জন রেনি

জিম্বাবুয়ীয় ক্রিকেটার

জন আলেকজান্ডার রেনি (ইংরেজি: John Rennie; জন্ম: ২৯ জুলাই, ১৯৭০) মাসভিঙ্গো এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক জিম্বাবুয়ীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯৩ থেকে ২০০০ সময়কালে জিম্বাবুয়ের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।[১]

জন রেনি
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামজন আলেকজান্ডার রেনি
জন্ম (1970-07-29) ২৯ জুলাই ১৯৭০ (বয়স ৫৩)
মাসভিঙ্গো, জিম্বাবুয়ে
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট
ভূমিকাবোলার
সম্পর্কগেভিন রেনি (ভ্রাতা)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৯)
১ ডিসেম্বর ১৯৯৩ বনাম পাকিস্তান
শেষ টেস্ট১৮ সেপ্টেম্বর ১৯৯৭ বনাম নিউজিল্যান্ড
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৩৩)
১০ নভেম্বর ১৯৯৩ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ ওডিআই১৬ জুলাই ২০০০ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৯৩/৯৪–২০০০/০১মাতাবেলেল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৪৪ ৪০ ৬৬
রানের সংখ্যা ৬২ ২০১ ১,০৪৫ ৩৮৯
ব্যাটিং গড় ১২.৪০ ১৩.৪০ ২১.৭৭ ১৩.৮৯
১০০/৫০ ০/০ ০/০ ০/৬ ০/০
সর্বোচ্চ রান ২২ ২৭ ৬৭* ৩৩
বল করেছে ৭২৪ ১,৯৬৫ ৬,৪৬৩ ২,৯০৮
উইকেট ৩৪ ৯৬ ৫২
বোলিং গড় ৯৭.৬৬ ৪৬.০০ ৩৩.১২ ৪৪.১৫
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ২/২২ ৩/২৭ ৯/৭৬ ৩/২৭
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১/– ১২/– ১০/– ২১/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৬ এপ্রিল ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর জিম্বাবুয়ীয় ক্রিকেটে মাতাবেলেল্যান্ড দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিং করতেন। এছাড়াও, নিচেরসারিতে ডানহাতে ব্যাটিং করতেন জন রেনি

শৈশবকাল সম্পাদনা

ফোর্ট ভিক্টোরিয়ায় ১৯৭০ সালে জন রেনি জন্মগ্রহণ করেন। সলসবারিতে পড়াশুনো করেন। হার্টমান হাউজ প্রিপারেটরি স্কুলে ভর্তি হন। সেখানে তিনি রবিন স্টোকস ও বিল ফ্লাওয়ারের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ লাভ করেছিলেন।[২] বিদ্যালয়ের প্রথম একাদশে খেলার পর ওল্ড জর্জিয়ান্স ক্রিকেট ক্লাবে যোগ দেন। এরপর, অনূর্ধ্ব-২৪ দলসহ জিম্বাবুয়ের প্রতিনিধিত্বমূলক দলের সদস্য ছিলেন তিনি।[২][৩]

বিদ্যালয়ের প্রথম একাদশে নিয়মিত সদস্য হিসেবে খেলতেও কয়েকটি বছর তার নষ্ট হয়ে যায়। তাসত্ত্বেও, ক্লাব ক্রিকেট থেকে জাতীয় দলে বেশ দৃঢ়তার সাথে খেলার উত্তরণ ঘটিয়ে প্রবেশ করেন। মাসভিঙ্গো এলাকায় জন্মগ্রহণ করলেও হারারেতে বড়ো হন। তবে, পরবর্তীতে ব্যবসায়িক কারণে মাতাবেলেল্যান্ডে চলে যান।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯৯২-৯৩ মৌসুম থেকে ২০০০-০১ মৌসুম পর্যন্ত জন রেনি’র প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল।

মাঝারিমানের যোগ্যতাসম্পন্ন ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রে জন রেনি প্রধান উদাহরণ হিসেবে হয়ে থাকবেন। কেবলমাত্র প্রচণ্ড পরিশ্রম ও নিবেদিতপ্রাণ মনোবৃত্তির মাধ্যমেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সফলতা অর্জনের বিষয়টি তিনি তুলে ধরতে সমর্থ হয়েছেন। ফাস্ট-মিডিয়াম সুইং বোলার হিসেবে মূলতঃ একদিনের আন্তর্জাতিকের ক্ষেত্রেই তাকে নির্বাচিত করা হতো। মনেপ্রাণে ও আন্তরিকতার সাথে সর্বদাই খেলায় অংশ নিতেন এবং জিম্বাবুয়েকে শুরুরদিকে সফলতা এনে দিতে সক্ষম হতেন। এছাড়াও, কার্যকরী ব্যাটসম্যান ও চমৎকার ফিল্ডার ছিলেন তিনি। তাসত্ত্বেও, তাকে কখনো জাতীয় পর্যায়ে কোন ধরনের বয়স বিভাগে রাখা হয়নি।

ঘরোয়া ক্রিকেটে মাতাবেলেল্যান্ড দলের পক্ষে খেলেছিলেন জন রেনি। ১৯৯৩-৯৪ মৌসুম থেকে ২০০০-০১ মৌসুম পর্যন্ত লোগান কাপে খেলেন। তার বোলিংয়ের কল্যাণে ১৯৯৫-৯৬ মৌসুমের লোগান কাপ প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত খেলায় সফলতা পায় মাতাবেলেল্যান্ড দল।[২] ১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে বেশ কয়েকটি খেলায় দলের অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। তবে, গুদামজাত শিল্পে জড়িত হবার পাশাপাশি পারিবারিক দায়বদ্ধতার কারণে ক্রিকেট খেলোয়াড়ী জীবনকে সংক্ষিপ্ত করেন। ২০০০-০১ মৌসুমে বড়দের খেলায় সর্বশেষ অংশ নেন।[২]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে চারটিমাত্র টেস্ট ও চুয়াল্লিশটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন জন রেনি। ১ ডিসেম্বর, ১৯৯৩ তারিখে করাচীতে স্বাগতিক পাকিস্তান দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৯৭ তারিখে হারারেতে সফরকারী নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

বলকে শূন্যে ঘূর্ণায়মান ও নিয়ন্ত্রিত পন্থা অবলম্বনে সুইং বোলার হিসেবে নিজেকে পরিচিত করেছিলেন তিনি। ১৯৯৩ সালে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে জন রেনি’র। ১৯৯৩ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত হিরো কাপ ওডিআই সিরিজের জিম্বাবুয়ের সদস্যরূপে চারটি খেলার সবকটিতে অংশ নিয়েছিলেন তিনি। তন্মধ্যে, ভারতের বিপক্ষে টাই হওয়া খেলায়ও তার অংশগ্রহণ ছিল। এ পর্যায়ে তিনি অপরাজিত অবস্থায় ব্যাটিং করেছিলেন ও জিম্বাবুয়েকে প্রায় জয় এনে দিয়েছিলেন।[২][৩][৪]

একই বছরের শেষদিকে ১৯৯৩-৯৪ মৌসুমে পাকিস্তান গমন করেন। এ সফরেই তার টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। অভিষেক খেলায় শোয়েব মোহাম্মদের উইকেট পান তিনি।[৫]

১৯৯৭ সালে স্বীয় ভ্রাতা গেভিন রেনি টেস্ট দলে খেলেন। ঐ টেস্টই জন রেনি’র সর্বশেষ অংশগ্রহণ ছিল। এছাড়াও, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে একই দলে প্রথমবারের মতো তিন জোড়া ভ্রাতা খেলেন। তাদের সাথে গ্রান্টঅ্যান্ডি ফ্লাওয়ার এবং পলব্রায়ান স্ট্র্যাং একত্রে খেলেছিলেন।[৬] এরপর থেকে কেবলমাত্র একদিনের ক্রিকেটের দিকেই তিনি ধাবিত হন ও জিম্বাবুয়ের পক্ষে খেলতে থাকেন। ৪৪টি ওডিআই ও মাত্র চারটি টেস্টে অংশ নিয়ে ২০০০ সালে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ওয়ার্ডের মতে, সহজাত প্রতিভার তুলনায় কঠোর পরিশ্রম ও প্রয়োগের মাধ্যমেই তিনি নিজেকে তুলে ধরতে সচেষ্ট ছিলেন।[২]

অবসর সম্পাদনা

ব্যবসা ও পারিবারিক চাপের পাশাপাশি জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটে তথৈবাচৈ অবস্থার ফলে এক পর্যায়ে ২০০২ সালে খেলার জগৎ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে বাধ্য হন।

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্যরূপে কাজ করেন। কিন্তু, ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের বিপর্যয়কর ফলাফলের প্রেক্ষিতে মুতেন্দ্রাসহ তাকে বাদ দেয়া হয়।[৭]

জন রেনি’র কনিষ্ঠ ভ্রাতা গেভিন রেনি জিম্বাবুয়ের পক্ষে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অংশ নিয়েছেন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. John Rennie, CricInfo. Retrieved 2019-08-07.
  2. Ward J (2003) Biography: John Rennie, CricInfo, 2003-01-07. Retrieved 2019-08-09.
  3. John Rennie, CricketArchive. Retrieved 2019-08-09.
  4. India v Zimbabwe 1993-94, Wisden Cricketers' Almanack, 1995. Retrieved 2019-08-09.
  5. First Test, Pakistan v Zimbabwe 1993-94, Wisden Cricketers' Almanack, 1995. Retrieved 2019-08-09.
  6. First Test match, Zimbabwe v New Zealand, Wisden Cricketers' Almanack, 1999. Retrieved 2019-08-09.
  7. Rennie, Mutendera axed from selection panel, CricInfo, 2011-07-01. Retrieved 2019-08-09.

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা