কাজী রেজা-উল হক
কাজী রেজা-উল হক বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারক ছিলেন। ২০২৪ সালে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে তিনি পদত্যাগ করেন।
কাজী রেজা-উল হক | |
---|---|
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ২৮ নভেম্বর ১৯৫৮ |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
জীবিকা | বিচারক |
জীবনের প্রথমার্ধ
সম্পাদনাকাজী রেজা-উল হক ১৯৫৮ সালের ২৮ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন।[১] তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন।[১] পরবর্তীতে তিনি এসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে দ্বিতীয় স্নাতকোত্তর, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে এমবিএ এবং নটিংহাম ট্রেন্ট ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেছেন।[১]
কর্মজীবন
সম্পাদনাকাজী রেজা-উল হক ১৯৮৫ সালের ৬ অক্টোবর জেলা আদালতের আইনজীবী হন[১]
১৯৮৯ সালের ৬ এপ্রিল কাজী রেজা-উল হক হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হন।[১]
২০১০ সালের ১৮ এপ্রিল, কাজী রেজা-উল হক হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসাবে নিযুক্ত হন[১]
২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল, কাজী রেজা-উল হক হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারপতি হন।[১]
২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারী, ফেনী সদর উপজেলায় কাজী রেজাউল হকের বাসভবন পুড়িয়ে ফেলা হয় যখন তিনি ও বিচারপতি আবু তাহের মোঃ সাইফুর রহমানের একটি রায়ে, বাংলাদেশ সরকারকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার করতে নিষেধ করেন।[২] রায়ের পরপরই তারেক রহমানের ভাষণ প্রচারের দায়ে একুশে টেলিভিশনের চেয়ারম্যান আবদুস সালামকে গ্রেপ্তার করা হয়।[২] একই বছরের শেষের দিকে এস আলম গ্রুপ একুশে টেলিভিশন কিনে নেয়।[৩]
২০১৬ সালের মার্চ মাসে, কাজী রেজাউল হক বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম হিসাবে ইসলামকে অপসারণ করার জন্য করা একটি পিটিশন বাতিল করেন।[৪] কাজী রেজাউল হক, বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মোঃ আশরাফুল কামাল বাংলাদেশের সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে একটি রায় জারি করেন, এই সংশোধনীর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণ করার ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।[৫][৬][৭]
২০১৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর, কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ ক্ষমতার অপব্যবহারের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নুরুজ্জামান এবং লক্ষ্মীপুর জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শেখ মোরশেদুল ইসলামকে তিরস্কার করেন।[৮][৯]
২০১৯ সালের আগস্টে, কাজী রেজা-উল হক, বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জহিরুল হককে দুর্নীতির অভিযোগে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল।[১০][১১] সালমা মাসুদ চৌধুরী ও জহিরুল হককে এমআর ট্রেডিংয়ের পক্ষে রায় দেওয়ায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।[১০] বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট তিনজনকে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে নিষেধ করেছে।[১২] এরপর থেকে তাদের বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত ছিল।[১৩]
২০২৪ সালের ১৯ নভেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করেন।[১৪][১৫]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ "Home : Supreme Court of Bangladesh"। www.supremecourt.gov.bd। ২০২২-০৭-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ ক খ Report, Star Online (২০১৫-০১-০৮)। "HC judge's house torched after Tarique ban"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ "একুশে টিভির নতুন মালিক এস আলম গ্রুপ"। jagonews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ Bergman, David। "Bangladesh court upholds Islam as religion of the state"। www.aljazeera.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ Dhaka, UNB। "HC releases verdict scrapping 16th Amendment"। en.prothomalo.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ Staff Correspondent (২০১৬-০৩-১১)। "HC verdict on empowering parliament on May 5"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ "সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ: সুপ্রিম কোর্ট"। বিবিসি বাংলা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০৮-০৭।
- ↑ Staff Correspondent। "High Court sees abuse of power in mobile courts, cites Lakshmipur jailing of pensioner"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ Express, The Financial। "Jailing of former civil surgeon: Laxmipur ADC, UNO seek unconditional apology to High Court"। The Financial Express (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২৩-০১-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ ক খ "Three HC judges kept out of court"। New Age | The Most Popular Outspoken English Daily in Bangladesh (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ "Three HC judges at bay over corruption allegations"। The Business Standard (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৯-০৮-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ "SC asks 3 HC judges to refrain from duty"। ঢাকা ট্রিবিউন। ২০১৯-০৮-২২। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ "High Court gets 11 new judges"। bangladeshpost.net (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-০১-০২।
- ↑ https://www.facebook.com/rtvonline। "হাইকোর্টের ৩ বিচারপতির পদত্যাগ"। RTV Online। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১১-১৯।
- ↑ প্রতিবেদক, নিজস্ব (২০২৪-১১-১৯)। "হাইকোর্ট বিভাগের তিন বিচারপতির পদত্যাগ"। দৈনিক প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-১১-২০।