এরিক ডেভিস (ক্রিকেটার)

দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার

এরিক কুয়াইল ডেভিস (ইংরেজি: Eric Davies; জন্ম: ২৬ আগস্ট, ১৯০৯ - মৃত্যু: ১১ নভেম্বর, ১৯৭৬) কেপ প্রদেশের কিং উইলিয়ামস টাউন এলাকায় জন্মগ্রহণকারী দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৩০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়কালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।[১]

এরিক ডেভিস
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামএরিক কুয়াইল ডেভিস
জন্ম২৬ আগস্ট, ১৯০৯
কিং উইলিয়ামস টাউন, কেপ প্রদেশ
মৃত্যু১১ নভেম্বর, ১৯৭৬
পোর্ট আলফ্রেড, কেপ প্রদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা
ব্যাটিংয়ের ধরনবামহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি ফাস্ট
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ১৪৮)
১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৬ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট২০ জানুয়ারি ১৯৩৯ বনাম ইংল্যান্ড
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১৬
রানের সংখ্যা ৬৪
ব্যাটিং গড় ১.৮০ ৩.৫৫
১০০/৫০ ০/০ ০/০
সর্বোচ্চ রান ১৭
বল করেছে ৭৬৮ ২৪৭৩
উইকেট ৪৭
বোলিং গড় ৬৮.৭১ ২৭.৭০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৪/৭৫ ৬/৮০
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ০/- ৫/-
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১০ জুলাই ২০২০

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে ইস্টার্ন প্রভিন্স, নর্থ ইস্টার্ন ট্রান্সভালট্রান্সভাল দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, বামহাতে নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন এরিক ডেভিস

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট সম্পাদনা

১৯২৯-৩০ মৌসুম থেকে ১৯৪৫-৪৬ মৌসুম পর্যন্ত এরিক ডেভিসের প্রথম-শ্রেণীর খেলোয়াড়ী জীবন চলমান ছিল। এরিক ডেভিস নিচেরসারির বামহাতি ব্যাটসম্যান ও ডানহাতি ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন। অনেকগুলো বছর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করলেও খুব কম খেলেছেন।

১৯২৯-৩০ মৌসুমে ইস্টার্ন প্রভিন্সের পক্ষে প্রথম খেলতে নামেন। ঐ মৌসুমে তিনটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন তিনি। তন্মধ্যে, তৃতীয় খেলায় রোডেশিয়ার বিপক্ষে ৪/৩৬ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েছিলেন।[২] এরপর, ১৯৩০-৩১ মৌসুমে একটি ও ১৯৩৪-৩৫ মৌসুমে আরও একটি খেলায় অংশ নেন। তবে, উভয়ক্ষেত্রেই খুব কমই ভূমিকা পালন করেছেন।

১৯৩৫-৩৬ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া দল দক্ষিণ আফ্রিকা গমনে আসে। মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে সফরকারীরা ইস্টার্ন প্রভিন্সের বিপক্ষে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেয়। তারা খুব সহজেই দুই দিনেই ইনিংস ব্যবধানে জয় পায়। তবে, ডেভিস ঠিকই তার ব্যক্তিগত সফলতা পান। আশি রান খরচায় ছয় উইকেট পান তিনি।[৩] ফলশ্রুতিতে, পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজের চতুর্থ টেস্টে খেলার জন্যে তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পাদনা

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে পাঁচটিমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেছেন এরিক ডেভিস। ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৬ তারিখে জোহেন্সবার্গে সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২০ জানুয়ারি, ১৯৩৯ তারিখে ডারবানে সফরকারী ইংল্যান্ড দলের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন তিনি।

অভিষেক টেস্টে তার দল শোচনীয়ভাবে দুই দিনের মধ্যে পরাজয়বরণ করে। তবে, ডেভিস বেশ ভালো খেলেন। অস্ট্রেলিয়ার একমাত্র ইনিংসে ৪/৭৫ পান।[৪] পঞ্চম টেস্টেও একই ফলাফল হয়। স্বাগতিকরা তুলনামূলকভাবে ভালো ব্যাটিং করে ও চতুর্থ দিন পর্যন্ত খেলা গড়ালেও আবারও শোচনীয়ভাবে পরাভূত হন। এ টেস্টে তিনি ভালো খেলেননি ও কোন উইকেট লাভে ব্যর্থতার পরিচয় দেন।[৫]

ইংল্যান্ডের মুখোমুখি সম্পাদনা

এ ধরনের তালগোল পাকানো ক্রিকেট খেলার পর ১৯৩৬-৩৭ মৌসুমে এরিক ডেভিস একটিমাত্র খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। পরবর্তী মৌসুমে কোন খেলাতেই তাকে দেখা যায়নি। কিন্তু, ১৯৩৮-৩৯ মৌসুমে প্রায় ১৯৩৫-৩৬ মৌসুমের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে সফররত দলের বিপক্ষে প্রাদেশিক দলের সদস্যরূপে একটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। বেশ ভালোমানের খেলা উপহার দেন ও টেস্ট দলে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

এবার তিনি ট্রান্সভালের সদস্যরূপে ১৯৩৮-৩৯ মৌসুমে সফররত মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) বিপক্ষে খেলে একমাত্র ইনিংসে ৬/৮২ পান।[৬] এ পর্যায়ে তিনি ইনিংসের তৃতীয় বলে ইংল্যান্ডের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান লেন হাটনকে বিদেয় করতে পারেননি।[৭]

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ-টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলার জন্যে তাকে দলে রাখা হয়। প্রথম ওভারেই বিল এডরিচের উইকেট পান। কিন্তু, এটিই খেলায় তার একমাত্র উইকেট ছিল।[৮] সিরিজের দ্বিতীয় খেলায়ও তেমন ব্যতয় ঘটেনি তার। ১৮১ রান সংগ্রহকারী ওয়ালি হ্যামন্ডের একমাত্র উইকেট দখল করেন। ৫৫৯ রান তুলে ইংল্যান্ড ইনিংস ঘোষণা করলে খেলাটি ড্রয়ের দিকে গড়ায়।[৯] তৃতীয় খেলায়ও একটি উইকেট লাভ করেন। আট-বল নিয়ে গড়া ১৫ ওভারে ১০৬ রান খরচ করেন তিনি।[১০]

অবসর সম্পাদনা

এ খেলার পর তাকে টেস্ট দলের বাইরে রাখা হয়। এরপর, আর তাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে খেলতে দেখা যায়নি। পাশাপাশি, খুব কমই প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন তিনি। ১৯৪৫-৪৬ মৌসুমে অস্থায়ীভাবে ক্রিকেট খেলা শুরু হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথম মৌসুমে আনুষ্ঠানিকভাবে কোন প্রতিযোগিতা হয়নি। তিনবার নর্থ-ইস্টার্ন ট্রান্সভালের পক্ষে খেলেন। এগুলোই তার সর্বশেষ প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশগ্রহণ ছিল।

ক্রিকেটের বাইরে তিনি বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন।[৭] ১১ নভেম্বর, ১৯৭৬ তারিখে ৬৭ বছর বয়সে কেপ প্রদেশের পোর্ট আলফ্রেড এলাকায় এরিক ডেভিসের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Eric Davies"। www.cricketarchive.com। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০১২ 
  2. "Scorecard: Eastern Province v Rhodesia"। www.cricketarchive.com। ২৩ জানুয়ারি ১৯৩০। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১২ 
  3. "Scorecard: Eastern Province v Australians"। www.cricketarchive.com। ৭ জানুয়ারি ১৯৩৬। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১২ 
  4. "Scorecard: South Africa v Australia"। www.cricketarchive.com। ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৬। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১২ 
  5. "Scorecard: South Africa v Australia"। www.cricketarchive.com। ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৬। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১২ 
  6. "Scorecard: Transvaal v MCC"। www.cricketarchive.com। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৩৮। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১২ 
  7. "Wisden Obituaries, 1978 edition"। www.espncricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১২ 
  8. "Scorecard: South Afra v England"। www.cricketarchive.com। ৩১ ডিসেম্বর ১৯৩৮। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১২ 
  9. "Scorecard: South Africa v England"। www.cricketarchive.com। ৩১ ডিসেম্বর ১৯৩৮। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১২ 
  10. "Scorecard: South Africa v England"। www.cricketarchive.com। ২০ জানুয়ারি ১৯৩৯। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১২ 

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা