ডেভিড লার্টার

ইংরেজ ক্রিকেটার

জন ডেভিড ফ্রেডরিক লার্টার (ইংরেজি: David Larter; জন্ম: ২৪ এপ্রিল, ১৯৪০) স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেস এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।[] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৬২ থেকে ১৯৬৫ সময়কালে ইংল্যান্ড দলের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ডেভিড লার্টার
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
জন ডেভিড ফ্রেডরিক লার্টার
জন্ম (1940-04-24) ২৪ এপ্রিল ১৯৪০ (বয়স ৮৪)
ইনভার্নেস, ইনভার্নেস-শায়ার, স্কটল্যান্ড, যুক্তরাজ্য
উচ্চতা৬ ফুট ৭ ইঞ্চি (২.০১ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪১৩)
১৬ আগস্ট ১৯৬২ বনাম পাকিস্তান
শেষ টেস্ট৫ আগস্ট ১৯৬৫ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১০ ১৮২
রানের সংখ্যা ১৬ ৬৩৯
ব্যাটিং গড় ৩.২০ ৬.০৮
১০০/৫০ –/– –/১
সর্বোচ্চ রান ১০ ৫১*
বল করেছে ২,১৭২ ৩১,৩৯৫
উইকেট ৩৭ ৬৬৬
বোলিং গড় ২৫.৪৩ ১৯.৫৩
ইনিংসে ৫ উইকেট ২৭
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৫/৫৭ ৮/২৮
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৫/– ৫৬/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২২ ডিসেম্বর ২০১৮

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে নর্দাম্পটনশায়ার দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন ডেভিড লার্টার

কাউন্টি ক্রিকেট

সম্পাদনা

ছয় ফুট সাত ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী ছিলেন ডেভিড লার্টার। দীর্ঘ দূরত্ব নিয়ে ফাস্ট বোলিং করতেন। ইংল্যান্ডের মাইনর কাউন্টিজ চ্যাম্পিয়নশীপে সাফোকের পক্ষে খেলোয়াড়ী জীবনের সূচনা করেন। ফ্রামলিংহাম কলেজে পড়াশুনো করেছিলেন তিনি।[]

এরপর নর্দাম্পটনশায়ারের পক্ষে খেলার যোগ্যতা লাভ করেন ও ১৯৬০ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেন তিনি। ফলশ্রুতিতে ঐ মৌসুমের শীতকালে টেস্ট বহির্ভূত সফরে নিউজিল্যান্ড গমন করেন। উইকেট প্রতি পনেরো রানেরও কম খরচায় ছত্রিশ উইকেট দখল করে ব্যাপক সফলতা পান।[] ফ্রাঙ্ক টাইসন, জর্জ ট্রাইব ও জ্যাক ম্যানিংয়ের অবসর গ্রহণের পর ১৯৬১ সালে তিনি কাউন্টি দলটির শীর্ষস্থানীয় উইকেট শিকারীতে পরিণত হন। ঐ গ্রীষ্মে বোলারদের অনুপযোগী পিচেও ১৯.৮৭ গড়ে ৭০ উইকেট দখল করেছিলেন ডেভিড লার্টার।[] পরবর্তী মৌসুমে ১৯৬২ সালে ডেভিড লার্টারের খেলার মান আরও উন্নত হয়। শতাধিক উইকেট লাভ করেন তিনি। একই মৌসুমে ট্রেন্টব্রিজে নটিংহ্যামশায়ারের বিপক্ষে অপ্রত্যাশিতভাবে অপরাজিত অর্ধ-শতকের মনোরম ইনিংস উপহার দিয়েছিলেন। ১১ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে কিথ অ্যান্ড্রু’র সাথে শেষ উইকেট জুটিতে ঘণ্টাখানেক ব্যাটিং করে ৮৫ রান তুলেছিলেন তিনি।[]

১৯৬৫ সালে নর্দাম্পটনে সমারসেটের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৪/২৮ লাভের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যক্তিগত সেরা ৮/২৮ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। লিডসের হেডিংলিতে অনুষ্ঠিত ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে পরের খেলাতেই ৫/৪৩ ও ৭/৩৭ পান। এরফলে এক সপ্তাহের মধ্যই ১৩৬ রান খরচায় ২৪ উইকেট দখল করেছিলেন ডেভিড লার্টার।[]

টেস্ট ক্রিকেট

সম্পাদনা

১৯৬২ সালে ওভালে সফররত পাকিস্তান দলের বিপক্ষে সিরিজের পঞ্চম টেস্টে অভিষেক ঘটে তার। অভিষেক টেস্টেই নয় উইকেট দখল করেছিলেন তিনি।[] অভিষেক টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫/৫৭ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন।

নিজস্ব প্রথম দুই টেস্টেই ষোলো উইকেট পেয়েছিলেন তিনি।[] এরপর থেকেই দীর্ঘস্থায়ী টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল তার। তাসত্ত্বেও, ১৯৬৩ সালে দল নির্বাচকমণ্ডলী কর্তৃক উপেক্ষার পাত্রে পরিণত হয়েছিলেন ডেভিড লার্টার। ঐ মৌসুমে উইকেট প্রতি ১৬.৭৫ গড়ে ১২১ উইকেট নিয়ে ফ্রেড ট্রুম্যানের পর দ্বিতীয় স্থানে ছিলেন। তারপর থেকেই ইংল্যান্ড দলের সাথে নিয়মিতভাবে বিদেশ গমন করতেন। ১৯৬২-৬৩ মৌসুমে অ্যাশেজ সিরিজ খেলার জন্যে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। এরপর ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে ভারত সফরে যান। তবে, ক্রমাগত আঘাতের কারণে টেস্টে অংশগ্রহণ স্তিমিত হয়ে পড়ে তার। ২৫.৪৩ গড়ে ৩৭ উইকেট দখল করেন তিনি।[]

১৯৬৫-৬৬ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরকালে সিডনিতে গুরুতরভাবে হাঁটুর গোড়ালিতে আঘাত পান। ফলশ্রুতিতে ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণ করতে বাধ্য হন। তাসত্ত্বেও, ১৯৬৬ ও ১৯৬৯ সালে নর্দাম্পটনশায়ারের পক্ষে স্বল্প কয়েকটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি।

২৯ বছর বয়সে ক্রিকেট খেলা থেকে ডেভিড লার্টার অবসর গ্রহণ করেন। প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের পূর্বে পারিবারিক পরিবহনের ব্যবসা পরিচালনায় অগ্রসর হন।

মূল্যায়ন

সম্পাদনা

সমগ্র প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবনে উইকেট প্রতি ১৯.৫৩ রান খরচায় ৬৬৬ উইকেট দখল করেছিলেন। সচরাচর নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন তিনি ও ব্যাটিংয়ের মান তেমন ভালো ছিল না তার।

বিখ্যাত ক্রিকেট লেখক কলিন বেটম্যানের অভিমত, ডেভিড লার্টার জটিল চরিত্রের অধিকারী ছিলেন। নর্দাম্পটনে একদিন এবড়োথেবড়ো বোলিং করেছেন। কিন্তু, ছন্দে ফিরে আসলে ৬ ফুট ৭ ইঞ্চি উচ্চতার অধিকারী হিসেবে তাকে মোকাবেলা করা কঠিন ছিল। দুর্ধর্ষ ফাস্ট বোলার হিসেবে সুনাম ছিল তার। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ১৯ গড়ে ৬৬৬ উইকেট লাভ করেছেন তিনি।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 108আইএসবিএন 1-869833-21-X 
  2. Gordon Ross, সম্পাদক (১৯৬৫)। Playfair Cricket Annual। Dickens Press। পৃষ্ঠা 114। 
  3. Preston, Norman (editor); Wisden Cricketers' Almanack. Ninety-Ninth edition (1962); p. 864
  4. Preston (editor); Wisden Cricketers' Alamanac (1962); pp. 522.524
  5. Wisden Cricketers' Almanack, 1963, p. 564.
  6. Wisden Cricketers' Almanack 1966, pp. 508, 633.
  7. "5th Test: England v Pakistan at the Oval, 16–20 August 1962"espncricinfo। সংগ্রহের তারিখ ১৮ ডিসেম্বর ২০১১ 

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা