চুইং গাম (ইংরেজি: Chewing gum) এক ধরনের প্রাকৃতিক চিনি কিংবা কৃত্রিম মিষ্টিজাতীয় সুগন্ধযুক্ত ক্যান্ডিবিশেষ। এছাড়াও এতে মিন্টের ন্যায় সুগন্ধ রয়েছে। সাধারণ জনগণ বিশেষ করে তরুণ জনগোষ্ঠী মজা ও আনন্দ পাবার উদ্দেশ্যেই মূলতঃ চুইং গাম চিবোয়। দাঁত পরিষ্কার রাখতেও এটি সবিশেষ সহায়তা করে। চিবানোর পূর্বে চুইং গাম নরম কিংবা শক্ত উভয়ই হতে পারে যা পরবর্তীকালে মুখে বেশ নরম অনুভূত হয়।

চ্যুইং গাম
চ্যুইং গামের একটি মোড়ক খোলা ছড়
ধরনমিষ্টান্ন
প্রধান উপকরণগাম বেস, মিষ্টি, প্লাস্টিসাইজার, স্বাদ, রঙ, পল্যল

ইতিহাস সম্পাদনা

কমপক্ষে পাঁচ হাজার বছর পূর্বে প্রস্তর যুগে বিভিন্ন আকৃতির চুইং গামের প্রচলন হয়েছিল বলে জানা যায়। তৎকালীন ফিনল্যান্ডের ইলি-ই এলাকায় এ ধরনের বার্চ বৃক্ষের কষ দিয়ে তৈরী চুইং গামে দাঁতের ছাপের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। গাছের বাকলের ঐ আঠালো পদার্থে জীবাণুনাশক উপাদান ও অন্যান্য চিকিৎসা সহযোগী বিষয়াবলী অন্তর্ভুক্ত ছিল বলে ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয়।[১] প্রাচীন আজটেক সভ্যতায় সফেদা গাছের বাকলে সৃষ্ট আঠালো কষকে ঘিরে চুইং গাম তৈরী করা হতো। তখন নারীগণ চুইং গামকে মুখের সজীবতা রক্ষার্থে বিশেষভাবে ব্যবহার করতো।

এছাড়াও, প্রাচীন গ্রীসে বিভিন্ন ধরনের চুইং গাম ব্যবহৃত হতো। গ্রীকদের তৈরী চুইং গাম ছিল মূলতঃ ম্যাসটিক গাম যা ম্যাসটিক গাছের রজন[২] পরবর্তীকালে লেবাননে ম্যাস্টিক সুগন্ধযুক্ত চুইং গাম বিক্রয় করা হতো।[৩] অন্যান্য অনেক দেশে বিভিন্ন বৃক্ষ, ঘাস ও রজনের নির্যাস থেকে প্রস্তুত করা হতো।

স্বাস্থ্যে প্রভাব সম্পাদনা

চিনি-বিহীন কিন্তু চিনির পরিপূরক হিসেবে জাইলিটল সহযোগে প্রস্তুতকৃত চুইং গাম দাঁতের গর্ত তৈরী এবং দন্ত ক্ষয় কমায়।[৪] দন্ত ক্ষয় রোধে উপকারী স্ট্রিপটোকোকাস মিউটান্স নামীয় ব্যাক্টেরিয়ার বংশবৃদ্ধি বিস্তারে জাইলিটল কাজ করে।[৫] ফ্রুটকোজ ছাড়া অন্যান্য ধরনের চিনির উপস্থিতিতে এ ব্যাক্টেরিয়া উৎপন্ন হয়।[৬] দৈনিক ৩.৪৪ গ্রামের নিচে জাইলিটল অকার্যকর; কিন্তু ১০.৩২ গ্রামের বেশীমাত্রার জাইলিটল গ্রহণ কোন অতিরিক্ত সুবিধা বয়ে আনে না।[৭] টুথপেস্টে ক্যালসিয়াম সংযুক্ত থাকলে ক্যালকুলাস তৈরীতে বাঁধা দেয়।[৮] এক গবেষণায় দেখা গেছে যে, জাইলিটল সংযুক্ত চুইং গাম এনামেল গঠনকল্পে খনিজদ্রব্য বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।[৯] কিন্তু অন্য গবেষণায় দেখা গেছে, ক্যালসিয়ামযুক্ত কিংবা অন্যান্য ক্যালসিয়াম যৌগ নিয়ে উৎপাদিত চুইং গামে কোন অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করে না।[১০]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Student dig unearths ancient gum" BBC.co.uk.
  2. ""History of the Chewing Gum" page of Gumballs.com."। ১২ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১২ 
  3. hence
  4. Deshpande A, Jadad AR (2008). [- = http://jada.ada.org/cgi/content/full/139/12/1602 "The impact of polyol-containing chewing gums on dental caries: a systematic review of an original randomized controlled trials and observational studies"]. Journal of the American Dental Association 139 (12): 1602–1614. 19047666.
  5. Milgrom P, Ly KA, Roberts MC, Rothen M, Mueller G, Yamaguchi DK (2006). "Mutans streptococci dose response to xylitol chewing gum". Journal of Dental Research 85 (2): 177–181. doi:10.1177/154405910608500212. PMC 2225984. 16434738.
  6. Kakuta H, Iwami Y, Mayanagi H, Takahashi N (2003). "Xylitol inhibition of acid production and growth of mutans Streptococci in the presence of various dietary sugars under strictly anaerobic conditions". Caries Research 37 (6): 404–409. doi:10.1159/000073391. 14571117.
  7. Kashket S, Yaskell T (1997). "Effectiveness of calcium lactate added to food in reducing intraoral demineralization of enamel". Caries Research 31 (6): 429–433. doi:10.1159/000262434. 9353582.
  8. Schaeken MJ, van der Hoeven JS (1993). "Control of calculus formation by a dentifrice containing calcium lactate". Caries Research 27 (4): 277–279. doi:10.1159/000261550. 8402801.
  9. Suda R, Suzuki T, Takiguchi R, Egawa K, Sano T, Hasegawa K (2006). "The effect of adding calcium lactate to xylitol chewing gum on remineralization of enamel lesions". Caries Research 40 (1): 43–46. doi:10.1159/000088905. 16352880.
  10. Schirrmeister JF, Seger RK, Altenburger MJ, Lussi A, Hellwig E (2007). "Effects of various forms of calcium added to chewing gum on initial enamel carious lesions in situ". Caries Research 41 (2): 108–114. doi:10.1159/000098043. 17284911.