বরিশাল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ

বাংলাদেশের সরকারি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ

বরিশাল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বরিশাল বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় এর অধিভূক্ত একটি স্নাতক পর্যায়ের সরকারি প্রকৌশল কলেজ[] কলেজটি বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভাগীয় শহর বরিশালে অবস্থিত। বাংলাদেশের বস্ত্র সম্পর্কিত শিক্ষার একটি অন্যতম বিদ্যাপীঠ এটি।

বরিশাল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
BTEC (বিটেক)
প্রাক্তন নাম
-জেলা টেক্সটাইল ইন্সিটিউট(১৯৮০-১৯৯৪)
-ইন্সটিউট অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজি(১৯৯৪-১৯৯৬)
-বরিশাল টেক্সটাইল ইন্সিটিউট(১৯৯৬-২০১০)
-শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ(২০১০-২০২৫)
-বরিশাল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ(২০২৫-বর্তমান)
ধরনসরকারি টেক্সটাইল প্রকৌশল কলেজ
স্থাপিত২০১০
ইআইআইএন১৩৫২৯৮ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
অধ্যক্ষজনাব ইঞ্জিনিয়ার সেলিম রেজা[]
শিক্ষার্থীবি.এস.সি.তে ১২০ জন
ঠিকানা
সি এন্ড বি রোড, বরিশাল, বাংলাদেশ
, ,
অধিভুক্তিবাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্সটিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স
ওয়েবসাইটwww.sarstec.com
মানচিত্র

ইতিহাস

সম্পাদনা

১৯৮০ সালে বরিশালের প্রাণকেন্দ্র সি এন্ড বি রোডে জেলা টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট নামে প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়। তখন ২ বছর মেয়াদী সার্টিফিকেট ইন টেক্সটাইল কোর্স চালু ছিল। ১৯৯৪ সালে টেক্সটাইল ডিপ্লোমার ব্যাপকতার কথা বিবেচনা করে বস্ত্র দপ্তর প্রতিষ্ঠানটিতে ৩ বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্স চালু করে। তখন প্রতিষ্ঠানটির নাম দেওয়া হয়েছিল ইন্সটিটিউট অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি। ১৯৯৬ সালে নামকরণ করা হয় টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট, বরিশাল । বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির নাম শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বরিশাল। ২০১০ সালে কলেজটিতে বি.এসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চালু করে। বাংলাদেশ সরকারের তৎকালীন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১১ কলেজটির শুভ উদ্বোধন করেন।[] ২০২৫ সালের ২৩শে জানুয়ারি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কলেজটির নাম পরিবর্তন করে বরিশাল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ রাখেন।

 
প্যানোরমা দৃশ্যে বরিশাল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ

প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গন

সম্পাদনা

বরিশালের সি এন্ড বি রোড সংলগ্ন টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) এর বিপরীত দিকে অবস্থিত । এটি ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক নামেও পরিচিত। এটি বরিশাল কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল (নথুল্লাবাদ) থেকে ০.২ কিমি দক্ষিণে, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১ কিমি উত্তরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অবস্থান।

আবাসিক ব্যবস্থা
সম্পাদনা

বর্তমানে কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্র ছাত্রীদের জন্য চার তলা বিশিষ্ট পৃথক পৃথক ২ টি হল রয়েছে।শিক্ষকদের জন্য একটি টিচার্স ডরমেটরি,টিচার্স কোয়ার্টার এবং একটি স্টাফ কোয়ার্টার রয়েছে।

শিক্ষা কার্যক্রম

সম্পাদনা

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এই কলেজটিতে যেসব বিষয়ে চার বছর মেয়াদী বিএসসি ইন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স[] চালু রয়েছেঃ-

  1. ইয়ার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং (Yarn Engineering)
  2. ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং (Fabric Engineering)
  3. ওয়েট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং (Wet Process Engineering)
  4. অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং (Apparel Engineering)

কোর্সের মেয়াদ ও কাঠামো:

সম্পাদনা

কোর্সের মেয়াদ: ৪ বছর।প্রতিটি বছর লেভেল হিসেবে গণ্য।প্রতিটি লেভেল ২টি টার্মে বিভক্ত।মোট টার্ম ৮ টি।প্রতি টার্মে নির্দিষ্ট সংখ্যক তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক কোর্স অন্তর্ভুক্ত থাকে।এই কোর্সগুলো টেক্সটাইল শিল্পের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষ প্রকৌশলী তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কোর্সের ভাষা: ইংরেজি

বরিশাল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ এর আসন সংখ্যা
ডিপার্টমেন্টের নাম আসন সংখ্যা
ইয়ার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং ৩০
ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং ৩০
ওয়েট প্রসেস ইঞ্জিনিয়ারিং ৩০
অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিং ৩০
মোট আসন সংখ্যা ১২০

শ্রেণিশিক্ষা কার্যক্রম

সম্পাদনা

শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নেয়া বাধ্যতামূলক। কোন ছাত্র ছাত্রী ক্লাসে উপস্থিত না হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়। শ্রেণীকক্ষে নিয়মিত ফলপ্রসূ পাঠদান, পড়া আদায় এবং নিয়মিত শ্রেণীকুইজ পরীক্ষার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে পারাই এই কলেজের মূল লক্ষ্য। ছাত্র ছাত্রী শিক্ষাবোর্ডের বিধি মোতাবেক শ্রেণী কার্যক্রমে শতকরা ৮০ ভাগের বেশি উপস্থিত না হলে তাকে ডিসকলেজিয়েট ঘোষণা করা হয় এবং পরীক্ষাতে অংশগ্রহণ করতে দেয়া হয় না। এছাড়া শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ব্যবহারিক ক্লাস নেওয়া হয়।আদর্শ পাঠদানে ব্যবহার করা হচ্ছে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম।

শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন

সম্পাদনা

প্রতি পর্ব এবং বর্ষোন্নয়ন পরীক্ষাতে ৪০ শতাংশ নম্বর পেলে ছাত্রছাত্রীরা পরবর্তী পর্বে বা বর্ষে উত্তীর্ণ হতে পারে। সকল পর্বে শ্রেণিকুইজ এবং বোর্ড নির্বাচনী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পরবর্তী পর্বে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায়।

বরিশাল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, এর গ্রেডং পদ্ধতি
নাম্বার শ্রেণী গ্রেড লেটার সিজিপিএ গ্রেড পয়েন্ট
৮০-১০০ A+ ৪.০০
৭৫-৭৯ A ৩.৭৫
৭০-৭৪ A- ৩.৫০
৬৫-৬৯ B+ ৩.২৫
৬০-৬৪ B ৩.০০
৫৫-৫৯ B- ২.৭৫
৫০-৫৪ C+ ২.৫০
৪৫-৪৯ C ২.২৫
৪০-৪৪ D ২.০০
০০-৩৯ F ০.০০

শিক্ষার্থী

সম্পাদনা

অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম

সম্পাদনা

পাঠ্য বিষয়ের ক্ষেত্রে বোর্ড এবং কলেজ কর্তৃপক্ষের মতামত চূড়ান্ত বলে গণ্য হয়। এক্ষেত্রে সকলের মেধার যোগ্যতাকেই বিবেচনা করা হয়।কলেজটিতে বর্তমানে এখানে ৫ টি ব্যাচ(১০ম,১১তম,১২তম,১৩তম ও ১৪তম)অধ্যয়নরত রয়েছে এবং ৯টি ব্যাচ(১ম,২য়,৩য়,৪র্থ,৫ম,৬ষ্ঠ,৭ম,৮ম,৯ম) তাদের অধ্যয়ন সম্পন্ন করেছে।কলেজটিতে মোট ব্যাচ সংখ্যা ১৪।

