টনি পিদি

দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার

অ্যান্থনি জন পিদি (ইংরেজি: Tony Pithey; জন্ম: ১৭ জুলাই, ১৯৩৩ - মৃত্যু: ১৭ নভেম্বর, ২০০৬) দক্ষিণ রোডেশিয়ার আমতালি এলাকায় জন্মগ্রহণকারী দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫৭ থেকে ১৯৬৫ সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

টনি পিদি
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
অ্যান্থনি জন পিদি
জন্ম(১৯৩৩-০৭-১৭)১৭ জুলাই ১৯৩৩
আমতালি, দক্ষিণ রোডেশিয়া
মৃত্যু১৭ নভেম্বর ২০০৬(2006-11-17) (বয়স ৭৩)
সাউথব্রুম, দক্ষিণ আফ্রিকা
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাব্যাটসম্যান
সম্পর্কভাই: ডেভিড পিদি
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৯৫)
২৫ জানুয়ারি ১৯৫৭ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৫ বনাম ইংল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১৭ ১২৪
রানের সংখ্যা ৮১৯ ৭০৭৩
ব্যাটিং গড় ৩১.৫০ ৩৫.৯০
১০০/৫০ ১/৪ ১৩/৪১
সর্বোচ্চ রান ১৫৪ ১৭০
বল করেছে ১২ ২২
উইকেট
বোলিং গড়
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৩/- ৫৯/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ব্যাটসম্যানের দায়িত্ব পালন করতেন। এছাড়াও, ডানহাতে অফ ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন টনি পিদি

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

সম্পাদনা

রোডেশিয়া ও বতসোয়ানার সীমান্তবর্তী শহর প্লামট্রিতে শৈশবকাল অতিবাহিত করেন। তার ভাই ডেভিড পিদি দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ডেভিড পিদি অফ স্পিনার হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলে খেলেছেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে জ্যেষ্ঠ ছিলেন তিনি। তার ব্যাটিং তেমন দর্শনীয় ছিল না। নতুন বল মোকাবেলায় যথেষ্ট পারঙ্গমতা প্রদর্শন করেছেন। শুরুরদিকে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে আবির্ভূত হন। তবে, পরবর্তীকালে তিন নম্বরে নামতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন।

শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে স্ট্রোক মারার চেয়ে ক্রিজে অবস্থানের দিকেই অধিক মনোনিবেশ ঘটাতেন। আবার, কখনোবা নিচেরদিকে ব্যাটিংয়ে নামতেন। তবে, ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে ভীতিহীন দৃঢ়চেতা মনোভাব দেখাতেন। শুরুরদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার উদীয়মান ব্যাটসম্যান হিসেবে আত্মপ্রকাশের বিষয়ে ক্রিকেটবোদ্ধাদের ধারণা ছিল। তবে, জাতীয় দলে পাকাপোক্ত অবস্থানের সুযোগ পান খেলোয়াড়ী জীবনের শেষদিকে।

১৯৫০-৫১ মৌসুম থেকে ১৯৬৮-৬৯ মৌসুম সাল পর্যন্ত টনি পিদি’র প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। রোডেশিয়ার পক্ষে ৬৫ খেলায় অংশ নেন ও ৩৪বার অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন।[]

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে সতেরোটি টেস্টে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছেন টনি পিদি। রোডেশীয় বংশোদ্ভূত টনি পিদি তার ১৭ বছরের টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনে একবারই সফলতার মুখ দেখেছিলেন। ১৯৬০ সালে ইংল্যান্ড এবং ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে অস্ট্রালেশিয়া গমন করেন। এছাড়াও, ১৯৫৬-৫৭ ও ১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজ দেশে খেলেন। ২৫ জানুয়ারি, ১৯৫৭ তারিখে ডারবানে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৬৫ তারিখে পোর্ট এলিজাবেথে একই দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে ট্রেভর গডার্ডের নেতৃত্বাধীন স্প্রিংবকদের সাথে অস্ট্রেলিয়া গমন করেন। এ পর্যায়ে স্বীয় ভ্রাতা ডেভিড পিদি এবং পোলক ভ্রাতৃদ্বয় - পিটার পোলকগ্রেইম পোলকের সাথে একত্রে খেলেন। এটিই এক টেস্টে কোন দলের পক্ষে দুই জোড়া ভ্রাতৃদ্বয়ের একযোগে খেলায় অংশগ্রহণ ছিল।

১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে মাইক স্মিথের নেতৃত্বে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি) দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করে। এ সিরিজটিই তার খেলোয়াড়ী জীবনের সেরা মুহূর্ত ছিল। দুইটি অর্ধ-শতরানের ইনিংসসহ নিউল্যান্ডসে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ১৫৪ রানের একমাত্র শতরান ছিল।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজস্ব সর্বশেষ সিরিজে ৫১.৩৩ গড়ে ৪৬২ রান তুলেছিলেন। সিরিজের শুরুটা ধীরলয়ে করেন। ব্যাটিং উপযোগী পিচে ছয় ঘণ্টাকাল অবস্থান করে এ রান তুলেন। পরের টেস্টেও এ ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ৯৫ রান তুলেন।

১৯৬৫ সালে ইংল্যান্ড গমনের জন্যে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের অন্যতম সদস্যরূপে মনোনীত করা হয়। তবে, ব্যবসায়িক দায়বদ্ধতার কারণে এ সফর থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেন। এরপর আর তাকে খেলার জগতে দেখা যায়নি।

খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর গ্রহণের পর ক্রিকেট প্রশাসনের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ১৯৯১ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনকালীন দল নির্বাচকমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ১৭ নভেম্বর, ২০০৬ তারিখে ৭৩ বছর বয়সে সাউথব্রুম এলাকায় টনি পিদি’র দেহাবসান ঘটে।

তার কনিষ্ঠ ভ্রাতা ডেভিড পিদি দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আটটি টেস্টে অংশ নিয়েছিলেন।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Jonty Winch, Cricket's Rich Heritage: a History of Rhodesian and Zimbabwean Cricket 1890–1982, Books of Zimbabwe, Bulawayo, 1983, p. 220.

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা