কিরণচন্দ্র মুখোপাধ্যায়

বাঙালি বিপ্লবী

কিরণচন্দ্র মুখোপাধ্যায় (ইংরেজি: Kiranchandra Mukherjee) (১৮৯৩ - ১২ ডিসেম্বর, ১৯৫৪) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী। ১৯২০-এর দশকে দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটি গ্রামের প্রখ্যাত বিপ্লবী অতুল সেন, রসিকলাল দাস, অনুজাচরণ সেন, রতিকান্ত দত্তের সংস্পর্শে আসেন। প্রথম মহাযুদ্ধের সময় ভারত-জার্মান ষড়যন্ত্রে অংশগ্রহণ করবার জন্য ১৯১৬ সনে গ্রেপ্তার হন। ১৯১৯ সনে মুক্ত হয়ে অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে সারভেন্ট পত্রিকা প্রকাশনায় শামসুন্দর চক্রবর্তী, পূর্ণচন্দ্র দাস প্রভৃতিকে বিশেষভাবে সাহায্য করেন। ১৯২৪ সনে চার্লস টেগার্ট ভ্রমে আর্ন্সট ডে সাহেবকে হত্যা করা হলে গোপীনাথ সাহা ও অন্যান্যদের সঙ্গে তিনিও গ্রেপ্তার হয়ে পাঁচ বছরের জন্য কারারুদ্ধ হন। তার রচিত গ্রন্থ হচ্ছে চন্দ্রগুপ্ত-গুরু চাণক্যশিবাজি-গুরু রামদাসস্বামী[১]

কিরণচন্দ্র মুখোপাধ্যায়
জন্ম১৮৯৩
মৃত্যু১২ ডিসেম্বর, ১৯৫৪
আন্দোলনব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন

সামাজিক আন্দোলনে সম্পাদনা

অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে সারভেন্ট পত্রিকা প্রকাশে সাহায্য করতেন। সরস্বতী লাইব্রেরি ও শান্তিসেনা গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। খুলনার বাগেরহাটে ভূপেন্দ্র কুমার দত্তের সংগে সত্যাশ্রম নামে একটি সমাজকল্যাণ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন যেখানে রসিকলাল দাস, চারু ঘোষ, কুন্তল চক্রবর্তী প্রমুখ বিপ্লবীরা আশ্রয় নিয়েছিলেন।[২]তিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন তৎকালীন শীর্ষস্থানীয় বাংলা পত্রিকা, সন্ধ্যা, যুগান্তর, বন্দে মাতরম এবং নবশক্তির জন্য লেখার মাধ্যমে; এবং তাদের জন্য কাজও করেছেন। হিতাবাদী পত্রিকায় তার নিবন্ধের জন্য (কোন পথে?) বাকুরায় আত্মগোপনে গেলে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তাঁর লেখা তাঁকে অরবিন্দ ঘোষ, ব্রহ্মবন্ধন উপাধ্যায়, বিপিনচন্দ্র পাল এবং বারীন্দ্রকুমার ঘোষ মতো বরেণ্য ব্যক্তিদের সান্নিধ্যে নিয়ে আসে। একজন খুব ভাল সংগঠক, তিনি কলকাতার ভিতরে এবং বাইরে জাতীয়তাবাদী যুবকদের জন্য সমিতি সংগঠিত করতে সহায়তা করেছিলেন। উত্তর কলকাতার মহেশলয় ক্লাবে বোমা তৈরির অভিযোগে তিনি একাধিকবার কারাবরণ করেন, এরপর ইন্দো-জার্মান ষড়যন্ত্র মামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিন বছরের কারাদণ্ড (১৯১৬-১৯) এবং গোপীনাথ সাহা সহযোগী হিসেবে চার বছর (১৯২৪-২৮) কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন।১৯২৮-৩০ সালে তিনি চন্দননগর আস্তানা ও ডালহৌসি স্কোয়ার বোমা নির্মাণ কেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলেন। এই সমস্ত কিছুর জন্য, তিনি ১৯৩০ থেকে ১৯৩৭ সাল পর্যন্ত এবং আবার ১৯৪২ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় কারাবরণ করেছিলেন। মুক্তির পর তিনি কলকাতায় প্রজ্ঞাননন্দ সরস্বতী গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করেন রাজনৈতিক আলোচনার যুবকেন্দ্র হিসেবে কাজ করার জন্য।


জন্ম সম্পাদনা

অমৃতলাল মুখোপাধ্যায়ের পুত্র কিরণচন্দ্র অবিভক্ত বাংলার যশোর জেলার ভুগিলহাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতায় স্থানান্তরিত হয়ে তিনি তাঁর রাজনৈতিক গুরু রামকৃষ্ণ মিশনের দেবব্রত বসু ওরফে স্বামী প্রগানন্দ সাথে পরিচিত হন এবং তাঁর মাধ্যমে যুগান্তর গোষ্ঠীর সাথে ঘনিষ্ঠ হন।[১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ১৩৮, ১৪, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. প্রতাপ চন্দ্র সাহা (১৮ ডিসেম্বর ২০১৬)। "অগ্নিযুগের বিপ্লবী ভূপেন্দ্র কুমার দত্তের মৃত্যুবার্ষিকী"এইবেলা। সংগ্রহের তারিখ ১৮.১২.১৬  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]