জন স্টিফেনসন

ইংরেজ ক্রিকেটার

জন প্যাট্রিক স্টিফেনসন (ইংরেজি: John Stephenson; জন্ম: ১৪ মার্চ, ১৯৬৫) এসেক্সের স্টেবলিং এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।[১] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৮০-এর দশকের শেষদিকে অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। বর্তমানে তিনি মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) ক্রিকেট প্রধান হিসেবে কাজ করছেন।

জন স্টিফেনসন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামজন প্যাট্রিক স্টিফেনসন
জন্ম (1965-03-14) ১৪ মার্চ ১৯৬৫ (বয়স ৫৯)
স্টেবলিং, এসেক্স, ইংল্যান্ড
ডাকনামস্ট্যানলি, এসভেনসন, লিও
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাব্যাটসম্যান
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
একমাত্র টেস্ট
(ক্যাপ ৫৪১)
২৪ আগস্ট ১৯৮৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৮৫ - ১৯৯৪এসেক্স
১৯৮৮ - ১৯৮৯বোল্যান্ড
১৯৮৮/৮৯ইম্পালাস
১৯৯৫ - ২০০১হ্যাম্পশায়ার
২০০২ - ২০০৪এসেক্স
২০০৪ - ২০০৬এমসিসি
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ৩০৪ ৩১৯
রানের সংখ্যা ৩৬ ১৪,৭৭৩ ৭,২৫২
ব্যাটিং গড় ১৮.০০ ৩২.৩৯ ২৯.৩৬
১০০/৫০ ০/০ ২৫/৭৮ ৮/৩৮
সর্বোচ্চ রান ২৫ ২০২* ১৪২
বল করেছে ২৩,০১৮ ৯,২১৬
উইকেট ৩৯৬ ২৭০
বোলিং গড় ৩২.৫৫ ২৬.৪০
ইনিংসে ৫ উইকেট ১১
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৭/৪৪ ৬/৩৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ০/– ১৮২/– ১২২/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১০ ডিসেম্বর ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে এসেক্স ও হ্যাম্পশায়ার এবং দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে বোল্যান্ড দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেছেন। এছাড়াও, ডানহাতে কার্যকরী মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন ‘স্ট্যানলি’ ডাকনামে পরিচিত জন স্টিফেনসন

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

ফেলস্টেড স্কুলে অধ্যয়ন শেষে ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনো করেন। স্নাতক-পূর্বকালীন ১৯৮৬ সালে পালাটিনেট পুরস্কারে ভূষিত হন।[২] ১৯৮৫ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত জন স্টিফেনসনের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল।

দীর্ঘদিনব্যাপী ডানহাতি ব্যাটসম্যান ও ডানহাতি মিডিয়াম বোলার হিসেবে কাউন্টি ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। ১৯৮৫ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত এসেক্স এবং ১৯৯৫ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত হ্যাম্পশায়ারের পক্ষে খেলেন। তন্মধ্যে, ১৯৯৬ ও ১৯৯৭ সালে ক্লাবের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। এরপর, ২০০২ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত সাবেক ক্লাব এসেক্সে চলে যান।

১৯৯৪ সালে গ্রাহাম গুচকে অধিনায়কত্ব প্রদান করায় এসেক্স ত্যাগ করে হ্যাম্পশায়ারে চলে যান। ২০০২ সালে চেমসফোর্ডে ফিরে আসেন ও এসেক্সের দ্বিতীয় একাদশে খেলেন। কিন্তু, চমৎকার খেলার স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে পুনরায় প্রথম একাদশে ফিরিয়ে আনা হয়। সেখানে তিনি বোলার হিসেবে তার ধারাবাহিক ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন অব্যাহত রাখেন। ২০০২ সালে ৪৮ উইকেট নিয়ে দলের শীর্ষস্থানীয় উইকেট সংগ্রাহকে পরিণত হন। এছাড়াও, ৩৫ গড়ে ৫৬২ রান সংগ্রহ করেছিলেন তিনি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে একটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন জন স্টিফেনসন। ২৪ আগস্ট, ১৯৮৯ তারিখে ওভালে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। এটিই তার একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ ছিল। এরপর আর তাকে কোন টেস্টে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি।

১৯৮০-এর দশকে ইংল্যান্ডের অনেক এক টেস্টের বিস্ময়কারীদের অন্যতম ছিলেন। ১৯৮৯ সালে একচেটিয়া প্রভাববিস্তারকারী অস্ট্রেলীয়দের বিপক্ষে তাকে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলার সুযোগ দেয়া হয়। ওভালে অনুষ্ঠিত ঐ টেস্টে তিনি ২৫ ও ১১ রান সংগ্রহ করেছিলেন। কিন্তু, তাসত্ত্বেও শীতকালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমনার্থে তাকে দলে রাখা হয়নি। এর পরপরই ইংল্যান্ড এ দলের পক্ষে যথেষ্ট ভালোমানের খেলা উপহার দিলেও তাকে আর ইংল্যান্ড দলে খেলার জন্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।

স্টিফেনসন এক টেস্টের বিস্ময়কারী ছিলেন। ১৯৮৯ সালের অ্যাশেজ সিরিজে ওভালের ষষ্ঠ টেস্টে অংশ নেন। এছাড়াও, দুইবার ইংল্যান্ড এ দলের সদস্যরূপে বিদেশ গমন করেন। ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে জিম্বাবুয়ে ও ১৯৯১-৯২ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন করেছিলেন তিনি।

মূল্যায়ন সম্পাদনা

লম্বুটে গড়নের অধিকারী জন স্টিফেনসন কাউন্টি পর্যায়ের ক্রিকেটে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি কার্যকরী মিডিয়াম পেস বোলার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। এছাড়াও, চমৎকারভাবে ফিল্ডিং করতেন।

ক্রিকেট লেখক কলিন বেটম্যান মন্তব্য করেছেন যে, ১৯৮৯ জন স্টিফেনসনের টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণ নলে একের-পর এক বল বিঙ্গো মেশিনে ফেলার ন্যায় ইংল্যান্ডের দল নির্বাচক নীতির আলোকে হয়েছিল। বেটম্যান আরও বলেন, স্টিফেনসন বেশ বুদ্ধিমান, কার্যকর অল-রাউন্ডার হিসেবে বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী এক কসাই সিরিজে ২৯ নম্বর খেলোয়াড় হিসেবে নেয়া হয়েছিল।[১]

জুন, ২০০৪ সালে এমসিসি’র ক্রিকেট প্রধান হিসেবে নিযুক্তি লাভ করেন। এরপর, তাৎক্ষণিকভাবে সকল স্তরের প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন। তিনি এমসিসি’র পক্ষে একবারমাত্র মাঠে নেমেছিলেন। এমসিসি’র খেলা ও সফরসূচী প্রণয়ন, খেলার কৌশলগত ব্যবস্থাপনা ও লর্ডসে অনুশীলন এলাকাসহ এমসিসি তরুণ ক্রিকেটার প্রকল্পের তত্ত্বাবধান করছেন তিনি।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Bateman, Colin (১৯৯৩)। If The Cap Fits। Tony Williams Publications। পৃষ্ঠা 162আইএসবিএন 1-869833-21-X 
  2. "Palatinates"Palatinate: 21। ২০ নভেম্বর ১৯৮৬। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
মার্ক নিকোলাস
হ্যাম্পশায়ার ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৯৬ - ১৯৯৭
উত্তরসূরী
রবিন স্মিথ