প্যাটারসন থম্পসন

ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার

প্যাটারসন ইয়ান চেস্টারফিল্ড থম্পসন (ইংরেজি: Patterson Thompson; জন্ম: ২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১) সেন্ট মাইকেলের পাইন গার্ডেন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

প্যাটারসন থম্পসন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামপ্যাটারসন ইয়ান চেস্টারফিল্ড থম্পসন
জন্ম (1971-09-26) ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ (বয়স ৫২)
পাইন গার্ডেন, সেন্ট মাইকেল, বার্বাডোস
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২১২)
১৯ এপ্রিল ১৯৯৬ বনাম নিউজিল্যান্ড
শেষ টেস্ট২৫ জানুয়ারি ১৯৯৭ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৮১)
১০ জানুয়ারি ১৯৯৭ বনাম পাকিস্তান
শেষ ওডিআই১৪ জানুয়ারি ১৯৯৭ বনাম পাকিস্তান
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৯৪ - ১৯৯৯বার্বাডোস
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ২৯ ১১
রানের সংখ্যা ১৭ ৯৭
ব্যাটিং গড় ৮.৫০ ২.০০ ৪.২১ ২.৬৬
১০০/৫০ ০/০ ০/০ ০/০ ০/০
সর্বোচ্চ রান ১০* ১৫ ৩*
বল করেছে ২২৮ ১১৪ ৩,৭৫২ ৫০৬
উইকেট ৭০
বোলিং গড় ৪৩.০০ ৫৫.০০ ৩৪.০৪ ৪৬.৪৪
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ২/৫৮ ১/৪৬ ৫/১০৫ ২/৩৬
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ০/– ০/– ৭/– ৫/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটে বার্বাডোস দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট-মিডিয়াম বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন প্যাটারসন থম্পসন

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯৯৪-৯৫ মৌসুম থেকে ১৯৯৮-৯৯ মৌসুম পর্যন্ত প্যাটারসন থম্পসনের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। টেস্ট ক্রিকেট খেলোয়াড়ী জীবনের বিপর্যয়কর সূচনাপর্বকে পরবর্তীতে আর সুচারুরূপে নিজের অনুকূলে নিয়ে আসতে পারেননি। এ স্তরের ক্রিকেটে কেবলমাত্র একবার খেলেছেন। পাশাপাশি দুইটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নিয়েছেন তিনি।[১]

১৯৯৪-৯৫ মৌসুমের রেড স্ট্রাইপ কাপ প্রতিযোগিতায় বার্বাডোসের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্যাটারসন থম্পসনের অভিষেক ঘটে। বেশ ভালো খেলা উপহার দেন তিনি। ঐ খেলায় ছয় উইকেট পান। জ্যামাইকার উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ও টেস্ট খেলোয়াড় রবার্ট স্যামুয়েলস তার প্রথম শিকারে পরিণত হয়েছিলেন। ঐ মৌসুমে ২৭.২০ গড়ে দশ উইকেট পান। পরের বছর ঐ প্রতিযোগিতায় ২৩ উইকেট লাভ করেন। ২২.৩৪ বোলিং গড়ে পাওয়া ঐ সংগ্রহটি চতুর্থ সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল। ফলশ্রুতিতে, এপ্রিলে থম্পসনকে টেস্ট দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে দুইটিমাত্র টেস্ট ও দুইটিমাত্র একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণ করেছেন প্যাটারসন থম্পসন। ১৯ এপ্রিল, ১৯৯৬ তারিখে ব্রিজটাউনে সফরকারী নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এরপর, ২৫ জানুয়ারি, ১৯৯৭ তারিখে অ্যাডিলেডে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে বার্বাডোসে সফরকারী নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেট অভিষেক পর্বটি মোটেই সুখকর হয়নি প্যাটারসন থম্পসনের জন্যে। তিনি অখাদ্যে পরিণত হন। ডেভন ম্যালকমের ন্যায় নিজেকে পরিণত করেন। ২২টি নো-বল ছুঁড়েন। খেলায় তার বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ২২-১-১৩৫-৪। এ পরিসংখ্যানটি তাকে বেশ ভাবিয়ে তোলে। এরপর তিনি আর মাত্র আরেকটি টেস্ট খেলার সুযোগ পান। পরবর্তী শীতকালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে খেলেন। টেস্টে তার স্ট্রাইক রেট ছিল ৪৫.৬ যা যে-কাউকেই আনন্দিত করে তুলতে পারে। কিন্তু, তার মিতব্যয়ীতার হার ছিল ওভার প্রতি ৫.৬৫ যা তামাশায় পরিপূর্ণ বোলারকেও লজ্জ্বায় ফেলবে।

ব্রিজটাউনের কেনসিংটন ওভালে নিজ মাঠে প্রতিপক্ষীয় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে তার অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। ঐ টেস্টে তার দল দশ উইকেটে জয় তুলে নেয়। তবে, প্যাটারসন থম্পসনের জন্যে খেলাটি বেশ দূর্বিসহ ছিল। প্রথম ওভারেই তিনি ১৭ রান খরচ করেন। প্রথম ইনিংসে সব মিলিয়ে তেরোটি নো-বলসহ একটি ওয়াইড বল ছুঁড়েন। দুই উইকেট পান তিনি। তার বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ৮-০-৫৮-২।

অস্ট্রেলিয়া গমন সম্পাদনা

১৯৯৬-৯৭ মৌসুমে বাজে সময় অতিবাহিত করেন। শেল/স্যান্ডালস ট্রফি লিস্ট এ প্রতিযোগিতায় ৫৭.৫০ গড়ে মাত্র চার উইকেট লাভ করেন। তাসত্ত্বেও, কিছুটা ভাগ্যের সহায়তা নিয়ে অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্যে তাকে মনোনীত করা হয়। টেস্টের পূর্বে অনুষ্ঠিত প্রথম-শ্রেণীর খেলাগুলোয়ও তিনি বেশ রান খরচ করে ফেলেন। চার খেলায় ২৯১ রান খরচায় ৪ উইকেট পান। এছাড়াও, পার্থের ওয়াকা গ্রাউন্ডসিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুইটি ওডিআইয়ে ১৯ ওভারে ১১০ রান দেন। এবারও, তাকে অ্যাডিলেড ওভালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ টেস্ট খেলার জন্যে দলে রাখা হয়।

ঐ খেলায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ইনিংস ও ১৯৩ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাভূত হয়। এবারও প্যাটারসন থম্পসন বল হাতে ব্যর্থতার পরিচয় দেন। ষোল ওভার বোলিং করে আশি রান খরচ করেন তিনি।

অবসর সম্পাদনা

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে প্রত্যাখ্যাত হবার পর আরও কয়েক মৌসুম ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নেন। তবে, অসাধারণ কোন খেলা উপহার দিতে পারেননি। কেবলমাত্র ১৯৯৮-৯৯ মৌসুমের বুস্টা কাপে ত্রিনিদাদ ও টোবাগোর বিপক্ষে কিছুটা ভালো করার চেষ্টা চালান। প্রথম ইনিংসে অন্যতম সেরা মিতব্যয়ী ওভার করেন ১০ ওভারে ১৯ রান তুলেন। তবে, দ্বিতীয় ইনিংসে ভিন্ন ধাঁচের বোলিং ছিল। নো-বলের সমস্যা পুনরায় ফিরে আসে। সাত ওভার উইকেটবিহীন থাকার পর ১২টি নো-বল ছুঁড়েন। এরফলে, তাকে প্রথম-শ্রেণীর খেলা থেকে চিরতরে সড়ে আসতে হয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Bolshy but brilliant"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৩ এপ্রিল ২০১৯ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা