ব্রায়ান টেলর

ইংরেজ ক্রিকেটার

ব্রায়ান টেলর (ইংরেজি: Brian Taylor; জন্ম: ১৯ জুন, ১৯৩২ - মৃত্যু: ১২ জুন, ২০১৭) লন্ডনের ওয়েস্ট হ্যাম এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ ক্রিকেট তারকা ও অধিনায়ক ছিলেন। ১৯৪৯ থেকে ১৯৭৩ সময়কালে প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে এসেক্স দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।[১] দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও বামহাতে সুন্দর ব্যাটিংশৈলী উপস্থাপন করেছেন ‘টঙ্কার’ ডাকনামে পরিচিত ব্রায়ান টেলর।

ব্রায়ান টেলর
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামব্রায়ান টেলর
জন্ম(১৯৩২-০৬-১৯)১৯ জুন ১৯৩২
ওয়েস্ট হ্যাম, লন্ডন, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১২ জুন ২০১৭(2017-06-12) (বয়স ৮৪)
ডাকনামটঙ্কার
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
ভূমিকাউইকেট-রক্ষক, ব্যাটসম্যান
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৪৯–১৯৭৩এসেক্স
এফসি অভিষেক৭ মে ১৯৪৯ এসেক্স বনাম কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়
শেষএফসি৩১ আগস্ট ১৯৭৩ এসেক্স বনাম নটিংহ্যামশায়ার
এলএ অভিষেক২২ মে ১৯৬৩ এসেক্স বনাম ল্যাঙ্কাশায়ার
শেষ এলএ২ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩ এসেক্স বনাম ওয়ারউইকশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৫৭২ ১০৮
রানের সংখ্যা ১৯০৯৩ ১৮৩৭
ব্যাটিং গড় ২১.৭৯ ১৮.৭৪
১০০/৫০ ৯/৮২ ১/৩
সর্বোচ্চ রান ১৩৫ ১০০
বল করেছে ৫৭
উইকেট
বোলিং গড় ৩০.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/১৬
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১০৮৪/২১১ ৯৩/২২
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৯ এপ্রিল, ২০১৯

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

ইস্ট হ্যামের সেন্ট্রাল পার্ক স্কুলে অধ্যয়ন করেছিলেন ব্রায়ান টেলর। দুই বছর জাতীয় সেবায় নিযুক্ত থাকায় খেলোয়াড়ী জীবনে বিঘ্নের সৃষ্টি হয়। খেলোয়াড়ী জীবনের শুরুতে ব্যাটিংয়ের দিকেই মনোনিবেশ ঘটিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে পল গিবের সাথে উইকেট-রক্ষণে অগ্রসর হন।

এক পর্যায়ে ইংল্যান্ডের উইকেট-রক্ষক গডফ্রে ইভান্সের সম্ভাব্য উত্তরাধিকারী হিসেবে ভাবা হয়েছিল। নিজস্ব প্রথম পূর্ণাঙ্গ মৌসুমেই অর্থাৎ ১৯৫৬ সালে ক্রিকেট রাইটার্স ক্লাব কর্তৃক বর্ষসেরা তরুণ ক্রিকেটারের সম্মাননায় ভূষিত হয়েছিলেন। তবে, সাত বছরে পূর্বেই প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটেছিল তার। টেস্ট ক্রিকেটে উপেক্ষিত হলেও ব্রায়ান টেলর তার দীর্ঘদিনের বর্ণাঢ্যময় কাউন্টি ক্রিকেট জীবন চালিয়ে যান।

১৯৬১ থেকে ১৯৭২ সময়কালে ধারাবাহিকভাবে ৩০১টি খেলায় অংশ নেন। তন্মধ্যে, ১৯৬৭ থেকে ১৯৭৩ সময়কালে অবসর গ্রহণের পূর্ব-পর্যন্ত কাউন্টি দলটির অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। তার অধিনায়কত্বে এসেক্স দল তরুণ খেলোয়াড়দেরকে নিয়ে গড়ে উঠেছিল। ফলশ্রুতিতে, অবসর গ্রহণের পরের বছরগুলোয় কাউন্টি দলটি প্রথমবারের মতো ট্রফিগুলোর সন্ধান পায়।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে ইভান্সকে সহযোগিতার লক্ষ্যে এমসিসি দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন। কিন্তু, ঐ সিরিজে ইভান্স তার অন্যতম সেরা সিরিজগুলোর একটি কাটালে কোন টেস্টেই অংশগ্রহণের সুযোগ পাননি তিনি। এ সময়ে তিনি জিম পার্কসের তুলনায় আগুয়ান ছিলেন।

বামহাতি ব্যাটিংয়ের উত্তরণ না ঘটায় ও প্রতিভাবান উইকেট-রক্ষকের প্রাচুর্য থাকায় পরবর্তীতে তাকে আর টেস্ট খেলার জন্যে ইংল্যান্ড দলে ডাকা হয়নি।

খেলার ধরন সম্পাদনা

প্রায় দুই দশক এসেক্সের প্রধান মেরুদণ্ডের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। বিশ্বস্ত উইকেট-রক্ষক ও দলনেতা হিসেবে উজ্জ্বীবনী শক্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। কাউন্টি দলের আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেও সুদক্ষভাবে দলকে পরিচালনা করে সুনাম কুড়িয়েছেন। সানডে লীগ প্রবর্তনের পর থেকেই দলকে একদিনের ঘরানা উপযোগী করে তুলেন। ব্যাটসম্যান হিসেবে তিনি দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়তেন ও বলের দিকে অগ্রসর হয়ে খেলতেন না। তবে, দর্শক কোলাহল পরিপূর্ণ অবস্থায় থাকতেই অধিক পছন্দ করতেন। ফলশ্রুতিতে, টঙ্কার ডাকনামে পরিচিতি পান।

সকল ক্রিকেট খেলায় অংশ নিয়ে ১২৯৪টি ডিসমিসাল ঘটান। এরফলে, সর্বকালের উইকেট-রক্ষকদের তালিকায় তিনি সপ্তম স্থান অধিকারের করেন। সর্বমোট ৫৭২টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে উনিশ হাজারের অধিক রান তুলেন। ঘরোয়া কাউন্টি ক্রিকেটে অসম্ভব সুন্দর ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের কারণে ১৯৭২ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননায় ভূষিত হন।[২]

অবসর সম্পাদনা

ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর ১৯৭৩ সালে ইংল্যান্ড টেস্ট দলের নির্বাচকমণ্ডলী মনোনীত হন। ১৯৭৬-৭৭ মৌসুমে এমসিসি দলকে নিয়ে বাংলাদেশ গমন করেন।

ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি ফুটবল খেলায়ও সবিশেষ পারদর্শী ছিলেন ব্রায়ান টেলর। কেন্ট লীগে বেক্সলিহিদ ও ওয়েলিং, ডিল টাউন এবং সাউদার্ন লীগে খেলেন।

১২ জুন, ২০১৭ তারিখে ৮৫ বছর বয়সে ব্রায়ান টেলরের দেহাবসান ঘটে।[৩]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Brian Taylor"। www.cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৫-১৩ 
  2. "Wisden's Five Cricketers of the Year"ESPNcricinfoESPN। ২৩ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৫ 
  3. "Brian Taylor"। ২২ জুন ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুন ২০১৭ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা