এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ
এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ (সংক্ষেপে এসিজিএল এবং পূর্বে এএফসি প্রেসিডেন্ট'স কাপ নামে পরিচিত) হচ্ছে এশীয় ফুটবল ক্লাবগুলোর মধ্যে ২০০৫ সাল থেকে এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) কর্তৃক আয়োজিত একটি বার্ষিক ফুটবল ক্লাব প্রতিযোগিতা। ক্লাবগুলো তাদের ঘরোয়া লিগ এবং কাপ প্রতিযোগিতার ফলাফলের ভিত্তিতে এই প্রতিযোগিতায় খেলার জন্য যোগ্যতা অর্জন করে। এটি এশীয় ক্লাব ফুটবলের তৃতীয় স্তরের প্রতিযোগিতা,যা এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এলিট এবং এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২ উভয় লিগের নিম্নস্তরের লিগ। এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী দল ঘরোয়া প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উত্তীর্ণ না হতে পারলেও পরবর্তী মৌসুমে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২-এ পরোক্ষ প্রাথমিক পর্বে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবে।
আয়োজক | এএফসি |
---|---|
প্রতিষ্ঠিত | ২০০৫ (২০২৪ সালে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত) |
অঞ্চল | এশিয়া |
দলের সংখ্যা | ১৮ (গ্রুপ পর্ব) |
উন্নীত | এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২ |
সম্পর্কিত প্রতিযোগিতা | এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এলিট (১ম স্তর) এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২ (২য় স্তর) |
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন | এইচটিটিইউ (১ম শিরোপা) |
সবচেয়ে সফল দল | রেগার তুরসুনজোদা (৩টি শিরোপা) |
ওয়েবসাইট | the-afc.com |
২০২৪–২৫ এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ |
পূর্বে এএফসি প্রেসিডেন্ট'স কাপ নামে পরিচিত এই প্রতিযোগিতাটি ২০২৪–২৫ মৌসুমে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ নামে নামকরণ করে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে (যা ২০১৪ সালে বিলুপ্ত হয়েছিল), একই মৌসুমের এই প্রতিযোগিতার বিন্যাসও পরিবর্তন করা হয়েছে। এএফসি ফুটবল প্রতিযোগিতার রেকর্ডের উদ্দেশ্যে, এএফসি প্রেসিডেন্ট'স কাপএবং এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগকে একই প্রতিযোগিতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যেখানে নামের পরিবর্তনটি শুধু পুনঃনামকরণ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
এপর্যন্ত এই প্রতিযোগিতাটি ৭টি ক্লাব জয়লাভ করেছে, যার মধ্যে ২টি ক্লাব একাধিকবার জয়লাভ করেছে। তাজিকিস্তানি ক্লাব রেগার তুরসুনজোদা এই প্রতিযোগিতার ইতিহাসের সবচেয়ে সফল ক্লাব, যারা সর্বমোট ৩টি করে শিরোপা জয়ালাভ করেছে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কিরগিজস্তানি ক্লাব দোর্দোই বিশকেক, যারা এপর্যন্ত ২ বার করে শিরোপা জয়লাভ করেছে। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন তুর্কমেনিস্তানি ক্লাব এইচটিটিইউ ২০১৪ সালের ফাইনালে উত্তর কোরীয় ক্লাব রিমিয়ংসুকে ২–১ গোলে পরাজিত করে ক্লাবের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শিরোপা ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছিল।[১] এই প্রতিযোগিতায় তাজিকিস্তানি ক্লাবগুলো সর্বাধিক ৪ বার শিরোপা জয়লাভ করেছে, পরবর্তীতে রয়েছে কিরগিজস্তান এবং তুর্কমেনিস্তানের ক্লাবগুলো (যারা এপর্যন্ত ২ বার করে শিরোপা জয়লাভ করেছে)।
ইতিহাস
সম্পাদনা২৩ ডিসেম্বর ২০২২-এ ঘোষণা করা হয়েছিল যে এএফসি ক্লাব প্রতিযোগিতার কাঠামো প্রতিষ্ঠিত ফরম্যাট থেকে পরিবর্তিত হবে। নতুন পরিকল্পনা অধীনে, এশিয়ান ফুটবলের শীর্ষ ক্লাব প্রতিযোগিতায় পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলে বিভক্ত শুধুমাত্র ২৪টি দল থাকবে, যখন দ্বিতীয় স্তরে ৩২টি দল থাকবে, একই লাইনে বিভক্ত হবে। এটিও ঘোষণা করা হয়েছিল যে দেশগুলির ক্লাবগুলির জন্য একটি তৃতীয়-স্তরের প্রতিযোগিতা শুরু হবে যারা শীর্ষ দুটি ক্লাব প্রতিযোগিতায় সরাসরি যোগ্যতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে।[২] ১৪ আগস্ট ২০২৩-এ, এটি নিশ্চিত করা হয়েছিল যে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হবে ২০২৪-২৫ মৌসুম থেকে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ নামে।[৩]
প্রতিযোগিতার ধরন
সম্পাদনা২০০৫ সালে এই টুর্নামেন্টের সূচনা থেকে, অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা প্রথম ৮ টি থেকে বাড়িয়ে ১১ টি করা হয় এবং পরবর্তীতে ১২ টি করা। ২০০৫ থেকে ২০০৭ সালের টুর্নামেন্টগুলোতে ৮ টি দল ২ টি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলত। দুইটি গ্রুপ-ই একটি আয়োজক রাষ্ট্রে খেলত। এই দুইটি গ্রুপের মধ্য থেকে, প্রতিটি গ্রুপের বিজয়ী এবং রানার আপ দল সেমি ফাইনালে উত্তীর্ণ হত এবং আয়োজক দেশে তারা খেলত।
২০০৮ সালে, টুর্নামেন্টকে ১১ টি ক্লাবে বাড়ানো হয়। এই জন্য, বাছাইপর্বের সূচনা করা হয়। ১১ টি ক্লাবকে ৩ টি গ্রুপে ভাগ করা হত। দুইটি গ্রুপে ৪ টি করে ক্লাব এবং একটিতে ৩ টি ক্লাব খেলত। প্রতিটি গ্রুপ ভিন্ন ভিন্ন দেশে খেলত। গ্রুপের ক্লাবগুলোর যেকোনো একটি দেশ স্বাগতিক হত সেই গ্রুপের জন্য। প্রতিটি গ্রুপের বিজয়ী এবং রানার আপ চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা খেলত, যা পরবর্তীতে অন্য কোন দেশে খেলা হত।
২০১১ সালে, টুর্নামেন্টকে আরও বাড়িয়ে ১২ টি ক্লাবের করা হয়। এই জন্য ৪ টি ক্লাব করে মোট ৩ টি বাছাই পর্বের গ্রুপে ভাগ করা হয়। অতঃপর গ্রুপ বিজয়ী এবং রানার আপ চূড়ান্ত পর্বে খেলার জন্য নির্বাচিত হয়। এরপর, ৬ টি ক্লাবকে ২ টি গ্রুপে ভাগ করা হয়। এদের মাঝে সেরা ২ ক্লাব ফাইনাল খেলে। এর মানে এই পর্বে নকআউট পদ্ধতি চালু নেই।[৪]
অন্যান্য দেশ, যাদের একটি করে ক্লাব অংশ নিতে পারবে কিন্তু এখনো নেয়নি, তারা হলঃ ব্রুনেই দারুসসালাম, টিমর লেস্তে, গুয়াম, মাকাও এবং আফগানিস্তান।
২০১২ সালের মার্চে, এএফসি ঘোষণা করে যে, উত্তর মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জ এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ এবং এএফসি প্রেসিডেন্টস কাপ খেলতে পারবে যদি তারা নির্দিষ্ট কিছু শর্ত পুরণ করে।[৫]
২০১৩ সালের নভেম্বরে, এএফসি ঘোষণা করে যে, এএফসি প্রেসিডেন্টস কাপ ২০১৪ হবে এই টুর্নামেন্টের শেষ আসর।[৬]
ফলাফল
সম্পাদনাবছর | আয়োজক | ফাইনাল | সেমি-ফাইনালে পরাজিত দল | ||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
বিজয়ী | ফলাফল | রানার্স-আপ | |||||
এএফসি প্রেসিডেন্টস কাপ | |||||||
২০০৫ | নেপাল | রেগার-তাদায | ৩–০ | দোরদোই-ডিনামো | ব্লু স্টার এসসি থ্রি স্টার ক্লাব | ||
২০০৬ | মালয়েশিয়া | দোরদোই-ডিনামো | ২–১ (অ.স.প.) |
বখশ | খেমারা তাতুং | ||
২০০৭ | পাকিস্তান | দোরদোই-ডিনামো | ২–১ | মহেন্দ্র পুলিশ ক্লাব | রত্নম স্পোর্টস ক্লাব রেগার-তাদায | ||
২০০৮ | কিরগিজিস্তান | রেগার-তাদায | ১–১ (অ.স.প.) (৪–৩ পে.) |
দোরদোই-ডিনামো | এফসি আসগাবাত মহেন্দ্র পুলিশ ক্লাব | ||
২০০৯ | তাজিকিস্তান | রেগার-তাদায | ২–০ | দোরদোই-ডিনামো | এফসি আসগাবাত ওয়াপদা | ||
২০১০ | মায়ানমার | ইয়াদানারবন |
১–০ (অ.স.প.) |
দোরদোই-ডিনামো | এইচটিটিইউ আসগাবাত বখশ কুরঘোনটেপ্পা | ||
২০১১ | তাইওয়ান | তাইওয়ান পাওয়ার কোম্পানি | ৩–২ | নমপেন ক্রাউন | — | ||
২০১২ | তাজিকিস্তান | ইস্তিকলোল | ২–১ | মার্কাজ শাবাব আল-আম'আরি | — | ||
২০১৩ | মালয়েশিয়া | নেবিৎচি ফুটবল দল | ১–০ | খান ল্যাব | — | ||
২০১৪ | শ্রীলঙ্কা | এইচটিটিইউ আসগাবাত | ২–১ | রিমইয়ংসু | — | ||
এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ | |||||||
২০২৪/২৫ | – |
দেশগত পারফরম্যান্স
সম্পাদনা# | দেশ | বিজয়ী | রানার্স-আপ |
---|---|---|---|
১ | তাজিকিস্তান | ৪ | ১ |
২ | কিরগিজিস্তান | ২ | ৪ |
৩ | তুর্কমেনিস্তান | ১ | ০ |
৪ | মিয়ানমার | ১ | ০ |
চীনা তাইপেই | ১ | ০ | |
৬ | কম্বোডিয়া | ০ | ১ |
নেপাল | ০ | ১ | |
পাকিস্তান | ০ | ১ | |
ফিলিস্তিন | ০ | ১ | |
উত্তর কোরিয়া | ০ | ১ |
ক্লাবগত পারফরম্যান্স
সম্পাদনা- ২০০৫–২০১৪: এএফসি প্রেসিডেন্টস কাপ
- ২০২৪–বর্তমান: এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগ
ক্লাব | বিজয়ী | রানার্স-আপ | বিজয়ী সাল | পরাজিত সাল |
---|---|---|---|---|
রেগার তাদায | ৩ | ০ | (২০০৫, ২০০৮, ২০০৯) | |
দরদই ডাইনামো | ২ | ৪ | (২০০৬, ২০০৭) | (২০০৫, ২০০৮, ২০০৯, ২০১০) |
যাদানারবন | ১ | ০ | (২০১০) | |
তাইওয়ান পাওয়ার কোম্পানি | ১ | ০ | (২০১১) | |
এস্তেঘলাল দুশানবে | ১ | ০ | (২০১২) | |
বাল্কান | ১ | ০ | (২০১৩) | |
ভাখশ | ০ | ১ | (২০০৬) | |
মহেন্দ্র পুলিশ ক্লাব | ০ | ১ | (২০০৭) | |
নমপেন ক্রাউন | ০ | ১ | (২০১১) | |
মারকায শাবাব আল-আমারি | ০ | ১ | (২০১২) | |
কেআরএল এফসি | ০ | ১ | (২০১৩) |
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "AFC President's Cup 2014 - Results, fixtures, tables and stats - Global Sports Archive"। globalsportsarchive.com।
- ↑ "এএফসি প্রতিযোগিতা কমিটি এশিয়ান ক্লাব ফুটবলকে উন্নীত করতে কৌশলগত সংস্কারের সুপারিশ করেছে"। AFC। ২৩ ডিসেম্বর ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ডিসেম্বর ২০২২।
- ↑ "এএফসি কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৪/২৫ থেকে এশিয়ান ক্লাব ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পুরস্কারের পার্স অনুমোদন করেছে; এএফসি মহিলা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ঘোষণা করেছে"। AFC। ১৪ আগস্ট ২০২৩। সংগ্রহের তারিখ ১৪ আগস্ট ২০২৩।
- ↑ "AFC Competitions Committee meeting"। ১৮ আগস্ট ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৪।
- ↑ "Competitions Committee takes key decisions"। The-afc.com। ২০১২-০৩-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৮-১৩।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৬ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ মার্চ ২০১৯।