট এবং বিলুপ্তির পথে, যেমন: কর্নিশ ভাষায় ৬০০জনের থেকেও কম লোক কথা বলে থাকে।[২]
পৃথিবীর সর্বমোট ৪৬ শতাংশ জনসংখ্যা (৩২০ কোটি) প্রথম ভাষা হিসাবে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা বলে, যা কিনা বাকি সকল ভাষা পরিবারসমূহের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বেশি। এথনোলগ দ্বারা কৃত হিসাব অনুযায়ী ৪৪৫টি চলমান ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাসমূহের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ ভাষাই (৩১৩টি) ইন্দো-ইরানি শাখার অন্তর্গত।[৩]
প্রতিটি ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাই একটি প্রাগৈতিহাসিক ভাষা থেকে উদ্ভুত হয়েছে, যা কিনা প্রত্ন-ইন্দো-ইউরোপীয় হিসাবে পুনর্নিমিত করা হয়েছে এবং নব্যপ্রস্তরযুগ থেকে নব ব্রোঞ্জ যুগের মধ্যবর্তী কোনো সময়ে বলা হত। এটির যথাযথ ভৌগোলিক অবস্থান অজানা এবং এই বিষয়ে বিভিন্ন অনুমান করা হয়েছে, যার মধ্যে সর্বাপেক্ষা গৃহীত অনুকল্পটি হল কুর্গান অনুকল্প। কুর্গান অনুকল্প পন্টিক-কাস্পিয়ান স্তেপকে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাসমূহের উৎসভূমি হিসাবে মেনে নিয়েছে এবং প্রায় ৩০০০ খ্রিষ্টপূর্বের ইয়াম্নায়া সংস্কৃতির সাথে এর সংযোগ স্থাপন করেছে। প্রথমবারের মতন লিপিবদ্ধ আবিষ্কার হওয়ার বহু পূর্বেই ইন্দো-ইউরোপীয় অন্য অনেক ভাষায় বিবর্তিত হয় এবং ইউরোপের বহুলাংশ ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়াতে কথিত হওয়া শুরু হয়। মাইসিনীয় গ্রিক এবং আনাতোলীয় ভাষাসমূহ, হিতাইট ও লুইয়ান-এর রূপে ব্রোঞ্জ যুগে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষার লিখিত সাক্ষ্য পাওয়া যায়। সর্বপ্রাচীন লেখ্যগুলো হল বিশ্লিষ্ট হিতাইট শব্দ ও নাম যেগুলো বিভিন্ন লিপিতে ইতস্তত বিক্ষিপ্ত অবস্থায় পাওয়া যায়, অন্যথা অসম্পর্কিত প্রাচীন এসিরীয় আক্কাদীয় ভাষায় পাওয়া যায়, খ্রিষ্টপূর্ব ২০শতকের পূর্ব আনাতোলিয়ার কুলতেপের এসিরীয় বসতির লেখাগুলিতে লব্ধ একটি সেমিটিক ভাষা।[৪] যদিও প্রত্ন-ইন্দো-ইউরোপীয় মানুষদের কোনো পুরানো লিখিত লিপি পাওয়া যায় না, তথাপি তাদের থেকে উদ্ভুত সংস্কৃতির প্রামাণ্য লিপিগুলোর সাহায্যে তাদের সংস্কৃতি ও ধর্মের কিছু কিছু বিষয় পুনর্নিমাণ করা যেতে পারে। [৫] ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞানের জন্য ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ মিশরীয় ভাষা এবং সেমিটিক ভাষাসমূহের রূপে উপলব্ধ আফ্রো-এশীয় ভাষা পরিবারের পর উক্ত ভাষা পরিবারেরই দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ লিপিবদ্ধ ইতিহাস আছে। ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাসমূহের মধ্যে সম্পর্কের বিশ্লেষণ এবং তাদের সাধারণ উৎসের পুনর্নিমাণ ১৯শ শতাব্দীতে ঐতিহাসিক ভাষাবিজ্ঞানের একটি শিক্ষাগত বিষয় হিসাবে উন্নত হওয়ার অপরিহার্য ও অন্যতম কারণ ছিল।
