লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন
বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের অন্যতম রেলওয়ে জংশন হলো লালমনিরহাট রেলওয়ে জংশন। যেটি লালমনিরহাট জেলায় রয়েছে।
লালমনিরহাট | |
---|---|
বাংলাদেশ রেলওয়ে জংশন স্টেশন | |
অবস্থান | লালমনিরহাট, রংপুর![]() |
স্থানাঙ্ক | ২৫°৫৪′৪৩″ উত্তর ৮৯°২৬′৪৪″ পূর্ব / ২৫.৯১১৯৩° উত্তর ৮৯.৪৪৫৪৮° পূর্ব |
লাইন | বুড়িমারি-লালমনিরহাট-পার্বতীপুর লাইন |
নির্মাণ | |
গঠনের ধরন | মানক (গ্রাউন্ড স্টেশন) |
অন্য তথ্য | |
অবস্থা | কাজ |
ইতিহাস | |
চালু | ১৯০০ |
আগের নাম | উত্তরবঙ্গ রেলপথ |
অবস্থান | |
![]() |
ইতিহাসসম্পাদনা
উত্তরবঙ্গ রাজ্য রেলপথ ১৮৭৯ সালে পার্বতীপুর থেকে কাউনিয়া যাওয়ার জন্য একটি মিটার গেজ লাইন চালু করে। ইস্টার্ণ বেঙ্গল রেলওয়ে কাউনিয়া থেকে ধরলা নদী পর্যন্ত দুটি সরু গেজ লাইন স্থাপন করা করে। যার ফলে কাউনিয়া-ধরল্লা রাজ্য রেলপথ তৈরি হয়েছিল। ১৯০১ সালে কাউনিয়া-ধরলা রেলপথটিকে মিটারগেজে রূপান্তরিত করা হয়। কাউনিয়া-ধরলা লাইনটি ১৯০৮ সালে কাউনিয়া-ধরলা রেলপথটিকে সম্প্রসারণ করে আমিনগাঁও পর্যন্ত প্রসারিত করা হয়।[১][২]
শতাব্দীর শুরুতে লালমনিরহাট একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে কেন্দ্র হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। বেঙ্গল ডুয়ার্স রেলওয়ে মালবাজার পর্যন্ত একটি লাইন তৈরি করে। গোলকগঞ্জ-আমিনগাঁও লাইন আসার ফলে আসামের সাথে সংযোগ স্থাপন হয়। [১]
ভারত বিভাগের পূর্বে মর্যাদাপূর্ণ আসাম মেল লালমনিরহাট হয়ে সান্তাহার থেকে গুয়াহাটি পর্যন্ত যাতায়াত করত।[৩]
রেল বিভাগ লালমনিরহাটসম্পাদনা
বর্তমান বাংলাদেশ রেলওয়ের ৪ টি বিভাগের মধ্যে লালমনিরহাট অন্যতম। ওয়েস্ট জোন রেলের আওতায় একটি রেলবিভাগ হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। লালমনিরহাট রেলবিভাগের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কিছু রেলরুট। উক্ত রেল রুটে সকল ট্রেন নিয়ন্ত্রণ, মনিটরিং,রেল ব্যবস্হা প্রভৃতি কার্য সম্পাদন করা হয়। ট্রেন নিয়ন্ত্রণের জন্য রয়েছে "রেলওয়ে কন্ট্রোলঅফি", রয়েছে বিভাগীয় রেল ম্যানেজারের সদরদপ্তর, ট্রেনের লোকো সরবরাহের জন্য একটি লোকো রানিং শেড , বড় স্টেশন ইয়ার্ড, রেল কলোনি, রেলওয়ে কর্মকর্তাদের আবাসিক ভবন, রয়েছে " রেলওয়ে অফিসার্স ক্লাব", রেলওয়ে চিলড্রেন স্কুল, একটি রেলওয়ে মেডিকেল রয়েছে, যার অবস্থা এখন খুবই নাজুক, অবহেলায় জরাজীর্ণ অবস্থা। এছাড়াও রেলেওয়ের নানান অবকাঠামো ছরিয়ে ছিটিয়ে শগ শহরের বিভিন্ন যায়গায়।
ব্রিটিশ আমলে, লালমনিরহাট থেকে যখন বেংগল ডুয়ার্স রেল কম্পানি নতুন উওরে চ্যাংড়াবান্ধা হয়ে রেললাইন বিকশিত করে ঠিক তখন থেকেই লালমনিরহাট একটি গুরুত্বপূর্ণ রেল জংশন হিসেবে প্রসিদ্ধ লাভ করে। তখন একটি লাইন ছিলো লালমনিরহাট - মোগলহাট-গীতলদহ হয়ে কুচবিহার, একটি ছিলো কাউনিয়া-পার্বতীপুর এবং নতুন করে লাইনটি ছিলো পাটগ্রাম-চ্যাংড়াবান্ধা হয়ে। ১৯৪৭ এ দেশ বিভাজনের পর, মোগলহাট রুটে প্যাসেন্জার ট্রেন বন্ধ হয়ে যায়, কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পরবর্তীতে কিছু সময় পর্যন্ত দু-দেশের মধ্যে মালগাড়ি চলতো,এটাও বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত লালমনিরহাট থেকে মোগলহাট পর্যন্ত লোকাল ট্রেন চলাচল ছিলো। ২০০২ সালে সেকশনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়৷ ঠিক তখন থেকেই লালমনিরহাট স্টেশন তার জংশন নামের খ্যাতাব হারিয়ে বসে।
ট্রেনসম্পাদনা
লালমনি এক্সপ্রেস এবং করতোয়া এক্সপ্রেস আন্তঃনগর ট্রেনদুটি এই স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়। এদের মধ্যে লালমনী এক্সপ্রেসের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি রাজধানী ঢাকায় যাতায়ত করে। করতোয়া এক্সপ্রেসটি সান্তাহার জাংশন (বগুড়া-গাইবান্ধা হয়ে) ও বুড়িমারী স্থলবন্দরের মধ্যে চলাচল করে। এছাড়া কিছু কমিউটার, লোকাল মেল এবং শাটল ট্রেন রংপুর, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, পার্বতীপুর জংশন, বগুড়া, গাইবান্ধা, সান্তাহার পর্যন্ত পরিষেবা প্রদান করে।
ট্রেনের নাম এবং রুটসম্পাদনা
- করতোয়া এক্সপ্রেস সান্তাহার-বুড়িমারী (নিয়মিত)
- লালমনি এক্সপ্রেস ঢাকা-লালমনিরহাট (শুক্রবার বন্ধ)
- কুড়িগ্রাম শাটল এক্সপ্রেস (লালমনিরহাট-কাউনিয়া জংশন-কুড়িগ্রাম)
- রংপুর কমিউটার (ডেমু এক্সপ্রেস) লালমনিরহাট-পার্বতীপুর জংশন
- বগুড়া কমিউটার সান্তাহার-লালমনিরহাট
- পদ্মরাগকমিউটার সান্তাহার-লালমনিরহাট
- দিনাজপুর কমিউটার বিরল-লালমনিরহাট
- লালমনি কমিউটার লালমনিরহাট-পার্বতীপুর
- বুড়িমারী কমিউটার লালমনিরহাট-বুড়িমারী
- বুড়িমারী কমিউটার লালমনিরহাট-বুড়িমারী
বর্তমান কিছু বন্ধ ট্রেনসম্পাদনা
- ৪৮১/৪৮২ লোকাল সান্তাহার জংশন-লালমনিরহাট
- ৬৯/৭০ পার্বতীপুর কমিউটার লালমনিরহাট-পার্বতীপুর জংশন
ঐতিহাসিক ট্রেনসম্পাদনা
- আসাম মেইল শিয়ালদহ-পার্বতীপুর-গীতলদত-আমিনগাঁও(ব্রিটিশ ভারত)
ছবিসম্পাদনা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ক খ R.P. Saxena। "Indian Railway History timeline"। ২০১২-০৭-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০২-০১।
- ↑ ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "লালমনিরহাট জেলা"। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ "Trains of fame and locos with a name - Part 2"। IRFCA। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০২-০৭।