বাংলাদেশে নারীবাদ
নারীবাদ হল সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক তথা সর্বক্ষেত্রে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। বাংলাদেশে নারীবাদ একই অর্থ বহন করে। বাংলাদেশ সংবিধানের ২৮ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে “রাষ্ট্র ও গণজীবনের সবস্তরে নারীপূরুষের সমান অধিকার লাভ করবেন।” [১]
ইতিহাসসম্পাদনা
বাংলাদেশের স্বাধীনতার বহু পূর্ব থেকেই নারীবাদী আন্দোলনের শুরু হয়েছিল। ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে নারী কর্মীরা তাদের অধিকার আদায়ের দাবী করতে একত্রে সংগঠিত হতো। নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা, লিঙ্গ সমতা, অর্থনৈতিক সুযোগ, কর্মশালায় অংশগ্রহণ, রাজনীতিতে সমান প্রতিনিধিত্ব, প্রজনন অধিকার, পারিবারিক আইন সংস্কার, জনসাধারণের নীতিমালায় লিঙ্গ সমতা প্রভৃতি বিষয় নিয়ে নারীবাদী আন্দোলনের কর্মীরা জড়িত। সামাজিক সংস্কার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ঊনিশ শতকের নারীবাদী আন্দোলনের ভিত্তি স্থাপন করা হয়েছিল। সমাজে বেশিরভাগ পুরুষ নেতাদের দ্বারা পরিচালিত মেয়ে শিশু হত্যা, বাল্য বিবাহ, বিধবা পুড়িয়ে ফেলার মতো অসামাজিক অভ্যাসগুলি বিনষ্ট করার জন্য এই আন্দোলন কাজ করে। পাকিস্তান আমলে নারীবাদী আন্দোলনগুলো রাজনীতি ও জাতীয় দুর্ভোগের উপর বেশি মনোযোগী ছিল।[২] বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর নারীবাদী আন্দোলনের মূল বিষয়গুলো ছিল- নারীর রাজনৈতিক আন্দোলন, নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন, জনসাধারণের নীতিমালা, ধর্মীয় ব্যক্তিগত আইন সংস্কার, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা ইত্যাদি। ৭০ ও ৮০-এর দশকের আন্দোলনগুলো পরিচালিত হতো শহুরে এলাকার পেশাদার নারীদের নেতৃত্বে।
সমস্যাসম্পাদনা
মুসলিম পারিবারিক আইনসম্পাদনা
ব্রিটিশ ভারত সরকার দ্বারা সৃষ্ট মুসলিম পারিবারিক আইন এবং পরবর্তী পাকিস্তানের তৎকালিন রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খান কর্তৃক সংশোধিত শরিয়া আইন প্রণয়ন করা হয়। যা নারী অধিকার আইনের বিরুদ্ধে বৈষম্যমূলক।[১]
বাংলাদেশী নারীবাদীসম্পাদনা
- কামিনী রায় ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের প্রথম অনার্স সম্পন্ন করা নারী।[৩]
- নুরুননাহার ফয়জননেসা বাংলাদেশ নারীবাদ আন্দোলনের নেতা ছিলেন[৪]
- সুলতানা কামাল একজন বাংলাদেশী আইনজীবী এবং মানবাধিকার কর্মী। তিনি নাগরিক অধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রে নির্বাহী পরিচালক হিসেবে কাজ করেন।
- রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন একজন উল্লেখযোগ্য মুসলিম নারীবিদ হিসাবে সুপরিচিত। [৫]
- সৈয়দা রাজিয়া ফয়েজ বাংলাদেশের প্রথম নারী সংসদ সদস্য হিসাবে নিবাচিত হয়।[৬]
- শিরীন শারমিন চৌধুরী বাংলাদেশের প্রথম নারী জাতীয় সংসদীয় স্পিকার(বর্তমান)।
- তসলিমা নাসরিন একজন নারীবাদী যিনি ধর্মীয় সমালোচনার জন্য পরিচিত হন।[৭]
- হাসনা বেগম সমকালীন বাংলাদেশী দার্শনিক ও নারীবাদী এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক সম্মানিত রোকেয়া চেয়ারের দায়িত্ব পরিচালনা করেছেন।
- রোকেয়া রহমান কবির একজন নারী মুক্তির কর্মী ছিলেন।[৮]
- মাসুদা খাতুন ছিলেন একজন অগ্রণী নারীবাদী, যাকে কাজী নজরুল ইসলাম অগ্নি নাগিনী (আগুনের সর্প) নাম দিয়েছিলেন।[৯]
সংগঠনসম্পাদনা
আরও দেখুনসম্পাদনা
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ক খ Anam, Tahmima (৫ মার্চ ২০১৪)। "Bangladesh's Home Truth"। The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জানুয়ারি ২০১৬।
- ↑ "The Women's Movement in Bangladesh" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৭-২০।
- ↑ সেনগুপ্ত, সুবোধ চন্দ্র ও বোস, অঞ্জলি (সম্পাদক), ১৯৭৬/১৯৯৮, সংসদ বাঙালি চারিতাভিধান খণ্ড ১, পৃ ৮৩, আইএসবিএন ৮১-৮৫৬২৬-৬৫-০
- ↑ ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "ফয়জননেসা, নুরুননাহার"। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ Administrator। "Roquia Sakhawat Hussain (Begum Rokeya)"। Londoni।
- ↑ "Obituary"। archive.thedailystar.net। The Daily Star। সংগ্রহের তারিখ ৯ মার্চ ২০১৬।
- ↑ Ghosh, Subhajyoti। "Why Taslima Nasreen wants to return to Bangladesh"। www.bbc.com। সংগ্রহের তারিখ ২৩ মে ২০১৫।
- ↑ ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "কবীর, রোকেয়া রহমান"। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।
- ↑ ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর, সম্পাদকগণ (২০১২)। "খাতুন, মাসুদা"। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওএল 30677644M। ওসিএলসি 883871743।