আশারকান্দি ইউনিয়ন
আশারকান্দি ইউনিয়ন বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার অন্তর্গত একটি ইউনিয়ন পরিষদ। এর আয়তন ১২৬০৮ বর্গকিলোমিটার ও জনসংখ্যা ২৭,৮৯৩।[২]
আশারকান্দি ইউনিয়ন | |
---|---|
ইউনিয়ন | |
৮ নং আশারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ | |
বাংলাদেশে আশারকান্দি ইউনিয়নের অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°৪৩′০.০০১″ উত্তর ৯১°৩৭′৪০.০০১″ পূর্ব / ২৪.৭১৬৬৬৬৯৪° উত্তর ৯১.৬২৭৭৭৮০৬° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | সিলেট বিভাগ |
জেলা | সুনামগঞ্জ জেলা |
উপজেলা | জগন্নাথপুর উপজেলা |
সরকার | |
• চেয়ারম্যান | শাহ আবু ইমানী |
আয়তন | |
• মোট | ১২,৬০৮ বর্গকিমি (৪,৮৬৮ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা | |
• মোট | ২৭,৮৯৩ |
• জনঘনত্ব | ২.২/বর্গকিমি (৫.৭/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৪৬.১৬% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | [১] |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৬০ ৯০ ৪৭ ১৭ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
অবস্থান ও সীমানা
সম্পাদনাআশারকান্দি ইউনিয়নের পূর্বে সিলেটের ওসমানী নগর উপজেলা, পশ্চিমে পাইলগাঁও ইউনিয়ন, উত্তরে সৈয়দপুর শাহারপাড়া ইউনিয়ন এবং দক্ষিণে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা অবস্থিত।[২]
ইতিহাস
সম্পাদনাদ্বাদশ শতাব্দিতে লাউড় রাজ্যের অধিপতি রাজা বিজয় মাণিক্য জগন্নাথপুরের বর্তমান পেরুয়ায় পাণ্ডুয়া রাজ্য স্থাপন করেন । তত্ব অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজা বিজয় মাণিক্য ব্রাহ্মণ ভক্ত ছিলেন । তিনি জগন্নাথ মিশ্র নামে দৈব্য শক্তি সম্পন্য জৈনক ব্রাহ্মণকে দিয়ে দেবার্চনায় বাসুদেব মন্দির নির্মাণ করান । পান্ডুয়া রাজ্য পরবর্তীতে জগন্নাথ মিশ্র বাহ্মণের নামানুসারে জগন্নাথপুর রাজ্য হিসেবে খ্যাত হয়ে ওঠে । প্রাচীন পান্ডুয়া রাজ্য বর্তমানে একটি নগর, যা পেরুয়া নামে অবহিত হচ্ছে । জগন্নাথপুর রাজ্য পূর্বে সিলেট জেলার বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগর উপজেলা, উত্তরে ছাতক ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা, পশ্চিমে দিরাই উপজেলা এবং দক্ষিণে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল । ১৩০৩ খ্রিস্টাব্দে ইয়েমেনদেশীয় তাপস হজরত শাহজালাল (রহ.) ৩৬০ জন সফরসঙ্গী নিয়ে প্রাচীন শ্রীহট্টের গৌড় রাজ্য জয় করেন। শাহজালালের সঙ্গী ও অনুসারীগণ ইসলামের পবিত্র বাণী নিয়ে শ্রীহট্টসহ বঙ্গদেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়েন। তারই ধারাবাহিকতায় ৮ জন আউলিয়া জগন্নাথপুর রাজ্যে আসেন। জগন্নাথপুরে আগত আউলিয়াদের অন্যতম দুই জন দাওর বখশ খতিব ও শাহ ফৈজ উদ্দিন বা ফেছন উদ্দিন আশারকান্দি ইউনিয়নে আস্তানা গড়েন বলে অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধির শ্রীহট্টের ইতিবৃত্তসহ বিভিন্ন ইতিহাসে উল্লেখ রয়েছে । শাহজালালের সঙ্গী দাওর বখশ খতিব যে স্থানে আস্তানা গড়েন ইহাই দাওরাই গ্রাম নামে পরিচিত হয় এবং শাহ ফৈজ উদ্দিন বা ফেছন উদ্দিন যে স্থানে রয়েছে সেই স্থানটি তাঁর নামানুসারে ফেছি গ্রাম নামে আখ্যায়িত হয় । আশারকান্দি নাম সম্পর্কে অনেকে বলে থাকেন বাগদাদ থেকে আখাইনজী নামে একজন ফকির এসেছে তাহার হাতের আশা(লাটি)কান্দি নামক স্থানে গেড়ে তপস্যা বা ধ্যানে মগ্ন ছিলেন।তখন থেকে সেই স্থানের নাম করন করা হয় আশারকান্দি যাহা একটি গ্রামে রূপান্তরিত। ইউনিয়ন হল বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চলের সর্বনিম্ন প্রশাসনিক ইউনিট । গ্রাম চৌকিদারি আইনের ১৮৭০ এর অধীনে ১৮৭০ সালে কিছু পল্লী সংস্থা গঠনের উদ্যোগ নেয়া হলে ইউনিয়নের সৃষ্টি। তারই ধারাবাহিকতায় গ্রামাঞ্চলে আইনের পাহারা টহল ব্যবস্থা চালু করায় বিভিন্ন অঞ্চলের প্রাচিন গ্রামাদির নামেই ইউনিয়নের নাম রাখা হয় । তার ভিত্তিতেই এভাবে আশারকান্দি গ্রামের নামে আশারকান্দি ইউনিয়নের নাম করণ করা হয়।[৩][৪]
দর্শনীয় স্থান
সম্পাদনাপাঠকুরা বাজার, ফেচী বাজার, দাওর শাহর মাজার, ফেচন শাহর মাজার উল্লেখযোগ্য।
জনপ্রতিনিধি
সম্পাদনাইউনিয়নের প্রথম চেয়ারম্যান (১) মরহুম সহুল উদ্দিন আহমদ ছইল মিয়া, (২) মরহুম শাহ মদচ্ছির আলী মানিক মিয়া। (৩) মরহুম শাহ মদচ্ছির আলী মানিক মিয়া। (৪) মরহুম সহুল উদ্দিন আহমদ ছইল মিয়া। (৫) মরহুম শাহ মদচ্ছির আলী মানিক মিয়া। (৬) দীনুল ইসলাম বাবুল। (৭) আয়ূব খাঁন। (৮) আব্দুল আহাদ মদরিছ। (৯) শাহ আবু ইমানি। (১০) আয়ূব খাঁন (১১) শাহ আবু ইমানি ।
আরও দেখুন
সম্পাদনা- বিখ্যাত বাজার পাঠকুরা বাজার, ফেচী বাজার, নয়া বন্দর বাজার, তিলক বাজার, দাওরাই বাজার, শনির বাজার, মা মার্কেট উল্লেখ যোগ্য।
- বিশিষ্ট ছাত্র নেতা আজিজুর রহমান দারা উল্লেখ যোগ্য।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ বাংলাপিডিয়া
- ↑ ক খ asharkandiup, sunamganj.gov.bd[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ সিলেট বিভাগের ইতিবৃত্ত: প্রাচীন ইতিহাসে সিলেট বিভাগ নিবন্ধ, মোহাম্মদ মুমিনুল হক, গ্রন্থ প্রকাশকাল: সেপ্টেম্বর ২০০১; পৃষ্ঠা ৩৩।
- ↑ শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত পূর্বাংশ, দ্বিতীয় ভাগ, প্রথম খণ্ড, প্রথম অধ্যায়, অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি; প্রকাশক: মোস্তফা সেলিম; উৎস প্রকাশন, ২০০৪।