মোস্ট ওয়েলকাম
মোস্ট ওয়েলকাম ২০১২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত একটি বাংলাদেশি চলচ্চিত্র। ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিশিষ্ট অভিনেতা এম এ জলিল অনন্ত এবং তার বিপরীতে অভিনয় করেছেন নায়িকা বর্ষা। এটি অনন্য মামুন দ্বারা পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র।[১] ছবিটি ২০ আগস্ট ২০১২ তারিখে ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে সারাদেশে মুক্তি পায় এবং ঈদের সবচেয়ে ব্যবসাসফল ছবিগুলোর একটি হবার সাফল্য অর্জন করে। চলচ্চিত্রটি তামিল চলচ্চিত্র কন্দস্বামী (২০০৯) এর পুনঃনির্মাণ।
মোস্ট ওয়েলকাম | |
---|---|
পরিচালক | অনন্য মামুন |
প্রযোজক | মুনসুন ফিল্মস |
রচয়িতা | অনন্য মামুন (কাহিনী, সংলাপ ও চিত্রনাট্য) |
শ্রেষ্ঠাংশে | এম এ জলিল অনন্ত বর্ষা স্নেহা উল্লাল নায়করাজ রাজ্জাক সোহেল রানা বাপ্পারাজ রাধিকা মিশা সওদাগর আহমেদ শরীফ |
সুরকার | এস আই টুটুল আরফিন রুমি হৃদয় খান ন্যান্সি মিলা পড়শি নির্ঝর কাজী শুভ |
পরিবেশক | মুনসুন ফিল্মস |
মুক্তি | ২০ আগস্ট ২০১২ |
স্থিতিকাল | ১৩৫ মিনিট |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
নির্মাণব্যয় | ৳ ৬,০০,০০,০০০ |
কাহিনী সংক্ষেপ
সম্পাদনাছবির কাহিনী আবর্তিত হয় দুর্নীতি দমন কমিশনের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট আরিয়ান চৌধুরীকে কেন্দ্র করে। সততা ও দক্ষতার কারণে তিনি তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার প্রিয়পাত্র। প্রকাশ্যে আরিয়ান একজন দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তা হলেও লোকচক্ষুর অন্তরালে তিনি একজন মুখোশধারী সমাজসেবক হিসেবে 'মুশকিল আসান বাবার মাজার'-এর লোক হিসেবে কাজ করেন।
ঋণখেলাপি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে আরিয়ান চৌধুরী ও তার দল চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ এ বি সি এর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ লুকোনো অর্থসম্পদ বাজেয়াপ্ত করে। নিজের সম্মান বজায় রাখতে এ বি সি তার একমাত্র কন্যা অধরা চৌধুরীর সামনে পুলিশি জেরার শিকার হয়ে মূক ও পঙ্গু হবার অভিনয় করেন। অপরদিকে এ বি সি এর দুর্নীতিবাজ ভাতিজা আসিফ খান দেশে আসার পর মুখোশধারী আরিয়ান মুশকিল আসান বাবার লোক সেজে আসিফ খানকে সকল খারাপ কাজ ছেড়ে ভাল পথে আসার জন্য মোস্ট ওয়েলকাম জানান এবং অন্যথায় খারাপ পরিণতির হুমকি দেন।
পিতাকে অসুস্থ ও অপমানিত হতে দেখে প্রতিশোধস্পৃহায় উন্মত্ত অধরা চৌধুরী আরিয়ানকে জালে ফাঁসানোর জন্য তার সাথে প্রেমের মিথ্যা অভিনয় শুরু করে, অন্যদিকে এ বি সি এবং আসিফ খানও তাদের আত্মসাৎকৃত অর্থ ফেরত আনা এবং অন্যান্য অন্যায় কাজ করতে মুশকিল আসান বাবার মুখোশধারী জনসেবককে বাধ্য করার জন্য জাল বিছাতে থাকে। এক পর্যায়ে আরিয়ানের প্রকাশ্য জীবন ও অন্তরালের মুখোশধারী সমাজসেবকের জীবন এক বিন্দুতে মিলে যায় ও কাহিনী অন্যদিকে মোড় নেয়।
অপরদিকে মুশকিল আসান বাবার মাজারের নির্ভরযোগ্যতার কারণে পুলিশের উপর থেকে মানুষের আস্থা কমে যেতে থাকে। পুলিশ মুশকিল আসান বাবার মাজারের পর্দার অন্তরালের সেই নায়ককে খুঁজে বের করে তাকে বিচারের আওতায় আনার জন্য তৎপর হয়।
অধরা কি তার প্রতিশোধ নেবার লক্ষ্যে অবিচল থাকে। এভাবে এগিয়ে যায় ছবির কাহিনী।
লোকেশন ও চিত্রায়ন
সম্পাদনা'মোস্ট ওয়েলকাম' ছবির চিত্রায়ন হয়েছে বাংলাদেশ, থাইল্যান্ড, ভারতের মুম্বাইয়ের ফিল্ম সিটি, রামোজি স্টুডিও এবং হায়দ্রাবাদের বিভিন্ন স্থানে।[২][৩] রজনীকান্তের ‘রোবট’ চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রাহক চেন্নাইয়ের তাইগু, নৃত্যপরিচালক শঙ্কর আন্নাই, ফাইট ডিরেক্টর হর্ষ বাবু, থাইল্যান্ডের জাইকা ও মনজ এবং বলিউডের ‘বডিগার্ড’ চলচ্চিত্র ভিজ্যুয়াল সাউন্ডের কলাকুশলীরা এ ছবিতে কাজ করেছেন।[২]
শ্রেষ্ঠাংশে
সম্পাদনা- এম এ জলিল অনন্ত
- বর্ষা
- রাজ্জাক
- আহমেদ শরীফ
- বাপ্পারাজ
- রাধিকা
- কাবিলা
- স্নেহা উল্লাল
- মিশা সওদাগর
- সোহেল রানা
'মোস্ট ওয়েলকাম' চলচ্চিত্রের অডিও সিডি প্রকাশিত হয় ১৭ এপ্রিল ২০১২ মঙ্গলবার। ছবিতে গান রয়েছে ছয়টি। গানগুলো লিখেছেন শওকত আলী ইমন, জাহিদ আকবর, রবিউল ইসলাম জীবন ও গুঞ্জন চৌধুরী। সংগীত পরিচালনা করেছেন শওকত আলী ইমন, সুমন কল্যাণ, হৃদয় খান, আরফিন রুমি ও মাহমুদ সানী। বিভিন্ন গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কৈলাস খের, এস আই টুটুল, মিলা, ন্যান্সি, নির্ঝর, হৃদয় খান, আরফিন রুমি, কিশোর, পড়শি ও আহমেদ তৌসিফ। অডিও সিডিটি প্রকাশ ও বাজারজাত করে সিডি চয়েস।[৪]
গানের তালিকা
সম্পাদনানং. | শিরোনাম | কণ্ঠশিল্পী | দৈর্ঘ্য |
---|---|---|---|
১. | "যতই থাকো" | কৈলাস খের | |
২. | "প্রিয়তমা" | হৃদয় খান | |
৩. | "এসো কাছে এসো" | মিলা, এস আই টুটুল | |
৪. | "অধর ছুয়ে" | কিশোর, পড়শী | |
৫. | "আমার মন দরিয়াতে" | আহমেদ তৌসিফ, মিলা | |
৬. | "পড়েনা পলক" | ন্যান্সি, আরেফিন রুমি |
মুক্তি ও দর্শক প্রতিক্রিয়া
সম্পাদনা'মোস্ট ওয়েলকাম' ছবিটি ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ২০ আগস্ট ২০১২ তারিখে দেশজুড়ে বিভিন্ন হলে মুক্তি পায় এবং মুক্তির পরপরই বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। বিশেষত তরুণসমাজে ছবিটি ব্যাপক সাড়া ফেলে দেয়। বিভিন্ন পত্রিকার তথ্যানুসারে 'মোস্ট ওয়েলকাম' ছবিটি এই ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত ছয়টি ছবির মধ্যে সর্বাধিক ব্যবসাসফল ছবি। নায়ক-প্রযোজক এম এ জলিল অনন্ত পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, ছবিটি ২৩ টি হলে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।[৫] এছাড়া দেশের বাইরেও ছবিটি মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।[৫] দর্শকদের বিপুল চাহিদার কারণে স্টার সিনেপ্লেক্সসহ বেশকিছু সিনেমা হল ছবিটি দ্বিতীয়বার প্রদর্শন শুরু করে। দর্শকচাহিদা বিবেচনা করে মোস্ট ওয়েলকামের কমপক্ষে আরও ১০টি প্রিন্ট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেন এম এ জলিল অনন্ত।[৬]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ‘মোস্ট ওয়েলকাম’ দিয়ে সাফল্যের চূড়ায় মামুন[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ "ঈদে ঢালি-বলিউড তারকাসমৃদ্ধ 'মোস্ট ওয়েলকাম'"। ৯ জুন ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০১৪।
- ↑ ঢালিউডে ঝড় তুলেছে ‘মোস্ট ওয়েলকাম’[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ আজ আসছে ১০ শিল্পীর মোস্ট ওয়েলকাম[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ক খ "'মোস্ট ওয়েলকাম' চলচ্চিত্রে নতুন ইতিহাস করেছে : অনন্ত"। ২২ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর ২০১২।
- ↑ রেকর্ড গড়ছে 'মোস্ট ওয়েলকাম'
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে মোস্ট ওয়েলকাম (ইংরেজি)