বাংলালিংক

বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ কোম্পানি

বাংলালিংক, নেদারল্যান্ডসের ভিওন এর মালিকানাধীন মোবাইল নেটওয়ার্ক যা ইন্টারনেটের গতি বিবেচনায় বাংলাদেশের সবচেয়ে দ্রুতগতির এবং গ্রাহক সংখ্যা বিবেচনায় তৃতীয় বৃহত্তম জিএসএম ভিত্তিক মুঠোফোন নেটওয়ার্ক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ।[১] ২০০৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলালিংকের গ্রাহক সংখ্যা ছিল প্রায় ৩.৬৪ মিলিয়ন[২] প্রতিষ্ঠানটি ওরাসকম টেলিকম বর্তমান গ্লোবাল টেলিকম লিমিটেড এর মালিকানাধীন একটি কোম্পানি ছিল। ২০০৬ সালের আগস্ট মাসে বাংলালিংক বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারী মোবাইল ফোন সেবা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিটিটিবি সংযোগ থেকে মোবাইল ফোনে বিনামূল্য টেলিফোন কল ধরার সুযোগ করে দেয়।

বাংলালিংক
ধরনপাবলিক
শিল্পটেলিযোগাযোগ
প্রতিষ্ঠাকাল১৯৯৯
সদরদপ্তরবাংলাদেশ টাইগার হাউজ, বাড়ী # এসডব্লিউ(H)০৪, গুলশান অ্যাভিনিউ, গুলশান মডেল টাউন, ঢাকা, বাংলাদেশ
প্রধান ব্যক্তি
এরিক আস, প্রধান নির্বাহী
পণ্যসমূহটেলিযোগাযোগ, ইন্টারনেট
পরিষেবাসমূহমোবাইল টেলিফোনি, জিপিআরএস, এজ, ৪ জি , আন্তর্জাতিক রোমিং
মালিকভিওন
ওয়েবসাইটbanglalink.net

২০০৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলালিংকের গ্রাহক সংখ্যা ছিল প্রায় ১.০৩ মিলিয়ন। পরবর্তী বছরে এসংখ্যা ২৫৩ শতাংশ বেড়ে দাড়ায় ৩.৬৪ মিলিয়ন গ্রাহকে। ২০০৭ সালের জুন মাস পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির মোট গ্রাহক সংখ্যা দাড়িয়েছে ৬.০৪ মিলিয়নে।

২০০৫ সালে যাত্রা শুরু করার এক যুগ পর বাংলাদেশে বাংলালিংক সংযোগ ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩ কোটি ছাড়িয়ে গেছে।[৩] মোবাইলে যোগাযোগকে বাংলাদেশের মানুষের কাছে সাশ্রয়ী করে তোলার ক্ষেত্রে বড় অবদান রেখেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। বাংলালিংক-এর সাফল্যের মূলে ছিল একটি সাধারণ মিশন, ‘মোবাইলে যোগাযোগকে সবার নাগালে আনা’, যেটি বাংলালিংক-এর ভিত্তি হিসেবে কাজ করেছে।[৩]

বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশনস লিমিটেড টেলিকম ভেনচারস লিমিটেডের সম্পূর্ণ মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান, যা গ্লোবাল টেলিকম লিমিটেড-এর ১০০% মালিকানাধীন একটি সহায়ক প্রতিষ্ঠান। ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে ভিওন লিমিটেড ও উইন্ড টেলিকম এস.পি.এ-এর ব্যবসা একীভূত হওয়ার পর থেকে ভিওন এখন গ্লোবাল টেলিকম লিমিটেড-এর ৫১.৯% শেয়ারের স্বত্বাধিকারী। ভিওন NASDAQ ও ইউরোনেক্সট আমস্টারডাম-এর তালিকাভুক্ত সংযোগ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান, যাদের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২৩৫ মিলিয়নেরও বেশি গ্রাহকের কাছে ইন্টারনেট পৌঁছে দিয়ে বিপ্লব সৃষ্টি করা। রাশিয়া, ইতালি, আলজেরিয়া, পাকিস্তান, উজবেকিস্তান, কাজাকস্তান, ইউক্রেন, বাংলাদেশলাওস-এ এই প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের সেবা প্রদান করে আসছে। বিলাইন, কাইভস্টার, উইন্ড, জ্যাজ, বাংলালিংক ও জেজি নামে ভিওন ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে।[৩]

ইতিহাসসম্পাদনা

১৯৮৯ সালে সেবা টেলিকম (প্রা.) লিমিটেড ১৯৯ টি গ্রামীণ উপজেলায় টেলিফোন সেবা প্রদানের লক্ষ্যে নিবন্ধীকরন করে।[৪]। পরবর্তীকালে তারা সেলুলার রেডিও-টেলিফোন সেবার মাধ্যমে তাদের কার্যক্রম বর্ধিত করে।

২০০৪ সালের জুলাই মাসে ওরাসকম টেলিকম সেবা টেলিকমের মালয়েশিয়ান অংশীদারীত্ব কিনে নেয়। এর কারণ ছিল বাংলাদেশে ব্যবসা প্রসারে মালয়েশিয়ান অংশীদারের ব্যর্থতা। ওরাসকমের সাথে ২৫ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি গোপনে সম্পাদিত হয়। বিভিন্ন আইনগত ঝামেলা এড়াতে এই গোপন চুক্তি হয়েছিল। গোপনে এই চুক্তি করার প্রধান কারণ ছিল, বাংলাদেশী ও মালয়েশীয় অংশীদারের মধ্যে চুক্তি বিদ্যমান থাকায় যেকোন পক্ষ শেয়ার বিক্রয় করতে চাইলে অন্য পক্ষ তা কেনার প্রথম সুযোগ পাবে।

ইন্টিগ্রেটেড সার্ভিসেস লিমিটেড (আইএসএল), যারা সেবা টেলিকমের বাংলাদেশী অংশীদার, প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে মালয়েশীয় অংশীদার টেকনোলজি রিসোর্স ইন্ডাস্ট্রিজ এর শেয়ার ১৫ মিলিয়ন ডলারে কিনেছে বলে দেখানো হয়। আইএসএল পরে আরো ১০ মিলিয়ন ডলার স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংককে পরিশোধ করে সেবার দায় শোধ করে। সেবা টেলিকমের গ্রাহক সংখ্যা ছিল ৫৯,০০০ যাদের মধ্যে বিক্রির সময় নিয়মিত গ্রাহক ছিল মাত্র ৪৯,০০০।[৫]

২০০৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ওরাসকম টেলিকম সেবা টেলিকমের ১০০% শেয়ার কিনে নেয়। এরা ৬০ মিলিয়ন ডলার মূলধন বিনিয়োগ করে এবং টেলিফোন ব্র্যান্ডের নাম পরিবর্তন করে রাখে বাংলালিংক। ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলালিংক নামে এরা পুনরায় যাত্রা শুরু করে। বাংলালিংকের লাইসেন্স ১৫ বছর মেয়াদী এবং মেয়াদ শেষ হয়েছিল ২০১১ সালের নভেম্বরে। গত বছরও তারা ৩জি সেবা দিলেও ২০১৮ সালের মার্চে থেকে তারা ৪জি সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

তাদের জন্য বরাদ্দকৃত নাম্বার হচ্ছে (+৮৮)০১৯xxxxxxxx (+৮৮)০১৪xxxxxxxx

আরও দেখুনসম্পাদনা

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. "বিটিআরসি ওয়েবসাইট"। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ সেপ্টেম্বর ২০০৭ 
  2. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ এপ্রিল ২০২০ 
  3. "বাংলালিংক সম্পর্কে"www.banglalink.net। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১০-২৩ 
  4. http://banglapedia.search.com.bd/HT/T_0107.htm
  5. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩ সেপ্টেম্বর ২০০৭