রাশেদ খান মেনন

বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ

রাশেদ খান মেনন (জন্মঃ ১৮ মে, ১৯৪৩) বাংলাদেশের একজন বামপন্থী সংশোধনবাদী ধারার রাজনৈতিক নেতা।[১] ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নির্বাচিত সভাপতি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী নির্বাচনের জন্য গঠিত সর্বদলীয় মন্ত্রিসভায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। এই নির্বাচনে তিনি ঢাকা থেকে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।[২] ২০১৮ ও ২০২৪ সালের একাদশদ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

রাশেদ খান মেনন
মন্ত্রী, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়
কাজের মেয়াদ
৩ জানুয়ারি ২০১৮ – ৭ জানুয়ারি ২০১৯
প্রধানমন্ত্রীশেখ হাসিনা
উত্তরসূরীনুরুজ্জামান আহমেদ
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম (1943-05-18) ১৮ মে ১৯৪৩ (বয়স ৮০)
ফরিদপুর জেলা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সী, ব্রিটিশ ভারত
দাম্পত্য সঙ্গীলুৎফুন নেসা খান এমপি
সম্পর্ক
পিতামাতা
প্রাক্তন শিক্ষার্থীঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশারাজনীতিবিদ

পারিবারিক বৃত্তান্ত সম্পাদনা

রাশেদ খান ১৯৪৩ খিস্টাব্দের ১৮ই মে তারিখে ফরিদপুর শহরে জন্মগ্রহণ করেন। রাশেদ খান মেননের পিতা বিচারপতি আব্দুল জব্বার খান পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের স্পীকার ছিলেন। মাতা ও স্ত্রীর নাম যথাক্রমে সালেহা খাতুন এবং লুৎফুন্নেসা খান। তার ভাই-বোনরা হলেন সাবেক সাংবাদিক সাদেক খান, সাবেক কবি ও মন্ত্রী আবু জাফর ওবায়দুল্লাহ, সাবেক সাংবাদিক ও সাবেক জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী এনায়েতুল্লাহ্‌ খান এবং চারদলীয় জোট সরকারের সাবেক সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম সেলিমা রহমান, ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ এর প্রকাশক শহিদুল্লাহ খান বাদল।

রাশেদ খান কলেজিয়েট স্কুল, ঢাকা কলেজ থেকে পড়াশোনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্মান (অর্থনীতি) স্নাতকোত্তর (অর্থনীতি) সম্পন্ন করেন।

রাজনৈতিক জীবন সম্পাদনা

ছাত্রজীবন থেকেই তিনি রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে থাকেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের নেতা ছিলেন। তিনি চীনপন্থী রাজনীতিতে দীক্ষিত এবং মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ভাবশিষ্য। ষাটের দশকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক আইন বিরোধী ও পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলনে তিনি অংশগ্রহণ করেছেন। ১৯৬২-র শিক্ষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান সংগঠনে তিনি অসামান্য ভূমিকা পালন করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি অংশগ্রহণ করেন। পাকিস্তান আমলে "স্বাধীন পূর্ব বাংলার" কথা বলার জন্য তাকে সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়েছিল।[৩] ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং তাকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মনোনীত করা হয়।[৪] ২০০৮-এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন।[৫]

রাশেদ খান মেনন ২০১৮ সালে জানুয়ারি মাসে মন্ত্রী হিসেবে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।[৬][৭]

প্রকাশিত গ্রন্থ সম্পাদনা

  • রাজনীতি: রাশেদ খান মেননের রাজনৈতিক কলাম (১৯৯৮);
  • রাজনীতির কথকতা (২০০০);
  • ব্রাত্যজন নয়, নায়কদের ইতিহাস ও অন্যান্য (২০০২);
  • দুর্নীতি দুর্বৃত্তায়ন ও সাম্প্রদায়িকতা (২০০২)।

পুরস্কার ও স্বীকৃতি সম্পাদনা

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ ঢাকা শহরের বাংলা মোটর থেকে মগবাজার মোড় পর্যন্ত সড়কের নামকরণ করা হয়েছে "রাশেদ খান মেনন সড়ক"।[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. অনুপ সাদি সম্পাদিত বাঙালির গণতান্ত্রিক চিন্তাধারা; ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ; ঢাকা; ফেব্রুয়ারি, ২০১০; পৃষ্ঠা- ৪৮৭।
  2. বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়
  3. "রাশেদ খান মেনন ও শামসুল আলমের নামে নগরীর দুটি সড়ক"। ৬ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ জানুয়ারি ২০১০ 
  4. দৈনিক প্রথম আলো, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০০৯
  5. হায়দার আকবর রনো র্কর্তৃক হলিউড কমরেডদের মুখোশ উন্মোচন[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  6. "জনাব রাশেদ খান মেনন, মাননীয় মন্ত্রী"সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। ২০১৮-০১-২২। ২০১৮-০৮-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। 
  7. "সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন"বাংলাদেশ প্রতিদিন। ২০১৮-০১-০৩। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১২-২৯ 

গ্রন্থসূত্র সম্পাদনা

  • লেখক অভিধান, বাংলা একাডেমী, ২০০৭, ঢাকা।