এই ভাষা পরিবারের সাথে অন্য কোনো ভাষ-পরিবারের কোনো ধরনের বংশগত সম্পর্ক নেই, যদিও বা এই নিয়ে বিভিন্ন বিতর্কিত প্রস্তাব করা হয়েছে।
ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাতত্ত্বের ইতিহাস
সম্পাদনা১৬শ শতকের সময়, ভারতীয় উপমহাদেশে আগত ইউরোপীয়রা ইন্দো-আর্য, ইরানীয় ও ইউরোপীয় ভাষাসমূহের মধ্যে সাদৃশ্য লক্ষ্য করেন। ১৫৮৩ সালে, জেসুইট ধর্মপ্রচারক ও কোঙ্কণী পণ্ডিত থোমাস স্টিফেন্স তাঁর ভাইকে গোয়া থেকে একটি চিঠি লিখে পাঠান (২০ শতক পর্যন্ত অপ্রকাশিত ছিল), [৬] যেখানে তিনি গ্রিক, লাতিন এবং ভারতীয় ভাষাসমূহের মধ্যেকার সাদৃশ্যগুলো লিপিবদ্ধ করেছিলেন।
১৫৪০ সালে ফ্লোরেন্সে জন্ম নেওয়া বণিক ফিলিপো সাসেতি, যিনি ভারতীয় উপমহাদেশে ভ্রমণ করেছিলেন, আরেক বিবরণ লিখেন। ১৫৮৫ সালের লেখায়, তিনি সংস্কৃত ও ইতালীয় ভাষার শব্দগুলোর মধ্যে কিছু সাদৃশ্য লিপিবদ্ধ করেন, যেমন: devaḥ(দেবঃ)/dio "ঈশ্বর", sarpaḥ(সর্পঃ)/serpe "সাপ", sapta(সপ্ত)/sette "সাত", aṣṭa(অষ্ট)/otto "আট", এবং nava(নব)/nove "নয়"।[৬] যদিও, স্টিফেন বা সাসেতি কারোরই পর্যবেক্ষণ কোন ধরনের শৈক্ষিক অনুসন্ধানে পরিবর্তিত হয়নি।[৬]
১৬৪৭ সালে, ওলন্দাজ ভাষাতাত্ত্বিক ও পণ্ডিত মার্কাস জুয়েরিয়াস ভান বক্সহর্ন কিছু এশীয় ও ইউরোপীয় ভাষাসমূহের মধ্যের সাদৃশ্য লক্ষ্য করেন এবং ধারণা করেন যে সেগুলো অন্য এক আদিম ভাষা থেকে উৎপন্ন হয়েছে যাকে তিনি সিথিয়ান নাম দেন।[৭] তিনি তাঁর অনুকল্পে ওলন্দাজ, আলবেনীয়, গ্রিক, লাতিন, ফার্সি, জার্মান এবং পরে স্লাভীয়, কেল্টীয় ও বাল্টীয় ভাষাসমূহ অন্তর্ভুক্ত করেন। যদিওবা, তাঁর প্রস্তাব অখ্যাত থেকে যায় এবং ফলস্বরূপ পরবর্তীতে আর কোনও গবেষণা অনুপ্রাণিত করে না।
অটোমান তুর্কি পরিব্রাজক এভলিয়া চেলেবি ১৬৬৫-১৬৬৬ সালে ভিয়েনায় এসে জার্মান ও ফারসি ভাষার কিছু শব্দের মধ্যে সাদৃশ্য লক্ষ করেন। গ্যাস্টন কোউরডক্স এবং অন্যরা একই ধরনের সাদৃশ্য লক্ষ করেন।গ্যাস্টন কোউরডক্স ১৭৬০ এর দশকের শেষের দিকে সংস্কৃত, ল্যাটিন এবং গ্রীক সংমিশ্রণগুলির সম্পর্ক দেওয়ার জন্য একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ তুলনা করেন। মিখাইল লোমোনোসভ স্লাভিক, বাল্টিক ("কুরল্যান্ডিক"), ইরানী ("মেডিক"), ফিনিশ, চীনা, "হটেনটোট" (খোয়েখো) এবং বিভিন্ন ভাষা গোষ্ঠীর তুলনা করে উল্লেখ করেন যে ভাষাগুলি (ল্যাটিন, গ্রীক সহ, জার্মান, এবং রাশিয়ান) প্রাচীনকালে একই ভাষা থেকে পৃথক হয়েছে।[৮]
১৭৮৬ সালে পুনরায় অনুমানটি আবির্ভূত হয় যখন স্যার উইলিয়াম জোনস তিনটি পরিচিত প্রাচীনতম ভাষার (ল্যাটিন, গ্রীক এবং সংস্কৃত) উল্লেখযোগ্য মিল নিয়ে বক্তৃতা করেন, যেখানে তিনি গথিক, কেল্টিক এবং ফার্সি ও যোগ করেন, যদিও তার শ্রেণিবিভাগে কিছু অশুদ্ধতা রয়েছে। ভাষাবিজ্ঞানের সবচেয়ে বিখ্যাত উদ্ধৃতিগুলির মধ্যে একটিতে, জোনস ১৭৮৬ সালে এশিয়াটিক সোসাইটি অফ বেঙ্গলের একটি বক্ততায় নিম্নোক্ত প্রাজ্ঞ বিবৃতি দিয়েছিলেন,:
সংস্কৃত ভাষা, তার প্রাচীনত্ব যাই হোক না কেন, এটি চমৎকার কাঠামোর; গ্রীকের চেয়ে বেশি নিখুঁত, ল্যাটিনের চেয়ে বেশি পরিমাণে নিখুঁত, এবং ল্যাটিন ও গ্রীকের চেয়েও বেশি সূক্ষ্মভাবে পরিমার্জিত, তবুও ক্রিয়াপদের মূল এবং ব্যাকরণের ফর্ম ল্যাটিন ও গ্রীকের সাথে সংস্কৃতের মধ্যে একটি শক্তিশালী সম্পর্ক বহন করে, যা সম্ভবত দুর্ঘটনা দ্বারা উৎপাদিত হতে পারে; প্রকৃতপক্ষে এতটাই শক্তিশালী যে, এ ভাষাগুলো কোনো সাধারণ উৎস থেকে উদ্ভূত হয়েছে বিশ্বাস না করে কোনো ভাষাবিদ এই তিনটি ভাষা পরীক্ষা করতে পারেননি।
—স্যার উইলিয়াম জোন্স, তৃতীয় বার্ষিকী বক্তৃতা ২রা ফেব্রুয়ারী ১৭৮৬, ELIOHS[৯]
টমাস ইয়ং ১৮১৩ সালে প্রথম ইন্দো-ইউরোপীয় শব্দটি ব্যবহার করেন, এটি ভাষা পরিবারের ভৌগলিক চরমপন্থা থেকে উদ্ভূত হয়: পশ্চিম ইউরোপ থেকে উত্তর ভারত।[১০] এর প্রতিশব্দ হল ইন্দো-জার্মানিক (আইডিজি বা আইডিজি), যা ভাষা পরিবারের দক্ষিণ-পূর্ব এবং উত্তর-পশ্চিমতম শাখাগুলিকে নির্দিষ্ট করে ৷
ফ্রাঞ্জ বপ ১৮১৬ সালে গ্রীক, ল্যাটিন, ফার্সি এবং জার্মানিক ভাষার সাথে সংস্কৃত ভাষার কনজুগেশনাল সিস্টেমের তুলনার উপর লিখেন এবং১৮৩৩ থেকে ১৮৫২সালের মধ্যে তুলনামূলক ব্যাকরণ লিখেন। এটি একটি একাডেমিক শাখা হিসাবে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাতত্ত্বের অধ্যয়নের সূচনা করে।
ব্রুগম্যানের নিওগ্রামারিয়ান পুনর্মূল্যায়ন এবং ফার্দিনান্দ ডি সসুরের ল্যারিঞ্জিয়াল তত্ত্বের বিকাশকে "আধুনিক" ইন্দো-ইউরোপীয় গবেষণার সূচনা বলে মনে করা যেতে পারে। ২০ শতকের শেষ তৃতীয়াংশ ইন্দো-ইউরোপীয়বাদীদের সক্রিয় প্রজন্ম (যেমন ক্যালভার্ট ওয়াটকিন্স, জোকেম শিন্ডলার এবং হেলমুট রিক্স)।
১৯৫৭ সালে কুরিলোভিচ হিট্টাইট ব্যঞ্জনবর্ণ ḫ এর অস্তিত্ব বের করেন।[১১] এ আবিষ্কার ফার্দিনান্দ দে সসুরের ১৮৭৯ সালের কোফিসিয়েন্ট সোনান্টিকের অস্তিত্বের প্রস্তাবকে সমর্থন করে। এটি ল্যারিঞ্জিয়াল তত্ত্বের দিকে পরিচালিত করে, যা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাতত্ত্বে একটি বড় পদক্ষেপ এবং ডি সসুরের তত্ত্বের নিশ্চিতকরণ।
শাখা
সম্পাদনাইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাপরিবারের ১০ টি শাখা রয়েছে।
১.ইন্দো-ইরানীয়, প্রোটো-ইন্দো-ইরানীয় (খ্রিস্টপূর্ব 3য় সহস্রাব্দের শেষের দিকে)[১২]
- ইন্দো-আর্য, আনাতোলিয়া থেকে প্রাপ্ত ১৪০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ এর ইন্দো-আর্য শব্দের চিহ্ন হতে প্রত্যয়িত। খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দীর অশোকের এডিক্টস এ প্রাকৃত আকারে এপিগ্রাফিকলি আছে। খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দের বৈদিক ঋগ্বেদ সংস্কৃত আকারে মৌখিক ঐতিহ্যের মাধ্যমে অক্ষত রেকর্ড সংরক্ষণ করেছে বলে ধারণা করা হয়। হিন্দুস্তানি (হিন্দি, উর্দু), বাংলা, ওড়িয়া, অসমীয়া, পাঞ্জাবি, কাশ্মীরি, গুজরাটি, মারাঠি, সিন্ধি এবং নেপালি, সেইসাথে শ্রীলঙ্কার সিংহলা সহ উত্তর ভারত, মালদ্বীপের দিভেহি এবং মিনিকয়পূর্ব পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের আধুনিক ভাষা এর অন্তর্ভুক্ত। ।
- ইরানী বা ইরানিক- মোটামুটি ১০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ এর আবেস্তা থেকে প্রমাণিত। প্রাচীন ফার্সি (বেহিস্তুন শিলালিপি) আকারে ৫২০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে এপিগ্রাফিকভাবে। ফার্সি, পশতু, কুর্দি, বেলোচি, লুরি এবং ওসেশিয়ান এর অন্তর্ভুক্ত।
- নুরিস্তানি- কামকাটা-ভরি, ভাসি-ভরি, আসকুনু, ওয়াইগালি, ত্রেগামি এবং জেমিয়াকি অন্তর্ভুক্ত।
২. আর্মেনীয় ভাষাপরিবার - খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতাব্দীর প্রথম দিক থেকে প্রত্যয়িত। বর্তমানে শুধু একটি সদস্য রয়েছে। যথা - আর্মেনীয় ভাষা
৩. আলবেনীয় ভাষাপরিবার (১৩০০ খ্রীষ্টাব্দের দিকে প্রথম অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়[১৩])- বর্তমানে শুধু একটি সদস্য রয়েছে। যথা - আলবেনীয় ভাষা
৪. ইতালিক ভাষাপরিবার - দক্ষিণ ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকায় অবস্থিত ভাষা ও উপভাষা।
৫. ইন্দো-ইরানীয় ভাষাপরিবার - ইরান, শ্রীলঙ্কা, ও উত্তর ভারত উপমহাদেশে অবস্থিত ভাষা ও উপভাষা।
৬. কেল্টীয় ভাষাপরিবার - পশ্চিম ইউরোপের কয়েকটি এলাকায় অবস্থিত ভাষা ও উপভাষা।
৭. গ্রিক ভাষাপরিবার[১৪] - বর্তমানে শুধু একটি সদস্য (গ্রিক) রয়েছে।
৮.জার্মানীয় ভাষাপরিবার - উত্তর ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আফ্রিকা, ও অশেনিয়ায় অবস্থিত ভাষা ও উপভাষা।
৯.বাল্টীয় স্লাভীয় ভাষাপরিবার - উত্তর-পূর্ব ইউরোপে অবস্থিত ভাষা ও উপভাষা।রাশিয়া ও পূর্ব ইউরোপে অবস্থিত ভাষা ও উপভাষা।
১০. আনাতোলিয়ান ভাষাপরিবার- লেট অ্যান্টিকুইটি দ্বারা বিলুপ্ত, আনাতোলিয়ায় কথিত, যা খ্রিস্টপূর্ব ২০ এবং ১৯ শতকের সেমেটিক ওল্ড অ্যাসিরিয়ান গ্রন্থে লুভিয়ান/হিট্টি পরিভাষায় উল্লিখিত, প্রায় ১৬৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ এর হিট্টাইট গ্রন্থ থেকে প্রত্যয়িত ।[১৫]
উপরে তালিকাভুক্ত ধ্রুপদী দশটি শাখা ছাড়াও, বেশ কিছু বিলুপ্ত ও স্বল্প-পরিচিত ভাষা এবং ভাষা-গোষ্ঠীর অস্তিত্ব রয়েছে :
- প্রাচীন বেলজিয়ান ভাষাপরিবার
- তোখারীয় ভাষাপরিবার
- ডাসীয় ভাষাপরিবার
- থ্রাসীয় ভাষাপরিবার
- ফ্রিজীয় ভাষাপরিবার
- সিমেরিয়ান ভাষাপরিবার
- প্রাচীন মেসিডোনিয়ান ভাষাপরিবার
- ইলিরিয়ান ভাষাপরিবার
- লিবার্নিয়ান ভাষাপরিবার
- লিগুরিয়ান ভাষাপরিবার
- লুসিটানিয়ান ভাষাপরিবার
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ হ্যামারস্ট্রোম, হারাল্ড; ফোরকেল, রবার্ট; হাস্পেলম্যাথ, মার্টিন, সম্পাদকগণ (২০১৭)। "ইন্দো-ইউরোপীয়"। গ্লোটোলগ ৩.০ (ইংরেজি ভাষায়)। জেনা, জার্মানি: মানব ইতিহাস বিজ্ঞানের জন্য ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট।
- ↑ "Number of Welsh, Gaelic, Irish and Cornish speakers from the 2011 Census"। Office of National statistics। ৯ জুন ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২।
- ↑ "Ethnologue report for Indo-European"। Ethnologue.com।
- ↑ Bryce, Trevor (২০০৫)। Kingdom of the Hittites: New Edition। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস। পৃষ্ঠা 37। আইএসবিএন 978-0-19-928132-9।
- ↑ Mallory, J. P. (২০০৬)। The Oxford Introduction to Proto-Indo-European and the Proto-Indo-European World। Oxford: Oxford University Press। পৃষ্ঠা 442। আইএসবিএন 978-0-19-928791-8।
- ↑ ক খ গ Auroux, Sylvain (২০০০)। History of the Language Sciences। Berlin, New York: Walter de Gruyter। পৃষ্ঠা 1156। আইএসবিএন 978-3-11-016735-1।
- ↑ Beekes, Robert S.P. (২০১১)। Comparative Indo-European Linguistics: An introduction. Second edition। John Benjamins Publishing। পৃষ্ঠা 12। আইএসবিএন 978-90-272-8500-3।
- ↑ M.V. Lomonosov (drafts for Russian Grammar, published 1755). In: Complete Edition, Moscow, 1952, vol. 7, pp. 652–59 Archived 1 August 2020 at the Wayback Machine: Представимъ долготу времени, которою сіи языки раздѣлились. ... Польской и россійской языкъ коль давно раздѣлились! Подумай же, когда курляндской! Подумай же, когда латинской, греч., нѣм., росс. О глубокая древность! [Imagine the depth of time when these languages separated! ... Polish and Russian separated so long ago! Now think how long ago [this happened to] Kurlandic! Think when [this happened to] Latin, Greek, German, and Russian! Oh, great antiquity!]
- ↑ Jones, William (2 February 1786). "The Third Anniversary Discourse". Electronic Library of Historiography. Universita degli Studi Firenze, taken from: Shore (Lord Teignmouth), John (1807). The Works of Sir William Jones. With a Life of the Author. Vol. III. John Stockdale and John Walker. pp. 24–46. OCLC 899731310.
- ↑ Robinson, Andrew (2007). The Last Man Who Knew Everything: Thomas Young, the Anonymous Genius who Proved Newton Wrong and Deciphered the Rosetta Stone, among Other Surprising Feats. Penguin. ISBN 978-0-13-134304-7.
- ↑ Kurylowicz, Jerzy (1927). "ə indo-européen et ḫ hittite". In Taszycki, W.; Doroszewski, W. (eds.). Symbolae grammaticae in honorem Ioannis Rozwadowski. Vol. 1. pp. 95–104.
- ↑ Indian History. Allied Publishers. 1988. p. 114. ISBN 978-81-8424-568-4.
- ↑ Elsie, Robert (২০০৫)। "Theodor of Shkodra (1210) and Other Early Texts"। Albanian Literature: A Short History। New York/Westport/London: I.B.Tauris.। পৃষ্ঠা 5।
- ↑ "Tablet Discovery Pushes Earliest European Writing Back 150 Years"। Science 2.0। ৩০ মার্চ ২০১১।
- ↑ The peaks and troughs of Hittite". www.leidenuniv.nl. 2 May 2006. Archived from the original on 3 February 2017. Retrieved 25 November 2013.
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- Dyen, Isidore; Kruskal, Joseph; Black, Paul (১৯৯৭)। "Comparative Indo-European"। wordgumbo। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ডিসেম্বর ২০০৯।
- "Indo-European"। LLOW Languages of the World। ১০ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০০৯।
- "Indo-European Documentation Center"। Linguistics Research Center, University of Texas at Austin। ২০০৯। ৩ সেপ্টেম্বর ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০০৯।
- Lewis, M. Paul, সম্পাদক (২০০৯)। "Language Family Trees: Indo-European"। Ethnologue: Languages of the World, Online version (Sixteenth সংস্করণ)। Dallas, Tex.: SIL International।.
- "Indo-European Etymological Dictionary (IEED)"। Leiden, Netherlands: Department of Comparative Indo-European Linguistics, Leiden University। ৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০০৯।
- "Indo-European Roots Index"। The American Heritage Dictionary of the English Language (Fourth সংস্করণ)। Internet Archive: Wayback Machine। আগস্ট ২২, ২০০৮ [2000]। Archived from the original on ২৬ জুলাই ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০০৯।