বাস্টার ফারার

দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার
(Buster Farrer থেকে পুনর্নির্দেশিত)

উইলিয়াম স্টিফেন বাস্টার ফারার (ইংরেজি: Buster Farrer; জন্ম: ৮ ডিসেম্বর, ১৯৩৬) কেপ প্রদেশের কিং উইলিয়ামস টাউন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৬০-এর দশকের শুরুরদিকে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

বাস্টার ফারার
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামউইলিয়াম স্টিফেন ফারার
জন্ম (1936-12-08) ৮ ডিসেম্বর ১৯৩৬ (বয়স ৮৭)
কিং উইলিয়ামস টাউন, কেপ প্রদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ স্পিন
ভূমিকাব্যাটসম্যান
সম্পর্কস্টিফেন ফারার (পিতা); পিই ফারার (ভ্রাতা)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২১৩)
১ জানুয়ারি ১৯৬২ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ টেস্ট১৩ মার্চ ১৯৬৪ বনাম নিউজিল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৬৯
রানের সংখ্যা ২২১ ৪৮১৫
ব্যাটিং গড় ২৭.৬২ ৪৩.৩৭
১০০/৫০ ০/০ ১২/২২
সর্বোচ্চ রান ৪০ ২১১
বল করেছে
উইকেট
বোলিং গড় ৪৮.৫০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২/– ৪১/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে বর্ডার দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ স্পিন বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন বাস্টার ফারার

শৈশবকাল সম্পাদনা

শৈশবকাল থেকে ‘বাস্টার’ নামে পরিচিতি পেয়েছিলেন তিনি।[১] তার পিতা-মাতাও খেলাধূলায় দক্ষ ছিলেন। তার পিতা স্টিফেন ফারার বর্ডার ক্রিকেট দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। অন্যদিকে, তার মাতা দক্ষিণ আফ্রিকার অনূর্ধ্ব-১৮ একক টেনিস চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা বিজয়ী ছিলেন।[২]

কিং উইলিয়ামস টাউন এলাকায় নিজ বাড়ীর কাছাকাছি ডেল কলেজে ভর্তি হন। সেখানেই খেলাধূলায় দক্ষ হয়ে উঠেন। ১৯৫৪ সালে শেষ বর্ষে থাকাকালীন বিদ্যালয়ের ক্রিকেট দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।[৩] ১৯৫৫ সালে শারীরিক শিক্ষা বিষয় নিয়ে গ্রাহামসটাউনের রোডস বিশ্ববিদ্যালয় বিএ শ্রেণীতে পড়াশোনা করতে শুরু করেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯৫৪-৫৫ মৌসুম থেকে ১৯৬৯-৭০ মৌসুম পর্যন্ত বাস্টার ফারারের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ১৫ বছর অতিবাহিত করেন। ১২টি শতক ও ২২টি অর্ধ-শতক সহযোগে ৪৩.৩৭ গড়ে রান তুলেছেন। এছাড়াও, মাঝে-মধ্যে অফ স্পিন বোলিং করে চারটি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পেয়েছেন তিনি।

১৯৫৪-৫৫ মৌসুমে নিজ ১৮শ জন্মদিনের অল্প কয়েকদিন পরই কারি কাপে বর্ডারের সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। নর্থ-ইস্টার্ন ট্রান্সভালের বিপক্ষে ঐ খেলায় তিনি তার একমাত্র ইনিংসে ৭৭ রান সংগ্রহ করেন।[৪] ১৯৫৪-৫৫ ও ১৯৫৫-৫৬ মৌসুমে বর্ডারের পক্ষে আরও সাতটি খেলায় অংশ নেন। তবে, কোন মৌসুমেই অর্ধ-শতরানের সন্ধান পাননি। ফলশ্রুতিতে, টেনিস খেলায় মনোনিবেশ ঘটানোর সিদ্ধান্ত নেন।[৫]

১৯৬০-৬১ মৌসুমে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ফিরে আসেন। বর্ডারের পক্ষে ছয় খেলায় অংশ নিয়ে চারটি অর্ধ-শতরান সহযোগে ৫৫.৪৪ গড়ে ৪৯৯ রান সংগ্রহ করেন। পরের মৌসুমে তিনি বর্ডার দলের অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত হন। ১৯৬২-৬৩ মৌসুমে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রান সংগ্রহে অগ্রসর হন। ৬৩.৪২ গড়ে ৮৮৮ রান তুলেন। অরেঞ্জ ফ্রি স্টেটের বিপক্ষে দুই খেলায় দূর্দান্ত খেলেন। ওয়েকমে অনুষ্ঠিত খেলায় ৯১ ও অপরাজিত ১০০ এবং পূর্ব লন্ডনের খেলায় অপরাজিত ১০৭ রান তুলেন।

১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে এমসিসি’র বিপক্ষে বর্ডার দলকে ৬৬ ও ১০ রান তুলে নেতৃত্ব দেন। তবে, তাকে কোন প্রস্তুতিমূলক খেলা বা টেস্ট খেলানো হয়নি বা পরবর্তীতে ১৯৬৫ সালে ইংল্যান্ড গমনার্থে তাকে দলে রাখা হয়নি। ১৯৬৫-৬৬ মৌসুমে বর্ডারের পক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেলেন। অরেঞ্জ ফ্রি স্টেটের বিপক্ষে দলের ৩৬১ রানের মধ্যে ২৭২ মিনিটে ২০৭ রান তুলেন তিনি।[৬] ১৯৬৬-৬৭ মৌসুমে সফররত অস্ট্রেলীয় একাদশের বিপক্ষে বর্ডারের সদস্যরূপে ৯৫ ও ৫০ রান করেন।

১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে কাজ ও পারিবারিক দায়বদ্ধতার কারণে বর্ডার দলের অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি নেন। তাসত্ত্বেও, স্বতঃস্ফূর্তভাবে খেলা চালিয়ে যেতে থাকেন। ঐ মৌসুমে ৫৭.৩৭ গড়ে ৪৫৯ রান, ১৯৬৮-৬৯ মৌসুমে ৬৫.১২ গড়ে ৫২১ রান তুলেন। এ পর্যায়ে ইস্টার্ন প্রভিন্সের বিপক্ষে নিজ ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ সংগ্রহকে আরও স্ফীত করে ২১১ রানে নিয়ে যান। তন্মধ্যে, দলের সংগ্রহ ছিল ৩৫৫।

টেনিসে অংশগ্রহণ সম্পাদনা

দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় দলের সদস্যরূপে টেনিসে প্রতিনিধিত্ব করেন।[৭] ১৯৫৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার একদল তরুণ টেনিস খেলোয়াড়কে নিয়ে ইংল্যান্ড গমনের প্রস্তাবনা পান। তিনি তা গ্রহণ করেন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনো স্থগিত রাখেন।[৮]

ইংল্যান্ডে কয়েকটি ছোট ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের পর তিনি ১৯৫৬ সালের উইম্বলডন চ্যাম্পিয়নশিপের একক, পুরুষদের দ্বৈত ও মিশ্র দ্বৈত খেলায় অংশ নেন।[৯] প্রথম রাউন্ডের এককের খেলায় অস্ট্রেলিয়ার ডিক পটারকে ৬-৪, ৬-২ ও ৬-৪ পয়েন্টে পরাজিত করেন। তবে, দ্বিতীয় রাউন্ডে সুইডেনের স্টকেনবার্গের কাছে ৬-৪, ৬-২ ও ১২-১০ ব্যবধানে পরাভূত হন।[১০] দক্ষিণ আফ্রিকার ইভর ফিলিপসের সাথে পুরুষদের দ্বৈত খেলায় প্রথম রাউন্ডে মিশরীয় মোহাম্মদ বদর-এল-দিন ও কামাল মুবারককে ৬-৪, ৬-১ ও ৬-৪ ব্যবধানে পরাস্ত করলেও দ্বিতীয় রাউন্ডে সুইডেনের স্টকেনবার্গ ও আল্ফ স্মিটের কাছে ৬-২, ৬-২ ও ১১-৯ ব্যবধানে পরাজিত হন।[১১] মিশ্র দ্বৈতে স্বদেশী এস্তেল ফন টন্ডারের সাথে জুটি গড়ে তৃতীয় রাউন্ডে পৌঁছেন। তবে, ব্রিটিশ জুটি জেরি ওকলি ও প্যাট হার্ডের কাছে ৮-৬ ও ৬-২ ব্যবধানে হেরে যান।[১২] ফিলিপস ও ফন টন্ডার ফারারের সফরকারী দলের সদস্য ছিলেন।

এটিই তার একমাত্র উইম্বলডন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ ছিল। তিনি নিয়মিতভাবে বিদেশে শৌখিন টেনিস খেলায় অংশ নিতেন না। দেশে ফিরে আসার পর সাবেক যুগোস্লাভীয় টেনিস খেলোয়াড় ফ্রাঞ্জো কুকুলজেভিচের পরিচালনায় জোহেন্সবার্গভিত্তিক ক্রীড়াসামগ্রী বিক্রয় প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন।[১৩] জোহেন্সবার্গের ক্লাব প্রতিযোগিতায় তার টেনিস খেলার মানের উত্তরণ ঘটে। তবে, ডেভিস কাপে দক্ষিণ আফ্রিকা দলে তার ঠাঁই হয়নি। কিং উইলিয়ামস টাউনে ফিরে আসার পর স্বীয় পিতার ক্রীড়াসামগ্রী ব্যবসায় সহযোগিতা করেন। স্থানীয় পরিবেশের কারণে তিনি নিয়মিতভাবে টেনিস খেলা ছেড়ে দেন ও ক্রিকেটে মনোনিবেশ ঘটান।[১৪]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ছয়টিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন বাস্টার ফারার। ১ জানুয়ারি, ১৯৬২ তারিখে কেপ টাউনে সফরকারী নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৩ মার্চ, ১৯৬৪ তারিখে অকল্যান্ডে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

অংশগ্রহণকৃত ছয় টেস্টের সবকটিই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছেন। তিনটি নিজ দেশে ও অপর তিনটি বিদেশে। ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনের পর একটি খেলায় অংশগ্রহণের পরপরই কেপ টাউনে অনুষ্ঠিত সফররত নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় টেস্ট খেলার জন্যে তাকে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সদস্যরূপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৬১-৬২ মৌসুমে নিউজিল্যান্ড দল দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আসে। সিরিজের তৃতীয় টেস্টে তার অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে তিনি মাত্র ১১ ও ২০ রান সংগ্রহ করতে সমর্থ হন।

ঐ টেস্ট খেলার দুই সপ্তাহ পর নিজ শহরের ইস্ট লন্ডনের বাফেলো পার্কে সফররত নিউজিল্যান্ড একাদশের বিপক্ষে সাউথ আফ্রিকান কোল্টস একাদশের অধিনায়কত্ব করে দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন। প্রথম ইনিংসে মনোরম ১৪৭ রানের অপরাজিত ইনিংস উপহার দেন। এটিই তার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথম শতরানের ইনিংস ছিল। ফলশ্রুতিতে, তাকে টেস্ট দলে রাখা হয়। চতুর্থ টেস্টে ৪০ এবং পঞ্চম টেস্টে ৭ ও ১০ রান সংগ্রহ করেন তিনি।

অস্ট্রেলিয়া গমন সম্পাদনা

১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে অস্ট্রালেশিয়া গমনার্থে তাকে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের সদস্যরূপে মনোনীত করা হয়। এ সফরে তিনি দলের অন্যতম দল নির্বাচক ছিলেন।[১৫] প্রথম পাঁচ খেলায় অংশ নিয়ে ২০.৫৫ গড়ে মাত্র ১৮৫ রান সংগ্রহ করতে পেরেছিলেন। তন্মধ্যে, হোবার্টে তাসমানিয়া সম্মিলিত একাদশের বিপক্ষে ১০৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। এ সফরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের কোন টেস্টেই অংশ নেননি তিনি। তার অন্তর্ভুক্তির প্রশ্নে ও অপর খেলোয়াড়দেরকে সুযোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে নিজেকে ভোট দেননি।[১৬]

নিউজিল্যান্ড গমনের পর তার খেলার মানের উত্তরণ ঘটতে থাকে। প্রথম টেস্ট শুরুর পূর্বে দুইটি দুইদিনের খেলায় তিনি ১৪৪ ও ৫২ রান সংগ্রহ করেছিলেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজের প্রত্যেকটিতেই তিনি অংশগ্রহণ করেন। ওয়েলিংটন টেস্টে ৩০ ও অপরাজিত ৩৮, ডুনেডিনে ৩৯ এবং অকল্যান্ডে ২১ ও অপরাজিত ৫ রান সংগ্রহ করেছিলেন তিনি।

১৯৬৯-৭০ মৌসুমের শেষের খেলোয়াড়ী জীবনে ৬৭.৩৭ গড়ে ৫৩৯ রান তুলেন। এ মৌসুমে সফররত অস্ট্রেলীয় একাদশের বিপক্ষে ১৫৪ ও ৪২ রান তুলেছিলেন। তন্মধ্যে প্রথম ইনিংসে দলের সংগ্রহ ছিল ২৯৯। উইজডেনে মন্তব্য করা হয় যে, ডারবানে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্টে গ্রেইম পোলকব্যারি রিচার্ডসের টেস্ট শতকের চেয়ে তার এ শতরানটি কিঞ্চিৎ উন্নততর ছিল। তবে, তার কাছের দল নির্বাচক তখন শতশত মাইল দূরে অবস্থান করছিলেন।[১৭] ঐ মৌসুমে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি অন্যান্য খেলায়ও সিদ্ধহস্তের অধিকারী ছিলেন। ক্রিকেট খেলায় ডানহাতে ব্যাটিং ও বোলিং করতেন। তবে, টেনিস ও স্কোয়াশ খেলায় বামহাতে খেলতেন তিনি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে টেনিস ও হকি খেলায় অংশ নিয়েছেন। নিজ দেশের পক্ষে ক্রিকেট ও হকি খেলায় অংশ নেন। এছাড়াও, বর্ডারের পক্ষে টেনিস, বোলস, গল্ফ ও স্কোয়াশ খেলায় অংশ নেন। ১৯৬২ সালে এসএ ক্রিকেট অ্যানুয়েল কর্তৃক বর্ষসেরা পাঁচজন খেলোয়াড়ের অন্যতম হিসেবে মনোনীত হন। ১৯৬৮ সালে ক্রিকেটে অসামান্য ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ বর্ডার বর্ষসেরা স্পোর্টস স্টার হন। এরপর, ১৯৭১ সালেও একই পুরস্কার পান; তবে তা হকি খেলায় অংশগ্রহণের কারণে। বুস্টারের প্রধান সম্পদ ছিল তার বিস্ময়কর ক্রীড়াসুলভ মনোভাব ও অপ্রতিরোধ্য ক্ষীপ্রময়তা সবিশেষ লক্ষ্যণীয়।

১৯৬০-এর দশকের শুরুরদিকে বর্ডারের পক্ষে হকি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। ১৯৭১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে তিনটি খেলায় অংশ নেন। প্রতিপক্ষীয় দল ছিল রোডেশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া।[১৮] টেনিস খেলা থেকে চলে আসার পর স্কোয়াশ খেলায় অংশ নেন। ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে বেশ কয়েকবার বর্ডারের চ্যাম্পিয়ন ছিলেন ও বর্ডারের প্রতিনিধিত্ব করেন। নিয়ম-কানুনের পরিবর্তনের ফলে উভয় হাতেই র‍্যাকেট নিয়ে খেলতে পারতেন। ১৯৮০-এর দশকে মাস্টার্স টুর্নামেন্টে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধিত্ব করেন।[১৯]

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর গল্ফের দিকে ভীষণভাবে ঝুঁকে পড়েন। ১৯৭৭ ও ১৯৭৮ সালে বর্ডারের প্রতিনিধিত্ব করেন।[২০] ৭৫ বছর বয়সে ইস্ট লন্ডন গল্ফ ক্লাবের পক্ষে সর্বমোট ৭৪ স্কোর করেন।[২১] ২০০০-এর দশকে জ্যেষ্ঠদের বোলস খেলায় বর্ডার ও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধিত্ব করেন।[২২] ১৯৭৯ সালে টু ওশেন্স ম্যারাথনে ১২২৯জন প্রতিযোগীর মধ্যে তিনি ৫০২তম স্থান দখল করেন। একই বছরে কমরেডস ম্যারাথনে অংশ নেন। ১৯৯৩, ১৯৯৫ ও ১৯৯৬ সালে আর্জাস সাইকেল ট্যুরে মাঠে প্রত্যেকবারই প্রথম তৃতীয় হয়েছিলেন।[২৩]

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত তিনি। আগস্ট, ১৯৬০ সালে গ্রাহামসটাউনের মরিন ফুলারটনের সাথে পরিণয়সূত্র আবদ্ধ হন তিনি।[২৪] তাদের এক কন্যা ও দুই পুত্র রয়েছে। অনেকগুলো বছর কিং উইলিয়ামস টাউনে পারিবারিক ক্রীড়াসামগ্রী প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার পর স্বীয় পুত্র কলিনের কাছে তা হস্তান্তর করেন।[২৫]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Colin Bryden, All-Rounder: The Buster Farrer Story, Aloe Publishing, Kidd's Beach, 2013, p. 14.
  2. Bryden, p. 13.
  3. Bryden, p. 20.
  4. "Border v North-Eastern Transvaal 1954-55"CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মার্চ ২০১৬ 
  5. Christopher Martin-Jenkins, The Complete Who's Who of Test Cricketers, Rigby, Adelaide, 1983, p. 284.
  6. Playfair Cricket Monthly, March 1966, p. 32.
  7. Bryden, p. 30.
  8. Bryden, p. 31.
  9. Lynch, Steven। "Who was the last Test cricketer to play in the singles at Wimbledon?"Ask Steven - Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ৪ জুন ২০১২ 
  10. "Wimbledon 1956 at Scoreshelf"। সংগ্রহের তারিখ ১৭ অক্টোবর ২০১২ 
  11. Bryden, p. 35.
  12. Bryden, p. 36.
  13. Bryden, p. 37.
  14. Bryden, p. 38.
  15. Wally Grout, My Country's Keeper, Pelham, London, 1965, p. 117.
  16. Bryden, pp. 68-81.
  17. Wisden 1971, p. 896.
  18. Bryden, pp. 124-27.
  19. Bryden, pp. 129-36.
  20. Bryden, pp. 139-45.
  21. Bryden, p. 137.
  22. Bryden, pp. 146-49.
  23. Bryden, p. 175.
  24. Bryden, p. 39.
  25. Sports Trader June–July 2009 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে Retrieved 22 November 2012

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা