শ্রীলঙ্কার নথিভুক্ত ইতিহাস ৩,০০০ বছর পুরনো, যেখানে প্রাগৈতিহাসিক মানববসতির প্রমাণ রয়েছে যা কমপক্ষে ১২৫,০০০ বছর আগের। দেশটির একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রয়েছে। শ্রীলঙ্কার প্রাচীনতম পরিচিত বৌদ্ধ রচনাবলি, যা সম্মিলিতভাবে পালি ত্রিপিটক নামে পরিচিত, চতুর্থ বৌদ্ধ সংগীতির সময় রচিত, যা ২৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে সংঘটিত হয়েছিল। শ্রীলঙ্কার ভৌগোলিক অবস্থান ও গভীর পোতাশ্রয় প্রাচীন রেশম পথ বাণিজ্য গমনপথের আদিকাল থেকে আজকের তথাকথিত সামুদ্রিক রেশম পথ পর্যন্ত এটিকে দারুণ কৌশলগত গুরুত্ব প্রদান করেছে। এর অবস্থান এটিকে একটি প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্রে পরিণত করেছিল, যার ফলে এটি ইতোমধ্যেই সুদূর প্রাচ্যেদেশীয় ও ইউরোপীয়দের কাছে অনুরাধাপুর যুগ থেকেই পরিচিত ছিল। দেশটির বিলাসদ্রব্য ও মশলার ব্যবসা বহু দেশের ব্যবসায়ীদের আকৃষ্ট করেছিল, যা শ্রীলঙ্কার বৈচিত্র্যময় জনসংখ্যা তৈরিতে সাহায্য করেছিল। সিংহল কোট্টে রাজ্যে একটি বড় রাজনৈতিক সংকটের সময় পর্তুগিজরা শ্রীলঙ্কায় (মুখ্যত দুর্ঘটনাক্রমে) এসে পৌঁছয় এবং তারপর দ্বীপের সামুদ্রিক অঞ্চল ও এর লাভজনক বাহ্যিক বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। শ্রীলঙ্কার কিছু অংশ পর্তুগিজদের দখলে চলে যায়। সিংহল-পর্তুগিজ যুদ্ধের পর ওলন্দাজ ও ক্যান্ডি রাজ্য সেই অঞ্চলগুলির নিয়ন্ত্রণ নেয়। ওলন্দাজ দখলিগুলো এরপর ব্রিটিশরা দখল করে নেয়, যারা পরবর্তীতে ১৮১৫ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত উপনিবেশায়নের মাধ্যমে পুরো দ্বীপের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রসারিত করে। ২০শ শতাব্দীর প্রারম্ভে রাজনৈতিক স্বাধীনতার জন্য একটি জাতীয় আন্দোলন শুরু হয় এবং ১৯৪৮ সালে সিলন একটি অধিরাজ্যে পরিণত হয়। ১৯৭২ সালে শ্রীলঙ্কা নামক প্রজাতন্ত্র অধিরাজ্যটিকে স্থলাভিষিক্ত করে। শ্রীলঙ্কার সাম্প্রতিক ইতিহাস একটি ২৬ বছরের গৃহযুদ্ধের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, যা ১৯৮৩ সালে শুরু হয়েছিল এবং ২০০৯ সালে চূড়ান্তভাবে শেষ হয়েছিল, যখন শ্রীলঙ্কা সশস্ত্র বাহিনীর কাছে লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ঈলম পরাজিত হয়েছিল। (সম্পূর্ণ নিবন্ধ...)
পালি ভাষায় লেখা মহাবংশ, দীপবংশ ও চোলবংশ নামক তিনটি বইয়ের ধারাবিবরণী ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে এই দ্বীপের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এই বংশাবলী সমূহ হতে উত্তর ভারত থেকে সিংহলিদের আগমনের সময় থেকে ঐতিহাসিক বিবরণ পাওয়া যায়। দ্বীপটির আধুনিক ইতিহাস ৩য় শতাব্দীর সময়ে শুরু হয়েছে। এই ধারাবিবরণীগুলোতে খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে সিংহলিদের আদি পূর্বপুরুষদের দ্বারা তাম্বাপান্নি রাজ্যের প্রতিষ্ঠার সময়কাল থেকে শ্রীলংকার ইতিহাস বর্ণনা করা হয়েছে। খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দীতে অনুরাধাপুর রাজ্যের রাজা পান্ডুকাভায়াকে শ্রীলঙ্কার প্রথম শাসক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দীতে আরহাথ মাহিন্দা (ভারতীয় সম্রাট অশোকের পুত্র) দ্বীপটিতে বৌদ্ধধর্ম প্রবর্তন করেন। (সম্পূর্ণ নিবন্ধ...)
শ্রীলঙ্কার জাতীয় প্রতীকসমূহ হল এমন প্রতীক যেগুলো শ্রীলঙ্কার ভিতর ও বিদেশে ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং ভূবিজ্ঞান হিসেবে দেশ ও জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে। শ্রীলঙ্কার জাতীয় প্রতীকগুলো হল: জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা, জাতীয় প্রতীক, জাতীয় ফুল, জাতীয় গাছ, জাতীয় পাখি, জাতীয় প্রজাপতি, জাতীয় রত্নপাথর এবং জাতীয় খেলা। সেগুলো চয়ন করা হয়েছিল এবং সময়বিশেষে সরকারিভাবে ঘোষিত হয়েছিল। এতদ্ভিন্ন অন্যান্য বেশ কিছু প্রতীক আছে যেগুলো সরকারিভাবে স্বীকৃত নয় কিংবা জাতীয় প্রতীকরূপে মান্যতা দেওয়া হয়নি, কিন্তু সেগুলো স্থানীয়ভাবে জাতীয় প্রতীক হিসেবেই পরিগণিত।
শ্রীলঙ্কার গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের সংবিধানে ঘোষিত হয় জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত, জাতীয় দিবস এবং জাতীয় ভাষা। শ্রীলঙ্কার জাতীয় রাষ্ট্র পরিষদ ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দের ৭ সেপ্টেম্বর তারিখে এই সংবিধান ঘোষণা করেছিল। ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দের ১৪ নভেম্বর তারিখে শ্রীলঙ্কার আইনসভা সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অনুমোদন করার পর সিংহলি এবং তামিল এই দুই ভাষাকেই দেশের জাতীয় ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। (সম্পূর্ণ নিবন্ধ...)
জাফনা (তামিল: யாழ்ப்பாணம், সিংহলি: යාපනය) হল শ্রীলঙ্কারউত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশের রাজধানী শহর। এটি একই নামের একটি উপদ্বীপে অবস্থিত জাফনা জেলার প্রশাসনিক সদর দফতর। ২০১২ সালে ৮৮,১৩৮ জন জনসংখ্যা সহ, জাফনা হল শ্রীলঙ্কার ১২তম জনবহুল শহর । জাফনা কান্দারোদাই থেকে প্রায় ছয় মাইল (৯.৭ কিলোমিটার) দূরে যা শাস্ত্রীয় প্রাচীনত্ব থেকে জাফনা উপদ্বীপে একটি এম্পোরিয়াম হিসাবে কাজ করেছিল। জাফনার উপশহর নাল্লুর, চার শতাব্দীর মধ্যযুগীয় জাফনা রাজ্যের রাজধানী হিসেবে কাজ করে। শ্রীলংকার গৃহযুদ্ধের আগে, এটি কলম্বোর পরে শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় সর্বাধিক জনবহুল শহর ছিল। ১৯৮০-এর দশকের বিদ্রোহী বিদ্রোহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, জনসংখ্যার কিছু অংশ বিতাড়িত এবং সামরিক দখলের দিকে পরিচালিত করে। ২০০৯ সালে গৃহযুদ্ধের সমাপ্তির পর থেকে, উদ্বাস্তু এবং অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত লোকেরা বাড়িতে ফিরে যেতে শুরু করে, যখন সরকারি এবং বেসরকারী খাতের পুনর্গঠন শুরু হয়। ঐতিহাসিকভাবে, জাফনা একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ শহর ছিল। ১৬১৯ সালে জাফনা উপদ্বীপে পর্তুগিজদের দখলের সময় এটি একটি ঔপনিবেশিক বন্দর শহরে পরিণত হয়েছিল যারা এটি ডাচদের কাছে হারিয়েছিল, শুধুমাত্র ১৭৯৬ সালে ব্রিটিশদের কাছে এটি হারানোর জন্য। গৃহযুদ্ধের সময়, বিদ্রোহী লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ঈলম (এলটিটিই) ১৯৮৬ সালে জাফনা দখল করে। ইন্ডিয়ান পিস কিপিং ফোর্স (আইপিকেএফ) ১৯৮৭ সালে সংক্ষিপ্তভাবে শহরটি দখল করে। এলটিটিই আবার ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৫ পর্যন্ত শহরটি দখল করে, যখন শ্রীলঙ্কা সেনাবাহিনী আবার নিয়ন্ত্রণ করে। (সম্পূর্ণ নিবন্ধ...)
আদম চূড়া (শ্রী পদ বা পবিত্র পদচিহ্ন), শ্রীলঙ্কার দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের শ্রীপাড়া প্রদেশে অবস্থিত একটি পর্বত চূড়া যা বৌদ্ধধর্মের অনুসারীদের কাছে অতি পবিত্র স্থান। এই চূড়ায় একটি পায়ের ছাপ আছে যার দৈর্ঘ্য ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি এবং প্রস্থ ২ ফুট ৬ ইঞ্চি। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন এই পদচিহ্নটি গৌতম বুদ্ধের, হিন্দুরা বিশ্বাস করেন এই পদচিহ্নটি তাদের দেবতা শিবের এবং মুসলিম ও খ্রিষ্টানরা বিশ্বাস করেন এটি পৃথিবীর প্রথম মানব আদম -এর পদচিহ্ন। পাহাড়ের চারপাশের বনাঞ্চল বিভিন্ন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণাগার, যেখানে হাতি থেকে চিতাবাঘ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রজাতির এবং অনেক স্থানীয় প্রজাতি বাস করে। জল বিভাজিকা হিসেবে আদম চূড়া গুরুত্বপূর্ণ পর্বতটি শ্রীলঙ্কার তিনটি জলস্রোত: কেলানি নদী, ওয়ালাওয়ে নদী এবং কালু গঙ্গা নদীর প্রধান উৎস। (সম্পূর্ণ নিবন্ধ...)
২০০৫ সালে রাষ্ট্রপতি থাকাবস্থায় চন্দ্রিকা বন্দরনায়েকে কুমারাতুঙ্গা
চন্দ্রিকা বন্দরনায়েকে কুমারাতুঙ্গা (জন্ম: ২৯ নভেম্বর, ১৯৪৫) কলম্বোয় জন্মগ্রহণকারী শ্রীলঙ্কার বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ। তিনি শ্রীলঙ্কার পঞ্চম রাষ্ট্রপতি ছিলেন। অদ্যাবধি তিনি শ্রীলঙ্কার একমাত্র মহিলা হিসেবে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও, শ্রীলঙ্কার সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রীর কন্যা তিনি। ২০০৫ সাল পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি’র (এসএলএফপি) দলীয় প্রধান ছিলেন চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা। (সম্পূর্ণ নিবন্ধ...)
শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি (সিংহলি: ශ්රී ලංකා නිදහස් පක්ෂය Sri Lanka Nidahas Pakshaya, তামিল: இலங்கை சுதந்திரக் கட்சி) শ্রীলঙ্কার অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল। ১৯৫১ সালে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী সলোমন বন্দরনায়েকে দলটি প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকেই দলটি শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক অঙ্গনে দুইটি বৃহৎ শক্তির দলের একটিরূপে পরিচিত হয়ে আসছে। ১৯৫৬ সালে দলটি প্রথমবারের মতো ক্ষমতাসীন দলের মর্যাদা পায়। সরকারের আধিপত্যবাদী দলরূপে বেশ কয়েকবার দেশ পরিচালনায় অংশ নেয়। সচরাচর দলটি সাম্যবাদী বা অগ্রসরমান অর্থনৈতিক নীতি-নির্ধারণ করে ও জাতীয়তাবাদী সিংহলী দলগুলোর সাথে সম্পর্ক বজায় রাখে। (সম্পূর্ণ নিবন্ধ...)
কুমার চোকশানাদা সাঙ্গাকারা (সিংহলি: කුමාර සංගක්කාර; জন্ম: ২৭ অক্টোবর, ১৯৭৭) মাতালে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী পেশাদার সাবেক শ্রীলঙ্কানক্রিকেটার। এছাড়াও তিনি শ্রীলঙ্কা দলের পক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করছেন। এরপূর্বে তিনি একদিনের আন্তর্জাতিক ও টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিকে জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। তাকে বৈশ্বিক ক্রিকেট অঙ্গনে সর্বকালের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ‘সাঙ্গা’ ডাকনামে পরিচিত কুমার সাঙ্গাকারাশ্রীলঙ্কা জাতীয় ক্রিকেট দলেরঅধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি একজন বামহাতি ও শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান। শুরুতে উইকেট-রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেও টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাটিং গড় বৃদ্ধিকল্পে এ দায়িত্ব থেকে অব্যহতি নেন। মে, ২০১৫ সাল পর্যন্ত রান সংগ্রহের দিক দিয়ে একদিনের আন্তর্জাতিকে দ্বিতীয় ও টেস্ট ক্রিকেটে ৫ম সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিনি। এছাড়াও উইকেট-রক্ষক হিসেবে একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ডিসমিসাল তার দখলে। (সম্পূর্ণ নিবন্ধ...)
Image 13পান্ড্য রাজ্যের মুদ্রা পাহাড়ের প্রতীক এবং হাতির মধ্যে একটি মন্দিরকে চিত্রিত করে। প্রাপ্তিস্থল:পান্ড্য, শ্রীলঙ্কা। সময়: খ্রিস্টপূর্ব ১ম শতাব্দী (শ্রীলঙ্কার ইতিহাস থেকে)