গ্রামীণফোন
গ্রামীণফোন নরওয়েভিত্তিক কোম্পানি টেলিনর এর একটি জিএসএম ভিত্তিক একটি মুঠোফোন নেটওয়ার্ক সেবা প্রদানকারী কোম্পানি যা বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদান করে থাকে। ১৯৯৭ সালের ২৬ মার্চ থেকে কার্যক্রম শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। নরওয়ের কোম্পানি টেলিনর গ্রামীণফোনের ৫৫.৮ শতাংশ শেয়ারের মালিক এবং বাংলাদেশের Grameen Telecom কোম্পানিটির ৩৪% শেয়ারের মালিক। গ্রামীণফোন বাংলাদেশের অন্যতম মুঠোফোন সেবাদাতা কোম্পানি।[৪]
![]() | |
ধরন | পাবলিক |
---|---|
ডিএসই: GP | |
আইএসআইএন | BD0001GP0004 |
শিল্প | মোবাইল টেলিযোগাযোগ সেবা |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯৯৭ |
প্রতিষ্ঠাতা | মুহাম্মদ ইউনূস , ইকবাল কাদির |
সদরদপ্তর | জিপি হাউস, বসুন্ধরা, ঢাকা , বাংলাদেশ |
বাণিজ্য অঞ্চল | বাংলাদেশ |
প্রধান ব্যক্তি | ইয়াসির আজমান ( সিইও)[১] |
পণ্যসমূহ | মোবাইল টেলিফোনি, এজ, জিএসএম, জিপিআরএস, ইউএমটিএস, এইচএসডিপিএ, এইচএসইউপিএ, এইচএসপিএ, এইচএসপিএ+, ডিসি-এইচএসপিএ+, এফডিডি- এলটিই, ভিওএলটিই, ভিআইএলটিই |
পরিষেবাসমূহ | মোবাইল টেলিফোনি, মোবাইল ইন্টারনেট, ডিজিটাল পরিষেবা |
আয় |
|
| |
কর্মীসংখ্যা | ২,৪১২[৩] (২০১৮) |
মাতৃ-প্রতিষ্ঠান | টেলিনর মোবাইল কমিউনিকেশনস এএস গ্রামীণ টেলিকম |
ওয়েবসাইট | grameenphone |
প্রদেয় সেবাসম্পাদনা
গ্রামীণফোন মুঠোফোন সংক্রান্ত সকল ধরনের সেবা প্রদান করে। গ্রামীণফোন দুইটি নাম্বার ক্রমিকে সেবা প্রদান করে থাকে +৮৮০ ১৭******** এবং +৮৮০ ১৩******** গ্রামীণফোন এসএমএস বা লিখিত ক্ষুদে বার্তা, ভয়েস এসএমএস বা কথা বলা ক্ষুদে বার্তা, পুশ-পুল সার্ভিস, ভিএমএস, এবং ইন্টারনেট পরিসেবা , ওয়েলকাম টিউন, রিংব্যাক টোন, মিসড কল এলার্ট, কল ব্লক প্রভৃতি সেবা প্রদান করে থাকে। থ্রিজি ও ৪জি বা চতুর্থ প্রজন্মের ইন্টারনেট (তার বিহীন ব্রডব্যান্ড) সেবা চালু আছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৫ সালের মার্চে বাংলা উইকিপিডিয়ার দশ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিনামূল্যে ব্যবহারের সুযোগ করে দিয়েছিল অপারেটরটি।
ইতিহাসসম্পাদনা
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক নিবন্ধ থেকে জানা যায়, ১৯৯৫ সালে গ্রামীণ ব্যাংক মোবাইল টেলিফোনের লাইসেন্স নেবার প্রাথমিক উদ্যোগ নেয়। তখন গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী হন ইকবাল কাদির। ইকবাল কাদির গণফোন ডেভলপমেন্ট করপোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন। গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গ্রামীণ টেলিকম নামের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা হয়। গ্রামীণ টেলিকম, গণফোন ও টেলিনর ১৯৯৫ সালে যৌথ সংঘ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অনুমতিপত্রের আবেদন করে। [৫] গ্রামীণফোন ১৯৯৬ সালের ২৮ নভেম্বর বাংলাদেশ ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে মোবাইল ফোন অপারেটর হিসেবে অনুমতিপত্র পায়। অনুমতিপত্র পাওয়ার পর গ্রামীণফোন ১৯৯৭ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে তার কার্যক্রম শুরু করে।
গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালনা বোর্ড ১৬ নভেম্বর ১৯৯৪ সালে গ্রামীণফোন নামের একটি পৃথক 'নট ফর প্রফিট' কোম্পানী স্থাপন করার প্রস্তাব অনুমোদন দেয়। ১৯৯৫ সালে গ্রামীণ টেলিকমকে সোশাল অ্যাডভান্সমেন্ট ফান্ডের মাধ্যমে ৩০ কোটি টাকা ঋণ প্রদাণ করা হয়। ১৯৯৮ সালে সরোস ইকোনোমিক ডেভলপমেন্ট ঢান্য থেকে ১০.৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দীর্ঘমেয়াদে ঋণ গ্রহণ করে। [৫]
উল্লেখ্য যে এ অপারেটরটি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয়। এবং দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও উন্নত মানের সেবা প্রদান করে থাকে। বর্তমানে গ্রামীণ ফোনের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৭ কোটি। গতবছরেও ৩জি সেবা থাকলেও ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চালু করা হয় ৪জি সেবা। বর্তমানে বাংলাদেশের ৬৪ জেলায় ৪জি নেটওয়ার্কের সেবা প্রদানের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
২০২২ সালের মার্চ মাসে, 'পরিবেশবান্ধব ডিজিটাল সিমের এখনই সময়' স্লোগানে গ্রামীণফোন বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো গ্রাহকদের জন্য এমবেডেড-সিম (ই-সিম) সামনে নিয়ে আসে।[৬]
ডিজিটাল পরিসেবাসম্পাদনা
মাইজিপি এপসম্পাদনা
মাই জিপি এপ গ্রামীণফোনের একটি স্ব-সেবা সমাধান যার মাধ্যমে গ্রাহক তার প্রয়োজনীয় সেবা নিতে পারেন ।
বায়োস্কোপসম্পাদনা
ব্যবসার প্রকার | প্রকাশ্য |
---|---|
সাইটের প্রকার | ভিডিও স্ট্রিমিং, ইন্টারনেট টিভি |
উপলব্ধ | বাংলা, ইংরেজি |
সদরদপ্তর | বসুন্ধরা, বারিধারা, ঢাকা |
পরিবেষ্টিত এলাকা | বাংলাদেশ |
মালিক | গ্রামীণফোন লিমিটেড |
শিল্প | স্ট্রীমিং |
স্লোগান | টিভি এখন পকেটে |
ওয়েবসাইট | bioscopelive.com |
নিবন্ধন | ঐচ্ছিক, মুল্য প্রদেয় |
চালুর তারিখ | সেপ্টেম্বর ২০১৬ |
বর্তমান অবস্থা | সক্রিয় |
বায়োস্কোপ, বাংলাদেশী ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম যা দর্শকদের কাছে সরাসরি টিভি দেখা এবং বিশেষ ভিডিও প্রদান করে। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিটা ওয়েব সাইট হিসেবে বায়োসকোপ চালু হয়েছিল, এবং তারপর ২০১৭ সালের আগস্টে বিটা অ্যাপ্লিকেশন হিসেবে এটি কায্যক্রম চালু করে। বায়োসকোপ যৌথভাবে বাংলাদেশের প্রধান ডিজিটাল বিনোদন পরিসেবা প্রদানকারীবঙ্গ বিডি(স্টেলার ডিজিটাল লিমিটেড) এবং গ্রামীণফোন লিমিটেডের মালিকানাধীন।
এই পরিসেবাটি দর্শকদের বিনামূল্যে বিজ্ঞাপন, ৪০টির বেশি স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক টিভি চ্যানেল, চলচ্চিত্র, ভিডিও, সরাসরি খেলা দেখা এবং অন্যান্য ভিডিও সামগ্রী প্রদান করে।
ওয়েবসাইট ছাড়াও, অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ডিভাইসে অ্যাপ্লিকেশন হিসাবে বায়োসকোপ পাওয়া যায়। এর ওয়েবসাইট-ও উপলব্ধ এবং মানুষ কম্পিউটার এবং iOS ডিভাইসগুলি দেখতে পারেন।[৭]
বাংলাদেশের প্রধান ডিজিটাল বিনোদন পরিসেবা প্রদানকারীবঙ্গ বিডি(স্টেলার ডিজিটাল লিমিটেড) সম্প্রতি জাতীয় আইসিটি পুরস্কার, বেসিস কর্তৃক আয়োজিত, তাদের সার্ভিস 'বায়স্কোপ' জন্য ২০১৭ সালে সেরা ডিজিটাল বিনোদন পণ্যের জন্য পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে।
আগস্ট ২০১৭ এর দ্বিতীয় বিটা লঞ্চের মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে গুগলের প্লে স্টোরের এটি ৩ মিলিয়নেরও বেশি ডাউনলোড এবং বাংলাদেশে ১ নম্বর এ্যাপস হয়েছে।[৮]
সমালোচনাসম্পাদনা
গ্রামীণফোন বাংলাদেশের মোবাইল ফোন বাজারের ৫০ শতাংশেরও বেশি অংশ দখল করে আছে। ২০১৭ সালে গ্রামীণফোনের মোট আয় ১২৮৪৩ কোটি টাকা। নীট আয় ২৭৪২৩ কোটি টাকা। অন্যায্য ও অনির্দেশিত চার্জ কর্তনের জন্য নানা সময় প্রবল সমালোচনার মুখে সম্মুখীন হয়েছে গ্রামীণফোন।[৯][১০][১১][১২] অপারেটর পরিবর্তন সেবা চালুর পর সবচেয়ে বেশি গ্রামীণফোনের গ্রাহক অপারেটর পরিবর্তন করেছেন; অন্য অপারেটর এর তুলনায় ফোনে কথবলা ও ইন্টারনেট সেবার খরচ অনেক বেশি নেয়া হলেও দাম সেবার খারাপ মান, অযাতিত কল ও বার্তা দিয়ে গ্রাহকদের বিরক্ত করা ও অযথা অনুমতি ব্যতীত সেবা চালু করে দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে অনেকে গ্রামীণফোন পরিহার করছেন।[১৩]
আরও দেখুনসম্পাদনা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ "MICHAEL FOLEY APPOINTED CEO OF GRAMEENPHONE"। ৮ মে ২০১৭।
- ↑ ক খ "Annual Report 2017" (পিডিএফ)। Grameenphone। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭।
- ↑ "Telenor Group – Grameenphone, Bangladesh"। Telenor Group।
- ↑ "Reference"। ২০০৭-০১-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১০-০৪।
- ↑ ক খ "গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে গ্রামীণ ফোনের সম্পর্ক" (পিডিএফ)।
- ↑ "ই-সিম চালু করছে গ্রামীণফোন"। Bangla Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৩-০১।
- ↑ "GP Quietly Launched Video Streaming Service Bioscope"। futurestartup.com। Ibrahim Mahbub। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৬।
- ↑ Enamul Haque Chowdhury। "Bongo wins National ICT Award for Bioscope Project"। daily-sun.com।
- ↑ "সুবিধা শুধু ফোন কোম্পানিগুলোর"। প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-১২-২১।
- ↑ "মিনিটপ্রতি কলচার্জ ১০ পয়সা করার দাবি"। প্রিয়.কম। ২০১৯-০১-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-৩০।
- ↑ "প্রতি জিবিতে ৩০০ গুণ মুনাফা করছে মোবাইল কোম্পানিগুলো"। একুশে টিভি। ২০১৯-০১-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-৩০।
- ↑ "কলড্রপ ও ডাটা ব্যবহারে অসন্তোষ বাড়ছে গ্রাহকদের"। একুশে টিভি। ২০১৯-০১-৩০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-৩০।
- ↑ "মোবাইল অপারেটর কেন পরিবর্তন করছে গ্রাহকরা"। বিবিসি। ২০১৮-১০-২৩। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-৩০।
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
উইকিমিডিয়া কমন্সে গ্রামীণফোন সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।
- প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইট
- Quadir, Iqbal (জুলাই ২০০৫)। "How mobile phones can fight poverty"। TED।
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |