আল্লাহর ৯৯টি নাম

কুরআন ও হাদীসে বর্ণিত ৯৯টি নাম

ইসলামে আল্লাহর নামসমূহ (আরবি: أَسْمَاءُ ٱللَّٰهِ ٱلْحُسْنَىٰ) হল ৯৯টি নাম, যা প্রতিটির সাথে ইসলামে আল্লাহর গুণাবলী সম্পর্কিত একটি বৈশিষ্ট্য রয়েছে।[][][][][][] এই বৈশিষ্ট্যগুলি সংশ্লিষ্ট নামের মাধ্যমে নির্দেশিত।[]

এই নামগুলো সাধারণত আল্লাহর প্রশংসা, কৃতজ্ঞতা, মহিমান্বিতকরণ, গুণাগুণের পরিপূর্ণতা, এবং তাঁর জ্ঞান, রহমত, ন্যায়বিচার ও দয়ালু কার্যকলাপ নির্দেশ করে। মুসলমানরা নামাজ, দোয়া এবং জিকিরের সময় এই নামগুলো ব্যবহার করে থাকেন। এগুলো মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় গুরুত্ব বহন করে এবং আল্লাহর সাথে সংযোগ স্থাপনের একটি মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। প্রতিটি নাম আল্লাহর নির্দিষ্ট একটি বৈশিষ্ট্য নির্দেশ করে এবং আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরিতে সাহায্য করে।

কিছু নাম কুরআন থেকে বা হাদিস থেকে জানা যায়, আবার কিছু নাম উভয় উৎসে পাওয়া যায়। তবে বেশিরভাগ নাম কুরআনে পাওয়া যায়।[] এছাড়াও, মুসলমানরা বিশ্বাস করেন যে কুরআন ও হাদিসে উল্লেখিত নাম ছাড়াও আল্লাহর আরো নাম রয়েছে, যা তিনি নিজে গোপন রেখেছেন। আল্লাহ ছাড়া কেউ সেগুলোর সম্পূর্ণ জ্ঞান রাখেন না।

নামের তালিকা

সম্পাদনা

কুরআন-এ বিভিন্ন সূরায় আল্লাহর ‘‘সর্বশ্রেষ্ঠ সুন্দর নাম’’ (আল-আসমা আল-হুসনা) উল্লেখ করা হয়েছে।[] ইসলামি বিশ্বাস অনুসারে, আল্লাহর নামসমূহ অবশ্যই কুরআন এবং সহিহ হাদিসের (তাওকিফ ধারণা) মাধ্যমে প্রমাণিত হতে হবে। তাই, আল্লাহকে এমন কোনো নাম দেওয়া হারাম (হারাম), যা কুরআন বা নির্ভরযোগ্য হাদিসে উল্লেখ নেই। এই বিষয়ে শেখ আবদুল মুহসিন আল-আব্বাদ, মুহাম্মাদ ইবনে সালেহ আল-উসাইমিন এবং অন্যান্যরা বলেছেন:

الخافضُ، المعزُّ، المذِل، العَدْلُ، الجَلِيلُ، البَاعِثُ، المُحْصِي، المُبْدِئُ، المُعِيدُ، المُمِيتُ، الوَاجِدُ، المَاجِدُ، الوَالِي، المُقْسِط، المُغْنِي، المَانِعُ، الضَّارُّ، النَّافِعُ، البَاقِي، الرَّشِيدُ، الصَّبُور.

[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

সহিহ আল-বুখারি হাদিস অনুযায়ী:[১০]

আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন যে আল্লাহর নিরানব্বইটি নাম রয়েছে, অর্থাৎ একশো থেকে এক কম। যে ব্যক্তি এই নামগুলোর অর্থে বিশ্বাস স্থাপন করে এবং সেগুলো অনুসারে কাজ করে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আল্লাহ একক (উইত্র) এবং তিনি বিজোড় সংখ্যাকে পছন্দ করেন।

— সহিহ বুখারি, খণ্ড ৮, বই ৭৫, হাদিস ৪১৯

সহিহ মুসলিম হাদিস অনুযায়ী:[১১]

আল্লাহর রাসূল () বলেছেন, "আল্লাহর নিরানব্বইটি নাম রয়েছে, একশো থেকে এক কম। যে এগুলো হৃদয়ে স্থান দেয়, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। কোনো কিছু গণনার অর্থ হলো তা হৃদয়ে মুখস্থ রাখা।"

— সহিহ বুখারি, খণ্ড ৯, বই ৯৩, হাদিস ৪৮৯

গেরহার্ড বোয়্যারিং সূরা ১৭ (১৭:১১০)-কে ‘‘মূলসূত্র’’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যেখানে নিরানব্বইটি নামের তালিকা তাফসিরে সংযুক্ত করা হতো। সূরা ৫৯-এ এক ডজনেরও বেশি আল্লাহর গুণবাচক নামের একটি ক্লাস্টার পাওয়া যায়।[১২]

বিভিন্ন উৎসে আল্লাহর নিরানব্বইটি নামের ভিন্ন তালিকা পাওয়া যায়। নিচের তালিকা জামি আত-তিরমিজি (৯ম শতাব্দী) থেকে নেওয়া, যা সবচেয়ে বেশি পরিচিত।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] অন্য হাদিসগুলো যেমন আল-বুখারি, সহিহ মুসলিম, ইবনে মাজাহ, আল-হাকিম আত-তিরমিজি বা ইবনে আসাকির বিভিন্ন তালিকা প্রদান করেছেন। সবগুলো তালিকাই আবু হুরাইরা (রা.)-এর বর্ণিত হাদিস থেকে সংগৃহীত।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] প্রাথমিক যুগের ইসলামি তাফসিরকারীরা, যেমন জাফর আস-সাদিক, সুফিয়ান ইবনে উইয়াইনা, ইবনে হাযম, আল-কুরতুবি, ইবনে হাজার আসকালানি, তাদের নিজস্ব তালিকা প্রস্তুত করেছিলেন।

হাদীসে প্রাপ্ত মহান আল্লাহর ৯৯টি নাম

সম্পাদনা

আল্লাহর কিছু নাম কুরআনেও উল্লেখ করা হয়েছে এবং বিস্তারিতভাবে হাদীসে ৯৯ টি নামের একটি তালিকা পাওয়া যায়, কিন্তু সেটির সনদ দূর্বল। এছাড়াও নাসিরুদ্দিন আলবানী সুনানে ইবনে মাজাহ'তে উল্লেখিত হাদীসটির ক্ষেত্রে বলেছেন যে, "নাম গণনা ব্যতীত সহীহ"।[১৩] আর জামি তিরমিজিতে হাদীসের শেষে ইমাম তিরমিজিও মন্তব্য করেছেন।[১৪]

