কসিরউদ্দিন তালুকদার

কসিরউদ্দিন তালুকদার (১৮৯৯-১৯৭১) ছিলেন একজন পাকিস্তানি চিকিৎসক এবং রাজনীতিবিদ যিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে মৃত্যুবরণ করেন এবং ১৯৭১ সালের শহীদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে বিবেচিত হন।[২]

কসিরউদ্দিন তালুকদার
জন্ম(১৮৯৯-০৭-১৭)১৭ জুলাই ১৮৯৯
মৃত্যু২৯ মে ১৯৭১(1971-05-29) (বয়স ৭১)
মাঝিরা, বগুড়া
মৃত্যুর কারণগণহত্যা
জাতীয়তাবাংলাদেশী
শিক্ষাএমবিবিএস
মাতৃশিক্ষায়তনকলকাতা মেডিকেল কলেজ
পেশাডাক্তার, রাজনিতীবিদ
রাজনৈতিক দলপাকিস্তান মুসলিম লীগ
সন্তানজেব-উন-নেসা জামাল, আঞ্জুমান আরা বেগম[১]
পিতা-মাতা
  • নকিবউল্লাহ তালুকদার (পিতা)

প্রাথমিক জীবন এবং শিক্ষা সম্পাদনা

তালুকদার ১৮৯৯ সালের ১৭ জুলাই মহিষমুন্ডা, দুপচাঁচিয়া, বগুড়া, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ রাজে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সোনামুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন, বগুড়া জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন এবং কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে আইএসসি সম্পন্ন করেন। ১৯২৯ সালে তিনি কলকাতা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করেন।[২]

কর্মজীবন সম্পাদনা

তালুকদার ১৯৩০ সালে বগুড়ায় চিকিৎসা পেশা শুরু করেন। তিনি একটি ফার্মেসি দিয়ে তার চিকিৎসা অনুশীলন চালাতেন। তার ফার্মেসির নাম ছিল ইউনাইটেড মেডিকেল স্টোর। তিনি গরিবদের বিনামূল্যে তার চিকিৎসা পরামর্শ ও ওষুধ সরবরাহ করেন যা তাকে হামার গরীবের ডাক্তার বা দরিদ্রদের চিকিত্সক নামে অভিহিত করেছিল। তিনি ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত বেঙ্গল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের সদস্য, বগুড়া মুসলিম লীগের সভাপতি, বগুড়া জিল বোর্ডের চেয়ারম্যান, আজিজুল হক কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, বগুড়া ডাক্তার সমিতির সভাপতি ছিলেন।

বগুড়ায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সক্রিয় ছিলেন।[২]

তালুকদার ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে বগুড়ায় অসহযোগ আন্দোলন সংগঠিত করার সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সমর্থনে জেলায় জেলায় সমাবেশে নেতৃত্ব দেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরুর পর তিনি মুক্তিবাহিনীর সদস্যদের চিকিৎসা করেন। তিনি এবং তার পরিবার বগুড়া শহর ছেড়ে তার জন্মস্থান মহিষমুন্ডায় চলে যান। সেখানে তিনি বগুড়া শহরের আহতদের চিকিৎসা করেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনী তার বাড়ি এবং ফার্মেসি পুড়িয়ে দেয়। ১৯৭১ সালের ২১ মে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে বগুড়া শহরে ফিরে আসেন।[২]

মৃত্যু সম্পাদনা

২৯ মে ১৯৭১ তারিখে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাকে তার বাড়ি থেকে স্থানীয় থানায় নিয়ে যায়। একই দিনে বগুড়া সেনানিবাসের কাছে মাঝিরায় আরও ১১ জন বেসামরিক লোকের সঙ্গে তিনি নিহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন তার লাশ শনাক্ত করেন।[১]

বাংলাদেশ পোস্ট অফিস ১৪ ডিসেম্বর ১৯৯৪ সালে তার ছবি সহ স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করে।[২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. ডা. কসিরউদ্দিন তালুকদারProthom Alo। Dhaka। ২০ ডিসেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০২১ 
  2. খান, মোয়াজ্জেম হোসেন। "Talukder, Kosiruddin"বাংলাপিডিয়া (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০১৭