বাইবেলে মুহাম্মাদ
বাইবেলে মুহাম্মাদ একটি বিতর্ক, যেখানে ইসলামের প্রাথমিক যুগ হতে মুসলিমগণ দাবী করেন যে, তাদের নবী মুহাম্মাদের নবীত্ব সম্পর্কে বাইবেলে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে। মুসলিম লেখকেরা এই দৃষ্টিভঙ্গি আরো বিস্তৃত করেছেন এইভাবে যে, তারা বাইবেলে মুহাম্মাদ ব্যাপারে তথ্যসূত্র শনাক্ত করেন। তারা খ্রিস্টানদের নূতন নিয়ম এবং ইহুদীদের তানাখ অর্থাৎ পুরাতন নিয়ম সহ উভয় বইয়েই তা শনাক্ত করেছেন বলে দাবী করেন। কুরআন এবং হাদীসের একাধিক জায়গায় নবী মুহাম্মাদের ব্যাপারে বাইবেলে উল্লেখ করা হয়েছে বলে দাবী করা হয়েছে। বার্নাবাসের বাইবেলে, মুহাম্মদের ব্যাপারে উল্লেখযোগ্যভাবে বর্ণিত আছে।[১][২] গবেষকেরা মধ্য যুগের শুরুর দিক থেকেই দাবী করে আসছেন যে, নবীর আগমনের ভবিষ্যদ্বাণী এই বইয়ে উল্লেখ আছে।
কিছু মুসলিম লেখক ইহুদী সমাজে যিশুর পরে আরেকজন নবীর আগমনের প্রত্যাশা ছিল বলে উল্লেখ করেন। এটাও বলেন যে, এইসমস্ত প্রত্যাশা পূরণের শেষ ধাপ ছিল মুহাম্মাদের আগমন। মুসলমানরা মুহাম্মদের শেষের দিকের প্রচেষ্টার ফলপ্রসূতঃ বাইবেলের যিশুর চরিত্র ছাড়াও মূসা এবং দাঊদের মতো একাধিক চরিত্রকে সম্মান করে।
খ্রিস্টান দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কিছু উল্লেখজনক ব্যক্তিত্ব যেমন মার্টিন লুথার এবং জন ক্যালভিন মুহাম্মাদ বাইবেলের বক্তব্যানুসারে মিথ্যানবী এবং যিশুবিরোধী বলে আখ্যা দিয়েছেন। অবশ্য আরো অনেক খ্রিস্টান ব্যক্তিত্ব অন্য রকমের মত পোষণ করেন। ১৯১০ সালের ক্যাথোলিক এনসাইক্লোপিডিয়া অনুসারে, গত তিন শতক ধরে গবেষকেরা "মুহাম্মাদ নৈতিক চরিত্র এবং দায়িত্ববোধ" আলোচনা করে বলেন যে, "বেশিরভাগক্ষেত্রে এই ধরনের মন্তব্য "পক্ষপাতিত্ব এবং ইসলামের প্রতি তীব্র ঘৃণা অথবা খ্রিস্টান ধর্মের বিপুল ভালোবাসা" থেকে আসে। ঠিক একই ঘটনা ঘটে অন্য পক্ষ থেকেও, "খ্রিস্টান ধর্মের প্রতি ঘৃণা এবং ইসলাম ধর্মের প্রতি তীব্র ভালোবাসা" এই কাজ করে।[৩]
বাইবেলের অনুচ্ছেদে মুহাম্মদের নবীত্ব
সম্পাদনাআদিপুস্তক, ৪৯:১০
সম্পাদনা১০ “যীহুদা হইতে রাজদণ্ড যাইবে না,
তাহার চরণযুগলের মধ্য হইতে বিচারদও যাইবে না,
যে পৰ্য্যন্ত শীলো* না আইসেন,
জাতিগণ তাহারই আজ্ঞাবহতা স্বীকার করিবে।
১১ “সে দ্রাক্ষালতায় আপন গর্দ্দভ বাধবে,
উত্তম দ্রাক্ষালতায় আপন খরশাবককে বাঁধিবে;
সে দ্রাক্ষারসে আপন পরিচ্ছদ কাচিয়াছে,
দ্রাক্ষার রক্তে আপন কাপড় কাচিয়াছে।
[…]
- […] বা যাঁহার অধিকারে আছে, তিনি
— আদিপুস্তক ৪৯:১০,১১
কাইস আল-কালবি এবং ডেভিড বেঞ্জামিন কেলদানি এই নবীত্ব নিয়ে দেয়া বক্তব্য কোরআনের ৩ঃ৮১ এর আলোকে মুহাম্মদের নবীত্ব বলে ব্যাখ্যা করেন। [৪][৫] ডেভিড বেঞ্জামিন বিশ্বাস করেন, হিব্রু ভাষার শিলোহ শব্দটি প্রকৃতপক্ষে শালুহ ( shǎluḥ ) শব্দটি থেকে। এর অর্থ "প্রেরিত নির্দিষ্ট ব্যক্তি, বার্তাপ্রেরক" অথবা হিব্রু শব্দ শিলুয়াহ ( Shilūăḥ) থেকে এসেছে যার অর্থ "প্রতিবেদক, "ইয়াহ কর্তৃক সত্যায়িত""।[৬]
ল্যাটিন ভালগেট অনুবাদ করেছে এই শব্দকে "তিনি... যাকে প্রেরণ করা হয়েছে"। [৭]
শিলোহ বাইবেলে বর্নিত একটি শহরের নাম।
দ্বিতীয় বিবরণ, ১৮ঃ১৮
সম্পাদনা১৮ আমি তাদের মধ্য থেকে তোমার মতই একজন নবী গড়ে তুলবো। আমি তার মুখ থেকে আমার শব্দ নিঃসৃত করাওবো, ঠিক আমার আদেশ মতোই সে তা করবে। ১৯ এবং যেই তার সামনে আসবে, তার কাছ থেকে এই শব্দমালা পাবে, আমারই নামে, আমিই তাকে তা করাবো। ২০কিন্তু যে নবী, আমার নামের কথা বলবে আমার আদেশ ছাড়া, অথবা একই কথা অন্য কোন প্রভুর নামে বলবে, সেই নবীকে মৃত্যু বরণ করতে হবে।
— দ্বিতীয় বিবরণ ১৮ঃ১৮-২০, ইহুদী প্রকাশনা সংস্থা (১৯১৭)
স্যামুয়েল আল-মাগরিবি, একজন ইহুদী গণিতজ্ঞ, যিনি পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি এই বাণীকে তার বই "কনভিন্সিং দ্যা জ্যুস" মুহাম্মদ কর্তৃক ভবিষ্যৎবাণীর সত্যায়ন বলে উল্লেখ করেন।[৮] স্যামুয়েল তার বইয়ে লিখেছেন যে, দ্বিতীয় পুস্তক ২ঃ৪-৬ [এবং নাম্বারে ২০ঃ১৪ এও উল্লেখ্য] এসাউর সন্তানরা ইসরায়েলে নিঃশ্বাস নিচ্ছে এবং ইশমায়েলের সন্তানদেরও একইভাবে বর্ণনা করেছেন। [৯]
মুহাম্মদ ও মূসার মধ্যে তুলনা কুরআনের বাণীতে এবং ইসলামের ঐতিহ্যে বেশ প্রচলিত। কা'আব আল-আহবার বলেছেন, "মুহাম্মদ ও মূসার মধ্যে আল্লাহ তার দর্শন ও কথোপকথন সবচেয়ে বেশি ভাগ করে দিয়েছেন। তিনি মূসার সাথে দুইবার কথা বলেছেন এবং মুহাম্মদ তাকে দুইবার দেখেছেন।"[১০][১১] বলা হয় মুহাম্মদ স্রষ্টাকে দুইবার দেখেছেন। একবার তার স্বপ্নে[১২] এবং আরেকবার তার নবীত্বের প্রথমদিকের রাত্রিকালীন ভ্রমণে[১৩]। তবে মুসলমান গবেষকদের কেউ কেউ দাবী করেন, মুহাম্মদ মিরাজে (রাত্রিকালীন ভ্রমণে) আল্লাহকে দেখেননি।[১৪][টীকা ১]
হাদীসে এটাও উল্লেখিত যে, মুহাম্মদ তার সঙ্গীদের সামনে আলীকে হারূন এবং নিজেকে মূসার মতো বলে উল্লেখ করেছেন।[১৯][২০][২১][২২]
কিছু মুসলমান লেখক যেমনঃ মোহাম্মদ আলী কোরআনের ৪৬ঃ১০ কে দ্বিতীয় পুস্তকের ১৮ঃ১৮ এর তথ্যসূত্র বলে উল্লেখ করেছেন। ইসরায়েলের বংশোদ্ভূত মূসা এবং তারই মত একজন হবে যে কিনা মুহাম্মদ বলে বিশ্বাস করা হয়। [২৩]
আবার, কোরআনের (৭৩ঃ১৫) ফেতহুল্লাহ গুলেনের মত মুসলমান লেখকেরা দ্বিতীয় বিবরণ ১৮ঃ১৮এর তথ্য বলে উল্লেখ করেন। [২৪][২৫]
যোহন ১ঃ২০-২১ কেও অনেক মুসলিম এই ব্যাপারে ব্যবহার করে যে, দ্বিতীয় পুস্তক ১৮ঃ১৮ যিশু খ্রিস্টের নবীত্বের বার্তা নয়।[২৬] আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর দাবী করেন, যোহন ১ঃ২০-২১ অনুসারে, ইহুদীরা তাদের উপর অঙ্গীকারকৃত মসিয়াহ (যিশু) এবং নবী (মুহাম্মদ) দুইজন ভিন্ন ব্যক্তি হবে। এবং এই কারণেই তারা যোহনকে জিজ্ঞেস করে, "সে (যোহন) কে?" এবং যোহন নির্দ্বিধায় স্বীকার করে, "আমি মসীহ নই।"তারা যোহনকে আবার জিজ্ঞেস করে, "তুমি কে তাহলে? তুমিই কি এলিয়?" যোহন উত্তর দেয়, "আমি নই।" তারা তাকে জিজ্ঞেস করে, "তাহলে তুমিই কি সেই নবী?" সে উত্তর দেয়, "না।" (যোহন ১ঃ২০-২১)[২৭]
এছাড়াও যোহন ৭ঃ৪০-৪১ অনুসারে, এটা বলা যেতে পারে যে, যিশুর জীবনকালে ইহুদীরা দ্বিতীয় পুস্তকের ১৮ঃ১৮তে উল্লেখিত নবীর জন্য অপেক্ষা করছিল। তারা বিশ্বাস করতো নতুন একজন নবী আসবেন যিনি কিনা মসীহর চেয়ে ভিন্ন কেউ হবেন।[২৮] তার এই কথা গুলো শুনে কিছু মানুষ বলে উঠে, "নিশ্চয়ই এই ব্যক্তিই হচ্ছেন নবী।" কিছু মানুষ বলে, "ইনি হচ্ছেন মসীহ।" তখন অন্যরা প্রশ্ন জুড়ে, "মসীহ কীভাবে গালীল থেকে আসবেন?" (যোহন ৭ঃ৪০-৪১)[২৯]
দ্বিতীয় পুস্তক, ৩৩ঃ২
সম্পাদনা"তিনি বললেন, "স্রষ্টা সিনাই থেকে এসেছেন এবং আমাদের উপর সেইর প্রবর্তন করেছেন, যিনি কিনা পারান পর্বত থেকে উন্মেষ হবেন; যিনি দশ হাজার পবিত্র জনের একজন ডান হাতে জ্বলন্ত আগুন নিয়ে আসবেন।" "
— দ্বিতীয়পুস্তক ৩৩ঃ২
আল-সামওয়াল আল-মাগরিবি এই বাণীটি নিজের বইয়ে মুহাম্মদের নবীত্বের ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বানী বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সিনাই এখানে মূসা অর্থে ব্যবহৃত অয়েছে। সাইর পর্বত। "এসাউর পর্বত" দ্বারা যিশু এবং পারান পর্বত "ইশমায়েলের পর্বত" দ্বারা মুহাম্মদকে বোঝানো হয়েছে।[৩০]
কিছু মুসলমান আবার দ্বিতীয় পুস্তকের ৩৩ঃ২ এর সাথে কোরআনের ৯৫ঃ১-৩ এর মিল খুঁজে পান। যেখানে "ডূমুর ও জলপাই" দ্বারা যিশু, "সিনাই পর্বত" দ্বারা মূসা এবং "মক্কা" দ্বারা মুহাম্মদকে বোঝানো হয়েছে।[৩১]
"দশ হাজার পবিত্র ব্যক্তি" দ্বারা মুহাম্মদের দশ হাজার সঙ্গীর কথা বলা হয়েছে।.[৩২] দেখুনঃ মক্কা বিজয়
গীতসংহিতা, ৪৫
সম্পাদনাগীতসংহিতা (৪৫ঃ১-১৭) রাজার প্রশংসাবানী সংবলিত একটি ভবিষদ্বানী ও সঙ্গীত। অনেক মুসলমান গবেষক নিম্নোক্ত কারণে এই রচনাকে মুহাম্মদের জন্য রচিত বলে উল্লেক্ষ করেন।[৩৩][৩৪]
- রাজার সৌন্দর্যঃ "আপনি সবচেয়ে চমৎকার পুরুষ" [গীতসংহিতা ৪৫ঃ২]
- রাজার তলোয়ার এবং শত্রু বিরুদ্ধে জয়" "সাথে থাকা তলোয়ার নিয়ে আপনি শক্তিশালী, জাঁকজমক পোশাকে আপনি মান্যবর। সত্য, সম্মান ও সুবিচারের জন্য বিজয় অভিযান চালিয়ে যান, আপনি মান্যবর। আপনার ডান হস্ত সকল অবিশ্বাস্য অর্জন করুক। আপনার ধারালো তীর ভেদ করে যাক শত্রু দলের রাজার হৃদয়, তারা ধ্বসে পড়ুক আপনার পদপ্রান্তে।" [গীতসংহিতা৪৫ঃ৩-৫]
- রাজার কন্যা [আয়েশা, হাফসা ও সাফিয়া] এই রাজার সবচেয়ে সম্মানিত নারীঃ"রাজার কন্যারা আপনার সবচেয়ে সম্মানিত নারী" [গীতসংহিতা ৪৫:৯]
- রাজা দাঊদ সাফিয়া বিনতে হুওয়াই কে "তার কন্যা" বলে অভিহিত করেন, যিনি কিনা মুহাম্মদের বিবাহিত স্ত্রী ছিলেন। "মনোযোগ দিয়ে শুনো, কন্যা। নিজের মানুষ এবং পিতৃঘর ভুলে যাও। রাজাকে তোমার সৌন্দর্যে বিমোহিত হতে দাও,তাকে শ্রদ্ধা কর। তোমার জন্য তিনিই তোমার মালিক।" [গীতসংহিতা ৪৫ঃ১০-১১]
- রাজা আল-মুকাকিস কর্তৃক তার নিকট প্রেরিত উপহার" "টির শহর আপনার কাছে উপহার হিসেবে আসবে, ধনী লোকজন আপনার বদান্যতা চাইবে।" [গীতসংহিতা ৪৫:১:১২]
- তার নাম "উচ্চ প্রশংসিত": "আমি আপনার স্মৃতি বাঁচিয়ে রাখবো সকল বংশধরের মাঝে ছড়িয়ে দিব। জাতি আপনার প্রশংসা করবে চিরকাল ধরে।" [গীতসংহিতা ৪৫ঃ১৭]
গীতসংহিতা,১১০ঃ১
সম্পাদনাদাঊদের স্রষ্টা আমার মালিককে জানিয়েছেন, "আমার ডানে থাকো, যতক্ষন না আমি তোমার শত্রুদলকে তোমার পদতলে নিয়ে আসি।"
— গীতসংহিতা ১১০ঃ১
একাধিক মুসলমান লেখক, যেমন আফজাল-উর-রহমান এবং ডেভিড বেঞ্জামিন কেলদানি বলেন যে, গীতসংহিতা ১১০ঃ১ আসলে মুহাম্মদ ও তার আল-ইসরা এবং আল-মিরাজের দিকে যাত্রার ভবিষ্যদ্বাণী করে। [৩৫][৩৬] সুসমাচারে, যিশু এই বাণী তার নিজের জন্য বলে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, এখানে "আমার মালিক" দ্বারা খ্রিস্টকে বোঝানো হয়েছে। খ্রিস্ট উপাধি তিনি পরবর্তীতে নিজেই ধারণ করেন। [৩৭]
যিশাইয়, ২৯ঃ১২
সম্পাদনাএবং তার প্রতি বই প্রেরিত হয়, যা তিনি শিখেননি, বলা হয়, এটা পড়, আমি তোমার প্রার্থনা করি। সে বলে, আমি পড়তে জানি না।
— যিশাইয় ২৯ঃ১২
জাকির নায়েক এই বাণীটি মুহাম্মদকে নিয়ে করা ভবিষ্যতদ্বানী বলে উল্লেখ করেন। কেননা উল্লেখিত আছে যে, যখন বাণী নিয়ে জিব্রাইল মুহাম্মদের কাছে আসে এবং পড়তে বলে, মুহাম্মদ জানায়, "আমি পড়তে জানি না।"[৩৮] একই বাণী খ্রিস্টান গবেষকেরা অবশ্য অন্য চোখে দেখে। তাদের মতে এই বাণী অবিশ্বাসীদের জন্য, যারা নবী ইসাইয়াহের কথা বুঝতে পারেনি বা অবিশ্বাস করেছিল। তার দর্শন ছিল সীল করে দেয়া বইয়ের মতো যা প্রকান্তরে গুপ্ত ছিল।[৩৯]
যিশাইয়, ৪০
সম্পাদনাঅরণ্যের মাঝে একজনের কান্নার কণ্ঠ বলে উঠে, মরুভূমিতে স্রষ্টার দিকে সরাসরি যোগাযোগের রাস্তা তৈরিতে নিজের মালিকের পথে তৈরি হও।
— যিশাইয় ৪০ঃ৩
খ্রিস্টানরা এই বক্তব্যকে বাপ্টিস্ট জনকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে বলে মানেন। যিনি কিনা যিশুর কাজিন ছিলেন। তিনি অরণ্যে বাস করতেন এবং যিশুর আগমন উল্লেখ করেছিলেন। মার্কের বাইবেলে এই বাণী সরাসরি বাপ্তাইজক যোহনকে উল্লেখ করেছে বলে দাবী করে। [৪০] যিশাইয় ৪০ঃ৩-৫ এর ব্যাখ্যা মুসলমান সমাজে অবশ্য মুহাম্মাদকে ইঙ্গিত করে দেয়া বলেই প্রচলিত। [৪১][৪২] আলী উনাল কোরআনের [ সুরা ফাতিহা ১:৬-৭ ] এক্ষেত্রে উল্লেখ করেন, যাতে বলা হয়েছে, "আমাদেরকে সরল পথ দেখাও,[১ঃ৬] সে সমস্ত লোকের পথ, যাদেরকে তুমি নেয়ামত দান করেছ। তাদের পথ নয়, যাদের প্রতি তোমার গজব নাযিল হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।[১ঃ৭] "
যিশাইয়, ৪২
সম্পাদনা"সাবধান! আমার দাস, যাকে আমি তুলে ধরি, আমার নির্বাচিত জন, যার মাঝে আমার আত্মা উদ্ভাসিত হয়! আমার আত্মা আমি তার মাঝে দেখেছি। সে সুবিচার নিয়ে আসবে 2 সে চিৎকার করবেনা কিংবা রাস্তাঘাটে তার উচ্চস্বর শোনা যাবে না।. 3 কোন শুকনো নলখাগড়া সে ভাঙবে না, এবং কোন তিসিবীজে ধুম্রপাণ করবেনা। সত্যের দ্বারা সুবিচার নিয়ে আসবে সে। 4 সে ব্যর্থ হবে না, উৎসাহ হারাবে না। পৃথিবীতে সে সুবিচার নিয়ে আসার আগ পর্যন্ত, দ্বীপপুঞ্জে তার আইন নিয়ে আসার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করণীয়।
— যিশাইয় ৪২ঃ১-৪
যিশাইয় ৪২ মুসলমানদের মাঝে অনেক আগে থেকেই মুহাম্মাদ সম্পর্কিত ভবিষ্যদ্বানী হিসেবে ব্যবহৃত। মুহাম্মাদের সময়কাল থেকেই মুসলমানরা বিশ্বাস করে একমাত্র মুহাম্মাদই এককভাবে সেই ভবিষ্যদ্বানীর সত্যতা প্রমাণ করে। [৪৩][৪৪] প্রথম বাক্যের "সাবধান আমার দাস, যাকে আমি তুলে ধরেছি,আমার নির্বাচিত" কথাটি হিব্রুতে অনুবাদ করলে। "আমি তুলে ধরেছি" হচ্ছে "אתמך"(এতমোখ)। এই শব্দ বাইবেলের অন্য কোথায় আসে নি। মুসলমান লেখকেরা এই এতমোখ ( "אתמך") শব্দের সাথে আরেকটি শব্দের লিখনীর "אחמד" মিল খুঁজে পান, যা হল আহমাদ। এতদ্বারা প্রভু কর্তৃক নির্বাচিত ব্যক্তি হল আহমাদ, এরকম যুক্তি দাঁড় করানো হয়েছে।[৪৫]
মুহাম্মাদের স্ত্রী,আয়িশা ,যিনি কিনা আবু বকরের কন্যা বিশ্বাস করতেন মুহাম্মাদ এই যিশাইয় ৪২ এর ভবিষ্যদ্বানী পূরণ করেছেন। আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আল-আস,কা'আব আল-আহবার, এবং আবদুল্লাহ ইবনে সালামও এই দলের অন্তর্ভুক্ত।
যিশাইয় ৪২ঃ১৩ তে মুসলমান সাম্রাজ্য জয় নিয়ে উল্লেখ আছে বলে বিশ্বাস করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে, "নতুন গান" দ্বারা আরবি ভাষার কোরআন অথবা ইসলাম ধর্মের প্রার্থনার ডাক আজানকে বোঝানো হচ্ছে। [৪৬] দ্বীপপুঞ্জ দ্বারা ইন্দোনেশিয়া কিংবা মালয়েশিয়া বোঝানো হতে পারে। [৪৭]
সেলা পর্বত দ্বারা মদিনার পর্বত এবং১১তম লাইনে উল্লেখিত মুহাম্মাদের পূর্বপুরুষ কেদার এর উল্লেখ মুসলমানরা প্রমাণ হিসেবেই মেনে নেয়। [৪৮]
যিশাইয়, ৫৪
সম্পাদনা"গাও, ও ব্যারেন, তুমি যে এখনো জন্মাও নি। গেয়ে এবং উচ্চস্বরে কেঁদে ভাঙ্গোন ধরাও। তুমি, যে এখনো গর্ভে ধারণ করনি। বিবাহিত নারীদের বাচ্চাদের চেয়ে নিঃসঙ্গ বাচ্চাদের জন্য। " প্রভু বলেন।
— যিশাইয় ৫৪ঃ১
মুসলমান লেখকেরা দাবী করেন "ব্যারন" দ্বারা এখানে মক্কাকে বোঝানো হয়েছে, কেননা মুহাম্মাদের আগে কোন নবী আসেনি। রাহমাতুল্লাহ কীরানবি বলেন, "সন্তান গর্ভে আসেনি" দ্বারা বোঝানো হচ্ছে " আগে কোন নবী আসেনি"। [৫০] তারা দাবী করেন, "নিঃসন্তান নারী" হল হাজেরা, "বিবাহিত নারী" দ্বারা সারাহকে বোঝানো হয়েছে। [৫১]
"তোমার তাঁবুর বিস্তার ঘটাও, তাঁবুর পর্দা টেনে দাও আরো বিস্তৃত করে, পিছুপা হয়ও না। তারগুলো লম্বা কর, ভিত্তি মজবুত করে। তমার ডানে এবং বামে বিস্তৃত কর।
— যিশাইয় ৫৪ঃ২-৩
এই অংশটিকে মুসলমান সাম্রাজ্যর বিস্তৃতির ভবিষ্যদ্বানী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
দানিয়েল,৭
সম্পাদনারোমান সাম্রাজ্যের চোখে চতুর্থ পশু বলে উল্লেখিত দানিয়েল ৭ নিয়ে একাধিক মুসলমান লেখকেরা কথা বলেছেন।[৫২] ১০ শিং দ্বারা রোমান সাম্রাজ্যের ১০ পরাশক্তি যারা কিনা ১০টি বড় ধরনের নিপীড়ন নিগ্রহ চালিয়েছিলেন, তা অভিহিত করা হয়।
- নিরো.
- ডোমিটিয়ান
- ট্রাজান
- মারকুস অরেলিয়াস
- সেপ্টিমাস সেভেরাস
- ম্যাক্সিমিনাস
- ডিসিয়ুস
- ভ্যালেরিয়ান
- অরেলিয়ান
- ডিওক্লেটিয়ান[৫৩]
১১তম শিং বলা হয় রোমান সম্রাট কন্সটানটাইন ১ এবং নিসিইন ক্রীডকে তারা সময় ও আইনের পরিবর্তন আনেন। [৫৪] নিসীইন খ্রিস্টান যিশুর পথালম্বী আরিয়ানদের সাড়ে তিন শতকের জন্য নিপীড়ন করেন, যা ইসলাম সাম্রাজ্যের উদ্ভবের আগ অব্দি বহাল ছিল। [৫৫] ড্যানিয়েল ৭ঃ২৫ এ নিয়ে বলা হয়েছে বলে বিশ্বাস করা হয়, "একজন, যে কিনা মানবপুত্রের মত" দ্বারা মুহাম্মাদ ও তার স্রষ্টা কর্তৃক সিংহাসনে অধিষ্ঠিত পদকে বলা হয়। [৫৬] কন্সটাটাইন ১ বাকি তিনজন শিং লিসিনিয়াস,ম্যাক্সেন্টিউস ও ম্যাক্সিমিয়ানকে দমন করেন। [৫৭]
হাবাকুক,৩ঃ৩
সম্পাদনাপ্রভু দক্ষিণ দিক থেকে আসবেন, পবিত্র পারণ পর্বত থেকে আর গৌরব স্বর্গ ছাপিয়ে যাবে, পৃথিবী ভরে উঠবে তার প্রশংসায়।
— হাবাকুক, ৩ঃ৩
যেহেতু যিশুর সাথে পারণ পর্বতের কোন সংযোগ নেই, তাই মুসলমানরা দাবী করেন, এটি মূলত "ইশমায়েলের পর্বত" এবং "পবিত্র একজন" এখানে মূলতঃ মুহাম্মাদ [৫৮] তারা দক্ষিণ থেকে আগত দ্বারা ফিলিস্তিনের দক্ষিণ বা হেজাজ বোঝায়।
সলোমনের গীত ৫:১৬
সম্পাদনাতার মুখ নিঃসৃত বাণী সর্বোচ্চ সুমিষ্টঃ হ্যা, তিনি আপাদমস্তক প্রেমময়। এই হল আমার প্রিয়তম ও এই হল আমার বন্ধু, হে জেরুজালেমের কন্যাগণ। (মূল পাণ্ডুলিপি: חיכו ממיתדים ויכולו מחמדים זהולו ויזן רעל ב נוטה יעפוס אולם, উচ্চারণ: হিক্কো মামিত্তাকিম ভিকুল্লো মাহামাদিম জেহদুদি ভেযেন রা'ল বে নুতে ইয়াপুস হালাম।)
সালিহ আল মুনাজ্জিদ বলেন[৫৯],
"আমরা হিব্রু ভাষার কিছু বিশেষজ্ঞকেও উল্লেখ করেছি, যারা এই অনুবাদগুলির স্বচ্ছতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এবং নিশ্চিত করেছেন যে মোহাম্মদীম শব্দটি কোনও যথাযথ বিশেষ্য বা নাম নয়; বরং এটি সৌন্দর্য এবং আকাঙ্ক্ষার পরিচায়ক এবং এটি পুরাতন টেস্টামেন্টের অনেক জায়গায় এর অর্থ সহ উল্লেখ করা হয়েছে।
তদুপরি, এখানে প্রসঙ্গটি মুহাম্মাদকে উল্লেখ করে শব্দের যে কোনও ব্যাখ্যা করে নি। গীতসংহিতার পুরো বইটি একটি পুরুষ এবং একজন মহিলার মধ্যে প্রেমমূলক কবিতা, প্রেমমূলক বাক্যাংশ সহ। মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) অর্থাৎ শেষ নবীকে উল্লেখ করার প্রসঙ্গটি এর থেকে খুব দুরে।
এই শব্দের ইংরেজি অনুবাদ হিসাবে (মুহাম্মাদিম) তারা প্রেমময়তা, মনোমুগ্ধকর, আকাঙ্ক্ষা এবং আনন্দ হিসাবে শব্দগুলি উল্লেখ করেছেন, যা আহমদ বা মুহাম্মদের মতো নামের অর্থের কাছেও আসে না।
তা সত্ত্বেও, পূর্ববর্তী বইগুলিতে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে যেটি সত্য হিসাবে প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত, মহান আল্লাহ তাআলা, বলেছেন (অর্থটির ব্যাখ্যা) :
“‘‘যারা অনুসরণ করে রাসূলের, উম্মী (নিরক্ষর) নবীর , যার উল্লেখ তারা তাদের কাছে তাওরাত ও ইঞ্জীলে লিপিবদ্ধ পায়।"
[আল-এ 'রাফ 7: 157]।
এটি প্রমাণ করার জন্য কিছু শব্দের অর্থ এমনভাবে বিভক্ত হওয়া দরকার নেই যা হিব্রু ভাষায় তাদের অর্থের বিপরীত এবং যে প্রসঙ্গে তারা হাজির হয় তার বিপরীত। প্রবীন আলেমগণ এই বিষয় নিয়ে কাজ করে বই লিখেছেন, ওল্ড টেস্টামেন্ট এবং নিউ টেস্টামেন্টে বর্ণিত ভবিষ্যদ্বাণীগুলি সংকলন করেছেন এবং অন্যান্য ধর্মের বইয়েও,.... আর আল্লাহই ভাল জানেন।
কিছু অনলাইন অনুবাদক শব্দকোষে হিব্রুতে "מחמד" শব্দটি লিখলে ইংরেজিতে ভিন্ন অর্থ অনুবাদ না হয়ে বরং নাম হিসেবে "Muhammad" শব্দটি উল্লেখ করা হয়। [৬০]
নূতন নিয়ম
সম্পাদনাদুষ্ট কৃষকের নীতিগল্প
সম্পাদনামথি (২১ঃ৩৩-৪৬) কাইসের মতো মুসলমান লেখক দ্বারা ভিন্নভাবে ব্যাখা হয়েছে। এতে আঙ্গুরের ক্ষেত দ্বারা প্রভুর রাজ্য,দাস দ্বারা স্রষ্ট কর্তৃক প্রেরিত নবী এবং তাবূতে বাসরত কৃষকদের দ্বারা ইজরায়েলের অধিবাসীদের বোঝানো হয়েছে। ইসরায়েলের লোকজন নিজেদের মাজ্ঝে খুনোখুনি করতো, স্রষ্টা তার প্রিয় দাস যিশুকে পাঠালে, তারা তাকেও হত্যার চেষ্টা চালায়। এই কারণেই যিশু বলেন, " প্রভুর রাজ্য তাদের থেকে নয়ে নেয়া হবে এবং যারা ফল ফলাতে পারে, তাদের(মুহাম্মাদ ও তার জাতি) হাতে সমর্পণ করা হবে। [৬১]
মুসলমানরা উক্ত নীতিগল্পটি নিচের হাদিসের আলোতে দেখেন, [৬২][৬৩]
আবু হুরাইয়া কর্তৃক বর্ণিত, আল্লাহর প্রেরিত রাসূল বলেছেন, "আমি এবং আমার পূর্ববর্তী নবীগণের অবস্থা এমন, এক ব্যক্তি যেন একটি গৃহ নির্মাণ করল; তাকে সুশোভিত ও সুসজ্জিত করল, কিন্তু এক পাশে একটি ইটের জায়গা খালি রয়ে গেল। অতঃপর লোকজন এর চারপাশে ঘুরে আশ্চর্য হয়ে বলতে লাগল ঐ শূন্যস্থানের ইটটি লাগানো হল না কেন? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমিই সে ইট। আর আমিই সর্বশেষ নবী। (মুসলিম ৪৩/৭ হাঃ ২২৮৬, আহমাদ ৭৪৯০) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩২৭১, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৩২৮০)"[৬৪]
কোরআনের বিভিন্ন জায়গায় ইহুদীদের উপরে পূর্বে স্রষ্টা কর্তৃক অবতীর্ণ নবী হত্যার ব্যাপারে দোষারোপ করা হয়েছে।
কোরআন ২ঃ৯১ যখন তাদেরকে বলা হয় আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তাতে বিশ্বাস কর। তারা বলে আমাদের নবীর প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে আমরা তাতে বিশ্বাস করি। তা ছাড়া সব কিছুই তারা প্রত্যাখ্যান করে। যদিও এ কোরআন সত্য এবং তাদের কাছে যা আছে তা (কোরআনকে) সমর্থন করে। হে নবী! আপনি তাদের বলুন, যদি তোমরা অতীতে তোমাদের ওপর অবতীর্ণ হওয়া বিষয়ের প্রতি বিশ্বাসী হতে তবে কেন তোমরা অতীতে নবীদেরকে হত্যা করেছিলে"
কোরআন ২ঃ৮৭ অবশ্যই আমি মূসাকে কিতাব দিয়েছি। এবং তার পরে পর্যায়ক্রমে রসূল পাঠিয়েছি। আমি মরিয়ম তনয় ঈসাকে সুস্পষ্ট মোজেযা দান করেছি এবং পবিত্র রূহের মাধ্যমে তাকে শক্তিদান করেছি। অতঃপর যখনই কোন রসূল এমন নির্দেশ নিয়ে তোমাদের কাছে এসেছে, যা তোমাদের মনে ভাল লাগেনি, তখনই তোমরা অহংকার করেছ। শেষ পর্যন্ত তোমরা একদলকে মিথ্যাবাদী বলেছ এবং একদলকে হত্যা করেছ।
খ্রিস্টানরা দাবী করে যে, যিশু নিজেই এই গল্পের মিস্ত্রি কর্তৃক বর্জিত চরিত্র প্রধান চরিত্র। যদিও যিশু এখানে তাবুবাসী দ্বারা বর্জিত হন, মিস্ত্রী কর্তৃক নয়।..[৬৫] বাইবেলের বিশ্বাসীরা এখানে ভাষাগত তত্ত্ব এনে এই দাবীকে সমর্থন যোগান।[৬৬]
উকিল
সম্পাদনাযোহন, ১৪ঃ১৬: "আমি পিতার কাছে প্রার্থনা করব, তিনি সাহায্যকারী পাঠাবেন । সে সব সময় তোমাদের পাশেই থাকবে।"
যোহন, ১৫ঃ২৬: যখন সেই সাহায্যকারী আসবেন, যাকে আমি পিতার উপস্থিতিতে তার কাছ থেকে তোমাদের কাছে পাঠাবো -- যেই আত্মা পিতার উপস্থিতিতে সত্য নিয়ে আসবে-- সে আমার ব্যাপারে স্বাক্ষী হবে।" [৬৭]
যোহন,১৬ঃ৭: "বরং, আমি তোমাদের সত্যি কথাটি বলি। আমি চলে গেলেই তোমাদের সবার জন্য ভাল হবে। কারণ আমি না গেলে সেই সাহায্যকারী আসবে না আর আমি গেলেই সে এখানে আসবে।"[৬৮]
যোহন, ১৬ঃ১২-১৪: 12 ‘তোমাদের বলবার মতো আমার এখনও অনেক কথা আছে; কিন্তু সেগুলো তোমাদের গ্রহণ করার পক্ষে এখন অতিরিক্ত হয়ে যাবে৷ 13 সত্যের আত্মা যখন আসবেন, তখন সে সকল সত্যের মধ্যে তোমাদের পরিচালিত করবেন৷ সে নিজে থেকে কিছু বলেন না, কিন্তু সে যা শোনে তাই বলে, আর আগামী দিনে কি ঘটতে চলেছে তা এই সত্যের আত্মা আত্মা তোমাদের কাছে বলবে৷ ১৪ এটি আমাকে মহিমান্বিত করবে, কারণ আমি যা বলি তাই এটি গ্রহণ করবে এবং তোমাদের তা বলবে৷ [৬৯]
মুসলমান লেখকেরা সত্যের আত্মাকে একজন মানুষ নবী বলে মানেন। তাই এই বাণীগুলো তার নিজের স্বপক্ষে নয় বরং মুহাম্মাদের উদ্দেশ্যে ভবিষ্যদ্বানী বলে দাবী করেন। তবে খ্রিস্টানদের মতে, এই বাণিমালায়, যিশু "সত্যের আত্মা" বোঝাতে ব্যক্তিবাচক সর্বনাম ব্যবহার করেনি বরং ববস্তুবাচক সর্বনাম ব্যবহার করেছেন। যা দ্বারা প্রমাণিত হয়, সত্যের আত্মা কোন ব্যক্তি নয়। যোহন ৪ঃ১-৩ এও একই ভাবে বস্তুবাচক সর্বনামের ব্যবহার করা হয়েছে।
"প্রিয়, সকল আত্মাকে বিশ্বাস করিও না। বরং যেসমস্ত প্রভু কর্তৃক প্রেরিত, সেগুলোকে বিশ্বাস কর। কারণ, বিশ্বে অনেক ভুয়া নবী চলে এসেছে।" (যোহন৪ঃ১-৩) [৭০]
অনেক মুসলমান লেখক "আরেক উকিল" যিশু নিজের জন্য (যোহন২ঃ১)[৭০] ব্যবহার করেছেন। এই দাবী মূলতঃ কোরআনের ৬১তম সূরার ৬ নাম্বার আয়াত থেকে আসে। একজন খ্রিস্টান পরিবারে জন্ম নেয়া মুসলমান গবেষক ইবনে ইসহাক সবার প্রথম এই দাবী করেন। .[৭১] ডেভিড বেঞ্জামিন কেলদানির মতো কিছু মুসলমান লেখক অবশ্য বাইবেলে ব্যবহৃত উকিল তথা Paraclete শব্দটি গ্রীক শব্দ περικλυτός (periklytos) থেকে এসেছে বলে দাবী করেন। শব্দটির অর্থ যশপূর্ণ, প্রশংসনীয় যা মুহাম্মাদের অন্য নাম "আহমদ" শব্দের অর্থের সাথে মিলে। [৭২][৭৩]
আরেকজন মুসলমান মিশনারি Paraclete বা উকিল শব্দটি মুহাম্মাদের চেয়ে বাইবেলে বর্ণিত সত্যের আত্মার জন্য বেশি মানানসই বলে দাবী করেন। আহমেদ দীদাত দেখিয়েছে, যিশু পৃথিবী ছেড়ে যাওয়ার আগেও বিভিন্ন সময় সত্যের আত্মা শব্দজোড়া ব্যবহার করেছিলেন। [৭৪]
খ্রিস্টানরা বলে, এইসকল ভবিষদ্বানীতে বর্ণিত সাহায্যকারী মূলতঃ সত্যের আত্মা। অন্য একটি বার্তায়, একমাত্র যিশু চলে গেলেই এই সাহায্যকারী আসবেন বলে বলা হয়েছে। [৩৮] মুহাম্মাদের একাধিক নামের মাঝে অন্যতম একটি নাম হ আস-শফি (in Arabic: الشفيع) যার অর্থ উকিল বা মধ্যস্থতাকারী । [৭৫] একারণেও অনেকে বাইবেলে বর্ণিত উকিল আসলে যে মুহাম্মাদ তা বিশ্বাস করেন। [৭৬]
ইবনে ইসহাক ছাড়াও ইবনে তাইমিয়্যাহ, ইবনে কাথির, আল-কুরতুবি,রাহমাতুল্লাহ কাইরানাওয়াবির মতো মুসলমান গবেষকেরা এ ব্যাপারে একমত হয়েছেন। .[৭৭]
বার্নাবাসের সুসমাচার
সম্পাদনামুহাম্মদ আবু জাহরার মতো কিছু মুসলমান দাবী করেন বর্তমান যুগের বাইবেল বিকৃত হয়েছে। যিশু কর্তৃক বর্ণিত বেশ কিছু শুদ্ধ উক্তি বর্তমানের বাইবেল থেকে বাদ দিয়ে দেয়া হয়েছে। পুরনো শুদ্ধ বার্নাবাসের সুসমাচারে এখনো মুহাম্মাদ সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী আছে।[৭৮] আলেক্সান্দ্রিয়ার গীর্জাগুলোতে ৩২৫ সাল অব্দি বার্নাবাসের সুসমাচার স্বীকৃতি প্রাপ্ত ছিল বলে পরবর্তীতে একজন মুসলমান লেখক আতা উর-রহিম দাবী করেন।[৭৮] রেঁনেসা যুগে এসে এই বার্নাবাসের সুসমাচারে অনেক পরিবর্তন সাধিত হয়। [৭৯][৮০][৮১]
বাইবেলে মুহাম্মাদের সাথের লোকজন
সম্পাদনাকোরআন এর ৪৮ঃ২৯তে উল্লেখ আছে যে, "যারা মোহাম্মদের সাথে"র মানুষদের ব্যাপারে তোরায় বা তাওরাতে বর্ণিত আছে।
কোরআন ৪৮ঃ২৯ মুহাম্মদ আল্লাহর রসূল এবং তাঁর সহচরগণ কাফেরদের প্রতি কঠোর, নিজেদের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতিশীল। আল্লাহর অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি কামনায় আপনি তাদেরকে রুকু ও সেজদারত দেখবেন। তাদের মুখমন্ডলে রয়েছে সেজদার চিহ্ন । তওরাতে তাদের অবস্থা এরূপ এবং ইঞ্জিলে তাদের অবস্থা যেমন একটি চারা গাছ যা থেকে নির্গত হয় কিশলয়, অতঃপর তা শক্ত ও মজবুত হয় এবং কান্ডের উপর দাঁড়ায় দৃঢ়ভাবে-চা ষীকে আনন্দে অভিভূত করে-যাতে আল্লাহ তাদের দ্বারা কাফেরদের অন্তর্জালা সৃষ্টি করেন। তাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সৎকর্ম করে, আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা ও মহাপুরস্কারের ওয়াদা দিয়েছেন।
এই আয়াত অনুসারে, "যারা মুহাম্মাদের সাথে থাকে" বা মুহাম্মাদের সহচর তাদেরকে তোরা বা তাওরাতে যারা মাথা নিচু করতো, প্রার্থনায় হাঁটু মুড়ে বসতো এবং স্রষ্টার সন্তুষ্টি ও দয়া প্রার্থনা করতো তাদের সাথে উদাহরণ দেয়া হয়। বাইবেলে উল্লেখিত চরিত্রগুও মুসলমানদের ধর্মীয় ইতিহাসে পাওয়া যায় এবং এই চরিত্রগুলোর প্রার্থনা ভঙ্গিতে মিল ছিল।
আদিপুস্তক ১৭ঃ৩-৪ এবং আব্রাহাম "নিজের চেহারা মাটিতে ফেলে" এবং স্রষ্টা তার সাথে কথা বলেন, বলেন। আমার জন্য, শোনো, আমার প্রতিজ্ঞা তোমার সাথে, তুমি হবে অনেক জাতির পিতা।
নম্বর ১৬ঃ২০-২২ এবং প্রভু মোজেস এবং এরনকে বলেন, নিজেদের এই জনসমাগম থেকে আলাদা করো, আমি তাদের হয়তো অল্প সময়ের ব্যবধানেই শেষ করে দিব। আর তারা "নিজেদের চেহারা মাটিতে লুটালো"। এবং তারা বলল, ও প্রভু, সকল মাংস শরীরের মধ্যে থাকা আত্মার প্রভু, একজনের পাপে, সমগ্র জনসভাকে শেষ করে দেয়া কি মানায়?
গীতসংহিতা ৯৫ঃ৬ আসো, চলো একসাথে "মাথা নত করি" প্রার্থনায় "হাঁটু ভেঙে বসি" আমাদের স্রষ্টা প্রভুর সামনে।
১ রাজাবলি ১৮ঃ৪২ তাই আহাব উঠলো, খেলো এবং পান করলো। এবং এলিজাহ কারমেলের উপরে উঠল। এরপর সে "মাটিতে মাথা নিচু করলো এবং তার মাথা দুই হাঁটুর মাঝে রাখলো"।
নহিমিয় ৮ঃ৬ এজরা সর্বসেরা ঈশ্বর প্রভুর প্রশংসা করলো, এবং অন্য সকলে তাদের হাত তুললো এবং বললো, "আমেন! আমেন!" এরপর তারা "মাথা নোয়ালো" এবং "মাটিতে চেহারা নামিয়ে" প্রার্থনা করলো স্রষ্টার।
মথি ২৬ঃ৩৯ এবং সে [যিশু] কিছুটা এগিয়ে গেলো, এবং "নিজের চেহারায় লুটিয়ে পড়লো" এবং প্রার্থনা করলো, এই বলে, ও আমার পিতা, যদি সম্ভব হয়, এই পেয়ালা আমার থেকে পাশ কাটিয়ে দাও। অন্তত যেভাবে আমি চাই নাহলেও যেভাবে আপনি চাইবেন।"
লূক ৬ঃ১২ এবং দিনের পরম্পরায় দেখা গেল, তিনি [যিশু] পাহাড়ে উঠলেন প্রার্থনা করতে, এবং "সারা রাতব্যাপী ঈশ্বরের প্রার্থনায়" রত থাকলেন।
- এই বাক্যমালা অনুসারে "মুহাম্মাদের সঙ্গীরা" এই নীতিগল্পের "বীজগুলোর মতো, যেগুলো অঙ্কুরোদগমের পর, চারা হয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ায়।
- বাড়ন্ত বীজের নীতিগল্প
ইসলামের বাইরের দৃষ্টিভঙ্গি
সম্পাদনাখ্রিস্টান ধর্মের শুরুর দিকের লেখকেরা মুহাম্মাদকে বাইবেলে মুহাম্মাদ খ্রিস্ট বিরোধী, ভুয়া নবী অথবা ভুয়া মসিয়াহ হিসেবে ভবিষ্যদ্বানী করা ছিল বলে দাবী করেন। আলবার্ট হুরানীর মতে,বাইবেল অনুসারে খ্রিস্টানরা মুহাম্মাদকে ভুয়া নবী হিসেবে মানতো বলেই মুসলমান ও খ্রিস্টানদের মধ্যকার দ্বন্দ্বের শুরু হয়েছে। [৮৩] ৭ম শতকের দামাস্কাসের জন সর্বোপ্রথম এই ধারণার প্রচার করেন। [৮৪]
৮৫০ খ্রিস্টপূর্বে এক মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় একজন খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারক মুহাম্মদকে মথি ২৪ঃ১৬,৪২ অনুসারে মুহাম্মাদকে ভুয়া নবী বললে করদোবারে ৫০ জন খ্রিস্টান সৈন্য শহীদ হয়। [৮৫] জন ক্যাল্ভিয়ান অবশ্য বলেন, খ্রিস্ট বিরোধী কোন একক ব্যক্তি না বরং একক রাজ্য যা বংশপরম্পরায় বিস্তার করবে। তিনি মুহাম্মাদের সাথে ক্যাথলিক পোপদেরকেও খ্রিস্টবিরোধী বলে উল্লেখ করেন। [৮৫]
দানিয়েল, ৭ম অধ্যায়ের "দানিয়েলের চার রাজ্য" মুহাম্মাদকে নিয়ে ভবিষ্যদ্বানী করা হয়েছে বলে খ্রিস্টানরা মনে করেন। ইউলজিয়াস বলেন, মুহম্ম সেই ভবিষ্যদ্বানীর চতুর্থ পশু। [৮৬] মধ্যযুগের আরেক পুরোহিত , আল্ভারুস বলেন, মুহাম্মাদ চার রাজ্যের "এগারোতম রাজা", যে কিনা চতুর্থ পশু থেকে এসেছে। ঐতিহাসিক জন টোলানের মতে,
দানিয়েলের বর্ণিত এই পশুর মাঝে আল্ভারুস খ্রিস্টবিরোধী মুহম্ম ও তার অনুসারীদের দেখতে পান। এই এগারো রাজা একজনের পর আরেকজন উদয় হন। প্রথম জন থেকে ভিন্ন, যিনি আগের তিন রাজাকে দমন করেন, তিনি মুহাম্মাদ ছিলেন না। কে গ্রীক, রোমান এবং গথদের হারিয়ে দিয়েছে?"এবং তিনি সর্বোচ্চ শিখরে থাকাদের বিপক্ষে কণ্ঠ তুলবেন।" তিনি যিশুর পবিত্রতার বিপক্ষে যাবেন না। অতএব, যোহান অনুসারে তিনি কীভাবে নিজেকে যিশুবিরোধী হিসেবে দেখাবেন? তিনি "সর্বোচ্চ মর্যাদার সাধুদের মাঝেই উচ্চ পদে" আসীন থাকবেন। এটা কি মুসলমানদের দ্বারা নিগৃহীত হওয়াকে ইঙ্গিত করে না? সঠিকভাবে উল্লেখ করলে, কোরদোবার শহীদদের ইঙ্গিত করে না? তিনি "নতুন সময় ও আইনের পত্তন ঘটাবেন", তিনি (মুহাম্মাদ) কি মুসলমানদের দিনপঞ্জি এবং কোরআন নিয়ে আসেন নি?" [৮৭]
সপ্তম শতাব্দী থেকে ইসলামের নবীর নামে একাধিক গতানুগতিক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরী হয়েছে। গ্রীক এবং ল্যাটিন গতানুগতিক দৃষ্টিভঙ্গি বাড়িয়ে বলেছে এবং কিছু ক্ষেত্রে সাহিত্যের মাঝে ভুল তথ্যও পরিবেশন করেছে। এছাড়াও ভিন্ন বানানপদ্ধতির কারণে সৃষ্ট ভিন্নতা দুই পাশ্চাত্য সংস্কৃতি স্পেন ও ফ্রান্সে প্রকাশিত হয়েছে। এই ভিন্নতার কারণে ইসলামের নবীর নামে গতানুগতিক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়েছে এবং এক নতুন ধর্মের নেতার প্রতি পাশ্চাত্যের মানুষের চিন্তা ও মতামত প্রভাবান্বিত হয়েছে। তাদের প্রদত্ত তথ্যসূত্র মুহাম্মাদ ও তার ধর্মকে পশ্চিমে মুহাম্মাদকে একজন ভুয়া নবী এবং কোরআন তার নিজস্ব রচনা হিসেবে প্রচারিত করেছে। মুহাম্মাদকে বর্বর আরবের যুবরাজ বা দেবতা, খ্রিস্টান ধর্মের পথ থেকে বিচ্যুত, বাইবেলে উল্লেখিত পশু, শয়তানের সঙ্গী এবং খ্রিস্টবিরোধী হিসেবে দেখানো হয়েছে। [৮৮]
আরও দেখুন
সম্পাদনাটীকা
সম্পাদনা- ↑ এই মতামত প্রধানত সালাফি মতানুসারী মুসলমানদের মাঝে পাওয়া যায়। তাদের দাবির কারণ সহীহ বুখারীতে আয়িশা থেকে বর্ণনা করা হয়েছে, তিনি বলেছেন, "যে ব্যক্তি মনে করবে যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর রবকে দেখেছেন, সে ব্যক্তি মহা ভুল করবে। বরং তিনি জিব্রাঈল (‘আঃ)–কে তাঁর আসল আকার ও চেহারায় দেখেছেন।"[১৫][১৬][১৭] এছাড়া আরও কিছু হাদীসে এমনটা বলা হয়েছে।[১৮]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ TRANSLATED BY LONDALE AND LAURA RAGG (1907/2016)। THE GOSPEL OF BARNABAS। Oxford University Press/Global Grey। পৃষ্ঠা 29,31,34,41,42,71,81,101,123,158/অনুচ্ছেদ- 39.41.44.54.55.97.112.136.163.220। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ অনুবাদ- আফজাল চৌধুরী (প্রথম প্রকাশঃ জানুয়ারি১৯৯৬/তৃতীয় সংস্করণঃ জুন ২০১১)। বার্নাবাসের বাইবেল। বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ বুক সোসাইটি লিঃ- ঢাকা। পৃষ্ঠা ৪৪,৪৮,৫২,৬৪,৬৬,১১২,১২৯,১৬০,১৯৩,২৪৮/অনুচ্ছেদ- ৩৯,৪১,৪৪,৫৪,৫৫,৯৭,১১২,১৩৬,১৬৩,২২০। আইএসবিএন 984-493-003-0। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - ↑ "Mohammed and Mohammedanism (Islam)"। Catholic Encyclopedia। Newadvent.org। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১১-২৫।
- ↑ Kais Al-Kalby (2005). Prophet Muhammad: The last Messenger in the Bible. p. 207
- ↑ David Benjamin Keldani (2006 edition). Muhammad in World Scriptures. p. 42.
- ↑ David Benjamin Keldani (2006 edition). Muhammad in World Scriptures, p. 45
- ↑ "Douay-Rheims translation"। Latinvulgate.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৪-১৬।
- ↑ al-Maghribi, Al-Samawal; Taweile, Abdulwahab. بذل المجهود في إفحام اليهود [Confuting the Jews] (in Arabic) (1st 1989 ed.). Syria: Dar Al Qalam. p 75
- ↑ al-Maghribi, Al-Samawal; Taweile, Abdulwahab. بذل المجهود في إفحام اليهود [Confuting the Jews] (in Arabic) (1st 1989 ed.). Syria: Dar Al Qalam. p 77
- ↑ As-Seerah Al-Halabiyyah, Ali ibn Burhanuddin Al-Halabi, volume 1, p 138-139
- ↑ Dr. Abdel-Halim Mahmoud, ﺍﻹﺳﺮﺍﺀ ﻭ ﺍﻟﻤﻌﺮﺍﺝ (al-Isra and al-Mi'raj) ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ মার্চ ২০২১ তারিখে, in Arabic, 11th edition 2004, আইএসবিএন ৯৭৭-০২-৬৭১১-২
- ↑ টেমপ্লেট:Ihadis
- ↑ Abd Allah ibn Abbas reported that Muhammad saw God with his heart : http://sunnah.com/muslim/1/343
- ↑ "Did the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) see his Lord on the night of the Mi'raaj?"। ইসলামকিউএ.ইনফো (ইংরেজি ভাষায়)।
- ↑ টেমপ্লেট:Ihadis
- ↑ Whoever claimed that (the Prophet) Muhammad saw his Lord, is committing a great fault : https://sunnah.com/bukhari/59/45
- ↑ সহীহ বুখারী, ৪:৫৪:৪৫৭ (ইংরেজি)
- ↑ টেমপ্লেট:Ihadis
- ↑ Sahih al-Bukhari » Book of Companions of the Prophet
- ↑ Sahih Muslim » The Book of the Merits of the Companions
- ↑ Sunan Ibn Majah » The Book of the Sunnah
- ↑ Jami` at-Tirmidhi » Chapters on Virtues
- ↑ English Translation of the Holy Quran: With Explanatory Notes, by Muhammad Ali and Zahid Aziz, Revised 2010 edition, আইএসবিএন ৯৭৮-১-৯০৬১০৯-০৭-৩, p 627
- ↑ The Messenger of God Muhammad, Fethullah Gülen, 2008, আইএসবিএন ৯৭৮-১-৫৯৭৮৪-১৩৭-৫, p 11
- ↑ English Translation of the Holy Quran: With Explanatory Notes, by Muhammad Ali and Zahid Aziz, Revised 2010 edition, আইএসবিএন ৯৭৮-১-৯০৬১০৯-০৭-৩, p 732
- ↑ Prophet Muhammad: The last Messenger in the Bible, Kais Al-Kalby (2005). আইএসবিএন ০-৯৬৩৮৫২০-২-৭, p 397
- ↑ https://www.biblegateway.com/passage/?search=John+1%3A20%2CJohn+1%3A21&version=NIV
- ↑ ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (ফেব্রুয়ারি ২০১৩)। কিতাবুল মোকাদ্দস, ইঞ্জিল শরীফ ও ঈসায়ী ধর্ম। আস-সুন্নাহ পাবলিকেশন্স। ঝিনাইদহ, বাংলাদেশ। পৃষ্ঠা ৫৪। আইএসবিএন 978-984-90053-0-8।
- ↑ https://www.biblegateway.com/passage/?search=John+7%3A40-41&version=NIV
- ↑ al-Maghribi, Al-Samawal; Taweile, Abdulwahab. بذل المجهود في إفحام اليهود [Confuting the Jews] (in Arabic) (1st 1989 ed.). Syria: Dar Al Qalam. p 67
- ↑ Kais Al-Kalby, 2005, p 223
- ↑ Kais Al-Kalby, 2005, p 221
- ↑ Rahmatullah Kairanawi, Izhar ul-Haq (Truth Revealed), Council of Senior Scholars (Saudi Arabia) 1989, p 1143
- ↑ Munqidh As-Saqqar, p24
- ↑ Muhammad, encyclopaedia of seerah, 1st volume, Afzal-ur-Rahman, 1985, p 143
- ↑ David Benjamin Keldani, 2006, p 80-85
- ↑ Mark 12:35-37 & 14:61-62.
- ↑ ক খ "Islamic Research Foundation"। Irf.net। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১১-২৫।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ A Catholic Commentary on Holy Scripture, commentary on Isaiah 29; Gills exposition [১]; Barnes notes on the bible [২].
- ↑ Mark 1:2-4
- ↑ Margaret S. King, in the second part of Chapter 13 of her book "Unveiling The Messiah in the Dead Sea Scrolls".
- ↑ Ali Ünal, 2013, chapter about the straight highway of the Lord in Arabia.
- ↑ Al-Mustadrak 'ala al-Sahîhayn, Hadith number 4224
- ↑ "Hadith - Book of Dealing with people cheerfully - Al-Adab Al-Mufrad - Sunnah.com - Sayings and Teachings of Prophet Muhammad (صلى الله عليه و سلم)"। sunnah.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৩-২৪।
- ↑ Qur'an 21:107
- ↑ Jamal Badawi, 2005, p 39
- ↑ In Search of God, Mohamed Gad, 2009, আইএসবিএন ৯৭৮-০-৫৯৫-৩৩৬৪৪-৯ (pbk), আইএসবিএন ৯৭৮-০-৫৯৫-৭৮৪৪৬-২ (ebk), USA, p 28
- ↑ Kais Al-Kalby, 2005, 267
- ↑ Rahmatullah Kairanawi, Izhar ul-Haq (Truth Revealed), Council of Senior Scholars (Saudi Arabia) 1989, p 1161
- ↑ Rahmatullah Kairanawi, Izhar ul-Haq (Truth Revealed), Council of Senior Scholars (Saudi Arabia) 1989, p 1160
- ↑ Rahmatullah Kairanawi, Izhar ul-Haq (Truth Revealed), Council of Senior Scholars (Saudi Arabia) 1989, p 1159
- ↑ David Benjamin, Malaysian edition 2006 ed, p 54
- ↑ Nasrullah Abu Talib, 4th 2009 ed, p 85
- ↑ David Benjamin, Malaysian edition 2006 ed, p 52-74
- ↑ Nasrullah Abu Talib, 4th 2009 ed, p 90
- ↑ David Benjamin, Malaysian edition 2006 ed, p 63
- ↑ Nasrullah Abu Talib, 4th 2009 ed, p 86
- ↑ Munqidh As-Saqqar, 1st 2007 ed, p 87
- ↑ Salih Al-Munajjid (৪ জানুয়ারি ২০১৭)। "He is asking about the meaning of the word "Mahammadim" in the Song of Solomon in the Old Testament - Islam Question & Answer"। islamqa.info (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১১ আগস্ট ২০১৯।
- ↑ "The absolute truth about Muhammad in the bible: Rabbis who acknowledging the fact and...PART 1"।
- ↑ Kais, 2005, p 387
- ↑ Rahmatullah Kairanawi, Izhar ul-Haq (Truth Revealed), Council of Senior Scholars (Saudi Arabia) 1989, p 1181
- ↑ Ali Ünal, 2013, chapter about the Parable of the tenants.
- ↑ Sahih al-Bukhari, Book of Virtues and Merits of the Prophet and his Companions, Chapter: The Seal of all the Prophets, Hadith number: 44
- ↑ Misha'al Abdullah, 1995, p 194
- ↑ Benson Commentary Matthew 21:42
- ↑ "John 15 WEY"। biblehub.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৩-২৪।
- ↑ "JOHN CHAPTER 16 KJV"। Kingjamesbibleonline.org। ২০১৫-১১-১৮। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১১-২৫।
- ↑ "John 16:12-14"। Bible Gateway। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-১১-২৫।
- ↑ ক খ http://www.answering-christianity.com/prediction.htm
- ↑ Page 50 "As early as Ibn Ishaq (85-151 AH) the biographer of Muhammad, the Muslims identified the Paraclete - referred to in John's ... "to give his followers another Paraclete that may be with them forever" is none other than Muhammad."
- ↑ "Isa", Encyclopedia of Islam
- ↑ Watt (1991) pp. 33–34
- ↑ Ahmed Deedat (১৯৯৪)। "Muhummed (pbuh) Is The "Paraclete""। The Choice: Islam and Christianity -- , Volume 1। ideas4islam। পৃষ্ঠা 59–63।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Dur al-Manthur, Al-Suyuti, volume 4, p 341
- ↑ Rahmatullah Kairanawi, Izhar ul-Haq (Truth Revealed), Council of Senior Scholars (Saudi Arabia) 1989, p 1191
- ↑ Al-Masāq: studia arabo-islamica mediterranea: Volumes 9 à 10 ;Volume 9 University of Leeds. Dept. of Modern Arabic Studies, Taylor & Francis - 1997
- ↑ ক খ Leirvik, Oddbjørn (২০০২)। "History as a Literary Weapon: The Gospel of Barnabas in Muslim-Christian Polemics"। Studia Theologica। 56: 4। ডিওআই:10.1080/003933802760115417। ৭ সেপ্টেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ মার্চ ২০১৮।
- ↑ Cirillo, Luigi; Fremaux, Michel (১৯৭৭)। Évangile de Barnabé। Beauchesne। পৃষ্ঠা 88।
- ↑ Ragg, L & L (১৯০৭)। The Gospel of Barnabas। Oxford। পৃষ্ঠা xi। আইএসবিএন 1-881316-15-7।
- ↑ Joosten, Jan (এপ্রিল ২০১০)। "The date and provenance of the Gospel of Barnabas"। Journal of Theological Studies। 61 (1): 200–215। ডিওআই:10.1093/jts/flq010।
- ↑ Kais, 2005, p 227
- ↑ Hourani, Albert (১৯৬৭)। "Islam and the philosophers of history"। Middle Eastern Studies। 3 (3): 206। ডিওআই:10.1080/00263206708700074।
- ↑ Esposito, John L., The Oxford History of Islam: Oxford University Press, 1999, p.322.
- ↑ ক খ McGinn, Bernard, Antichrist: Two Thousand Years of the Human Fascination with Evil, Columbia University Press. 2000, p.86; 212.
- ↑ Quinn, Frederick, The Sum of All Heresies: The Image of Islam in Western Thought, Oxford University Press, 2008, p.30
- ↑ John Tolan, Saracens: Islam in the Medieval European Imagination, Columbia University Press. New York: 2002, p.81.
- ↑ See Sbaihat, Ahlam (2015), "Stereotypes associated with real prototypes of the prophet of Islam's name till the 19th century"