আহলে হাদীস

ইসলাম ধর্মীয় আন্দোলন

আহলে হাদিস বা আহল-ই-হাদীস (উর্দু: اہلِ حدیث; বাংলা: হাদীসপন্থী বা হাদিসের অনুসারী) হলো একটি ইসলামি সংস্কারপন্থী আন্দোলন, যা উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে ভারতের উত্তর প্রদেশে উদ্ভূত হয়।[] পরবর্তীতে এটি ভারতের বাইরে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তানসহ গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এই আন্দোলনটি মূলত সৈয়দ আহমদ ব্রেলভি, সৈয়দ নযির হুসেন দেহলভীনবাব সিদ্দীক হাসান খানের শিক্ষা ও চিন্তাধারার ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে।[][] [] এটি ১৯ শতকে ভারতে উদ্ভূত তরিকা-ই-মুহাম্মদিয়া আন্দোলন থেকে অনুপ্রাণিত আন্দোলনগুলির একটি (অপর একটি হলো দেওবন্দি), যা তিতুমীরের নেতৃত্বে পরিচালিত হতো।[] এটি আঠারো শতকের ওয়াহাবি আন্দোলনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিল এবং দলটির প্রাথমিক প্রচারকগণ ওহাবি আন্দোলন থেকে ব্যাপক প্রভাবিত হয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়।[]

এই আন্দোলনের অনুসারীরা নিজেদের বিভিন্ন নামে অভিহিত করতেন; যেমন "মুাহহিদিন", "আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ" ও "আহলে হাদীস"। প্রথম দিকে এই গোষ্ঠীকে ভারতীয় "ওহাবি" হিসেবে চিহ্নিত করা হতো, তবে ১৮৬৪ সালের দিকে তারা "আহলে হাদিস" নামটি গ্রহণ করে নিজেদের একটি স্বতন্ত্র ধর্মীয় দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। এই নাম গ্রহণের মাধ্যমে দলটি দাবি করে যে, তারা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সূত্র সহিহ হাদিসের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ।[]

আহলে হাদীস আন্দোলনের একটি বড় বৈশিষ্ট্য ছিল, এটি ওলিদের (পীর বা বুযুর্গ) ভক্তিমূলক চর্চা ও কবর পূজার প্রবণতার বিরোধিতা করতো, যাকে তাওহিদের (আল্লাহর একত্ববাদ) পরিপন্থী বলে ধারণা করা হয়।[] তারা দাবি করেন যে, তাদের মতাদর্শ প্রাচীন আহলুল হাদিস গোষ্ঠীর মতাদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এছাড়া দলটি তাকলিদের বা ফিকহি মাযহাব অনুসরণ করার বিরোধীতা করে।[]

বর্তমান "সালাফি" ও "আহলে হাদীস" শব্দদ্বয় অনেক সময় একে অপরের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়; যদিও উভয়টি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে স্বতন্ত্র মতবাদ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। সালাফিদের বিশ্বাস ও মতবাদ আরব উপদ্বীপে প্রচলিত হাম্বলি মাযহাবের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হিসেবে বর্ণনা করা হয়। অনেক আহলে হাদীস সদস্য নিজেকে জাহিরি চিন্তাধারার অনুসারী বলেও পরিচয় দেন। গবেষকরা মনে করেন, মূলত আরব সালাফিদের তুলনায় আহলে হাদিস আন্দোলনের কিছু স্বতন্ত্র রায় ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে।[][১০]

সূচনালগ্নে উত্তর ভারতের ইসলামি বিদ্বান সমাজে এই আন্দোলনের ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল এবং এর প্রধান কারণ ছিল, আরব উপদ্বীপে সালাফিবাদের আধিপত্য এবং এর প্রচারণায় সিদ্দিক হাসান খানের আর্থিক সমর্থন। ১৯০৬ সালে তারা অল ইন্ডিয়া আহলে হাদীস কনফারেন্স গঠন করে সংগঠিত হতে শুরু করে।[১১] পরে ১৯৮৬ সালে পাকিস্তানে তারা জামিয়াতে আহলে হাদিস নামে একটি রাজনৈতিক শাখা প্রতিষ্ঠা করে। এই আন্দোলন সৌদি আরব থেকে আর্থিক সহায়তা ও মতাদর্শগত সমর্থন লাভ করে বলে বর্ণনা করা হয়।[১২]

ইতিহাস

সম্পাদনা

পটভূমি

সম্পাদনা

আহলে হাদিস সাহিত্যে শাহ ওয়ালিউল্লাহ দেহলভিকে (১৭০৩–১৭৬২ খ্রি) আহলে হাদিস মতবাদের প্রাথমিক চিন্তকদের একজন হিসেবে উল্লেখ করা হয়। [১৩][১৪][১৫] ১৭২৪ সালে হজব্রত পালনের পর তিনি ১৪ মাস মদিনায় অবস্থান করেন এবং সেখানে কুরআন, হাদিস ও বিখ্যাত হাম্বলি আলিম ইবনে তাইমিয়ার রচনাবলী গভীরভাবে অধ্যয়ন করেন। সেখানে তিনি তৎকালীন প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস মুহাম্মাদ তাহির আল-কুরানীর অধীনে অধ্যয়ন করেন। ভারতে ফিরে এসে শাহ ওয়ালিউল্লাহ তাওহিদ ও সুন্নাহর অনুসরণ করার আহ্বান জানান এবং কিছু বিষয়ে তিনি নিজেই ইজতিহাদ করে রায় প্রদান করেন।[১৬] তিনি বিশ্বাস করতেন যে, প্রতি যুগে আধুনিক সমস্যার সমাধানে আলেমদের ইজতিহাদ করা অপরিহার্য। তিনি পীর-দরবেশদের কবরের পূজা, ওলিদের উদ্দেশ্য করে সংঘটিত নানা রকমের রীতি-রেওয়াজ ও ভক্তিমূলক কর্মকে শির্কসদৃশবিদআত মনে করতেন এবং এসবের বিরুদ্ধে তিনি শক্ত অবস্থান নেন।[১৭]

তিনি বিদআতের বিরোধীতা, ইজতিহাদের গুরুত্ব এবং ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থার পুনর্জাগরণের চিন্তা নিয়ে সক্রিয় হন। তার রচনাগুলোর মধ্যে যেমন ইযালাতুল খিফা, কুররাতুল আইনাইন প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য; যেখানে তিনি খুলাফায়ে রাশেদীনের আদর্শে একটি ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠার দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, যা ইবন তাইমিয়্যার চিন্তার প্রতিফলন।[১৮] তার মৃত্যুর পর পুত্র শাহ আবদুল আজীজ দেহলভি পিতার কাজ অব্যাহত রাখেন। তিনি একজন বিখ্যাত মুহাদ্দিস ছিলেন, যিনি ভারতীয় উপমহাদেশজুড়ে হাদিস শিক্ষাদান ও প্রচারে মনোনিবেশ করেন। উপমহাদেশে যখন ব্রিটিশরা ক্রমে শক্তিশালী হচ্ছিল—বিশেষত বাংলা, বিহারউড়িষ্যা দখল এবং ১৭৯৯ সালে চতুর্থ অ্যাংলো-মাইসোর যুদ্ধে ব্রিটিশদের বিজয়ের পর ১৮০৩ সালে ব্রিটিশরা দিল্লি দখল করে মুঘল সাম্রাজ্যকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রক্ষাকবচে পরিণত করে ফেলে—তখন শাহ আবদুল আজিজ ভারতের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে একটি ফতোয়া প্রদান করেন—যেখানে তিনি ব্রিটিশ অধিকৃত ভারতকে দারুল হারব (যুদ্ধভূমি) ঘোষণা করেন। এটি উপমহাদেশে ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে দেওয়া প্রথম ধর্মীয় ফতোয়া ছিল, যা পরোক্ষভাবে মুসলমানদের প্রতি স্বাধীনতার আহ্বান হিসেবে কাজ করে।[১৯]

এই ফাতওয়া তার ছাত্র সৈয়দ আহমদকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করে। তিনি প্রথমে একজন সৈনিক হিসেবে কিছুদিন কাজ করলেও পরবর্তীতে ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করে একজন নেতৃস্থানীয় আলেম ও সমাজসংস্কারক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তিনি শাহ ওয়ালিউল্লাহ ধারার অন্যতম প্রধান উত্তরসূরি হিসেবে স্বীকৃত হন এবং অসংখ্য সুন্নি মুসলিম তার ডাকে সাড়া দিয়ে তার সঙ্গে জিহাদের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। [২০]

দেওবন্দি বিদ্বানদের মতে আহলে হাদিস

সম্পাদনা

পাকিস্তানের অন্যতম দেওবন্দি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়াতুর রাশিদ এর প্রতিষ্ঠাতা মুফতী রশীদ আহমাদ লুধিয়ানবী দেওবন্দী(মৃত্যু-২০০২) সাহেবের মতে আহলে হাদিসগণ মাযহাব সৃষ্টির সময়কাল থেকেই আছেন।এছাড়া তার মতে আহলে হাদিসগণও হকের উপর আছেন।

মুফতী রশীদ আহমাদ লুধিয়ানবী দেওবন্দী[২১] লিখেছেন,

‘কাছাকাছি দ্বিতীয়-তৃতীয় হিজরী শতকে হক্বপন্থীদের মাঝে শাখা-প্রশাখাগত মাসআলা সমূহের সমাধানকল্পে সৃষ্ট মতভেদের প্রেক্ষিতে পাঁচটি মতবাদ প্রতিষ্ঠিত হয়। অর্থাৎ চার মাযহাব ও আহলে হাদিস। তৎকালীন সময় হ’তে অদ্যাবধি উক্ত পাঁচটি তরীকার মধ্যেই হক্ব সীমাবদ্ধ রয়েছে বলে মনে করা হয়’।

— রশীদ আহমাদ লুধিয়ানবী, আহসানুল ফাতাওয়া(উর্দু), ১/৩১৬ পৃষ্ঠা; মওদূদী ছাহেব আওর তাখরীবে ইসলাম(উর্দু), ২০ পৃষ্ঠা।

আকাবির ওলামায়ে দেওবন্দের অন্যতম পুরোধা আব্দুল হক হাক্কানি সাহেব আহলে হাদিসদের আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের অন্তর্ভুক্ত বলেছেন তার বইয়ে।হাক্কানী আক্বায়েদে ইসলাম বইয়ের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন দারুল উলুম দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাতা কাসেম নানুতুবী সাহেব।এমনকি তিনি পুরো বই (পড়ে) দেখেছেন বলে মত দিয়েছেন।[২২][২৩]

তাফসীরে হক্কানীর লেখক আব্দুল হক্ব হক্কানী বলেছেন,

‘শাফেঈ, হাম্বলী, মালেকী, হানাফী মাযহাবের অনুসারীগণ আহলে সুন্নাতের অন্তর্ভুক্ত। আর আহলে হাদিসগণও আহলে সুন্নাতের মধ্যেই অন্তর্ভুক্ত’।

— আব্দুল হক্ব হক্কানী, হক্কানী আক্বায়েদে ইসলাম, পৃষ্ঠা ৩।

তাকলিদ ও আহলে হাদিস

সম্পাদনা

এর আদর্শগত বিরোধিতা তাকলীদ । তারা বিশ্বাস করে যে তারা তাকলীদ দ্বারা আবদ্ধ নয়, তবে ধর্মীয় বিশ্বাস এবং প্রামাণিক হাদীস থেকে কুরআনের সাথে মিলিতভাবে মুসলমানদের জন্য প্রধান যোগ্য গাইড হিসাবে তাদের অনুশীলনের বিষয়ে দিকনির্দেশনা নিখরচায় বিবেচনা করে। তারা ধর্মতত্ত্বে কালামের ব্যবহার প্রত্যাখ্যান করে। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

কেবল কুরআন ও হাদীসের উপর নির্ভরতা এবং তাদের ইসলামিক আইনে সাদৃশ্যপূর্ণ কারণে প্রত্যাখ্যানের কারণে, আধুনিক সময়ের আহলে হাদীসকে প্রায়শই ইসলামী আইনের প্রাচীন জহিরীয় মতবাদের সাথে তুলনা করা হয়,[২৪][২৫] যার সাথে আহলে হাদীস সচেতনভাবে তাদেরকে চিহ্নিত করে।[২৬]

তাদের শিক্ষাগত কর্মসূচিতে মুসলিম একাডেমিক গ্রন্থগুলির বিস্তৃত বিন্যাস অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রবণতা রয়েছে, তবে আন্দোলনের কয়েকজন অনুগামীরাই মুসলিম আইনশাস্ত্রের একটি বিদ্যালয়ে নিজেকে যুক্ত করেছেন, রায় এবং রীতিনীতি অনুশীলনের ব্যক্তিগত দায়বদ্ধতার উপর আরও বেশি জোর দিয়েছেন। [২৭] যদিও এই আন্দোলনের চিত্রশাস্ত্রগুলি জহিরীয় আইনী বিদ্যালয়ের প্রতি দায়বদ্ধ ছিল, তাদের মধ্যে অনেকগুলি ইয়েমেনি পণ্ডিত শওকানীর রচনাকে প্রাধান্য দিচ্ছে, তবে এই আন্দোলনের সাধারণতাকে কুরআন থেকে সরাসরি গ্রহণ করতে পছন্দ করার সাথে সাথে ইসলামী আইনের সমস্ত সুন্নি বিদ্যালয়কে সম্মান করা হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। একটি, ভবিষ্যদ্বাণীপূর্ণ traditionতিহ্য এবং মুসলমানদের প্রথম প্রজন্মের sens কমত্য। যদিও এই আন্দোলনটিকে আরব দেশগুলির সালাফিবাদী আন্দোলনের সাথে তুলনা করা হয়েছিল এবং বিরোধী বরেলবি আন্দোলনের দ্বারা ওহাবী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে,[২৮] আহলে হাদিসটি সালাফিদের থেকে পৃথক হওয়ার মতোই রয়েছে।

উনিশ শতকে, আহলে কুরআন আহলে হাদীসের প্রতিক্রিয়াতে গঠিত হয়েছিল, যাদের তারা কুরআনের পরিবর্তে হাদীসের প্রতি অত্যধিক জোর দেওয়া বলে বিবেচনা করেছিল।[২৯]

আহলে হাদিসদের কিছু বৈশিষ্ট্য

সম্পাদনা

অন্যান্য ইসলামী আন্দোলনের মতো, আহলে হাদীসও কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্য এবং বিশ্বাস দ্বারা পৃথক হয়। পুরুষদের একটি নির্দিষ্ট ধরনের লম্বা দাড়ি থাকে যা প্রায়শই ভিজ্যুয়াল সূচক হিসাবে বিবেচিত হয়। মুসলিম উপাসনার আনুষ্ঠানিক কাজ সম্পর্কে, আন্দোলনের রীতিগুলি দক্ষিণ এশিয়ার প্রধানত হানাফির আইনী বিদ্যালয়ের চেয়ে লক্ষণীয়ভাবে পৃথক; পুরুষরা নামাযের জন্য সারিবদ্ধ হয়ে নাভির ওপরে হাত রাখে, মাথা নত (রুকু) করার আগে নিজের উভয়হাত দুটিকে পূর্বের ন্যায় কানের উপরি ভাগ বা কাঁধ পর্যন্ত উত্তোলন করেন (রফয়ে য়্যাদাইন) এবং নামাজে সূরা ফাতেহার পরে জোরে জোরে "আমিন" বলে।

আন্দোলনের শীর্ষস্থানীয় সমর্থকরা প্রতিষ্ঠিত উলামা (ধর্মীয় পণ্ডিত) এর বিরুদ্ধে যে বিরোধীদের মুখোমুখি হয়েছিল তার বিরুদ্ধে বাহিনীতে যোগ দিয়েছিল এবং ১৯০৬ সালে সর্বভারতীয় আহলে-ই-হাদিস সম্মেলন গঠন করে।[৩০] জমিয়তে আহলে হাদিসকে ভারত বিভাগের বিরোধী অল ইন্ডিয়া আজাদ মুসলিম সম্মেলনে সম্মানিত করা হয়েছিল।[৩১] সর্বভারতীয় আহলে-ই-হাদিস সম্মেলনের একটি সদস্য সংগঠন হ'ল আঞ্জুমান-ই-হাদীস, যা সাইয়্যিদ মিয়ান নাজির হুসেনের শিক্ষার্থীদের দ্বারা গঠিত এবং বঙ্গআসামে বিভক্ত। ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তানের বিচ্ছিন্ন হওয়ার পরে পাকিস্তানের আহলে-হাদীস কেন্দ্র করাচি ও এর আশেপাশে অবস্থিত।[৩২]

১৯৩০ সালে আহলে হাদিস ভারতের একটি ছোট রাজনৈতিক দল হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পাকিস্তানে এই আন্দোলন জামিয়াত আহলে হাদীস নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করে, যা একই জাতীয় ইসলামী দলগুলি শরিয়া আইনের ক্ষেত্রে সরকারের সম্পৃক্ততার বিরোধিতা করেছিল।[৩৩] তাদের নেতা এহসান এলাহী জহিরকে ১৯৮৭ সালে হত্যা করা হয়েছিল। আহলে হাদিস শিয়া ধর্মের বিরোধিতা করে।

জনশক্তি উপাত্ত

সম্পাদনা

ব্রিটিশ রাজের শাসনামলে এই আন্দোলনের যথাযথ অনুসারীর সংখ্যা সম্পর্কে কোনও সঠিক আদমশুমারি নেওয়া হয়নি। তারা মহারাষ্ট্রে প্রায় ৪০ টি মসজিদ এবং কেরালায় ৭৫টি নিয়ন্ত্রণ করে। সর্বশেষ তথ্য জানিয়েছে যে কাশ্মীরে প্রায় এক হাজার আহলে হাদীস মসজিদ খোলা হয়েছে (দ্য নিউ আর্থশাস্ত্র, ভারতের জন্য সুরক্ষা কৌশল)। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] যুক্তরাজ্যে, আহলে হাদিস আন্দোলন ৪২ টি কেন্দ্র বজায় রেখেছে এবং এর সদস্যপদ অর্জন করেছে যা ১৯৯০ এর দশকে ৫০০০ এবং ২০০০ এর দশকে ৯,০০০ অনুমান করা হয়েছিল।[৩৪] যদিও আন্দোলনটি ১৯৬০ এর দশক থেকে যুক্তরাজ্যে উপস্থিত ছিল, তবে এটি ব্যাপক একাডেমিক গবেষণার বিষয় হয়ে উঠেনি এবং আন্দোলনের উৎসগুলি অত্যন্ত সীমাবদ্ধ এবং বিরল।

আহলে-ই হাদীসের উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা

সম্পাদনা

পাণ্ডিত্যে

সম্পাদনা

রাজনৈতিক

সম্পাদনা

আহলে-ই হাদীসের উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

সম্পাদনা

সৌদি আরব

সম্পাদনা

পাকিস্তান

সম্পাদনা

বাংলাদেশ

সম্পাদনা

আরও দেখুন

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Daniel W. Brown, Rethinking Tradition in Modern Islamic Thought: Vol. 5 of Cambridge Middle East Studies, p. 27. Cambridge: Cambridge University Press, 1996. আইএসবিএন ৯৭৮০৫২১৬৫৩৯৪৭ "In India rejection of taqlīd and preoccupation with hadīth became focused in a single reformist sect, the Ahl-i-Hadīth, which drew directly on the tradition of Ismail Dehlawi and al-Shawkänī. Almost all of the group's early and influential representatives had direct connections with the line of Ismail Dehlawi and especially with the Indian mujāhidin movement, led by Sayyid Ahmad Barēlvī, which carried to an extreme the purificationist tendencies within Shāh Waī Allāh's school."
  2. M. Naeem Qureshi, Pan-Islam in British Indian Politics, p. 458. Leiden: Brill Publishers, 1999. আইএসবিএন ৯০০৪১১৩৭১১
  3. Meijer, Roel (২০১৪)। "Salafism In Pakistan: The Ahl-e Hadith Movement"। Global Salafism: Islam's New Religious Movement। New York: Oxford University Press। পৃষ্ঠা 127। আইএসবিএন 978-0-19-933343-1The Jama'at Ahl-e Hadith, an elitist politico religious movement aimed at islah (reform), has its origins in the early 1870s. Like other Sunni reform movements, it claims to continue the tradition of Shah Waliullah Dehlavi (1703–1762) whom it regards as the first modern Ahl-e Hadith member and draws on ideas of Syed Ahmed Barelvi (Ahmed Shaheed) (1786–1831), follower of Shah Abdul Aziz (1746–1824), the son of Shah Waliullah, and the Yemenite qadi Mohammad ibn Ali al Shawkani (1775–1839). 
  4. L. Esposito, John (২০০৩)। The Oxford Dictionary of Islam। New York, New York: Oxford University Press। পৃষ্ঠা 10আইএসবিএন 0-19-512558-4 
  5. Muhammad Afzal Upal; Carole M. Cusack (২০২১)। Handbook of Islamic Sects and Movements। Koninklijke Brill NV, Leiden, The Netherlands: Brill। পৃষ্ঠা 639। আইএসবিএন 978-90-04-42525-5"They called themselves variously as Muwahideen (that is, unitarians, the term preferred by Nawab Siddiq Hasan Khan), and Ahl e-Ḥadīth (that is, the Followers of the Prophet's Words, the term preferred by.. Syed Nazir Hussain). 
  6. Dietrich Reetz (২০০৬)। Islam in the Public Sphere: Religious Groups in India, 1900–1947। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 73। আইএসবিএন 978-0-19-566810-0 
  7. Muhammad Afzal Upal; Carole M. Cusack (২০২১)। Handbook of Islamic Sects and Movements। Koninklijke Brill NV, Leiden, The Netherlands: Brill। পৃষ্ঠা 521। আইএসবিএন 978-90-04-42525-5 
  8. Brown, Daniel W. (১৯৯৯)। Rethinking Tradition in Modern Islamic Thought। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 29–32। আইএসবিএন 978-0-521-65394-7Ahl-i-Hadith [...] consciously identified themselves with Zahiri doctrine. 
  9. Dilip Hiro, Apocalyptic Realm: Jihadists in South Asia, p. 15. New Haven: Yale University Press, 2012. আইএসবিএন ৯৭৮০৩০০১৭৩৭৮৯
  10. Muneer Goolam Fareed, Legal reform in the Muslim world, p. 172. Ann Arbor: University of Michigan Press, 1994.
  11. Mohsin, K. M. (২০০১)। "The Ahl-i-Hadis Movement in Bangladesh"। Ahmed, Rafiuddin। Religion, Identity & Politics: Essays on Bangladesh। Colorado Springs, CO: International Academic Publishers। পৃষ্ঠা 180আইএসবিএন 978-1-58868-080-8 
  12. Ali, Bizaa Zeynab (২০১০)। "The Religious and Political Dynamics of Jamiat Ahle-Hadith in Pakistan"Columbia Academic Commonsএসটুসিআইডি 154070897ডিওআই:10.7916/D8VH5X2X। সংগ্রহের তারিখ ২১ জুলাই ২০১৭ 
  13. W. Brown, Daniel (১৯৯৯)। "Chapter 2: The emergence of modern Challenges to tradition"। Rethinking Tradition in Modern Islamic Thought। Cambridge, Massachusetts, London, England: Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 227। আইএসবিএন 9780521653947 
  14. Haroon, Sana (২০২১)। "1: Tajpur, Bihar, 1891: Leadership in Congregational Prayer"। The Mosques of Colonial South Asia: A Social and Legal History of Muslim Worship। London, UK: I.B Tauris। পৃষ্ঠা 33আইএসবিএন 978-0-7556-3444-6Ahl-i Hadith were those who accepted the teachings of Shah Ismail of Delhi by rejecting unthinking deference to the Sunni jurisprudential tradition and scholarly authority in avor of personal readings and understanding of the Quran and hadith... the Ahl-i Hadith religious position had its origins in the teachings of Shah Wali Ullah and Shaikh Ahmad Sirhindi... A large number of scholars (including myself) have historicized the Ahl-i Hadith interventions... Barbara Metcalf considers them the intellectual descendants of Shah Wali Ullah, counterparts in this sense, to the Deobandis. 
  15. Sanyal, Usha (২০২০)। "7: Al-Huda's Intellectual Foundations"। Scholars of Faith: South Asian Muslim Women and the Embodiment of Religious Knowledge। New Delhi, India: Oxford University Press। পৃষ্ঠা 280। আইএসবিএন 978-0-19-012080-1The Ahl-i Hadith trace their intellectual roots back to Shah Wali Allah (1703–1762).. 
  16. Allen, Charles (২০০৫)। "The Hidden Roots of Wahhabism in British India"World Policy Journal22 (2): 87–93। জেস্টোর 40209967ডিওআই:10.1215/07402775-2005-3001With the British takeover of the Mughal capital of Delhi in 1803.. Shah Waliullah s eldest son and successor, Shah Abdul Azziz, issued a fatwa, or religious judgment, that Delhi had been enslaved by kufr (paganism). He declared Hindustan to be a dar al-harb or "domain of enmity" and that it was now incumbent on all Muslims to strive to restore India to Islam. This was no more than a gesture, but it set a goal that his student Syed Ahmad did not forget. 
  17. Oleson, Asta (১৯৯৫)। "8: The Development of the Islamic Movement from the 1960s"। Islam and Politics In Afghanistan। Milton Park, Abington, UK: Routledge। পৃষ্ঠা 237, 249। আইএসবিএন 0-7007-0299-7 
  18. Ahmad Nizami, Khaliq (১৯৯০)। "The Impact of Ibn Taymiyya on South Asia"Journal of Islamic Studies। Oxford University Press। 1: 136–137। জেস্টোর 26195671 
  19. Naqvi, A.Q. (২০০১)। The Salafis (History of the Ahle Hadees Movement in India)। New Delhi: Al-Kitab International। পৃষ্ঠা 90–97। 
  20. Allen, Charles (২০০৫)। "The Hidden Roots of Wahhabism in British India"World Policy Journal22 (2): 88–89। জেস্টোর 40209967ডিওআই:10.1215/07402775-2005-3001Shah Waliullah's eldest son and successor, Shah Abdul Azziz, issued a fatwa.. that Delhi had been enslaved by kufr (paganism). He declared Hindustan to be a dar al-harb or "domain of enmity" and that it was now incumbent on all Muslims to strive to restore India to Islam. This was no more than a gesture, but it set a goal that his student Syed Ahmad did not forget. After a murky period as a mercenary, Syed Ahmad returned to his religious studies, to reemerge in his early thirties as a visionary revivalist and preacher. He very soon acquired disciples... Many Sunnis now saw him as the inheritor of the mantle of the Shah Waliullah and hundreds flocked to join his cause.. 
  21. আহসানুল ফাতওয়া(উর্দু) pdf. https://archive.org/download/AHSANULFATAWA_201607/AHSAN_UL_FATAWA_VOL_01.pdf
  22. হাক্কানী, আব্দুল হক। হক্কানী আক্বায়েদে ইসলাম (উর্দু ভাষায়)। পৃষ্ঠা ২৬৪। 
  23. হাক্কানী আক্বায়েদে ইসলাম (উর্দু) pdf.https://archive.org/download/HaqqaniAqaidUlIslamByAllamaAbdulHaqHaqqani/Haqqani%20Aqaid%20ul%20islam%20by%20Allama%20Abdul%20Haq%20haqqani.pdf
  24. Brown, pg. 28.
  25. M. Mahmood, The Code of Muslim Family Laws, pg. 37. Pakistan Law Times Publications, 2006. 6th ed.
  26. Daniel W. Brown, Rethinking Tradition in Modern Islamic Thought: Vol. 5 of Cambridge Middle East Studies, pg. 32. Cambridge: Cambridge University Press, 1996. আইএসবিএন ৯৭৮০৫২১৬৫৩৯৪৭
  27. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; hewer নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  28. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; roy নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  29. Rethinking Tradition in Modern Islamic Thought - Page 38, Daniel W. Brown - 1999
  30. Mohsin, K. M. (২০০১)। "The Ahl-i-Hadis Movement in Bangladesh"। Religion, Identity & Politics: Essays on Bangladesh। International Academic Publishers। পৃষ্ঠা 180। আইএসবিএন 978-1-58868-080-8 
  31. Qasmi, Ali Usman; Robb, Megan Eaton (২০১৭)। Muslims against the Muslim League: Critiques of the Idea of Pakistan (English ভাষায়)। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 2। আইএসবিএন 9781108621236 
  32. সম্পাদকীয় কমিটি (২০১২)। "আহল-ই-হাদীস"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  33. Roy, Olivier, The Failure of Political Islam, by Olivier Roy, translated by Carol Volk, Harvard University Press, 1994, p.118-9
  34. Gilliat-Ray, Sophie (২০১০)। Muslims in Britain। Cambridge University Press। পৃষ্ঠা 105। আইএসবিএন 978-0-521-53688-2