দেশপ্রেমিক (চলচ্চিত্র)
দেশপ্রেমিক ১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশী বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্রটির কাহিনী লিখেছেন এবং পরিচালনা করেছেন পরিচালক কাজী হায়াৎ। হাসনাবাদ কথাচিত্র ব্যানারে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রযোজনায় চলচ্চিত্রটির প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন আলমগীর। এছাড়াও অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেন মান্না, চম্পা, ডলি জহুর, আশীষ কুমার লোহ প্রমুখ। এ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে আলমগীর সপ্তম বারের মত শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।[১]
দেশপ্রেমিক | |
---|---|
পরিচালক | কাজী হায়াৎ |
প্রযোজক | শেখ মুজিবুর রহমান |
চিত্রনাট্যকার | কাজী হায়াৎ |
কাহিনিকার | কাজী হায়াৎ |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | আজাদ রহমান |
সম্পাদক | সাইফুল ইসলাম |
পরিবেশক | হাসনাবাদ কথাচিত্র |
মুক্তি | ১৯৯৪ |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
কাহিনী সংক্ষেপ
সম্পাদনাস্ত্রী কন্যা নিয়ে সুখের সংসার করছেন চিত্রপরিচালক আলমগীর। ধনীর দুলালী ডলি ভালবেসে বিয়ে করে আলমগীরকে যা তার বাবা শিল্পপতি আরিফুল হক পছন্দ করে না। আলমগীর "দেশপ্রেমিক" নামে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন যাতে সমাজ ও রাজনীতির নষ্ট দিকগুলো চিত্রায়িত হয়। এতে করে সমালচনার শিকার হতে হয় তাকে। এমনকি তথ্য মন্ত্রী তাকে বাসায় ডেকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বিরত করার চেষ্টা করে। আলমগীর তার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে চলচ্চিত্রটি মুক্তির উদ্যোগ নেয়। কিন্তু তাকে এফডিসির ল্যাবে চলচ্চিত্রটি মুদ্রণ করতে দেওয়া হয় না এবং পদে পদে বাঁধা দেওয়া হয়। প্রযোজক পরিবেশকরাও তার চলচ্চিত্রে লগ্নি করতে অস্বীকৃতি জানায়। তখন সে এফডিসির সম্পাদক আশীষ কুমারের কাছ থেকে টাকা ধার করে ও তার স্ত্রীর গয়না বিক্রি করে বিদেশ থেকে চলচ্চিত্রটি মুদ্রণ করার ব্যবস্থা করে। সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যখন দেখে তার আগ্রহে ভাটা পড়ছে না তখন এক রাতে তাকে পুলিশ স্বর্ণচোরাচালানের অভিযগে ধরে নিয়ে যায়। পুলিশের রিমান্ডে ও স্ত্রী-কন্যার কথা ভেবে সে এই অভিযোগ স্বীকার করেলে তার ২০ বছরের জেল হয়। ডলি তার মেয়েকে নিয়ে তার বাবার সহযোগিতায় বিদেশ চলে যায়।
২০ বছর পর সে জেল থেকে বের হয়ে তার শ্বশুর বাড়িতে তার স্ত্রী-কন্যার খোঁজ নিতে গেলে তার শ্বশুর তাকে তাড়িয়ে দেন। আলমগীরের মেয়ে চম্পা দেশে ফিরে তার বাবাকে খুঁজতে থাকে। তার সাহয্যে এগিয়ে আসে মান্না। অবশেষে সে তার বাবাকে খুঁজে পায়। বাবাকে পেয়ে সে তার নানার বাড়ি ছেড়ে বাবার সাথে থাকতে শুরু করে। বাবাকে স্বাভাবিক অবস্থায় আনতে সে মান্নার সহযোগিতায় তার বাবার নির্মিত চলচ্চিত্র মুক্তির উদ্যোগ নেয়। ইতিমধ্যে আলমগীর লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় এবং এর পরপরই দরশকেরা তা সাদরে গ্রহণ করে। চীনের বেইজিংয়ে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে চলচ্চিত্রটি পুরস্কার অর্জন করে। আলমগীরের পক্ষ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করে তার মেয়ে। পুরস্কার হাতে পেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে আলমগীর।
শ্রেষ্ঠাংশে
সম্পাদনাসঙ্গীত
সম্পাদনাদেশপ্রেমিক চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন আজাদ রহমান। এ চলচ্চিত্রের জন্য বেশ কিছু রবীন্দ্র সঙ্গীত ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও ‘তুমি কি দেখেছো কভু’ গানটিকেও নতুন করে সুরারোপ করা হয় এই চলচ্চিত্রের জন্য। একাধিক রবীন্দ্র সঙ্গীতে কণ্ঠ দেন রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।
গানের তালিকা
সম্পাদনানং | গানের শিরোনাম | কণ্ঠশিল্পী | পর্দায় শিল্পী |
---|---|---|---|
১ | মম চিত্তে নিতি নৃত্যে কে যে নাচে | রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা | ডলি জহুর |
২ | তুমি কি দেখেছো কভু | আলমগীর | |
৩ | সংকটেতে বিহবলতা নিজেরই অপমান | আলমগীর | |
৪ | ও আমার দেশের মাটি তোমার পরে | ||
৫ | জন্ম আমার ধন্য হলো মা গো[২] | সাবিনা ইয়াসমিন | |
৬ | সাধের লাউ বানাইলো মোরে বৈরাগী |
পুরস্কার
সম্পাদনা- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র - শেখ মুজিবুর রহমান (প্রযোজক)
- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - আলমগীর
- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ পরিচালক - কাজী হায়াৎ
- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার - কাজী হায়াৎ
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ফজলে এলাহী (৫ জুন ২০১৩)। "দুই যুগের দুই 'কালপুরুষ' এর গল্প"। কবি ও কাব্য।
- ↑ "আমাদের গানের পাখি"। সমকাল। ২০১৪-০৫-২৮। ২০২০-০৭-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-১১-২৬।