শোভারানি দত্ত
শোভারানি দত্ত (১৯০৬ — ৯ নভেম্বর, ১৯৫০) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী। তিনি পাঞ্জাবকেশরী লালা লাজপত রায়ের সঙ্গে পরিচয়ের মাধ্যমে বিপ্লবে প্রেরণা পান। ১৯৩০ সনে মাতা লাবণ্যপ্রভা দত্তের সঙ্গে কলকাতায় "আনন্দমঠ" প্রতিষ্ঠা করেন। নারী সত্যাগ্রহ সমিতির কর্মীরূপে আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দেন। পলাতক বিপ্লবীদের আশ্রয় দিতেন ও নানাভাবে সাহায্য করতেন। ১৯৩৪ সালের ৮ মে দার্জিলিং-এ লেবং মাঠে গভর্নর অ্যান্ডারসনের উপর বিপ্লবী আক্রমণ হবার পর উজ্জ্বলা মজুমদার কলকাতায় তার বাড়িতে আশ্রয় নেন।[১] ১৮ মে উভয়ে গ্রেপ্তার হন। ১৯৩৭ সনে তিনি মুক্তি পান।[২]
শোভারানি দত্ত | |
---|---|
জন্ম | ১৯০৬ |
মৃত্যু | ৯ নভেম্বর, ১৯৫০ |
আন্দোলন | ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন |
জন্ম ও শিক্ষা
সম্পাদনাশোভারানি দত্তের জন্ম কলকাতায়। তার পিতার নাম যতীন্দ্রনাথ দত্ত। পৈতৃক নিবাস বাংলাদেশের খুলনায়। মাতা বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটির সভানেত্রী ছিলেন। ১৬-১৭ বছর বয়সে ব্রাহ্ম গার্লস ট্রেনিং স্কুল থেকে পাশ করেন এবং বৃন্দাবনে বিপ্লবী বীর রাজা মহেন্দ্রপ্রতাপ প্রতিষ্ঠিত "প্রেম মহাবিদ্যালয়ে" শিক্ষাপ্রাপ্ত হয়ে পাঞ্জাবের নানাস্থানে ভ্রমণ করেন[২][৩]।
ডালহৌসী স্কোয়ার বোমা মামলা
সম্পাদনা২৫ আগস্ট, ১৯৩০ তারিখে অনুজাচরণ সেন ও দীনেশচন্দ্র মজুমদার অত্যাচারী কুখ্যাত চার্লস টেগার্ট সাহেবের গাড়ীতে বোমা নিক্ষেপ করেন। টেগার্ট বেঁচে যান কিন্তু দীনেশ মজুমদার ধরা পড়েন। অনুজাচরণ ঘটনাস্থলেই মারা যান। বিচারে দীনেশ মজুমদারের যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর দণ্ড হয়। এই উপলক্ষে পুলিস বহু বাড়ি খানাতল্লাশ করে এবং বহু লোককে গ্রেপ্তার করে। এই সম্পর্কে শোভারানি দত্ত, কমলা দাশগুপ্ত, শৈলরাণী দত্ত, ডা. নারায়ণ রায়, ভূপালচন্দ্র বসু, অদ্বৈত দত্ত, অম্বিকা রায়, রসিকলাল দাস, সতীশ ভৌমিক, সুরেন্দ্র দত্ত, রোহিণী অধিকারীসহ অনেকে ধৃত হন। বিচারে নারায়ণ রায় ও ভূপাল বসু ১৫ বছরের দ্বীপান্তর, সুরেন্দ্র দত্ত ১২ বছর, রোহিণী ৫ বছর ও সতীশ ২ বৎসর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত হন এবং অন্যান্য সকলে মুক্তি পান। তারা সকলেই তরুণ বিপ্লবী দলের সদস্য ছিলেন।[৪]
মৃত্যু
সম্পাদনা৯ নভেম্বর ১৯৫০ সালে মারা যান শোভারানি দত্ত।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Ghosh, Durba (২০১৭-০৭-২০)। Gentlemanly Terrorists: Political Violence and the Colonial State in India, 1919–1947 (ইংরেজি ভাষায়)। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা ১৭৩। আইএসবিএন 978-1-107-18666-8।
- ↑ ক খ সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, দ্বিতীয় সংস্করণ, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৩৪৯-৩৫০, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
- ↑ কমলা দাশগুপ্ত (জানুয়ারি ২০১৫)। স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলার নারী, অগ্নিযুগ গ্রন্থমালা ৯। কলকাতা: র্যাডিক্যাল ইম্প্রেশন। পৃষ্ঠা ১৫৮-১৫৯। আইএসবিএন 978-81-85459-82-0।
- ↑ ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী, জেলে ত্রিশ বছর, পাক-ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ধ্রুপদ সাহিত্যাঙ্গন, ঢাকা, ঢাকা বইমেলা ২০০৪, পৃষ্ঠা ১৮৪।