অধ্যয়নরত ব্যাচ ও শিক্ষাবর্ষ:
সম্পাদনা
  1. ১০ম ব্যাচ(নিয়ন)- শিক্ষাবর্ষ: ২০১৯-২০
  2. ১১তম ব্যাচ(স্বরবর্ণ)- শিক্ষাবর্ষ: ২০২০-২১
  3. ১২তম ব্যাচ(প্যারাফিন)- শিক্ষাবর্ষ: ২০২১-২২
  4. ১৪তম ব্যাচ(অ্যামেথিস্ট)- শিক্ষাবর্ষ: ২০২২-২৩
  5. ১৪তম ব্যাচ- শিক্ষাবর্ষ: ২০২৩-২৪
অধ্যয়ন সম্পন্নকৃত ব্যাচ ও শিক্ষাবর্ষ:
সম্পাদনা
  1. ১ম ব্যাচ- শিক্ষাবর্ষ: ২০১০-১১
  2. ২য় ব্যাচ- শিক্ষাবর্ষ: ২০১১-১২
  3. ৩য় ব্যাচ- শিক্ষাবর্ষ: ২০১২-১৩
  4. ৪র্খ ব্যাচ- শিক্ষাবর্ষ: ২০১৩-১৪
  5. ৫ম ব্যাচ- শিক্ষাবর্ষ: ২০১৪-১৫
  6. ৬ষ্ঠ ব্যাচ- শিক্ষাবর্ষ: ২০১৫-১৬
  7. ৭ম ব্যাচ- শিক্ষাবর্ষ: ২০১৬-১৭
  8. ৮ম ব্যাচ(অর্ধমাত্রা)- শিক্ষাবর্ষ: ২০১৭-১৮
  9. ৯ম ব্যাচ(লুব্ধক)- শিক্ষাবর্ষ: ২০১৮-১৯

ওয়ার্কশপ ও ল্যাবরেটরি:

সম্পাদনা

বর্তমানে কলেজটি ৪ (চার) বিভাগ চালু রয়েছে যেখানে আধুনিক যন্ত্রপাতির সমন্বয়ে ১২টি ল্যাব প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

ল্যাব পরিচিতি:

  1. কটন স্পিনিং শেড
  2. জুট স্পিনিং শেড
  3. উইভিং এন্ড নিটিং শেড
  4. ডাইং শেড
  5. অ্যাপারেল ল্যাব
  6. টেক্সটাইল কোয়ালিটি এন্ড টেষ্টিং ল্যাব
  7. কম্পিউটার ল্যাব
  8. ফিজিক্স ল্যাব
  9. কেমিষ্ট্রি ল্যাব
  10. প্রকৌশল কর্মশালা

ক্যাম্পাসটিতে আরও রয়েছে সুবিশাল একটি লাইব্রেরি ।এখানে স্থান পেয়েছে দেশি ও বিদেশী সহস্রাধিক টেক্সটাইল ও সাহিত্য বিষয়ক বই। রয়েছে ধর্মীয়, সায়েন্স ফিকশন ও অন্যান্য জ্ঞান মূলক বই। লাইব্রেরী কার্ড জমাদান সাপেক্ষে যে কেউ প্রয়োজনীয় বই নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ইস্যু করে নিতে পারে। লাইব্রেরিতে দৈনিক, সাপ্তাহিক পত্রিকার ব্যবস্থা রয়েছে। লাইব্রেরিতে পৃথক পৃথক টেবিলে বসে পুস্তক এবং পত্র পত্রিকা পাঠ করা যায়।

ক্যাম্পাস জীবন

সম্পাদনা

ক্যাম্পাসে একাডেমিক পড়াশুনার পাশাপাশি বিভিন্ন সচেতনতা ও সামাজিক সহয়তামূলক সংগঠন রয়েছে ।

→সংগঠনগুলো হলোঃ

  1. প্রয়াস (মানবতার সেবায় নিয়োজিত একটি অরাজনৈতিক  সংগঠন যা শিক্ষার্থীদের এবং ক্যাম্পাস থেকে অনুদানের মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে। এই সংগঠনটি বিনামূল্যে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ, শীতবস্ত্র বিতরণসহ নানা কর্মসূচী পালন করে থাকে।)
  2. বিটেক ব্লাড ডোনারস ক্লাব
  3. বিটেক ডিবেটিং ক্লাব
  4. উচ্ছ্বাস(সাংস্কৃতিক সংগঠন)
  5. বিটেক ক্যারিয়ার ক্লাব
  6. সুঁইসুতা(দেয়াল পত্রিকা)
  7. বিটেক ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব
  8. বিটেক স্পোর্টস ক্লাব
  9. বিটেক মিডিয়া এন্ড ফটোগ্রাফি সোসাইটি
  10. বিটেক রেডিও 00.08 FM
  11. সাইন্স এন্ড রিচার্স ক্লাব,বিটেক

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "বরিশাল টেক্সটাইল কলেজের অধ্যক্ষ অবরুদ্ধ"দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ১৮ মে ২০১৪ 
  2. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট সমূহে ছাত্র/ছাত্রীর পরিসংখ্যান নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  3. "Brief History"। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০১৫ 
  4. "Academic Program"। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০১৫ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা