মরু সবুজায়ন
এই নিবন্ধের সঙ্গে মরুভূমি সবুজকরণ নিবন্ধটি একীভূত করার প্রস্তাব করা হলো। (আলোচনা করুন) প্রস্তাবের তারিখ: জুলাই ২০২৪। |
এই নিবন্ধটি ইংরেজি থেকে আনাড়িভাবে অনুবাদ করা হয়েছে। এটি কোনও কম্পিউটার কর্তৃক অথবা দ্বিভাষিক দক্ষতাহীন কোনো অনুবাদক কর্তৃক অনূদিত হয়ে থাকতে পারে। |
সবুজায়ন বর্তমান পৃথিবীর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও উপযোগী একটি পদ্ধতি। বর্তমান পৃথিবী মরুময়তার দিকেই ধাবিত হচ্ছে। যা পৃথিবীর সকল জীবকূলের জন্য খুবই মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনবে। ক্রমাগত হারে বৃক্ষনিধন আমাদের পৃথিবীকে মরুময় করে তুলছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে জনসংখ্যাবহুল দেশ গুলো অধিকহারে বৃক্ষ নিধন করার কারণে, সেসব দেশের মোট বনভূমির পরিমাণ ক্রমাগত হারে হ্রাস পাচ্ছে যা প্রাণীর জীবনধারণের জন্য পরিমিতরূপে সহায়ক নয়। মানুষ বসত বাড়ির জন্য, শিল্প কারখানার জন্য এবং তার নিত্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য প্রতিনিয়ত বনভূমি ধ্বংস করছে । জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO) the state of the world's forests 2020 নামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বের মোট ভূমির ৩০.৪ শতাংশ বনভূমি। বিশ্বের সমগ্র বনভূমির আয়তন হচ্ছে ৪.০৬ বিলিয়ন হেক্টর। এরমধ্যে কেবলমাত্র রাশিয়াতেই বনভূমির আয়তন হচ্ছে ৮১৫ মিলিয়ন হেক্টর। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্রাজিল। মোট বনভূমির আয়তন ৪৯৭ মিলিয়ন হেক্টর। এর পরপরই আছে কানাডা, ৩৪৭ মিলিয়ন হেক্টর, যুক্তরাষ্ট্র ৩১০ মিলিয়ন হেক্টর, চীন ২২০ মিলিয়ন হেক্টর, অস্ট্রেলিয়া ১৩৪ মিলিয়ন হেক্টর, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ১২৬ মিলিয়ন হেক্টর,ইন্দোনেশিয়া ৯২ মিলিয়ন হেক্টর, পেরু ৭২ মিলিয়ন হেক্টরএবং ভারত ৭২ মিলিয়ন হেক্টর। উপরিউক্ত নাম গুলোর প্রতি দৃষ্টিপাত করলে একটি জিনিস খুবই স্পষ্ট হয়ে ওঠে এই নাম গুলোর ভেতর মধ্যপ্রাচ্যের কোন দেশই নেই। যা আমাদের কঠিন বাস্তবতাকে আবারও সামনে নিয়ে আসে। এটি প্রমাণ করে আমাদের মোট পৃথিবীর বনভূমির পরিমাণ গড় বনভূমির তুলনায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পরিমাণে থাকলেও পৃথিবীর সব জায়গায় সেটি সমানভাবে নেই।
মনুষ্যবসতি এবং কৃষিজমি নিশ্চিত করতেই ধ্বংস করা হচ্ছে সবুজের লীলাভূমি, জানিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য এবং কৃষি সংস্থা বা এফএও৷
