শেন ও’কনর

নিউজিল্যান্ডীয় ক্রিকেটার

শেন ব্যারি ও’কনর (ইংরেজি: Shayne O'Connor; জন্ম: ১৫ নভেম্বর, ১৯৭৩) হকস বে এলাকার হ্যাস্টিংসে জন্মগ্রহণকারী সাবেক নিউজিল্যান্ডীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯৭ থেকে ২০০১ সময়কালে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন।

শেন ও’কনর
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামশেন ব্যারি ও’কনর
জন্ম (1973-11-15) ১৫ নভেম্বর ১৯৭৩ (বয়স ৫০)
হ্যাস্টিংস, হকস বে, নিউজিল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনবামহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২০২)
১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৯৭ বনাম জিম্বাবুয়ে
শেষ টেস্ট৮ নভেম্বর ১৯৯৭ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১০৩)
২০ মে ১৯৯৭ বনাম শ্রীলঙ্কা
শেষ ওডিআই৪ নভেম্বর ২০০০ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই
ম্যাচ সংখ্যা ১৯ ৩৮
রানের সংখ্যা ১০৩ ২৪
ব্যাটিং গড় ৫.৭২ ৩.৪২
১০০/৫০ ০/০ ০/০
সর্বোচ্চ রান ২০
বল করেছে ৩৬৬৭ ১৪৮৭
উইকেট ৫৩ ৪৬
বোলিং গড় ৩২.৫২ ৩০.৩৪
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং ৫/৫১ ৫/৩৯
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৬/- ১১/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৬ জানুয়ারি ২০১৭

নিউজিল্যান্ডীয় ঘরোয়া ক্রিকেটে সেন্ট্রাল ওতাগো ও সাউথ আইল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ১৯৯৪-৯৫ থেকে ২০০২-০৩ মৌসুম পর্যন্ত সময় কাটান। দলে তিনি মূলতঃ বামহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন। এছাড়াও, বামহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে নামতেন শেন ও’কনর

খেলোয়াড়ী জীবন সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ১৯ টেস্ট ও ৩৮টি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নিয়েছেন। ১৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৭ তারিখে হারারেতে স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে জিজে রেনি ও এজি হাকলের সাথে তারও একযোগে টেস্ট অভিষেক হয়। এছাড়াও, প্রথমবারের মতো এ টেস্টে তিন জোড়া ভাইয়ের (এ ও জিডব্লিউ ফ্লাওয়ার, পিএ ও বিসি স্ট্র্যাং, জেএ ও জিজে রেনি) অংশগ্রহণ ঘটে। গাই হুইটল তার প্রথম টেস্ট শিকারে পরিণত হন। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি রেনি ও ফ্লাওয়ার ভ্রাতৃদ্বয়কে আউট করেন। খেলায় তিনি ১/১০৪ ও ৩/৭৩ এবং ব্যাট হাতে ২ ও অপরাজিত ১ রান তুলেন। ঐ টেস্টটি ড্রয়ে পরিণত হয়েছিল। নভেম্বর, ২০০১ সালে ব্রিসবেনে সর্বশেষ টেস্টে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হন। খেলায় তিনি ০/৬৭ পান। এ খেলাটি ড্র হয়েছিল।[১]

২০ মে, ১৯৯৭ তারিখে হায়দ্রাবাদে (ডেকান) শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওডিআই অভিষেক ঘটে। ৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৮ তারিখে সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওডিআই সিরিজে চমকপ্রদ নৈপুণ্য প্রদর্শন করেন। ওয়েলিংটনের ব্যাসিন রিজার্ভে অনুষ্ঠিত সিরিজের ২য় ওডিআইয়ে তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন।[২] জেএ রেনিকে আউট করে তিনি সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। এরপূর্বে তার সেরা বোলিং ছিল ৪/৫১।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ১৯৯৪-৯৫ থেকে ২০০২-০৩ মৌসুম পর্যন্ত সময় কাটান। ২১ বছর বয়সে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। তখন থেকেই শর্ট লেন্থে বল ফেলে বাউন্সার সহযোগে আক্রমণে শামিল হতেন। এরপর বলকে ইন-সুইঙ্গারের দিকে ধাবিত করতে মনোযোগী হন। ফলশ্রুতিতে অস্ট্রেলিয়াদক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আকস্মিকভাবে সফলতা পান।

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সম্পাদনা

২০০০ সালে কেনিয়ায় অনুষ্ঠিত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় আসরে নিউজিল্যান্ড দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। ১১ অক্টোবর নাইরোবির জিমখানা ক্লাব গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত সেমিফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন। খেলায় তিনি ৫/৪৬ বোলিং পরিসংখ্যান করেন। সাঈদ আনোয়ারের শতরান স্বত্ত্বেও ও’কনরের বিধ্বংসী বোলিংয়ে মাঝারিসারিতে ভাঙ্গন ধরলে প্রতিযোগিতার সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন তিনি।[৩] ইমরান নাজির, আব্দুল রাজ্জাক, ওয়াসিম আকরাম, আজহার মাহমুদসাকলাইন মুশতাকের উইকেট দখল করেন তিনি ও প্রতিযোগিতার ইতিহাসে দ্বিতীয় পাঁচ-উইকেটের সন্ধান পান। এরফলে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার লাভ করেন তিনি। ঐ খেলায় তার দল ৪ উইকেটে জয় পায় ও প্রথমবারের মতো আইসিসি’র বড় ধরনের আসরের চূড়ান্ত খেলায় অংশগ্রহণের সুযোগ পায়।[৪]

কমনওয়েলথ গেমস সম্পাদনা

কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত ১৯৯৮ সালের কমনওয়েলথ গেমসের ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ড দলের সদস্য মনোনীত হন। এতে তার দল শ্রীলঙ্কাকে পরাজিত করার মাধ্যমে ব্রোঞ্জপদক লাভ করে।[৫]

খেলার ধরন সম্পাদনা

২০০০-০১ মৌসুমে আঘাতের কারণে খেলোয়াড়ী জীবনে ব্যাঘাতের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সুস্থ হয়ে তিনি আরও তার বোলিং ভঙ্গীমাকে আরও চকচকে করে আরও ইনসুইং করাতে থাকেন। একদিনের আন্তর্জাতিকে তাকে বেশ খরুচে বোলারে পরিণত করে। ওভারপ্রতি তিনি পাঁচের ওপর রান দিয়েছেন।[৬] কিন্তু বোলিং পরিবর্তনের ফলে আরও বেশি কার্যকরীতা প্রদর্শন করেন। নিজেকে ধ্রুপদীমানের আক্রমণাত্মকধর্মী বোলারে পরিণত করেছেন। আঘাত ও নিজস্ব সক্ষমতায় ব্যাঘাতের কারণে তাকে নিউজিল্যান্ড দলে দেখা যায়নি।

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

২০০৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপের পর সকল স্তরের ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এর কারণ হিসেবে তিনি ব্যবসায়ে মনোযোগীতার কথা তুলে ধরেন। সেন্ট্রাল ওতাগো’র পক্ষ হয়ে হক কাপে অংশ নিয়েছেন।

‘ক্যামিলে’ নাম্নী এক রমণীর পাণিগ্রহণ করেন। টমাস, হান্নাহ, জ্যাক ও আলিশা নাম্নী চার সন্তান রয়েছে তার। তন্মধ্যে নেপিয়ার বয়েজ হাই স্কুলের সাবেক ছাত্র টমাস ও’কনর ক্রিকেটের দিকে অগ্রসর হয়েছে।[৭]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "test-record of O'connor" [স্পোর্টিং-হিরোজে শেন ও’কনরের প্রোফাইল]। স্পোর্টিং-হিরোজ.নেট (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০১৭ 
  2. "match_awards by O'connor" [ও’কনরের ম্যান অব দ্য ম্যাচ প্রাপ্তি]। ক্রিকেটআর্কাইভ.কম (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০১৭ 
  3. "match report from wisdenalmanack" [উইজডেন অ্যালমেনাকের খেলার প্রতিবেদন]। ইএসপিএনক্রিকইনফো (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০১৭ 
  4. "1st SF: New Zealand v Pakistan at Nairobi (Gym), Oct 11, 2000 – Cricket Scorecard – ESPN Cricinfo" [১ম সেমি-ফাইনাল: নিউজিল্যান্ড বনাম পাকিস্তান, নাইরোবি (জিম), ১১ অক্টোবর, ২০০০ - ক্রিকেট স্কোরকার্ড - ইএসপিএনক্রিকইনফো]। ইএসপিএনক্রিকইনফো (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০১৭ 
  5. "O'Connor in Commonwealth" [কমনওয়েলথ গেমসে ও’কনর]। olympic (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০১৭ 
  6. "player profile of Shayne O'connor, Deivarayan Muthu" [ক্রিকবাজে শেন ও’কনরের প্রোফাইল]। cricbuzz (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০১৭ 
  7. "Cricket: Ex-Black Cap, Shayne O'Connor's son trek from Otago, Anendra Singh" [সাবেক ব্ল্যাক ক্যাপ শেন ও’কনরের সন্তান ওতাগোয় খেলছেন]। nzherald (ইংরেজি ভাষায়)। ২৮ জানু ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৬ জানুয়ারি ২০১৭ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা