বৃক্ষ
বৃক্ষ বহুবর্ষজীবী কাষ্ঠবহুল উদ্ভিদ। বৃক্ষকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়: কাষ্ঠবহুল উদ্ভিদ যার মাটি থেকে সুস্পষ্ট শীর্ষ প্রকটতা বিশিষ্ট একটি একক প্রধান কাণ্ড অথবা গুঁড়ি থেকে বহুধাবিভক্ত অপ্রধান শাখা বিকশিত হয়।[১] কিছু লেখকের মতে পূর্ণ বিকশিত অবস্থায় বৃক্ষের কম পক্ষে উচ্চতা ৩ মিটার[২] থেকে ৬ মিটার হওয়া উচিত।[৩] আবার কিছু লেখক গাছের কাণ্ডের ন্যূনতম ব্যাস নির্ধারণ করেছেন ১০ সেমি।[৪]; অন্যান্য কাষ্ঠবহুল বৃক্ষ, যারা এই শর্তগুলো পূরণ করতে পারে না, যেমন শাখান্বিত প্রধান কাণ্ড অথবা ছোট আকৃতির গাছকে গুল্ম বলা হয়। অন্যান্য উদ্ভিদের তুলনায় বৃক্ষ দীর্ঘজীবী হয়, কোন কোন গাছ হাজার বছরও বেঁচে থাকে এবং ১১৫ মিটার পর্যন্ত দীর্ঘ হতে পারে।[৫]
বৃক্ষ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান কারণ এরা ভূমিক্ষয় রোধ করে এবং এদের পত্রপল্লবের নিচে আবহাওয়া-সুরক্ষিত বাস্তুসংস্থান তৈরি করে। বৃক্ষ অক্সিজেন তৈরি ও বাতাস থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড দূরীকরণ এবং ভূমি তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এরা ল্যান্ডস্কেপিং ও কৃষির উপাদানও বটে, যার কারণ হল তাদের সৌন্দর্যগত আবেদন ও বিভিন্ন ধরনের ফল। বৃক্ষ থেকে প্রাপ্ত কাঠ ঘরবাড়ি তৈরি সহ নানান কাঠামো তৈরিতে এবং জ্বালানি কাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ২০০৫ সালের হিসাব অনুযায়ী পৃথিবীতে প্রায় ৪,০০০ কোটি গাছ ছিল, প্রতি মানুষে প্রায় ৬১ টি।[৬]
শ্রেণিবিন্যাস
সম্পাদনাবৃক্ষ উদ্ভিদের অনেক বর্গ ও গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। বৃক্ষ বিভিন্ন রকম গড়ন প্রকার, পাতার রকমফের এবং আকৃতি, বাকলের বৈশিষ্ট এবং প্রজনন অঙ্গের বৈচিত্র প্রদর্শন করে।
উদ্ভিদের বৃক্ষরূপটি পরিবর্তিত পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়ানোর প্রক্রিয়ায় উদ্ভব হয়েছে, যা একে সমান্তরাল বিবর্তনের একটি চিরায়ত উদাহরণে পরিণত করেছে। পৃথিবীতে প্রায় ১,০০,০০০ প্রজাতির বৃক্ষ আছে, যা মোট উদ্ভিদ প্রজাতির ২৫%।[৭] অধিকাংশ বৃক্ষ প্রজাতি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে জন্মে যার অধিকাংশই এখনো উদ্ভিদবিদরা পর্যবেক্ষণ করতে পারেননি, যার ফলে প্রজাতি বৈশিষ্ট ও সীমা সম্বন্ধে এখনো আমরা খুব অল্পই জানতে পেরেছি।[৮]
প্রাচীনতম বৃক্ষের মধ্যে রয়েছে ট্রি ফার্ণ, হর্সটেইল এবং লাইকোফাইট, যারা কার্বোনিফেরাস যুগে উদ্ভূত হয়েছিল; ট্রি ফার্ণ এখনো তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে, কিন্তু এখনকার হর্সটেইল এবং লাইকোফাইটরা আর বৃক্ষ রূপে নেই।পরবর্তীতে ট্রায়াসিক যুগে কনিফেরাস, জিংকগো, সাইকাড এবং অন্যান্য নগ্নবীজীর আবির্ভাব ঘটে এবং এরই ধারাবাহিকতায় ক্রেটাসাস যুগে জন্ম নেয় পুষ্পক উদ্ভিদ। বর্তমানে বেশিরভাগ বৃক্ষ প্রজাতিই সপুষ্পক (আবৃতবীজী) এবং কনিফার।
অঙ্গসংস্থান
সম্পাদনাবৃক্ষের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গসমূহ হল মূল, কাণ্ড, ডালপালা, বাকল, ফুল, ফল এবং পাতা। বৃক্ষকাণ্ড মূলত সাহায্যকারী ও পরিবহন কলা জাইলেম ও ফ্লোয়েম দ্বারা গঠিত। কাষ্ঠ জাইলেম কোষে তৈরি, বাকল তৈরি ফ্লোয়েম ও অন্যান্য অন্যান্য বহিঃস্থ ভাস্কুলার ক্যাম্বিয়াম টিস্যুতে। কাণ্ডের ব্যাস বৃদ্ধির প্রক্রিয়ার ওপর ভিত্তি করে বৃক্ষকে দু'ভাগে ভাগ করা যায়: এক্সোজেনাস ও এন্ডোজেনাস। বেশিরভাগ বৃক্ষই (সব কনিফার এবং প্রায় সব বৃহৎপত্রী বৃক্ষ) এক্সোজেনাস, এদের কাণ্ডের বাইরের দিকে নতুন নতুন কাষ্ঠের সৃষ্টি হবার মাধ্যমে এদের বৃদ্ধি ঘটে। এন্ডোজেনাস বৃক্ষে (যেমন পাম এবং ড্রাগন গাছ ইত্যাদি) ভেতরের দিকে নতুন অংশাদি তৈরির কারণে বৃদ্ধি ঘটে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Huxley, A., ed. (1992). New RHS Dictionary of Gardening. Macmillan আইএসবিএন ০-৩৩৩-৪৭৪৯৪-৫.
- ↑ Rushforth, K. (1999). Trees of Britain and Europe. Collins আইএসবিএন ০-০০-২২০০১৩-৯.
- ↑ Mitchell, A. F. (1974). A Field Guide to the Trees of Britain and Northern Europe. Collins আইএসবিএন ০-০০-২১২০৩৫-৬
- ↑ Utkarsh Ghate। "Field Guide to Indian Trees, introductory chapter: Introduction to Common Indian Trees"। ২০০৫-০৫-২৬ তারিখে মূল (RTF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৭-২৫।
- ↑ Gymnosperm Database: Sequoia sempervirens
- ↑ Going Out On A Limb With A Tree-Person Ratio ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৯ জুন ২০০৯ তারিখে, Morning Edition, National Public Radio. 12 Nov 2008.
- ↑ "TreeBOL project"। ২০০৮-০৫-১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৭-১১।
- ↑ Friis, Ib, and Henrik Balslev. 2005. Plant diversity and complexity patterns: local, regional, and global dimensions : proceedings of an international symposium held at the Royal Danish Academy of Sciences and Letters in Copenhagen, Denmark, 25-28 May, 2003. Biologiske skrifter, 55. Copenhagen: Royal Danish Academy of Sciences and Letters. pp 57-59.
Bibliography
সম্পাদনা- Pakenham, T. (2002). Remarkable Trees of the World. আইএসবিএন ০-২৯৭-৮৪৩০০-১
- Pakenham, T. (1996). Meetings with Remarkable Trees. আইএসবিএন ০-২৯৭-৮৩২৫৫-৭
- Tudge, C. (2005). The Secret Life of Trees. How They Live and Why They Matter. Allen Lane. London. আইএসবিএন ০-৭১৩৯-৯৬৯৮-৬
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- Gymnosperm database
- Silvics of North America ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৮ জুলাই ২০১১ তারিখে
- University of Florida's Landscape Plants website
- Global Trees Campaign (campaigning to save the world's most threatened trees)
- International Society of Arboriculture
- Eastern Native Tree Society
- The Arbor Day Foundation
- Tree Encyclopedia Extensive collection of diagnostic photos, Morton Arboretum Specimens
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |