হুসাইন আহমদ মাদানির কালপঞ্জি

উইকিপিডিয়া কালপঞ্জি

হুসাইন আহমদ মাদানির কালপঞ্জিতে উনবিংশ-বিংশ শতাব্দীর ভারতীয় ইসলামি পণ্ডিত, স্বাধীনতা সংগ্রামী, রাজনীতিবিদ ও দার্শনিক হুসাইন আহমদ মাদানির জীবনের উল্লেখযোগ্য ঘটনাসমূহের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হয়েছে।

হুসাইন আহমদ মাদানির কালপঞ্জি
বছর বয়স ঘটনা
১৮৭৯ ৬ অক্টোবর ভারতের উত্তরপ্রদেশের অন্তর্গত উন্নাও জেলার বাঙ্গারমৌ নামক মৌজায় জন্মগ্রহণ করেন।
১৮৮৩ শিক্ষাজীবনের শুরু।
১৮৮৪ স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
১৮৯২ ১৩ দারুল উলুম দেওবন্দে ভর্তি হন।
১৮৯৮ ১৯ দারুল উলুম দেওবন্দে দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করেন।
রশিদ আহমদ গাঙ্গুহির নিকট বায়আত গ্রহণ করেন।
১৮৯৯ ২০ স্বপরিবারে মদিনায় চলে যান এবং মসজিদে নববীতে অবৈতনিক শিক্ষকতা শুরু করেন।
ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কির কাছে তাসাউফের প্রথম সবক গ্রহণ করেন।
১৯০০ ২১ চিঠির মাধ্যমে রশিদ আহমদ গাঙ্গুহির কাছ থেকে ভারতে আসার নির্দেশ পান।
১৯০১ ২২ ভারতে এসে রশিদ আহমদ গাঙ্গুহির সান্নিধ্যে আড়াই মাস থাকার পর খেলাফত লাভ করেন।
১৯০২ ২৩ পাশাপাশি মদিনার শামসিয়্যাবাগ মাদ্রাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন।
১৯০৮ ২৯ ভারতে আগমণ করে মাহমুদ হাসান দেওবন্দির নিকট দ্বিতীয়বারের মত হাদিস অধ্যয়ন করেন।
প্রথম স্ত্রীর মৃত্যু হয়।
১৯০৯ ৩০ প্রথমবারের মত দারুল উলুম দেওবন্দে শিক্ষকতা শুরু করেন।
১৯১০ ৩১ দারুল উলুম দেওবন্দের দস্তারবন্দী অনুষ্ঠানে পাগড়ি লাভ করেন।
১৯১৫ ৩৬ মদিনায় মাহমুদ হাসান দেওবন্দির স্বাধীনতা আন্দোলনের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
১৯১৬ ৩৭ মাহমুদ হাসান দেওবন্দির সাথে প্রথমবার গ্রেফতার হয়ে মাল্টায় নির্বাসিত হন।
১৯১৮ ৩৯ দ্বিতীয় স্ত্রীর মৃত্যু হয়।
১৯২০ ৪১ ৮ জুন ৩ বছর ৭ মাস কারাবরণের পর মুক্তিলাভ করে ভারতে চলে আসেন।
ডিসেম্বর মাহমুদ হাসান দেওবন্দির নির্দেশে কলকাতায় আবুল কালাম আজাদের নবপ্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসায় সদরুল মুদাররিসিন তথা প্রধান অধ্যাপকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
১৯২১ ৪২ ২০ ও ২১ ফেব্রুয়ারি ভারতের সিউহারায় একইস্থানে অনুষ্ঠিত খিলাফত আন্দোলনজমিয়ত উলামায়ে হিন্দের বার্ষিক অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
২৫ মার্চ রংপুরে আঞ্জুমানে উলামায়ে বাঙ্গালের সমাবেশে বক্তব্য দেন।
৮ ও ৯ জুলাই মুহাম্মদ আলি জওহরের নেতৃত্বে করাচিতে অনুষ্ঠিত “অল ইন্ডিয়া খেলাফত কনফারেন্সে” ব্রিটিশ সরকারের সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীতে চাকরি করা হারাম ঘোষণা করে ঐতিহাসিক ফতোয়া প্রদান করেন।
সেপ্টেম্বর দেওবন্দ থেকে দ্বিতীয়বারের মত গ্রেফতার হয়ে করাচিতে কারাবরণ শুরু করেন।
১৯২৩ ৪৪ অক্টোবর করাচির কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করেন।
কাউন্সিল অব বেঙ্গল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়মিশর সরকারের পক্ষ থেকে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার প্রস্তাব পান।
১৯২৪ ৪৫ ডিসেম্বর সিলেট আগমণ করে শিক্ষাদীক্ষায় রত হন।
১৯২৮ ৪৯ দারুল উলুম দেওবন্দে চলে এসে সদরুল মুদাররিসিন পদ গ্রহণ করেন।
আসআদ মাদানি জন্মলাভ করেন।
১৯৩০ ৫১ মে আমরোহায় জমিয়তের সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন এবং পূর্ণ স্বাধীনতার দাবির পক্ষে সমর্থন জ্ঞাপন করেন।
১৯৩২ ৫৩ আইন অমান্য আন্দোলন শুরু হলে জমিয়ত বেআইনি ঘোষিত হওয়ার পর জমিয়তের ৩য় সর্বাধিনায়ক নিযুক্ত হন।
মজঃফরনগর থেকে তৃতীয়বারের মত গ্রেফতার হন।
১৯৩৬ ৫৭ নির্বাচন উপলক্ষে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ তার সাথে বৈঠক করেন এবং তারপর মাদানি মুসলিম লীগের পার্লামেন্টারি বোর্ডের সদস্য নির্বাচিত হন।
তৃতীয় স্ত্রীর মৃত্যু হয়।
১৯৩৭ ৫৮ মুসলিম লীগের সাথে মনোমালিন্যের কারণে পার্লামেন্টারি বোর্ড থেকে পদত্যাগ করেন।
১৯৩৮ ৫৯ জানুয়ারি তার সমালোচনা করে মুহাম্মদ ইকবাল একটি কবিতা প্রকাশ করলে বিতর্কের সৃষ্টি হয়, যা ইতিহাসে মাদানি-ইকবাল বিতর্ক নামে পরিচিত।
মুত্তাহেদায়ে কওমিয়্যাত আওর ইসলাম নামে তার ঐতিহাসিক গ্রন্থ প্রকাশ করেন।
কেফায়াতুল্লাহ দেহলভির স্বেচ্ছায় পদত্যাগের পর জমিয়তের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
১৯৪০ ৬১ ৭–৯ জুন জৌনপুরে জমিয়তের বার্ষিক অধিবেশনে তৃতীয় সভাপতি নির্বাচিত হন।
১৯৪১ ৬২ আরশাদ মাদানি জন্মলাভ করেন।
১৯৪২ ৬৩ ২২ মার্চ জমিয়তের লাহোরে অনুষ্ঠিত বার্ষিক অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
২৫ জুন সাহারানপুর রেলস্টেশন থেকে চতুর্থবারের মত গ্রেফতার হয়ে নৈনি জেলে কারাবন্দী হন।
১৯৪৪ ৬৫ ২৬ আগস্ট নৈনি জেল থেকে মুক্তিলাভ করেন।
১৯৪৫ ৬৬ ৭–৯ মে সাহারানপুরে তার সভাপতিত্বে ৩০ হাজার সদস্যের উপস্থিতিতে জমিয়তের অধিবেশনে ভারতের ‘খসড়া সংবিধান ও তার মূলনীতি’ গৃহীত হয়।
১৯৪৬–এর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য জাতীয়তাবাদী মুসলিম দলগুলো তাকে সভাপতি করে ‘মুসলিম পার্লামেন্টারি বাের্ড’ গঠন করে।
১৯৪৬ ৬৭ ১৬ এপ্রিল ভারতের স্বাধীনতার রূপরেখা ও পদ্ধতি আলােচনায় জমিয়তের সাথে ব্রিটিশ মন্ত্রীমিশনের বৈঠকে ‘মাদানি ফর্মূলা’ পেশ করা হয়।
১৯৫৩ ৭৪ নকশে হায়াত নামে আত্মজীবনী প্রকাশ করেন।
১৯৫৪ ৭৫ পদ্মভূষণ পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৫৫ ৭৬ জানুয়ারি মুম্বইয়ে তার নেতৃত্বে ‘দ্বীনি তালিমী কনভেনশন’ নামে একটি শিক্ষাবাের্ড গঠিত হয়।
তার জীবনের শেষ হজ্জ সম্পাদনের জন্য সৌদি আরব গমন করলে জেদ্দা নৌবন্দরে তাকে রাজকীয় সম্মান জানানো হয় এবং তাকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ‘শায়খুল আরব ওয়াল আজম’ খেতাব দিয়ে বিশেষ প্রবন্ধ ছাপানো হয়।
১৯৫৭ ৭৮ ২৫ আগস্ট দারুল উলুম দেওবন্দের সদরুল মুদাররিসিনের দায়িত্ব ফখরুদ্দীন আহমদ মুরাদাবাদীর নিকট ন্যস্ত করেন।
৫ ডিসেম্বর নিজ বাসায় মৃত্যুবরণ করেন।
৬ ডিসেম্বর দারুল উলুম দেওবন্দ চত্বরে মুহাম্মদ জাকারিয়া কান্ধলভির ইমামতিতে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে মাজারে কাসেমিতে মাহমুদ হাসান দেওবন্দির পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।
১৯৫৮ ফেব্রুয়ারি রোজনামা আল জমিয়তের শায়খুল ইসলাম সংখ্যা প্রকাশিত হয়।
২০১২ ২৯ আগস্ট ভারতীয় ডাক বিভাগ তার সম্মানে একটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করে।
২০১৯ ১৮ ফেব্রুয়ারি সিলেটে তার স্মৃতি বিজড়িত স্থানে মাদানি চত্বর নির্মিত হয়।

আরও দেখুন সম্পাদনা

গ্রন্থপঞ্জি সম্পাদনা