রাজবংশী
রাজবংশী বা কোচ-রাজবংশী বাংলাদেশের রংপুর অঞ্চল, রাজশাহী অঞ্চল ও ,ভারতের পশ্চিমবঙ্গর ছয় জেলা, তথা কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং জেলার সমতল অঞ্চল, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর ও মালদহ জেলার কিছু অংশে এরা বিদ্যামান। তাছাড়া, অসম এর গোয়ালপাড়া, ধুবড়ী, মেঘালয় ও নেপালের ঝাপা জেলাতেও এই জাতিগোষ্ঠীর উল্লেখ পাওয়া যায়।[৩][৪] কিছু সংখ্যায় এই গোষ্ঠীর লোকেরা বগুড়া ও ময়মনসিংহ জেলাতেও আছে। ১৯৯১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, বাংলাদেশে এদের মোট জনসংখ্যা পাঁচ হাজারের একটু বেশি।[৩] রাজবংশী এবং কোচ দের একই বলে ঐতিহাসিকরা মনে করেন। রাজবংশীরা খর্বকায়, লম্বা, চ্যাপ্টা নাক, ছোটো চোখ, উঁচু চোয়ালবিশিষ্ট এক মিশ্র জনগোষ্ঠীর মানুষ। এরা প্রধানত শিবভক্ত ও বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী, এবং পিতৃ-প্রধান পরিবার। অনেকে প্রকৃতি উপাসক এবং পাহাড়, নদী, বন ও মাটি পূজা করে থাকে।এক কথায় এরা জড়োপাসক বা প্রকৃতির উপাসক। খরা, অনাবৃষ্টি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হুদুমা পূজা, ব্যাঙের বিয়ে, প্রভৃতি রাজবংশীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান।[৩] পেশায় এরা প্রধানত কৃষক ও স্বাধীন কর্মের বিশ্বাসী। এরা সরল প্রকৃতির এবং স্বাধীনচেতা মনভাবের মানুষ। [৫]
কোচ রাজবংশী | |
---|---|
![]() পাটানী পরিহিতা কোচ রাজবংশী নারী | |
মোট জনসংখ্যা | |
আনু. 16 – আনু. 18 million | |
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চলসমূহ | |
![]() | আসাম = ৬৯,০০,০০০[১] পশ্চিমবঙ্গ = ৩,৩৮৬,৬১৭ মেঘালয় = ২১,৩৮১[২] |
ধর্ম | |
হিন্দুধর্ম | |
সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী | |
কোচ মেচ গারো রাভা |
রাজবংশীদের নিজস্ব ভাষা আছে।এদের ভাষা হচ্ছে ''কামতাপুরী'' বা ''রাজবংশী ভাষা''। এদের ভাওয়াইয়া সংগীত ভারতবর্ষের অন্যতম সুনামধন্য সংগীত। [৩] ভারতের কোচবিহার থেকে রাজবংশী ভাষায় দোতরার ডাং নামের সাময়িকী প্রকাশ হয় ১৪১৭ বঙ্গাব্দ থেকে।[৬] পশ্চিমবঙ্গে রাজবংশী ভাষা একাডেমী গঠন হয়েছে। রাজবংশী ভাষায় লেখা কবিতা , গল্প , গান রচনা ক্রমশ বৃদ্ধি চলছে ।
উল্লেখযোগ্য মানুষ।সম্পাদনা
- ইন্দ্রমোহন রাজবংশী, লোকগানের শিল্পী[৭]
- চিলারায়,কোচ রাজবংশের সেনাপতি
- পঞ্চানন বর্মা,রাজবংশী নেতা ও সমাজসংস্কারক
- স্বপ্না বর্মণ, ভারতীয় এ্যাথলেট
- ললিত রাজবংশী, নেপালী ক্রিকেটার
- গায়ত্রী দেবী, জয়পুরের মহারানী
- মৌনী রায়, ভারতীয় অভিনেত্রী
- শরৎ চন্দ্র সিংহ, ভারতীয় রাজনীতিবিদ
আরোও দেখুনসম্পাদনা
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
- Centre for Koch Rajbanshi Studies and Development
- The Rajbansis: preliminary enquiry towards a study of a complex ethnic group of South-East Nepal and Bengal, Johan Berlie, Regmi Research Institute, Kathmandu, Nepal, 1982.
- Linguistic Terrorism: An Interruption into the Kamtapuri Language Movement
- Koch"। ব্রিটিশ বিশ্বকোষ (১১তম সংস্করণ)। ১৯১১। [[বিষয়শ্রেণী:উইকিসংকলনের তথ্যসূত্রসহ ১৯১১ সালের এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা থেকে উইকিপিডিয়া নিবন্ধসমূহে একটি উদ্ধৃতি একত্রিত করা হয়েছে]] "
আরোও পড়ুনসম্পাদনা
- বাংলাদেশের রাজবংশী: সমাজ ও সংস্কৃতি, অশোক বিশ্বাস, বাংলা একাডেমি
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ Kaushik Deka (২৭ মে ২০১৬)। "Narendra Modi may turn Assam into a tribal state"। India Today। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ "Census 2011 - Meghalaya" (PDF)। Registrar General and Census Commissioner of India। সংগ্রহের তারিখ ২৯ এপ্রিল ২০১৯।
- ↑ ক খ গ ঘ আহমদ, রফিক। "রাজবংশী"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ চক্রবর্তী, সঞ্জয় (২ ফেব্রুয়ারি)। "মমতার আসন্ন সফরে লক্ষ্য রাজবংশী-আদিবাসীরা"। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৫। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=, |year= / |date= mismatch
(সাহায্য) - ↑ হানিফ, রানা (২২ মার্চ ২০১৪)। "ধলেশ্বরী ও রাজবংশী বিলুপ্তির পথে"। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ "রাজবংশী ভাষার পত্রিকা 'দোতরার ডাং'"। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ "লোকগানের শিল্পী ইন্দ্রমোহন রাজবংশী"। বিবিসি বাংলা। ৬ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০১৫।