হাউজে আল কাওসার (আরবি: حوض الكوثر, প্রতিবর্ণীকৃত: Ḥawḍ al-Kawthar[২]) বলতে জান্নাতে বিদ্যমান একটি নদী বা ঝর্নাধারাকে বোঝানো হয়। ফার্সী ভাষায় এটিকে 'আবে হায়াত' শব্দ দ্বারা বোঝানো হয়, যদিও এ শব্দটির অন্য অর্থও রয়েছে। ইসলামী বিশ্বাস মতে কেয়ামতের দিন সবাইকে যখন পুনরুত্থিত করা হবে তখন জেগে ওঠার পর সবাই অনেক বেশি পিপাসা নিয়ে এবং বিশৃঙ্খল পরিবেশে তৃষ্ণা নিবারণ করার চেষ্টা করবে। তারপর, আল্লাহ তা’য়ালা মুহাম্মাদ কে দায়িত্ব দেবেন বাছাই করার জন্য যে, বিশ্বাসীদের মধ্যে তৃষ্ণা নিবারণে কে কে অগ্রাধিকার পাবেন। এর পর তাদেরকে তেষ্টা মেট‍াবার জন্য হাউজে কাওসার থেকে শীতল আর সুস্বাদু পানি পান করানো হবে। কুরআন শরীফের সূরা আল-কাওসারে এই দিনের পরিস্থিতির ব্যাপারে বলা হয়েছে, তবে বেশিরভাগ আয়াতের ব্যাখা সূরাটি বিশেষত মুহাম্মাদকে দেওয়া আল্লাহ তা’য়ালার বিশেষ নেয়ামত বা প্রাচুর্য সম্পর্কে নির্দেশ করে।[৩][৪] অন্যান্য নবী ও রাসূলগণের তুলনায় মুহাম্মাদের বিশেষ মর্যাদা এখানে তুলে ধরা হয়েছে।

এই রেখাচিত্রটি শেষ বিচারের দিন "হাশরের ময়দানে"র (আরদ্ আল-হাশর)। এটি আনুমানিক ১২৩৮ সালে করা সুফী তত্ত্ববিদ ও দার্শনিক ইবনে আরাবির স্বহস্তে লিখিত ফুতুহাত আল-মাক্কিয়ার পান্ডুলিপি থেকে নেয়া। এটাতে আরশ(আল্লাহ তা’য়ালার সিংহাসন), ধার্মিকদের (আল-আমিনুন) জন্য মঞ্চ, ফেরেশতাদের সাত সারি, জিব্রাইল (আল-রুহ), আ’রাফ (বেষ্টনী), হাউজে আল কাওসার, আল-মাকাম আল-মাহমুদ (পরম আরাধ্য মঞ্চ, যেখানে মুহাম্মাদ বিশ্বস্তদের পক্ষে সুপারিশ করার জন্য দাঁড়াবেন), মিজান (পাপ-পূণ্য মাপার ‍দাড়িঁপাল্লা), পুল সিরাত (সেতু), জাহান্নাম (দোজখ) এবং মারজ আল-জান্নাত (বেহেশতের চিরশ্যামল মাঠ) দেখানো হয়েছে।[১]

হাউজে কাওসার বর্ণনার গূঢ় অর্থ হ'ল মুসলমানদেরকে শেষ বিচারের দিনের ভয়াবহতা সর্ম্পকে সচেতন করা এবং সেই অনুসারে তাদের পরকালের ভালোর জন্য এখন থেকেই পরিকল্পনা করতে অনুপ্রাণিত করা। এটি মুহাম্মাদের প্রতি তাদের ভালবাসার প্রকাশ এবং কেয়ামতের দিনের না দেখা বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করে।

আরও পড়ুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. বেগলি, ওয়েইন ই, দ্যা গার্ডেন অব দ্যা তাজমহল: এ কেস স্টাডি অব মুগল আকিটেকচারাল প্ল্যানিং এন্ড ‍সিম্বলিজম, ইন: ওয়েসকোট, জেমস এল; উওলস্কে-বুলমাহ্‌ন, জোয়াসিম (১৯৯৬) Mughal Gardens: Sources, Places, Representations, and Prospects ডুমবার্টন ওক্স, ওয়াশিংটন ডি,সি,আইএসবিএন ০৮৮৪০২২৩৫৮. পৃষ্ঠা ২২৯-২৩১
  2. হউতস্‌মা, এম,থ, (১৯৯৩)। ই,জে, ব্রিল’স ফার্ষ্ট এনসাইক্লোপিডিয়া অব ইসলাম, ১৯১৩-১৯৩৬। ব্রিল। পৃষ্ঠা ৮৩৫। আইএসবিএন 90-04-09790-2 
  3. তাদাব্বুর-ই-কুরআন লেখক আমিন আহসান ইসলাহী - একজেসিসেস এ্যাভেইলেভল হিয়ার
  4. একজেসিসেস বাই জাভেদ আহমদ ঘামিদি