অনুজাচরণ সেন

ব্রিটিশ বিরোধী বাঙালি বিপ্লবী

অনুজাচরণ সেন (জুন ১৯০৫ - ২৫ আগস্ট, ১৯৩০) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের শহীদ বিপ্লবী। ১৯২০-এর দশকে দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি গ্রামের প্রখ্যাত বিপ্লবী অতুল সেন, রসিকলাল দাস, কিরণচন্দ্র মুখোপাধ্যায়, রতিকান্ত দত্তের সংস্পর্শে আসেন। কলেরা, বসন্ত মহামারীর সময় সেবা ও অমায়িক ব্যবহার দ্বারা বিপ্লবী দলের প্রসার ও সংগঠনে সহায়তা করেছিলেন। দলের নির্দেশে দীনেশ মজুমদার, অতুল সেন ও শৈলেন নিয়োগীর সঙ্গে কলকাতার অত্যাচারী পুলিস কমিশনার চার্লস টেগার্ট সাহেবকে মারতে গিয়ে তার বোমাটি তার কাছেই ফেটে যায় এবং মারাত্মকভাবে আহত হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণত্যাগ করেন।[]

অনুজাচরণ সেন
অনুজাচরণ সেন
জন্মজুন ১৯০৫
মৃত্যু২৫ আগস্ট, ১৯৩০
নাগরিকত্বব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
পাকিস্তান (১৯৬৪ সাল পর্যন্ত)
ভারত
পেশারাজনীতিবিদ
পরিচিতির কারণব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী
রাজনৈতিক দলঅনুশীলন সমিতি
আন্দোলনব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন,
পিতা-মাতা
  • বিমলাচরণ সেন (পিতা)

অনুজাচরণ সেনের জন্ম খুলনা জেলার দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটিতে।[] তার পিতার নাম বিমলাচরণ সেন। তিনি ছাত্রাবস্থায় বিপ্লবী দলে যোগদান করেন। প্রথমে সেবা কার্যের মাধ্যমে দেশের মানুষের সঙ্গে পরিচয় ঘটে। ব্যায়ামচর্চা, পঠন ও আলোচনার মাধ্যমে বিপ্লবমন্ত্রে দীক্ষিত হন।[]

ডালহৌসী স্কোয়ার বোমা মামলা

সম্পাদনা

২৫ আগস্ট, ১৯৩০ তারিখে অনুজাচরণ সেনদীনেশচন্দ্র মজুমদার অত্যাচারী কুখ্যাত চার্লস টেগার্ট সাহেবের গাড়িতে বোমা নিক্ষেপ করেন। টেগার্ট বেঁচে যান কিন্তু দীনেশ মজুমদার ধরা পড়েন। অনুজাচরণ ঘটনাস্থলেই মারা যান। বিচারে দীনেশ মজুমদারের যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর দণ্ড হয়। এই উপলক্ষে পুলিস বহু বাড়ি খানাতল্লাশ করে এবং বহু লোককে গ্রেপ্তার করে। এই সম্পর্কে শোভারানি দত্ত, কমলা দাশগুপ্ত, শৈলরাণী দত্ত, ডা. নারায়ণ রায়, ভূপালচন্দ্র বসু, অদ্বৈত দত্ত, অম্বিকা রায়, রসিকলাল দাস, সতীশ ভৌমিক, সুরেন্দ্র দত্ত, রোহিণী অধিকারীসহ অনেকে ধৃত হন। বিচারে নারায়ণ রায় ও ভূপাল বসু ১৫ বছরের দ্বীপান্তর, সুরেন্দ্র দত্ত ১২ বছর, রোহিণী ৫ বছর ও সতীশ ২ বৎসর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হন এবং অন্যান্য সকলে মুক্তি পান। তারা সকলেই তরুণ বিপ্লবী দলের সদস্য ছিলেন।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ২৪, ১৪, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. রায়, প্রকাশ (২০২১)। বিস্মৃত বিপ্লবী তৃতীয় খণ্ডচেন্নাই: নোশনপ্ৰেস চেন্নাই তামিলনাড়ু। পৃষ্ঠা ৫৭–৫৯। আইএসবিএন 978-1-63850-767-3 
  3. ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী, জেলে ত্রিশ বছর, পাক-ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ধ্রুপদ সাহিত্যাঙ্গণ, ঢাকা, ঢাকা বইমেলা ২০০৪, পৃষ্ঠা ১৮৪।