মথুরানাথ বসু
মথুরানাথ বসু (১৮৪৩ - ১৯০১[১]) তদানীন্তন ভারতীয় উপমহাদেশের বঙ্গ প্রদেশের অর্ন্তভূক্ত যশোর জেলার কোটচাঁদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন সদানন্দ বসু এবং তার মাতা ছিলেন সুলোচনা দেবী। কৃষ্ণের লীলাভূমি মথুরার নামানুসারে তার নাম দেয়া হয় মথুরানাথ।
সাধু মথুরানাথ বসু | |
---|---|
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | কোটচাঁদপুর, বাংলা প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ) | ৫ ডিসেম্বর ১৮৪৩
মৃত্যু | ২ সেপ্টেম্বর ১৯০১ গোপালগঞ্জ, বাংলাদেশ | (বয়স ৫৭)
জাতীয়তা | বাংলাদেশি |
দাম্পত্য সঙ্গী | প্রেয়সীবালা |
সন্তান | মহেন্দ্র নাথ বসু জ্যোতি প্রকাশ বসু জন. জি বসু |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | যশোর জিলা স্কুল ডাফ কলেজ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | সমাজসেবক |
শিক্ষা
সম্পাদনাচার বছর বয়স থেকেই তিনি গৃহ শিক্ষকের কাছে বিদ্যাভাস শুরু করেন। পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত গৃহ শিক্ষকের কাছে পড়াশুনা সমাপ্ত করে যশোর জিলা স্কুলে ভর্তি হন। ১৮৫৭ সালে তিনি যশোর জিলা স্কুল থেকে এন্ট্রাস পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করে স্বর্ণপদক লাভ করেন। ১৮৫৭ সালে তিনি কলকাতার ডাফ কলেজ ভর্তি হন এবং এখান থেকেই তিনি আই.এ পাস করেন। আই.এ পরীক্ষায় তিনি প্রথম বিশ জনের মধ্যে চতুর্থ হন এবং ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে স্বর্ণপদক লাভ করেন। মথুরানাথ ১৮৬০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং এখান থেকেই তিনি প্রথম বিভাগে বি.এ পাশ করে স্বর্ণপদক লাভ করেন।
কর্ম জীবন
সম্পাদনামথুরানাথ ৪ বছর আইন ব্যবসা করেন। পরে আইন ব্যবসা ছেড়ে কিছুদিন সরকারী চাকরি করেন। সরকারী চাকরি ছেড়ে দিয়ে তিনি ব্যবসা শুরু করেন, এখানে তিনি সফল হলেও পরবর্তীতে তিনি ব্যবসা ছেড়ে দেন। ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে তিনি ৯ বছর ভবানীপুরে শিক্ষকতা করেন।
গোপালগঞ্জে আগমন
সম্পাদনামথুরানাথ বসু ১৮৭৪ সালে তিনি ফরিদপুর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিঃ ওয়েলেসের আমন্ত্রণে মিশনারী হিসাবে তৎকালীন রাজগঞ্জ বর্তমানে গোপালগঞ্জে আসেন। তৎকালীন রাজগঞ্জ ছিল সম্পূর্ণ একটি জলাভূমি। মধুমতী তীরের ছোট্ট একটি হাট ছিল রাজগঞ্জ হাট।
সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড
সম্পাদনাতিনি এ অঞ্চলে নিরক্ষরতা দূর করতে একটি স্কুল নির্মাণ করেন। পাঁচটি ছেলে ও দুটি মেয়ে নিয়ে তিনি শুরু করেন তার মিশন স্কুল। এই স্কুল ছিল অবৈতনিক, এখান থেকে বিনামূল্যে বই পেতো ছাত্র-ছাত্রীরা। পরবর্তীকালে তিনি এই স্কুলকে হাই স্কুলে উন্নীত করেন। তিনি সীতানাথ মথুরানাথ কলেজ (বর্তমানে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু কলেজ) নামে একটি মহাবিদ্যালয়ও প্রতিষ্ঠা করেন। মৃত্যুর পূর্বে তার স্কুলের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ছিলো প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত এক হাজারেরও বেশি। তিনি এ অঞ্চলে বেঙ্গল মিশন সোসাইটির অধীনে স্কুল, চিকিৎসা, ধর্ম প্রচারমূলক কাজ করতেন। এছাড়া তিনি বিভিন্ন গ্রামে পাঠশালা স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তার একক প্রচেষ্টায় গোপালগঞ্জে কোর্ট স্থাপিত হয় এবং তাকে অনারারি ম্যাজিস্ট্রেট করা হয়। তিনি এ অঞ্চলে কৃষি ব্যাংক ও পোস্ট অফিস স্থাপন করেন।
মৃত্যু
সম্পাদনামথুরানাথ বসু ২ সেপ্টেম্বর ১৯০১ সালে মুত্যুবরণ করেন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব"। sadar.gopalganj.gov.bd। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৭-১০।