এফএওর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বিশ্বব্যাপী বন ধ্বংসের এই ঘটনা এখনও আশঙ্কাজনক৷ বিশ্বের প্রায় সবকটি দেশের উপর চালিত সমীক্ষার ভিত্তিতে এই প্রতিবেদনটি প্রণয়ন করা হয়৷ এ বিষয়ে এফওএর ফরেস্ট্রি বিভাগের পরিচালক এডুয়ার্ডো রজার্স জানান, আমরা এই প্রথমবারের মত এমন একটি সম্পূর্ণ চিত্র পেলাম, যেখানে দেখা গেছে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক নানা পদক্ষেপের কারণে বন ধ্বংসের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে৷ যদিও এর হার এখনও অনেক দেশে আশঙ্কাজনক রয়ে গেছে৷ তিনি আশা প্রকাশ করে বলেছেন, বন বাঁচাতে দেশগুলোকে আরও বেশি কাজ করতে হবে, গ্রহণ করতে হবে বাস্তবমুখী নানা প্রকল্প৷
এফওএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রাজিল এবং ইন্দোনেশিয়ায় নব্বই এর দশকে যে হারে বন উজাড় হচ্ছিলো, এরপরের দশকে সেই হার অনেক কমে গেছে৷ চীন, ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভিয়েতনামে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি এবং নতুন নতুন জায়গায় বন সৃজনের মাধ্যমে ভিন্ন এক মাত্রা যোগ করেছে৷ এই আন্দোলনের ফলে বছরে প্রায় ৭০ লাখ হেক্টর নতুন বন সৃষ্টি হচ্ছে৷ ইউরোপের দেশগুলোও বন সৃজনের কাজে এগিয়ে যাচ্ছে সাফল্যের সঙ্গে৷
হিসাবে দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী বনভূমির পরিমাণ এখন প্রায় ৪.০৬ বিলিয়ন হেক্টর যা কিনা পৃথিবীর মোট ভুমির ৩০.৮ শতাংশ৷
গত এক দশকে সবচেয়ে বেশি বনভূমি হারিয়েছে দক্ষিণ অ্যামেরিকা এবং আফ্রিকার দেশগুলো৷ এর পরিমাণ প্রায় ৭ দশমিক ৪ মিলিয়ন হেক্টর৷ এশিয়ার দেশগুলোতে কমেছে ২ দশমিক ২ মিলিয়ন হেক্টর বনভূমি৷
এরকম চলতে থাকলে আগামী ১-২ দশক পর এই পৃথিবীর অর্ধেকেরও বেশি এলাকা মরুভূমিতে পরিণত হবে, যা আমাদের জন্য খুবই ভয়ঙ্কর হতে পারে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদেরকে মরুভূমি প্রধান মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বনায়ন কার্যক্রম চালাতে হবে।
মরুভূমি শব্দটার সাথে যেন মিশে আছে বালুময় জনমানবহীন এক বিস্তীর্ণ প্রান্তরের ছবি। কিন্তু মরুভূমি শুধু বালুময় নয়, হতে পারে বরফে ভরা, পাথর বা নুড়ি পাথরে ভরা বিস্তীর্ণ কোন এক এলাকা। মূলত ৫ শতাংশের কম জীববৈচিত্র্য কোন অঞ্চলে থাকলে তাকে মরুভূমি বলা হয়। সে হিসেবে মরুভূমির মধ্যে পড়ে আফ্রিকার সাহারা মরুভূমি, অ্যান্টার্টিকার বিস্তীর্ণ বরফঅঞ্চল আর বলিভিয়ার সালার দে উয়ুনি, যেটা কিনা পৃথিবীর বৃহত্তম লবণ মরুভূমি।মরুভূমির পরিবেশ দিনে সাধারণত গরম এবং শুষ্ক থাকে। তবে ঠাণ্ডা, রুক্ষ আর লবণাক্ত কোন বিশালাকার এলাকাকেও মরুভূমিই বলা হয়ে থাকে। মরুভূমির এতো রকমভেদ থাকলেও সব মরুভূমির ক্ষেত্রেই জিনিস একই, সেটি হচ্ছে মরুভূমিতে প্রাণী বা উদ্ভিদের বেঁচে থাকা বা অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা খুবই কষ্টের। কিন্তু তারপরও এখানে বৈচিত্র্যময় এক জীববৈচিত্র্য গড়ে উঠে যেখানে গিরগিটি থেকে শুরু করে মানুষ, গাছপালাসহ প্রায় সবই থাকে।পৃথিবীর প্রায় ৩০মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার অঞ্চল মরুভূমি, যেখানে অসংখ্য প্রাণী ঘুরে বেড়ায় আর বেঁচে থাকে। কিছু কিছু মরুভূমিতে গাছ জন্মায়, মরূদ্যান গড়ে উঠে।আবার অনেক মরুভূমিতে মানুষ ঘরবাড়ি বানিয়েছে, এমনকি লোকালয়ও গড়ে তুলেছে। মরুভূমিতে ঘুরলে দেখা মিলবে গিরগিটি, সাপ, উট, হাতি, মাছ, গাধা আর মানুষের। এদের কাছে মরুভূমি কোন রুক্ষ বা কর্কশ জায়গা নয়, বরং এটা তাদের আবাসস্থল।মরুভূমি বসবাসের জন্য অত্যন্ত অনুপয়োগী। মরুভূমির দিন ও রাতের তাপমাত্রার মধ্যে পার্থক্য খুব বেশি হয়। দিনে তাপমাত্রা অনেক বৃদ্ধি পায় রাতে সেই তাপমাত্রা আবার অনেক কমে যায়। ।একসময় মরুভূমিগুলো বড় বড় পাথরে অস্তিত্ব ছিল। দিন ও রাতের মধ্যে তাপমাত্রার এই ব্যাপক তারতম্যের ফলে এসব পাথর প্রতিদিনই সংকোচন ও প্রসারিত হতে থাকে এবং গায়ে ফাটল দেখা দেয়। লক্ষ লক্ষ বছর ধরে এই প্রক্রিয়া চলতে থাকলে বৃহৎ পাথরখন্ডগুলো ক্রমেই ভেঙে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত হয়ে বালুকণার আকার ধারণ করে। সাহারা মরুভূমি হল পৃথিবীর বৃহত্তম মরু এলাকা। মরুভূমিতে মরীচিকা দেখা যায় যা পর্যটকদের প্রায়শই বিভ্রান্তের মধ্যে ফেলে।মরুভূমির আবহাওয়া অত্যন্ত রূক্ষ হওয়ায় এখানে স্বাভাবিক গাছপালার অস্তিত্ব নেই। খরা সহিষ্ণু কিছু কাঁটা ও ঝোপ জাতীয় গাছ এখানে জন্মায়। এসব গাছপালার শিকড় মাটির অনেক নিচে প্রবেশ করে জল সংগ্রহ করতে পারে। হাজার হাজার বছর ধরে মরুভূমিতে লুকিয়ে আছে নানা রহস্য। কৌতূহলী মানুষও এই রহস্যের পেছনে ছুটছে। দেখা মিলেছে লবণের পাহাড়ের যেখানে বৃষ্টি হয়নি গত ৪০০ বছরেও। কোথাও দেখা গেছে ক্রপ সার্কেল। নীল মানুষেরা এখনো মরুর বুকে জীবন কাটায়। এমনই রোমাঞ্চে ভরা মরুভূমি।
র্যাংক | নাম | মরুভূমিরর ধরন | ক্ষেত্রফল
(বর্গ কিলোমিটার) |
ক্ষেত্রফল
(বর্গ মাইল) |
অবস্থান |
---|---|---|---|---|---|
১ | অ্যান্টার্কটিকা | মেরুর বরফ অঞ্চল | ১৪,০০০,০০০ | ৫,৫০০,০০০ | অ্যান্টার্কটিকা |
২ | আর্কটিক | মেরুর বরফ অঞ্চল | ১৩,৯৮৫,০০০ | ৫,৪০০,০০০ | আর্কটিক (আলাস্কা, কানাডা, ফিনল্যান্ড , গ্রীনল্যান্ড, আইসল্যান্ড , নরওয়ে, রাশিয়া এবং সুইডেন) |
৩ | সাহারা | প্রায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় | ৯,০০০,০০০+ | ৩,৩০০,০০০+ | উত্তর আফ্রিকা (আলজেরিয়া, শাদ, মিশর, ইরিত্রিয়া, লিবিয়া, মালি, মৌরিতানিয়া, মরোক্কো, নাইজার , সুদান এবং তিউনিসিয়া) |
৪ | অস্ট্রেলীয় মরুভূমি | প্রায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় | ১৩,৭১,০০০ | ৫,২৯,০০০ | অস্ট্রেলিয়া |
৫ | আরবীয় মরুভূমি | পেয়ায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় | ২৩,৩০,০০০ | ৯,০০০০০ | পশ্চিম এশিয়া (ইরাক, জর্ডান , কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইয়েমেন) |
৬ | গোবি মরুভূমি | ঠান্ডা শীতকাল | ১২,৯৫,০০০ | ৫,০০০০০ | পূর্ব এশিয়া (চীন এবং মঙ্গোলিয়া ) |
৭ | কালাহারি মরুভূমি | প্রায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় | ৯,০০০০০ | 360,000 | দক্ষিণাঞ্চলীয় আফ্রিকা (এঙ্গোলা , বতসোয়ানা, নামিবিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা ) |
৮ | পাটাগোনীয় মরুভূমি | ঠান্ডা শীতকাল | ৬,৭৩,০০০ | ২,৬০,০০০০ | দক্ষিণ আমেরিকা (আর্জেন্টিনা এবং চিলি) |
৯ | সিরিয় মরুভূমি | প্রায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় | ৫,০০,০০০ | ২,০০,০০০ | পশ্চিম এশিয়া (ইরাক, জর্ডান , এবং সিরিয়া) |
১০ | গ্রেট বেসিন মরুভূমি | ঠান্ডা শীতকাল | ৪,৯২,০০০ | ১,৯০,০০০ | যুক্তরাষ্ট্র |
১১ | ছিহুয়াহুয়ান মরুভূমি | পেয়ায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় | ৩,৬২,০০০ | ১,৩৯,৭৬৯ | উত্তর আমেরিকা (মেক্সিকো এবং যুক্তরাষ্ট্র ) |
১২ | কারাকুম মরুভূমি | ঠান্ডা শীতকাল | ৩,৫০,০০০ | ১,৩৫,০০০ | তুর্কমেনিস্তান |
১৩ | কলোরাডো প্লাটেউ | ঠান্ডা শীতকাল | ৩,৩৬,৭০০ | ১,৩০,০০০ | যুক্তরাষ্ট্র |
১৪ | সোনোরান মরুভূমি | প্রায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় | ২,৬০,০০০ | ১,০০,০০০ | উত্তর আমেরিকা (মেক্সিকো এবং যুক্তরাষ্ট্র ) |
১৫ | কিজিলকুম মরুভূমি | ঠান্ডা শীতকাল | ২,৯৮,০০০ | ১,১৫,০০০ | মধ্য এশিয়া (কাজাখস্তান , তুর্কমেনিস্তান এবং উজবেকিস্তান ) |
১৬ | তাকলা মাকান মরুভূমি | ঠান্ডা শীতকাল | ২,৭০,০০০ | ১,০৫,০০০ | চীন |
১৭ | থর মরুভূমি | প্রায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় | ২,০০,০০০ | ৭৭,০০০ | দক্ষিণ এশিয়া (ভারত এবং পাকিস্তান ) |
১৮ | দাশত-ই মারগো | প্রায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় | ১,৫০,০০০ | ৫৮,০০০ | আফগানিস্তান |
১৯ | রেগিস্তান মরুভূমি | প্রায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় | ১,৪৬,০০০ | ৫৬,৪০০ | আফগানিস্তান |
২০ | আতাকামা মরুভূমি | হালকা উপকূলীয় | ১,২৮,০০০ | ৪৯,০০০ | দক্ষিণ আমেরিকা (চিলি এবং পেরু) |
২২ | মোহাভি মরুভূমি | প্রায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় | ১,২৪,০০০ | ৪৭,৮৭৭ | যুক্তরাষ্ট্র |
২২ | কলোম্বিয়া প্লাটেউ | ঠান্ডা শীতকাল | ৮৩,১৩৯ | ৩২,১০০ | যুক্তরাষ্ট্র |
২৩ | নামিব মরুভূমি | ঠান্ডা উপকূলীয় | ৮১,০০০ | ৩১,০০০ | দক্ষিণ আফ্রিকা (এঙ্গোলা এবং নামিবিয়া) |
২৪ | দাশ্তে কাভির | প্রায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় | ৭৭,৬০০ | ৩,০০,০০ | ইরান |
২৫ | দাশত-ই লুত | প্রায় গ্রীষ্মমণ্ডলীয় | ৫১,৮০০ | ২০,০০০ | ইরান |
মরুভূমি প্রধান দেশগুলোতে বনায়ন কার্যক্রম এর মাধ্যমে মরুভূমিকে সবুজে পরিণত করাকে আমরা মূলত মরু সবুজায়ন বলতে পারি।