# আরবীতে উচ্চারণ বর্ণান্তর অনুবাদ (আলোচ্য বিষয়বস্তুর উপর অর্থ নির্ভরশীল) ক্বুরআন-কারীমে এই নামের ব্যবহার
الرحمن আর রাহমান পরম দয়ালু সূরা তাওবাহ ব্যতীত প্রত্যেক সূরার শুরুতে, সূরা আর-রহমানে(সূরা নং:৫৫)[কুরআন ৫৫:১] অনেকবার ব্যবহৃত।
الرحيم আর-রাহ়ীম অতিশয়-মেহেরবান সূরা তাওবাহ ব্যতীত প্রত্যেক সূরার শুরুতে, এবং আরও অসংখ্যবার ব্যবহৃত।
الملك আল-মালিক সর্বকর্তৃত্বময় ৫৯:২৩, ২০:১১৪, ২৩:১১৬
القدوس আল-কুদ্দুস নিষ্কলুষ, অতি পবিত্র ৫৯:২৩, ৬২:১
السلام আস-সালাম নিরাপত্তা-দানকারী, শান্তি-দানকারী ৫৯:২৩
المؤمن আল-মু'মিন নিরাপত্তা ও ঈমান দানকারী ৫৯:২৩
المهيمن আল-মুহাইমিন পরিপূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণকারী ৫৯:২৩
العزيز আল-আ'জীজ পরাক্রমশালী, অপরাজেয় ৩:৬, ৪:১৫৮, ৯:৪০, ৪৮:৭, ৫৯:২৩
الجبار আল-জাব্বার দুর্নিবার ৫৯:২৩
১০ المتكبر আল-মুতাকাব্বির নিরঙ্কুশ শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী ৫৯:২৩
১১ الخالق আল-খালিক্ব সৃষ্টিকর্তা ৬:১০২, ১৩:১৬, ৩৯:৬২, ৪০:৬২, ৫৯:২৪
১২ البارئ আল-বারী সঠিকভাবে সৃষ্টিকারী ৫৯:২৪
১৩ المصور আল-মুছ‌উউইর আকৃতি-দানকারী ৫৯:২৪
১৪ الغفار আল-গফ্ফার পরম ক্ষমাশীল ২০:৮২, ৩৮:৬৬, ৩৯:৫, ৪০:৪২, ৭১:১০
১৫ القهار আল-ক্বাহার কঠোর ১২:৩৯, ১৩:১৬, ১৪:৪৮, ৩৮:৬৫, ৩৯:৪, ৪০:১৬
১৬ الوهاب আল-ওয়াহ্হাব সবকিছু দানকারী ৩:৮, ৩৮:৯, ৩৮:৩৫
১৭ الرزاق আর-রজ্জাক্ব রিযিকদাতা ৫১:৫৮
১৮ الفتاح আল ফাত্তাহ বিজয়দানকারী ৩৪:২৬
১৯ العليم আল-আ'লীম সর্বজ্ঞ ২:১৫৮, ৩:৯২, ৪:৩৫, ২৪:৪১, ৩৩:৪০
২০ القابض আল-ক্ববিদ্ব' নিয়ন্ত্রণকারী, সরল পথ প্রদর্শনকারী ২:২৪৫
২১ الباسط আল-বাসিত প্রশস্তকারী ২:২৪৫
২২ الخافض আল-খফিদ্বু অবনতকারী (কাফির ও মুশরিকদের) ৫৩:৬
২৩ الرافع আর-রফীই' উন্নতকারী ৫৮:১১, ৬:৮৩
২৪ المعز আল-মুই'জ্ব সম্মান-দানকারী ৩:২৬
২৫ المذل আল-মুদ্বি'ল্লু (অবিশ্বাসীদের) বেইজ্জতকারী ৩:২৬
২৬ السميع আস্-সামি' সর্বশ্রোতা ২:১২৭, ২:২৫৬, ৮:১৭, ৪৯:১
২৭ البصير আল-বাছীর সর্ববিষয়-দর্শনকারী ৪:৫৮, ১৭:১, ৪২:১১, ৪২:২৭
২৮ الحكم আল-হা'কাম অটল বিচারক ২২:৬৯
২৯ العدل আল-আ'দল পরিপূর্ণ-ন্যায়বিচারক ৬:১১৫
৩০ اللطيف আল-লাতীফ সকল-গোপন-বিষয়ে-অবগত ৬:১০৩, ২২:৬৩, ৩১:১৬, ৩৩:৩৪
৩১ الخبير আল-খ'বীর সকল ব্যাপারে জ্ঞাত ৬:১৮, ১৭:৩০, ৪৯:১৩, ৫৯:১৮
৩২ الحليم আল-হা'লীম অত্যন্ত ধৈর্যশীল ২:২৩৫, ১৭:৪৪, ২২:৫৯, ৩৫:৪১
৩৩ العظيم আল-আ'জীম সর্বোচ্চ-মর্যাদাশীল ২:২৫৫, ৪২:৪, ৫৬:৯৬
৩৪ الغفور আল-গফুর পরম ক্ষমাশীল ২:১৭৩, ৮:৬৯, ১৬:১১০, ৪১:৩২
৩৫ الشكور আশ্-শাকুর গুণগ্রাহী ৩৫:৩০, ৩৫:৩৪, ৪২:২৩, ৬৪:১৭
৩৬ العلي আল-আ'লিইউ উচ্চ-মর্যাদাশীল ৪:৩৪, ৩১:৩০, ৪২:৪, ৪২:৫১
৩৭ الكبير আল-কাবিইর সুমহান ১৩:৯, ২২:৬২, ৩১:৩০
৩৮ الحفيظ আল-হা'ফীজ সংরক্ষণকারী ১১:৫৭, ৩৪:২১, ৪২:৬
৩৯ المقيت আল-মুক্বীত সকলের জীবনোপকরণ-দানকারী ৪:৮৫
৪০ الحسيب আল-হাসীব হিসাব-গ্রহণকারী ৪:৬, ৪:৮৬, ৩৩:৩৯
৪১ الجليل আল-জালীল পরম মর্যাদার অধিকারী ৫৫:২৭, ৩৯:১৪, ৭:১৪৩
৪২ الكريم আল-কারীম সুমহান দাতা ২৭:৪০, ৮২:৬
৪৩ الرقيب আর-রক্বীব তত্ত্বাবধায়ক ৪:১, ৫:১১৭
৪৪ المجيب আল-মুজীব জবাব-দানকারী, কবুলকারী ১১:৬১
৪৫ الواسع আল-ওয়াসি' সর্ব-ব্যাপী, সর্বত্র-বিরাজমান ২:২৬৮, ৩:৭৩, ৫:৫৪
৪৬ الحكيم আল-হাকীম পরম-প্রজ্ঞাময় ৩১:২৭, ৪৬:২, ৫৭:১, ৬৬:২
৪৭ الودود আল-ওয়াদুদ (বান্দাদের প্রতি) সদয় ১১:৯০, ৮৫:১৪
৪৮ المجيد আল-মাজীদ সকল-মর্যাদার-অধিকারী ১১:৭৩
৪৯ الباعث আল-বাই'ছ' পুনুরুজ্জীবিতকারী ২২:৭
৫০ الشهيد আশ্-শাহীদ সর্বজ্ঞ-স্বাক্ষী ৪:১৬৬, ২২:১৭, ৪১:৫৩, ৪৮:২৮
৫১ الحق আল-হা'ক্ব পরম সত্য ৬:৬২, ২২:৬, ২৩:১১৬, ২৪:২৫
৫২ الوكيل আল-ওয়াকিল পরম নির্ভরযোগ্য কর্ম-সম্পাদনকারী ৩:১৭৩, ৪:১৭১, ২৮:২৮, ৭৩:৯
৫৩ القوي আল-ক্বউইউ পরম-শক্তির-অধিকারী ২২:৪০, ২২:৭৪, ৪২:১৯, ৫৭:২৫
৫৪ المتين আল-মাতীন সুদৃঢ় ৫১:৫৮
৫৫ الولي আল-ওয়ালিইউ অভিভাবক ও সাহায্যকারী ৪:৪৫, ৭:১৯৬, ৪২:২৮, ৪৫:১৯
৫৬ الحميد আল-হা'মীদ সকল প্রশংসার অধিকারী ১৪:৮, ৩১:১২, ৩১:২৬, ৪১:৪২
৫৭ المحصي আল-মুহছী সকল সৃষ্টির ব্যপারে অবগত ৭২:২৮, ৭৮:২৯, ৮২:১০-১২
৫৮ المبدئ আল-মুব্দি' প্রথমবার-সৃষ্টিকর্তা ১০:৩৪, ২৭:৬৪, ২৯:১৯, ৮৫:১৩
৫৯ المعيد আল-মুঈ'দ পুনরায়-সৃষ্টিকর্তা ১০:৩৪, ২৭:৬৪, ২৯:১৯, ৮৫:১৩
৬০ المحيي আল-মুহ'য়ী জীবন-দানকারী ৭:১৫৮, ১৫:২৩, ৩০:৫০, ৫৭:২
৬১ المميت আল-মুমীত মৃত্যু-দানকারী ৩:১৫৬, ৭:১৫৮, ১৫:২৩, ৫৭:২
৬২ الحي আল-হাইয়্যু চিরঞ্জীব ২:২৫৫, ৩:২, ২৫:৫৮, ৪০:৬৫
৬৩ القيوم আল-ক্বাইয়্যুম সমস্তকিছুর ধারক ও সংরক্ষণকারী ২:২৫৫, ৩:২, ২০:১১১
৬৪ الواجد আল-ওয়াজিদ অফুরন্ত ভান্ডারের অধিকারী ৩৮:৪৪
৬৫ الماجد আল-মাজিদ শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী ৮৫:১৫, ১১:৭৩,
৬৬ الواحد আল-ওয়াহি'দ এক ও অদ্বিতীয় ২:১৬৩, ৫:৭৩, ৯:৩১, ১৮:১১০
৬৭ الاحد আল আহাদ এক ১১২:১
৬৮ الصمد আছ্-ছমাদ অমুখাপেক্ষী ১১২:২
৬৯ القادر আল-ক্বদির সর্বশক্তিমান ৬:৬৫, ৩৬:৮১, ৪৬:৩৩, ৭৫:৪০
৭০ المقتدر আল-মুক্ব্তাদির নিরঙ্কুশ-সিদ্বান্তের-অধিকারী ১৮:৪৫, ৫৪:৪২, ৫৪:৫৫
৭১ المقدم আল-মুক্বদ্দিম অগ্রসারক ১৬:৬১, ১৭:৩৪,
৭২ المؤخر আল-মুয়াক্খির অবকাশ দানকারী ৭১:৪
৭৩ الأول আল-আউয়াল অনাদি ৫৭:৩
৭৪ الأخر আল-আখির অনন্ত, সর্বশেষ ৫৭:৩
৭৫ الظاهر আজ-জ'হির সম্পূর্নরূপে-প্রকাশিত ৫৭:৩
৭৬ الباطن আল-বাত্বিন দৃষ্টি হতে অদৃশ্য ৫৭:৩
৭৭ الوالي আল-ওয়ালি সমস্ত-কিছুর-অভিভাবক ১৩:১১, ২২:৭
৭৮ المتعالي আল-মুতাআ'লি সৃষ্টির গুনাবলীর ঊর্ধ্বে ১৩:৯
৭৯ البر আল-বার্ পরম-উপকারী, অণুগ্রহশীল ৫২:২৮
৮০ التواب আত্-তাওয়াব তাওবার তাওফিক দানকারী এবং কবুলকারী ২:১২৮, ৪:৬৪, ৪৯:১২, ১১০:৩
৮১ المنتقم আল-মুনতাক্বিম প্রতিশোধ-গ্রহণকারী ৩২:২২, ৪৩:৪১, ৪৪:১৬
৮২ العفو আল-আ'ফঊ পরম-উদার ৪:৯৯, ৪:১৪৯, ২২:৬০
৮৩ الرؤوف আর-রউফ পরম-স্নেহশীল ৩:৩০, ৯:১১৭, ৫৭:৯, ৫৯:১০
৮৪ مالك الملك মালিকুল-মুলক সমগ্র জগতের বাদশাহ্ ৩:২৬
৮৫ ذو الجلال والإكرام যুল-জালালি-ওয়াল-ইকরাম মহিমান্বিত ও দয়াবান সত্তা ৫৫:২৭, ৫৫:৭৮
৮৬ المقسط আল-মুক্ব্সিত হকদারের হক-আদায়কারী ৭:২৯, ৩:১৮
৮৭ الجامع আল-জামিই' একত্রকারী, সমবেতকারী ৩:৯
৮৮ الغني আল-গণিই' অমুখাপেক্ষী ধনী ৩:৯৭, ৩৯:৭, ৪৭:৩৮, ৫৭:২৪
৮৯ المغني আল-মুগণিই' পরম-অভাবমোচনকারী ৯:২৮
৯০ المانع আল-মানিই' অকল্যাণরোধক ৬৭:২১
৯১ الضار আয্-যর ক্ষতিসাধনকারী ৬:১৭
৯২ النافع আন্-নাফিই' কল্যাণকারী ৩০:৩৭
৯৩ النور আন্-নূর পরম-আলো ২৪:৩৫
৯৪ الهادي আল-হাদী পথ-প্রদর্শক ২২:৫৪
৯৫ البديع আল-বাদীই' অতুলনীয় ২:১১৭, ৬:১০১
৯৬ الباقي আল-বাক্বী চিরস্থায়ী, অবিনশ্বর ৫৫:২৭
৯৭ الوارث আল-ওয়ারিস' উত্তরাধিকারী ১৫:২৩, ৫৭:১০
৯৮ الرشيد আর-রাশীদ সঠিক পথ-প্রদর্শক ২:২৫৬, ৭২:১০
৯৯ الصبور আস-সবুর অত্যধিক ধৈর্যধারণকারী ২:১৫৩, ৩:২০০, ১০৩:৩

ইসলামিক পরিভাষায় আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ নাম

সম্পাদনা

বিভিন্ন হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে আল্লাহর নামসমূহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ একটি নাম রয়েছে। ইসলামিক পরিভাষায় একে ইসমে আজম (অর্থ: "সর্বশ্রেষ্ঠ নাম")[১৫] বলা হয়। এবং কেউ যদি এই নামসমূহের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে, সেটা তিনি (আল্লাহ) অবশ্যই কবুল করবেন।[১৬]

বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হাদীসসমূহ বর্ণিত হয়েছে। যেমন, এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, মুহাম্মাদ এক ব্যক্তিকে দেখলেন সালাতে তাশাহহুদে সে এ বলে দুআ করছে:

তখন নবী এই প্রার্থনা শুনে তার সাহাবীদের বললেন:

অপর এক হাদিসে তিনি বলেন:

তবে হাদিসসমূহে সুনির্দিষ্ট করে কোন একটি নামের কথা উল্লেখ করা হয় নি, যার কারণে ঠিক কোন নামটি সেই ইসমে আজম, সেটা নিয়ে ইসলামী ধর্মীয় বিশেষজ্ঞদের ভিতরে ব্যাপক মতভেদ আছে। কারো কারো মতে, যেহেতু এই নামটি দুআ' কবুলের ব্যপারে খুবই শক্তিশালী (অর্থাৎ, ব্যক্তিবিশেষ অসৎ উদ্দেশ্যে সেটা ব্যবহার করতে পারে), তাই আল্লাহ তাআলা নিজে (এবং সেই অনুযায়ী মুহাম্মাদ ও এই নামটি জনসমক্ষে প্রকাশ করেননি।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

এই নামগুলো দ্বারা কোনো ব্যক্তির নামকরণ

সম্পাদনা

ইসলামিক মতানুসারে, হুবহু এই নামগুলো দ্বারা কোনো ব্যক্তির নামকরণ করার অনুমতি নেই।[২১] উদাহরণস্বরূপ: কারো নাম সরাসরি "আল-মালিক" রাখা যাবে না, বরং "মালিক" রাখা যেতে পারে। এটা এই বিশ্বাসের কারণে যে, কোনো সৃষ্টি, সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ'র সমকক্ষ হতে পারে না। তাই নামগুলো ব্যবহার করা যাবে; কিন্তু "আল-" শব্দাংশ-সহ ব্যবহার করা যাবে না।[২২] অধিকন্তু, কিছু নাম ব্যবহার করা একেবারেই নিষিদ্ধ; কারণ সেই গুণাবলীগুলো মানুষের সম্পূর্ণ আয়ত্তের বাইরে। যেমন: "আল্লাহ", "খালিক্ব" ইত্যাদি।

তবে, যেকোনো নামের প্রথমে (ক্ষেত্রভেদে) "আব্দ"/"আব্দুল"/"আব্দুর"/"আব্দুস" শব্দাংশ (বাংলায় যার অর্থ "দাস" বা "গোলাম") যোগ করে সেটাকে কোনো ব্যক্তির নাম হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। যেমন: "খালিক্ব" (অর্থাৎ "সৃষ্টিকর্তা") ব্যক্তির নাম হিসেবে নিষিদ্ধ হলেও "আব্দুল খালিক্ব" (অর্থাৎ "সৃষ্টিকর্তার গোলাম") নামটি খুবই গ্রহণযোগ্য এবং মুসলমান সমাজে প্রচলিত।

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. মোহাম্মদ মাহদি আল-শরিফ (২০১৪)। ALLAH'S MOST BEAUTIFUL NAMES: اسماء الله الحسنى [ইংরেজি] (ইংরেজি ভাষায়)। Dar Al Kotob Al Ilmiyah। পৃষ্ঠা 25। আইএসবিএন 978-2745154811। সংগ্রহের তারিখ ২০ আগস্ট ২০২৪... নাম "রহমান" এবং এর বৈশিষ্ট্য। 
  2. মার্ক ডব্লিউ. মুস (২০১৮)। Four Wise Men। BoD – Books on Demand। পৃষ্ঠা 240। আইএসবিএন 9780718895228। সংগ্রহের তারিখ ২০ আগস্ট ২০২৪... গুণাবলী, যা কিছু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যকে নির্দেশ করে যা মনের মনোযোগকে আল্লাহর দিকে সঠিকভাবে ধাবিত করে। 
  3. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; names and attributes difference; Risala নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  4. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; names and attributes difference; al-Hanan নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  5. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Onomastics between Sacred and Profane নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  6. আল-উথাইমিন (২০১৯)। বিন নাসির বিন ইব্রাহিম আস-সুলাইমান, ফাহদ, সম্পাদক। তওহিদ, সালাত, জাকাত, সিয়াম ও হজের প্রশ্নোত্তর গাইড [বিশ্বাস ও ইবাদতের প্রশ্নোত্তর নির্দেশিকা] (ইন্দোনেশীয় ভাষায়)। মুনিরুল আবেদিন কর্তৃক অনূদিত। Darul Falah। পৃষ্ঠা 72। আইএসবিএন 978-979-3036-66-3। সংগ্রহের তারিখ ২০ আগস্ট ২০২৪ 
  7. এম. গুলাম হোসেন দালিল (২০২৩)। কাইনাত: সাহিত্য ও মানবসেবার জন্য। Notion Press। আইএসবিএন 9798888839706। সংগ্রহের তারিখ ২০ আগস্ট ২০২৪... আল্লাহর ৯৯টি নাম, যা কুরআনে উল্লেখিত। আল্লাহর নামগুলো তার বৈশিষ্ট্য নির্দেশ করে। 
  8. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; morg10 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  9. দেখুন সূরা "আল-আরাফ" (৭:১৮০), "বনি ইসরাইল" (১৭:১১০), "তা-হা" (২০:৮) এবং "আল-হাশর" (৫৯:২৪)।
  10. "Hadith: Book of Invocations - Sahih al-Bukhari - Sunnah.com - Sayings and Teachings of Prophet Muhammad (صلى الله عليه و سلم)"sunnah.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৬-১৫ 
  11. "Hadith - Book of Oneness, Uniqueness of Allah (Tawheed) - Sahih al-Bukhari - Sunnah.com - Sayings and Teachings of Prophet Muhammad (صلى الله عليه و سلم)"sunnah.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০৬-১৫ 
  12. http://quran.com/59/22-24 (৫৯:২২–২৪)
  13. টেমপ্লেট:Ihadis
  14. টেমপ্লেট:Ihadis আবূ ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। একাধিক রাবী এ হাদীস সাফওয়ান ইবনু সালিহ্‌-এর সূত্রে আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন। আমরা শুধু সাফওয়ান ইবনু সালিহ্‌-এর সূত্রে এ হাদীস জেনেছি। হাদিস বিশারদদের মতে তিনি নির্ভরযোগ্য রাবী। উক্ত হাদীস আবূ হুরাইরা সূত্রে মুহাম্মদ হতে ভিন্নরূপেও বর্ণিত হয়েছে। আমরা ঐ একটি হাদীস ব্যতীত আল্লাহ্‌ তা’আলার নামসমূহ প্রসঙ্গে অবগত নই। অবশ্য আদাম ইবনু আবূ ইয়াস এ হাদীস ভিন্ন সনদসূত্রে আবূ হুরাইরার মাধ্যমে মুহাম্মদ হতে বর্ণনা করেছেন এবং তাতে আল্লাহ্‌ তা’আলার নামসমূহ উল্লেখ করেছেন, কিন্তু তার সনদসূত্র সহীহ নয়।
  15. Schimmel, Annemarie; Endres, Franz Carl (১৯৯৪-০৪-০৭)। The Mystery of Numbers (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press, USA। পৃষ্ঠা ২৭১। আইএসবিএন 978-0-19-508919-6 
  16. Momen, Moojan. (২০০০)। Islam and the Baháʼí faith। Oxford: G. Ronald। পৃষ্ঠা ২৭১। আইএসবিএন 0-85398-446-8ওসিএলসি 52601352 
  17. সুনান আবু দাউদ, কিতাবুস সালাত, হাদীস নং-১৪৯৫
  18. আল-আদাব আল-মুফরাদ (হাদিসের সংকলন), সংকলক: ইমাম বুখারী
  19. নাসায়ী
  20. তিরমিজী(৪/২৬০)
  21. "Are there any names which it is forbidden to use? If so, what are they?"। ২ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মে ২০১২ 
  22. "Prohibited Muslim Names."। ১৪ জুলাই ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মে ২০১২ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা