ডেভন ম্যালকম
ডেভন ইউজিন ম্যালকম (ইংরেজি: Devon Malcolm; জন্ম: ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৩) কিংস্টনে জন্মগ্রহণকারী জামাইকান বংশোদ্ভূত সাবেক ও বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা।[১] টেস্ট ক্রিকেটে ইংল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি।
![]() | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | ডেভন ইউজিন ম্যালকম | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | কিংস্টন, জামাইকা | ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৩|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ৬ ফুট ২ ইঞ্চি (১.৮৮ মিটার) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি ফাস্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৫৩৯) | ১০ আগস্ট ১৯৮৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৩ আগস্ট ১৯৯৭ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ১০৭) | ২৫ মে ১৯৯০ বনাম নিউজিল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৪ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৮৪ - ১৯৯৭ | ডার্বিশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৯৮ - ২০০০ | নর্দাম্পটনশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
২০০১ - ২০০৩ | লিচেস্টারশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২০ অক্টোবর ২০১৭ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ডার্বিশায়ার, নর্দাম্পটনশায়ার ও লিচেস্টারশায়ারের পক্ষে খেলেছেন। দীর্ঘদেহী ডেভন ম্যালকম মূলতঃ ডানহাতে ফাস্ট বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। পাশাপাশি ডানহাতে ব্যাটিংয়েও ভূমিকা রাখতেন।
খেলার ধরন
সম্পাদনা১৯৯০-এর দশকে ইংল্যান্ডের স্বল্প কয়েকজন প্রকৃত ফাস্ট বোলারদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তিনি। জামাইকার কিংস্টনে জন্মগ্রহণ করলেও ইংল্যান্ডের নাগরিক হন। ১৯৮৪ সালে ডার্বিশায়ারের পক্ষে তার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। এরপর ১৯৮৭ সালে ইংল্যান্ডের পক্ষে খেলার সুযোগ লাভ করেন। ৪০ টেস্টে অংশগ্রহণ করলেও তিনি মাত্র দশটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশ নেয়ার সুযোগ পান। তিনি তার সময়কালে বিশ্ব ক্রিকেট অঙ্গনে অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার ছিলেন।
ব্যাট হাতে নিদারুণ ব্যর্থ হলেও তার জনপ্রিয়তা ছিল।[২] সচরাচর এগারো নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামতেন। ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে তাকে প্রায়শঃই ফিল টাফনেলের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হতে হতো। বেশ কিছু দূর্দান্ত ছক্কা হাঁকাতেন ও ধারাভাষ্যকার ব্রায়ান জনস্টনের কাছে জনপ্রিয়তা পান। ক্রিকেট লেখক কলিন ব্যাটম্যান মন্তব্য করেন যে, ম্যালকম মনে প্রাণে কিন্তু সাবলীলভাবে মাঠে নামতেন ও জাতীয় বীর বনে যেতেন।[১]
খেলোয়াড়ী জীবন
সম্পাদনা১৯৮৯ সালের অ্যাশেজ সিরিজ চলাকালে টেস্ট দলের অনেক সদস্য দক্ষিণ আফ্রিকায় বিদ্রোহী সফরে আগ্রহ প্রকাশ করলে দল নির্বাচকমণ্ডলী তাদেরকে সিরিজের বাদ-বাকী টেস্ট থেকে বাদ দেয়। ফলে, ম্যালকমের ইংল্যান্ড দলের পক্ষে খেলার সুযোগ ত্বরান্বিত হয়। ইতোমধ্যেই ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে ৫ম টেস্টে মাঠে নামেন। মার্ক টেলর-জিওফ মার্শ অপরাজিত অবস্থায় থাকলে প্রথম দিন তার উইকেটবিহীন অবস্থায় কাটে। দ্বিতীয় দিন স্টিভ ওয়াহকে শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফেরৎ পাঠান। তাস্বত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়া পুনরায় ইনিংস ব্যবধানে জয়ী হয়। নিচের সারিতে ব্যাটিংয়ে নেমে উভয় ইনিংসে সর্বমোট ১৪ রান তুলেন। তন্মধ্যে একটি চার ও একটি ছক্কার মার ছিল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পরবর্তী সিরিজে নিজস্ব সর্বোচ্চ ২৯ তুলেন মাত্র ১৮ বলে। এতে তিনটি চারের মার ছিল ও শেন ওয়ার্নের বলে উপর্যুপরি দুইটি ছক্কা হাঁকান।[৩]
১৯৮৯-৯০ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের প্রথম টেস্টে ইংল্যান্ড জয় পায়। দ্বিতীয় টেস্টে ম্যালকম দশ উইকেট তুলে নেন ও চার টেস্টের সিরিজে ১৯ উইকেট পান। এরফলে ঐ সফরে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী ছিলেন তিনি।
২০ আগস্ট, ১৯৯৪ তারিখে ওভালে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফ্যানি ডি ভিলিয়ার্সের বলে ম্যালকমের হেলমেটে আঘাত লাগে। এরপর তিনি তার জনপ্রিয় বাক্য "তুমি ইতিহাস হয়ে আছ" বলেন।[৪] এরপর তিনি স্মরণীয় বোলিং করেন ৯/৫৭ যাতে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং অর্ডার ধূলিস্মাৎ হয়ে যায়। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে তার এ বোলিং পরিসংখ্যান ঐ সময় ষষ্ঠ সেরা ছিল। তার এ সাফল্য ২০০২ সালে চ্যানেল ফোরের ১০০ সেরা ক্রীড়া মূহূর্তে ৯১তম অবস্থানে ছিল। বিংশ শতকে ইংরেজ ফাস্ট বোলারদের মধ্যে সেরা বোলিং পরিসংখ্যান হিসেবে বিবেচিত হয়। ১৯৯৫ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হন।[৫]
১৯৯৫-৯৬ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে অংশ নেয়ার পর ইংল্যান্ড দলের ম্যানেজার রে ইলিংওয়ার্থের সাথে সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে।[৬] এছাড়াও ইংল্যান্ডের তৎকালীন বোলিং কোচ পিটার লিভারের সাথেও তার মতানৈক্য ঘটে।[৭] চূড়ান্ত টেস্টে দ্বিতীয় নতুন বল হাতে নিয়েও ডেভ রিচার্ডসন ও পল অ্যাডামসের শেষ উইকেট জুটিতে ৭৩ রান উঠে।
ম্যালকমের আট বছরের খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে ১৯৯৭ সালের অ্যাশেজ সিরিজের ওভালের চূড়ান্ত টেস্টে। তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সূত্রপাত ঘটে অ্যাশেজের পরাজয় ও সমাপ্তি ঘটে অ্যাশেজ টেস্ট জয়ের মাধ্যমে। কিন্তু, তিনি ১৪ ওভার বোলিং করে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসের তৃতীয় বলে ম্যাথু এলিয়টকে লেগ বিফোরের ফাদে ফেলে একটিমাত্র উইকেট পেয়েছিলেন। যদিও ইংল্যান্ডের পক্ষে শতাধিক উইকেট পেয়েছেন, কিন্তু তার শেষ টেস্টের বোলিং গড় ছিল ৩৭-এর উপর।
অবসর
সম্পাদনাকাউন্টি ক্রিকেটে কার্যকরী বোলাররূপে চিহ্নিত ছিলেন তিনি। ১৯৯৮ সালে নর্দাম্পটনশায়ারে চলে যান। দুই বছর ঐ ক্লাবে অবস্থানের পর লিচেস্টারশায়ারে চুক্তিবদ্ধ হন। ২০০৩ সালে ঐ ক্লাবে সর্বশেষ প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নেন। চূড়ান্ত মৌসুমে ৬০-এর বেশি উইকেট পান ও একবার ১০-উইকেট লাভ করেছিলেন।[৭] লিচেস্টারশায়ারে সহস্রাধিক প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পেয়েছিলেন।[৮]
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার পরও নর্দাম্পটনশায়ার ক্রিকেট লীগ প্রিমিয়ার ডিভিশনে ব্রিক্সওয়ার্থ ক্রিকেট ক্লাব ও মাইনর কাউন্টিজ চ্যাম্পিয়নশীপে সাফোকের প্রতিনিধিত্ব করেন। ইউ গাইজ আর হিস্ট্রি শিরোনামে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন। দি উইকেস্ট লিঙ্ক অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে অংশ নেন। কিন্তু কোনবারই জয় পাননি।
ক্রিকেট সরঞ্জাম কোম্পানীও পরিচালনা করেছেন। এরমাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন স্কুল ও ক্লাবে ক্রিকেট সরঞ্জাম বিক্রয়ের সাথে জড়িত ছিলেন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits (ইংরেজি ভাষায়)। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 115। আইএসবিএন 1-869833-21-X। সংগ্রহের তারিখ ২৫ এপ্রিল ২০১১।
- ↑ Cricinfo – The Jack of all rabbits
- ↑ Cricinfo – Long live the tail
- ↑ Soneji, Pranav (৫ আগস্ট ২০০৮)। "Malcolm's greatest spell"। BBC News (ইংরেজি ভাষায়)।
- ↑ "Wisden Cricketers of the Year" (ইংরেজি ভাষায়)। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০২-২১।
- ↑ Grunill, Paul (৩১ মে ২০০২)। "Devon built for speed"। BBC News (ইংরেজি ভাষায়)।
- ↑ ক খ Cricinfo – England's erratic assassin
- ↑ Cricinfo – Malcolm is June's Player of the Month
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে ডেভন ম্যালকম (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে ডেভন ম্যালকম (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
- সানডে টাইমসের নিবন্ধ, ২৩ আগস্ট, ২০০৯[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]