অনিত্য

ভারতীয় দার্শনিক ধারণা

অনিত্য (সংস্কৃত: अनित्य) একটি সংস্কৃত শব্দ এবং এর পালি শব্দ অনিক্ক[১][২] এটি বৌদ্ধ দর্শনে বিশিষ্ট, এবং এটি হিন্দুজৈন দর্শনেও পাওয়া যায়। ঋগ্বেদেও শব্দটিকে দেখা যায়।[৩][৪]

impermanence
অনিত্য প্রদর্শন করে বৌদ্ধ চিত্রকর্ম।
বিভিন্ন ভাষায়
অনিত্য এর
অনুবাদ
ইংরেজি:Impermanence
পালি:अनिच्च
সংস্কৃত:अनित्य
বর্মী:အနိစ္စ
(আইপিএ: [anicca])
চীনা:無常
(pinyinwúcháng)
জাপানী:無常
(rōmaji: mujō)
খ্‌মের:អនិច្ចំ
কোরীয়:무상
(RR: musang)
তিব্বতী:མི་རྟག་པ་
(Wylie: mi rtag pa, THL: mi tak pa)
থাই:อนิจจัง
ভিয়েতনামী:vô thường
বৌদ্ধ ধর্ম সংশ্লিষ্ট টীকাসমূহ

দার্শনিক ধারণাটি বিভিন্ন ধর্মদর্শনে আলোচিত। এটি বৌদ্ধ দর্শনের অস্তিত্বের তিন প্রতীকের ভূমিকার জন্য উল্লেখযোগ্য।[৫][৬][৭][৮] গ্রিক দর্শনের দার্শনিক হেরাক্লিটাসের মতে সবকিছু প্রবাহিত হয়। পাশ্চাত্য দর্শনে এটিকে প্রক্রিয়া দর্শন বলেও উল্লেখ করা হয়।

ধার্মিক ধর্মে সম্পাদনা

বৌদ্ধধর্ম সম্পাদনা

 
বৌদ্ধধর্ম অনুসারে, জীব বহু জন্মের মধ্য দিয়ে যায়। বৌদ্ধধর্ম স্থায়ী, অপরিবর্তনীয় আত্মার অস্তিত্ব শেখায় না। এক রূপ থেকে অন্য রূপের জন্ম ক্রমাগত পরিবর্তনের প্রক্রিয়ার অংশ।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

বৌদ্ধধর্মের অন্যতম অপরিহার্য মতবাদ হিসেবে অনিক্ক বা অনিত্যকে পালি ত্রিপিটকে ব্যাপকভাবে দেখা যায়।[১][৬][৭] মতবাদ দাবি করে যে সমস্ত শর্তযুক্ত অস্তিত্ব, ব্যতিক্রম ছাড়া, "ক্ষণস্থায়ী, অদৃশ্য, অস্থির"।[১] সমস্ত ক্ষণস্থায়ী জিনিস, বস্তুগত বা মানসিক হোক না কেন, অবস্থার ক্রমাগত পরিবর্তনে যৌগিক বস্তু, অবনতি ও ধ্বংস সাপেক্ষে।[১][২] সমস্ত শারীরিক ও মানসিক ঘটনা আধ্যাত্মিকভাবে বাস্তব নয়। তারা ধ্রুবক বা স্থায়ী নয়; তারা অস্তিত্বে আসে এবং দ্রবীভূত হয়।[৯]

বৌদ্ধধর্মে অনিক্ককে অস্তিত্বের তিনটি প্রতিকের মধ্যে প্রথম হিসেবে বোঝা যায়, বাকি দুটি হলো দুঃখ এবং অনাত্তা[৭][৬][১০] পালি ত্রিপিটক অনুসারে, সমস্ত শর্তযুক্ত জিনিস অস্থায়ী, সমস্ত শর্তযুক্ত জিনিস বেদনাদায়ক, সমস্ত ধম্ম আত্মবিহীন।[১১]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Thomas William Rhys Davids; William Stede (১৯২১)। Pali-English Dictionary। Motilal Banarsidass। পৃষ্ঠা 355, Article on Niccaআইএসবিএন 978-81-208-1144-7 
  2. Robert E. Buswell Jr.; Donald S. Lopez Jr. (২০১৩)। The Princeton Dictionary of Buddhism। Princeton University Press। পৃষ্ঠা 47–48, Article on Anityaআইএসবিএন 978-1-4008-4805-8 
  3. A. C. Paranjpe (২০০৬)। Self and Identity in Modern Psychology and Indian Thought। Springer Science & Business Media। পৃষ্ঠা 172। আইএসবিএন 978-0-306-47151-3 
  4. Martin G. Wiltshire (১৯৯০)। Ascetic Figures Before and in Early Buddhism: The Emergence of Gautama as the Buddha। Walter de Gruyter। পৃষ্ঠা 136 note 14। আইএসবিএন 978-3-11-009896-9 
  5. Steven Collins (১৯৯৮)। Nirvana and Other Buddhist Felicities। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 140। আইএসবিএন 978-0-521-57054-1 
  6. Richard Gombrich (২০০৬)। Theravada Buddhism। Routledge। পৃষ্ঠা 47। আইএসবিএন 978-1-134-90352-8 , Quote: "All phenomenal existence [in Buddhism] is said to have three interlocking characteristics: impermanence, suffering and lack of soul or essence."
  7. Robert E. Buswell Jr.; Donald S. Lopez Jr. (২০১৩)। The Princeton Dictionary of Buddhism। Princeton University Press। পৃষ্ঠা 42–43, 47, 581। আইএসবিএন 978-1-4008-4805-8 
  8. Carl Olson (২০০৫)। The Different Paths of Buddhism: A Narrative-Historical Introduction। Rutgers University Press। পৃষ্ঠা 63–4। আইএসবিএন 978-0-8135-3778-8 
  9. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Billington2002p56 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  10. Anicca Buddhism, Encyclopædia Britannica (2013);
    Anatta Buddhism, Encyclopædia Britannica (2013);
    Grant Olson (Translator); Phra Payutto (১৯৯৫)। Buddhadhamma: Natural Laws and Values for Life। State University of New York Press। পৃষ্ঠা 62–63। আইএসবিএন 978-0-7914-2631-9 
  11. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; GombrichScherrer2008p209 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা