জন্ম আমার ধন্য হলো মা গো

'জন্ম আমার ধন্য হলো মা গো' ১৯৭০ সালে প্রকাশিত বাংলা ভাষায় রচিত একটি দেশাত্মবোধক সঙ্গীত। কালজয়ী এই গানের গীতি লিখেছেন নয়ীম গহর, সুর করেছেন আজাদ রহমান। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণাদায়ী জাগরণী গানগুলির মধ্যে এই সঙ্গীতটি অন্যতম। এই গীতিতে জন্মভূমিকে মায়ের রূপে কল্পনা করা হয়েছে; জন্মভূমির প্রতি প্রশস্থি, বিশ্বস্ততা ও দেশপ্রেমের আকুতি প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর গানটি সাবিনা ইয়াসমিনের একক কন্ঠে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পায়।

"জন্ম আমার ধন্য হলো মা গো"
সব ক’টা জানালা খুলে দাও না অ্যালবাম থেকে
ফিরোজা বেগম ও সাবিনা ইয়াসমিন কর্তৃক সঙ্গীত
ভাষা	বাংলা
মুক্তিপ্রাপ্ত	১৯৭০
বিন্যাস	গ্রামোফোন রেকর্ড, ভিডিও স্ট্রিমিং
রেকর্ডকৃত	১৯৭০
স্টুডিও	করাচী ট্রান্সক্রিপশন সার্ভিস
স্থান	করাচী, পাকিস্তান
ধারা	দেশাত্মবোধক সঙ্গীত
দৈর্ঘ্য	০৬:১২
লেবেল	এইচএমভি (১৯৭০) সাউন্ডটেক (২০১৬-বর্তমান)
গান লেখক	নয়ীম গহর
সুরকার	আজাদ রহমান
প্রযোজক	আজাদ রহমান
সঙ্গীত ভিডিও
ইউটিউবে "জন্ম আমার ধন্য হলো"
সঙ্গীত ভিডিও
ইউটিউবে "১৯৭০-এর সংস্করণ"

ইতিহাস

১৯৭০ সালে এই গান ধারণের জন্য সাবিনা ইয়াসমিন করাচীতে গমন করেছিলেন। এই গান ধারণের সময় সুরকার আজাদ রহমান সাবিনা ইয়াসমিনকে গীতিকার নয়ীম গহরের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। দ্বৈত কন্ঠে এই গানের প্রথম সংস্করণ ধারণ করা হয়। গানটির মুখ্য গায়িকা ছিলেন প্রখ্যাত নজরুলগীতি শিল্পী ফিরোজা বেগম ও সাবিনা ইয়াসমিন। নেপথ্যে সমবেত কন্ঠ দিয়েছিলেন জিনাত রেহানা, নাসির হায়দার, আহমেদুল্লাহ সিদ্দিকী, আসাদুল হক ও লায়লা মোজাম্মেল। করাচি ট্রান্সক্রিপশন সার্ভিসে এই গানের শব্দ ও কন্ঠ ধারণ করা হয়েছিল। একই বছর গানটি এইচএমভি হতে “পুবের ওই আকাশে সূর্য উঠেছে আলোকে আলোকময়” শিরোনামের আরেকটি গানের সাথে গ্রামোফোন রেকর্ডে প্রকাশিত হয়েছিল।

জনসংস্কৃতিতে গ্রহণযোগ্যতা

এই গানটি নয়ীম গহর রচিত কালজয়ী গানের একটি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণীত করার জন্য স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র হতে অন্যান্য দেশাত্মবোধক গানের সাথে এই গানটিও প্রচার করা হতো। এই গানের প্রথম দুই পঙতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পছন্দ করতেন। সাবিনা ইয়াসমিনের সাথে দেখা হলে তিনি এই দুই পঙতি গাইতে বলতেন। সাবিনা ইয়াসমিন বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে বহুবার এই গান উপস্থাপন করেছেন সাবিনা ইয়াসমিন ছাড়াও অন্যান্য শিল্পীরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এই গান পরিবেশন করেছেন। সম্প্রচার টেলিভশনের যুগে বিভিন্ন আপাতবাস্তব টেলিভিশন অনুষ্ঠান, কনসার্টে এই গানটি পরিবেশিত হয়েছে।

পুনঃউৎপাদন ও চলচ্চিত্রে ব্যবহার

• জাগরণ সংস্কৃতিচর্চা ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিকল্পনায় স্টেপ মিডিয়া লিমিটেড-এর প্রযোজনায় বাংলাদেশের বিভিন্ন আন্দোলন ও সংগ্রামে ভূমিকা রাখা ৭১টি গান নিয়ে ১২ ডিসেম্বর, ২০০৯ তারিখে 'জাগরণের গান' শিরোনামের একটি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। এই গানটি জাগরণের গানের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
• সাবিনা ইয়াসমিন নিজের গাওয়া দেশাত্মবোধক গান গুলি স্বউদ্যোগে সংরক্ষণ ও পুনঃউৎপাদন করেন এবং সাউন্ডটেক-এর ব্যানারে ‘সব ক’টা জানালা খুলে দাও না’ শিরোনামীয় এ্যালবামে এই গান প্রকাশ করেন। ৩ মে, ২০১৬ তারিখে সাউন্ডটেক তাদের আনুষ্ঠানিক ইউটিউব চ্যানেলে এই অ্যালবামটি অবমুক্ত করে। পরবর্তীতে ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৭ তারিখে গানটি এককভাবে অবমুক্ত করা হয়।
• গানটি ১৯৯৪ সালে মুক্তি পাওয়া কাজী হায়াৎ পরিচালিত 'দেশপ্রেমিক' চলচ্চিত্রে ব্যবহার করা হয়।

আরও দেখুন

• সব ক’টা জানালা খুলে দাও না
• সেই রেললাইনের ধারে মেঠোপথটার পারে দাঁড়িয়ে