জ্যাক ও’কনর (ইংরেজ ক্রিকেটার)

ইংরেজ ক্রিকেটার

জ্যাক ও’কনর (ইংরেজি: Jack O'Connor; জন্ম: ৬ নভেম্বর, ১৮৯৭ - মৃত্যু: ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৭) কেমব্রিজ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ও কোচ ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯২৯ থেকে ১৯৩০ সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

জ্যাক ও’কনর
১৯২৫ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে জ্যাক ও’কনর
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
জ্যাক ও’কনর
জন্ম৬ নভেম্বর, ১৮৯৭
কেমব্রিজ, ইংল্যান্ড
মৃত্যু২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৭
বাকহার্স্ট হিল, এসেক্স, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার, মাঝে-মধ্যে উইকেট-রক্ষক, কোচ
সম্পর্কজন ও’কনর (পিতা), আরপি কার্পেন্টার (পিতামহ), এইচএ কার্পেন্টার (কাকা)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৪০)
২৯ জুন ১৯২৯ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট৩ এপ্রিল ১৯৩০ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৫৪০
রানের সংখ্যা ১৫৩ ২৮৭৬৪
ব্যাটিং গড় ২১.৮৫ ৩৪.৯০
১০০/৫০ -/১ ৭২/১২৯
সর্বোচ্চ রান ৫১ ২৪৮
বল করেছে ১৬২ ৩৯৭৮৩
উইকেট ৫৫৭
বোলিং গড় ৭২.০০ ৩২.৮৯
ইনিংসে ৫ উইকেট ১৮
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ১/৩১ ৭/৫২
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২/- ২২৬/১
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৪ মার্চ ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে এসেক্স দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, দলের প্রয়োজনে মাঝে-মধ্যে উইকেট-রক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংও করতেন তিনি।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

সম্পাদনা

ডার্বিশায়ারের প্রতিনিধিত্বকারী জন ও’কনরের সন্তান ছিলেন জ্যাক ও’কনর। তার কাকা হার্বাট কার্পেন্টার এসেক্সের পক্ষে খেলেছেন। লেগ ও অফ স্পিনের সমন্বয়ে বোলিং করতেন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ৫৫৭ উইকেট লাভ করেছেন। তন্মধ্যে, ১৯২৬ সালে ৯৩ উইকেট দখল করেছিলেন তিনি।

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ৭২টি শতরানের ইনিংস খেলার সুযোগ ঘটেছে তার। প্রত্যেক কাউন্টি ক্লাবসহ বিশ্ববিদ্যালয় দলের বিপক্ষে কমপক্ষে একটি শতরান করেছেন।[] ১৯২১ সাল থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত জ্যাক ও’কনরের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। ১৯২১ সালে এসেক্সের পক্ষে মাঝারিমানের খেলা উপহার দেন। কিন্তু, পরের বছর দলের নিয়মিত সদস্যের মর্যাদাপ্রাপ্ত হন। নিজস্ব প্রথম শতরানের ইনিংস খেলেন। পরপর চারটি খেলায় অপরাজিত ১১১, ১২৮, ৯৩ ও ৯৯ রান তুলেন। ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত দলের প্রধান মেরুদণ্ডকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন। সবগুলো প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৩৪.৯৫ গড়ে ২৮,৫৭৫ রান তুলেন।

১৯২৬ সালে ৯৩ উইকেট পান। ফলে, অল্পের জন্যে ডাবল লাভ করা থেকে বঞ্চিত হন। টিচ ফ্রিম্যানের বিপক্ষে তিনি হাবুডুবু খেতেন। ১৯২২ থেকে ১৯৩৬ সালের মধ্যে কেন্টের বিপক্ষে ৫২ ইনিংসে মাঠে নামেন। সাতবার সেঞ্চুরি করেন। ৩১ গড়ে রান পেয়েছেন। পনেরোবার টিচ ফ্রিম্যান তাকে ৩০-এর নিচে আউট করেছেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে চারটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন জ্যাক ও’কনর। ২৯ জুন, ১৯২৯ তারিখে লর্ডসে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ৩ এপ্রিল, ১৯৩০ তারিখে কিংস্টনে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

১৯২৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একবার খেলেন। ঐ বছরের শীতকালে ১৯২৯-৩০ মৌসুমে এমসিসি’র সদস্যরূপে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন খেলায় অংশ নেন। ঐ সময়ে উইজডেনে খেলাগুলোকে প্রতিনিধিত্বমূলক খেলা হিসেবে আখ্যায়িত করা হলেও এগুলো টেস্ট রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে, ইংল্যান্ড দলটি এ-দলের চেয়ে বেশি মানসম্পন্ন ছিল না।

খেলার ধরন

সম্পাদনা

ধীরগতিতে লেগ ব্রেক ও অফ ব্রেকের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে বোলিং করতেন। বলগুলো তার ন্যায় সাধারণমানের দেখাতো। ছোটখাটো গড়নের অধিকারী হলেও খুব দ্রুত পায়ের কারুকাজ করতে পারতেন। উইকেটের উভয় দিকেই চমৎকার ড্রাইভ মারতেন ও সুন্দরভাবে হুক মারতেন। শীর্ষমানের ব্যাটসম্যানদের চেয়ে অধিকতর ব্যর্থতার স্বাক্ষর রাখতেন। ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে খেলতে পারতেন না। এমনকি ফিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে দক্ষতা দেখাতে পারেননি। স্লো স্পিন বোলিংয়ের বিপক্ষে দূর্দান্ত খেলতেন।

উভয় বিশ্বযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে এসেক্স দলে প্রধান খেলোয়াড়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। ষোলবার মৌসুমে সহস্ররানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। ড্রাইভ ও পুলের ফুলঝুড়ি ছোটালেও ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে তিনি নেতিয়ে পড়তেন।

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের পর কোচিং জগতের দিকে ধাবিত হন। এ পর্যায়ে অনেকগুলো বছর এটন কলেজে কোচের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[] ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৭ সময়কালে বাকিংহামশায়ারের পক্ষে খেলেছেন। এরপর তিনি চিগওয়েলে কোচিং করান।

ক্রিকেটপ্রেমী পরিবারের সন্তান তিনি। তার পিতা কেমব্রিজশায়ার ও ডার্বিশায়ারের পক্ষে সফলতার সাথে খেলেন। এছাড়াও, ফেনার্সে জালবদ্ধ ঘেরা অনুশীলনীমূলক খেলায় অনেকগুলো বছর বোলিং করেছেন। তার কাকা হার্বাট কার্পেন্টার বেশ কয়েকবছর এসেক্সের প্রধান ব্যাটিং মেরুদণ্ডকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন ও প্লেয়ার্সের পক্ষে খেলেছেন। অন্যদিকে, প্রপিতামহ রবার্ট কার্পেন্টার ১৮৬০-এর দশকে ইংল্যান্ডের শীর্ষস্থানীয় ব্যাটসম্যান ছিলেন।

২২ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৭ তারিখে ৭৯ বছর বয়সে এসেক্সের বাকহার্স্ট হিল এলাকার ফরেস্ট হাসপাতালে জ্যাক ও’কনরের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা