জিম পার্কস (ক্রিকেটার, জন্ম ১৯৩১)

ইংরেজ ক্রিকেটার

জেমস মাইকেল পার্কস (ইংরেজি: Jim Parks; জন্ম: ২১ অক্টোবর, ১৯৩১) সাসেক্সের হেওয়ার্ডস হিদ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ও সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা।[] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।

জিম পার্কস
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
জেমস মাইকেল পার্কস
জন্ম (1931-10-21) ২১ অক্টোবর ১৯৩১ (বয়স ৯৩)
হেওয়ার্ডস হিদ, সাসেক্স, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি লেগ ব্রেক
ভূমিকাউইকেট-রক্ষক
সম্পর্কজিম পার্কস, সিনিয়র (পিতা)
ববি পার্কস (পুত্র)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৩৭৫)
২২ জুলাই ১৯৫৪ বনাম পাকিস্তান
শেষ টেস্ট৫ মার্চ ১৯৬৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৪৯ – ১৯৭২সাসেক্স
১৯৭৩ – ১৯৭৬সমারসেট
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৪৬ ৭৩৯ ১৩২
রানের সংখ্যা ১,৯৬২ ৩৬,৬৭৩ ২,৮৩২
ব্যাটিং গড় ৩২.১৬ ৩৪.৭৬ ২৬.২২
১০০/৫০ ২/৯ ৫১/২১৩ ১/১৩
সর্বোচ্চ রান ১০৮* ২০৫* ১০২*
বল করেছে ৫৪ ৩,৮৩৭
উইকেট ৫১
বোলিং গড় ৫১.০০ ৪৩.৮২
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট -
সেরা বোলিং ১/৪৩ ৩/২৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১০৩/১১ ১,০৮৭/৯৪ ১১৩/৭
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সাসেক্স ও সমারসেটের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে অংশগ্রহণ করতেন। ডানহাতে ব্যাটিং করার পাশাপাশি ডানহাতে লেগ ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন জিম পার্কস

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

সম্পাদনা

এক ক্রিকেট পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছেন জিম পার্কস। তার বাবা জিম পার্কস সিনিয়র উজ্জ্বীবনী শক্তির অল-রাউন্ডার হিসেবে সাসেক্সের পক্ষে খেলেছিলেন। এছাড়াও একবার ১৯৩৭ সালে ইংল্যান্ডের পক্ষে টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন। এছাড়াও, তার পুত্র ববি পার্কস প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটার ছিলেন।

আক্রমণধর্মী ব্যাটসম্যান হিসেবে পার্কসের সুনাম ছিল। ফিল্ডার হিসেবে চমৎকারভাবে দৌঁড়ুতেন ও স্পিন বোলার ছিলেন। ১৯৪৯ সালে বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে সাসেক্সের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষিক্ত হন। ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত সাসেক্স ক্লাব উইকেট রক্ষণে বিশ্বস্ত খেলোয়াড়ের সন্ধান করছিল। পার্কস এ দায়িত্ব সফলতার সাথে প্রতিপালন করেন।

উইকেট রক্ষণে অগ্রসর

সম্পাদনা

অপ্রত্যাশিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জিম পার্কস উইকেট রক্ষণে এগিয়ে আসেন। এ প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করেন যে,

"দূর্ঘটনার প্রেক্ষিতে এ সুযোগ আসে। খেলোয়াড়ী জীবনের সূচনালগ্নে আমি উইকেট রক্ষণে দক্ষ ছিলাম না। আমি মূলতঃ ব্যাটিংয়ে পারদর্শী। কয়েক বছর পর চেমসফোর্ডে চ্যাম্পিয়নশীপের খেলায় এসেক্সের মুখোমুখি হয় সাসেক্স দল। নিয়মিত উইকেট-রক্ষক রুপার্ট ওয়েব আহত হন। খেলা শুরুর পূর্বে চেমসফোর্ডের অবস্থানকারী কক্ষে থাকাকালে আমরা উপলদ্ধি করি যে, আমাদের বিকল্প কোন উইকেট-রক্ষক নেই। এ অবস্থায় অধিনায়ক রবিন মারলার আমার দিকে তাকিয়ে বললেন যে, তুমি এ দায়িত্বে থাকবে। আমার কোন সরঞ্জাম ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে এসেক্সের উইকেট-রক্ষক ব্রায়ান টেলরের গ্লাভস ধার করে পরিধান করতে হয়েছিল।[]

টেস্ট ক্রিকেট

সম্পাদনা

১৯৫৪ থেকে ১৯৬৮ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে ছিচল্লিশ টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ হয় তার। ঐ সময়ে ১,৯৬২ রান তুলেন। নিজস্ব সর্বোচ্চ অপরাজিত ১০৮ রান তুলেন। এছাড়াও ১০৩ ক্যাচ ও ১১ স্ট্যাম্পিংয়ে অংশ নেন জিম পার্কস। ২২ জুলাই, ১৯৫৪ তারিখে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক ঘটে জিম পার্কসের।

১৯৫৪ সালে ২২ বছর বয়সে শুধুমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে পাকিস্তানের বিপক্ষে এক টেস্ট খেলার সুযোগ হয়েছিল জিম পার্কসের। খেলায় তিনি যৎসামান্য অবদান রাখতে সক্ষম হন। ১৯৬০ সালের শুরুতে সাত নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে অপরাজিত সেঞ্চুরি করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তার এ সেঞ্চুরির কল্যাণে ইংল্যান্ড দল ড্র করতে সমর্থ হয়েছিল ও সিরিজ ড্র করে।

এরপর থেকে তিনি ইংল্যান্ডের প্রথম পছন্দের উইকেট-রক্ষক হিসেবে ১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত খেলতে থাকেন। ১৯৬৫-৬৬ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজে ৪৮.৩৩ গড়ে ২৯০ রান তুলেন। তবে, দ্বিতীয় টেস্টে পিটার বার্জকে স্ট্যাম্পিং করতে ব্যর্থ হওয়ায় ইংল্যান্ড দলকে অ্যাশেজ করায়ত্ব না করার খেসারত গুণতে হয়।

অধিনায়কত্ব লাভ

সম্পাদনা

১৯৬৭ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত সাসেক্সের অধিনায়কত্ব করেন জিম পার্কস। পরবর্তীতে মাইক গ্রিফিথ তার স্থলাভিষিক্ত হন। ১৯৭২ মৌসুমে সাসেক্স ত্যাগ করে তিন বছরের চুক্তিতে সমারসেটে যোগ দেন। ১৯৭৬ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে নিজের অবসরের ঘোষণা দেন। ৭৩৯টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৩৪.৭৬ গড়ে ৩৬,৬৭৩ রান তুলেন। তন্মধ্যে, ৫১টি শতরান ও ২১৩টি অর্ধ-শতরানের ইনিংস রয়েছে তার। এ সময় তিনি ১,০৮৭ ক্যাচ ও ৯২টি স্ট্যাম্পিংয়ের সাথে নিজ নামকে যুক্ত করেন। বল হাতে ৫১ উইকেট দখল করেন। নিজস্ব সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন ৩/২৩।

অবসর পরবর্তীকালে হুইটব্রেডের পক্ষে কাজ করেন ও সাসেক্সের বিপণন ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও জিম পার্কস ওল্ড ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের ব্যবস্থাপক হিসেবে বেশ কয়েক বছর কর্মরত ছিলেন। তার সন্তান ববি পার্কস কাউন্টি ক্রিকেটে হ্যাম্পশায়ার ও কেন্টের পক্ষে খেলেছিলেন।

মূল্যায়ন

সম্পাদনা

১৯৬৮ সালে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে মনোনীত হন।

বিখ্যাত ক্রিকেট লেখক কলিন বেটম্যানের মতে, পার্কস স্বভাবজাত ব্যাটসম্যান ছিলেন ও সর্বাপেক্ষা কার্যকরী উইকেট-রক্ষকের মর্যাদায় আসীন। এছাড়াও বেটম্যান মন্তব্য করেন যে, যদিও তিনি কখনো গডফ্রে ইভান্সের পূর্বে কিংবা অ্যালান নটের পরে নিজেকে স্থান দিতে অস্বীকার করেছেন; তবে, পার্কস নিরাপদে ও বল গ্লাভস বন্দী করতে পারঙ্গমতা প্রদর্শন করেছিলেন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 130–131। আইএসবিএন 1-869833-21-X 
  2. Parks, Jim (এপ্রিল ১০, ২০১৬)। "'Back then, wicketkeepers never worried about scoring hundreds'" (সাক্ষাৎকার)। সাক্ষাত্কার গ্রহণ করেন Crispin Andrews। ESPNcricinfo 

আরও পড়ুন

সম্পাদনা
  • Young Jim, biography by Derek Watts, published Tempus Press, 2005.

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা
ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
পতৌদির নবম নবাব
সাসেক্স ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৬৭-১৯৬৮
উত্তরসূরী
মাইক গ্রিফিথ