আনোয়ার পাশা (সৈনিক)
আনোয়ার /এনভার পাশা (উসমানীয় তুর্কি ভাষা: انور پاشا; তুর্কি: Enver Paşa) বা ইসমাইল এনভার/আনোয়ার পাশা (اسماعیل انور پاشا; İsmail Enver Paşa) (জন্মনাম ইসমাইল আনোয়ার; ২২ নভেম্বর ১৮৮১ – ৪ আগস্ট ১৯২২) ছিলেন একজন উসমানীয় সামরিক অফিসার ও ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দের তরুণ তুর্কি বিপ্লবের একজন নেতা। তাকে আর্মেনীয় গণহত্যা ও এসিরিয় গণহত্যার সাথে সংশ্লিষ্ট ধরা হয়। বলকান যুদ্ধ ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধ উভয় সময়ে তিনি উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রধান নেতা ছিলেন। সমগ্র কর্মজীবনে তিনি সামরিক বাহিনীর পদোন্নতির মাধ্যমে বর্ধমান পদবির জন্য পরিচিত ছিলেন। এগুলোর মধ্যে ছিল আনোয়ার এফেন্দি (انور افندي), আনোয়ার বে (انور بك) এবং শেষে আনোয়ার পাশা। মিরলিভি পদে উন্নীত হওয়ার পর উসমানীয় সামরিক অফিসারদের “পাশা” পদবিটি দেয়া হত।
জন্ম নাম | ইসমাইল আনোয়ার |
---|---|
জন্ম | কনস্টান্টিনোপল, উসমানীয় সাম্রাজ্য | ২২ নভেম্বর ১৮৮১
মৃত্যু | ৪ আগস্ট ১৯২২ তুর্কিস্তান, আরএসএফএসআর (বর্তমান তাজিকিস্তান) | (বয়স ৪০)
আনুগত্য | Ottoman Empire |
পদমর্যাদা | বিরিনচি ফেরিক যুদ্ধমন্ত্রী |
ইউনিট | থার্ড আর্মি |
যুদ্ধ/সংগ্রাম | ইতালি-তুর্কি যুদ্ধ বলকান যুদ্ধ সারিকামিশের যুদ্ধ বাশমাচি বিদ্রোহ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ |
অন্য কাজ | বিপ্লবী |
১৯১৩ এর অভ্যুত্থানের পর আনোয়ার পাশা উসমানীয় সাম্রাজ্যের যুদ্ধমন্ত্রীর পদে আসীন হন। আনোয়ার পাশা, তালাত পাশা, জামাল পাশা এ তিনজন ব্যক্তির সমষ্টিকে তিন পাশা বলা হত। ১৯১৩ থেকে ১৯১৮ তে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত তারাই কার্যত সাম্রাজ্য শাসন করেন। যুদ্ধমন্ত্রী ও কমান্ডার ইন চিফ হিসেবে উসমানীয় সরকারে তিনি সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হতেন। দেশে তিনি "the hero of the revolution" হিসেবে সম্মানিত ছিলেন, জার্মানরা তুরস্ককে বলত "Enverland" এবং ব্রিটিশরা তাকে "the one whose power was absolute and ambitions were grandiose" বলে অবিহিত করত।
প্রাথমিক জীবন ও কর্মজীবন
সম্পাদনাআনোয়ার পাশার পিতা আহমেদ মোনাস্টিরের একজন সেতু রক্ষক[২] বা বলকানের একজন সরকারি আইনজীবী[৩] ও তার মা ছিলেন আলবেনিয়ান কৃষিজীবী।[৪] সামরিক বিদ্যালয়ে তিনি বিভিন্ন ডিগ্রির জন্য পড়াশোনা করেন এবং ১৯০৩ খ্রিষ্টাব্দে ‘’হার্প একাডেমিসি’’ থেকে স্নাতক হন। ১৯০৬ এ তিনি মেজর হন। তাকে সেলোনিকায় অবস্থানরত থার্ড আর্মিতে প্রেরণ করা হয়। এখানে দায়িত্ব পালনের সময় তিনি কমিটি অব ইউনিয়ন এন্ড প্রোগ্রেসের সদস্য হন।
ক্ষমতায় উত্থান
সম্পাদনা১৯০৮ এ সেলোনিকায় তরুণ তুর্কি বিপ্লব শুরু হয় এবং তরুণ আনোয়ার দ্রুত এর অন্যতম সামরিক নেতা হয়ে উঠেন। সফল বিদ্রোহের মাধ্যমে কমিটি ক্ষমতায় আসে এবং দ্বিতীয় সাংবিধানিক যুগ শুরু হয়। পরবর্তী বছর এ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে পাল্টা অভ্যুত্থান সংঘটিত হলে তা দমন করা হয়। আনোয়ার বে পাল্টা অভ্যুত্থান দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এরপর তাকে বার্লিনে মিলিটারি এটাশে হিসেবে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি জার্মান সামরিক সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহী হন এবং জার্মান অফিসারদের উসমানীয় সেনাবাহিনীর সংস্কারের আমন্ত্রণ জানিয়ে জার্মানি ও উসমানীয় সাম্রাজ্যের মধ্যে সামরিক বন্ধন দৃঢ় করেন।
১৯১১ তে ইতালি উসমানীয় ত্রিপোলিতানিয়া আক্রমণ করে এবং ইতালি-তুর্কি যুদ্ধ শুরু হয়। আনোয়ার প্রতিরক্ষায় অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং বার্লিন থেকে লিবিয়া ফিরে আসেন। সেখানে তিনি পূর্ণ কর্তৃত্ব গ্রহণ করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইতালি লিবিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কনস্টান্টিনোপল ফিরে আসেন। যুদ্ধে তার সক্রিয় ভূমিকার জন্য সে বছর তাকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে উন্নীত করা হয়। তবে পরাজয়ের ফলে কমিটির জনপ্রিয়তা কমে যায় এবং সরকারে লিবারেল ইউনিয়ন পার্টি তাদের স্থলাভিষিক্ত হয়। ১৯১২ এর অক্টোবরে প্রথম বলকান যুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে উসমানীয়রা বলকান লীগের কাছে পরাজিত হয়। এসমস্ত সামরিক পরাজয় সরকারকে দুর্বল করে তোলে এবং আনোয়ারকে ক্ষমতায় আসার সুযোগ দেয়। ১৯১৩ এর অভ্যুত্থানে তরুন তুর্কিরা ক্ষমতা গ্রহণ করে এবং আনোয়ার যুদ্ধ মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। তিনি লন্ডনে চলমান শান্তি আলোচনা ত্যাগ করেন। পুনরায় শুরু হওয়া শত্রুতা সাম্রাজ্যের অবস্থা খারাপের দিকে নিয়ে যায়। দুটি শক্তঘাটি এড্রিয়ানোপল ও ইয়ানিনা যথাক্রমে বুলগেরিয়ান ও গ্রীকদের কাছে পতন হয় এবং লন্ডন চুক্তিতে পরাজয় স্বীকার করতে হয়।
১৯১৩ এর জুন মাসে বলকান মিত্রদের মধ্যে দ্বিতীয় বলকান যুদ্ধ শুরু হয়। আনোয়ার বে পরিস্থিতির সুযোগ নেন এবং পূর্ব থ্রেসে সেনা প্রেরণ করে বুলগেরিয়ানদের কাছ থেকে এড্রিয়ানোপল ছিনিয়ে নেন। এসময় বুলগেরিয়ানরা সার্ব ও গ্রীকদের বিরুদ্ধে তাদের সেনাদের নিয়োজিত করে রেখেছিল। এই সাফল্যের পর আনোয়ার বে পাশা হন এবং তুর্কিরা তাকে "এডির্নের বিজয়ী" অবিহিত করে।
এই রাজনৈতিক ও সামরিক অর্জনের পর তিনি একটি অভ্যুত্থানে সাহায্য করেন। এর মাধ্যমে সাম্রাজ্যে "তিন পাশা" বলে পরিচিত ব্যক্তিত্রয়ের শাসন শুরু হয়। ১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দে সাইদ হালিম পাশার মন্ত্রীসভায় তিনি পুনরায় যুদ্ধ মন্ত্রী হন এবং প্রিন্স সুলায়মানের কন্যা প্রিন্সেস এমিন নাজিয়ে সুলতানকে বিয়ে করেন। এর মাধ্যমে উসমানীয় রাজপরিবারে তার প্রবেশ ঘটে। ইউরোপ যুদ্ধে পূর্ণরূপে প্রবেশের সময় তার ক্ষমতা বৃদ্ধি ঘটে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ
সম্পাদনাআনোয়ার পাশা উসমানীয়-জার্মান মৈত্রীর একজন স্থপতি ছিলেন এবং আশা করেন যে যুদ্ধে দ্রুত বিজয় আসবে যা সাম্রাজ্যের জন্য সহায়ক হবে। মন্ত্রীসভার অন্যান্য সদস্যদের অবিহিত না করে তিনি দুটি জার্মান যুদ্ধ্বজাহাজ এসএমএস গোবেন ও এসএমএস ব্রেসলাউ এডমিরাল উইলহেম সাউচনের নেতৃত্বে দারদানেলিসে প্রবেশের অনুমতি দেন। ফরাসি ও রুশ কূটনৈতিক তৎপরতা সত্ত্বেও নিরপেক্ষ উসমানীয়দের এই কাজটি জার্মানদের পক্ষে কাজ করে। শেষপর্যন্ত যখন এডমিরাল সাউচন, যিনি এসময় উসমানীয় নৌবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ ছিলেন, উক্ত জাহাজদ্বয় নিয়ে কৃষ্ণ সাগরে ওডেসা, সেভাস্টোপল ও থিওডোসিয়ার রুশ বন্দর আক্রমণ করলে পরিস্থিতিতে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌছায়। ২ নভেম্বর রাশিয়া উসমানীয় সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ৫ নভেম্বর ব্রিটেন তাদের অনুসরণ করে। তুর্কি মন্ত্রীসভার অধিকাংশ সদস্য ও সিইউপির নেতারা যুদ্ধে অংশগ্রহণের বিরোধী ছিলেন। কিন্তু আনোয়ার পাশা এটাকে সঠিক বলে ধরে নেন।
১৯১৪ এর ৩১ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হলে আনোয়ার আদেশ দেন সামরিক বয়সের সকল ব্যক্তিকে সেনাসংগ্রহ অফিসে রিপোর্ট করতে হবে। ব্যাপক সংখ্যক লোকের ব্যবস্থা করতে অফিসগুলো অক্ষম ছিল এবং এর ফলে সময় দীর্ঘায়িত হয়। এই ঘটনা সে বছর ফসল উৎপাদনে প্রভাব ফেলে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
যুদ্ধমন্ত্রী
সম্পাদনাআনোয়ার পাশা যুদ্ধমন্ত্রী হিসেবে ব্যর্থ প্রতীয়মান হন। পরবর্তী চার বছর জার্মানরা উসমানীয় সরকারকে সেনানায়কদের মাধ্যমে সমর্থন করে। এদের মধ্যে ছিলেন, অটো লিমান ভন সেন্ডারস, এরিক ভন ফালকেনহায়ন, কোলমার ফ্রেহের ভন ডের গোলটজ ও ফ্রেডরিক ফ্রেহের ক্রেস ভন ক্রেসেনস্টাইন। জার্মানরা উসমানীয়দেরকে সামরিক সরবরাহ, সৈনিক ও জ্বালানি যোগান দেয়।
সেনাবাহিনী ও জনগণের প্রতি আনোয়ার পাশা “চূড়ান্ত বিজয় পর্যন্ত লড়াই” এর বার্তা পাঠান। যুদ্ধের সময় জীবনমান দ্রুত বিপর্যস্ত হয় এবং অসন্তোষ দানা বাধতে থাকে। সিইউপি সরকার গৃহীত অর্থের চাইতেও বেশি খরচ করে এবং যুদ্ধের চার বছর মুদ্রাস্ফীতি ১৬০০% বেড়ে যায়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
সারিকামিশের যুদ্ধ, ১৯১৪
সম্পাদনাআনোয়ার পাশা রুশদের বিরুদ্ধে প্রেরিত ককেসাস অভিযানের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। তিনি রুশদের ঘিরে ফেলে উসমানীয় অঞ্চল থেকে বিতাড়িত করে কারস ও বাতুমি দখন করতে চাইছিলেন। এই অঞ্চল ১৮৭৭-৭৮ এর রুশ-তুর্কি যুদ্ধের সময় হাতছাড়া হয়। আনোয়ার পাশা নিজেকে দক্ষ সামরিক নেতা ভাবলেও অটো লিমান ভন সেন্ডারস তাকে অযোগ্য হিসেবে দেখতেন।[৫] আনোয়ার থার্ড আর্মিকে নিজের ব্যক্তিগত নিয়ন্ত্রণে এনে রুশদের একটি বড় ধরনের হামলার আদেশ দেন। ১৯১৪ এর ডিসেম্বর থেকে ১৯১৫ এর জানুয়ারি পর্যন্ত সংঘটিত সারিকামিশের যুদ্ধে উসমানীয়রা পরাজিত হয়। তার পরিকল্পনা কাগজে কলমে কার্যকর মনে হলেও তিনি বাহ্যিক অবস্থা যেমন ভৌগোলিক পরিবেশ ও আবহাওয়ার মত ব্যাপার আমলে নেননি। ৯০,০০০ সৈনিক সংবলিত আনোয়ারের বাহিনী ১,০০,০০০ সৈনিকের রুশ বাহিনীর কাছে পরাজিত হয় এবং পিছু হটে আসার সময় দশ হাজারের মত তুর্কি সৈনিক মৃত্যুবরণ করে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে এটি ছিল উসমানীয়দের এককভাবে ব্যাপক পরাজয়। হোভান্নেস নামক জনৈক আর্মেনীয় যুদ্ধের সময় তার জীবন রক্ষা করলেও কনস্টান্টিনোপলে ফেরার পর আনোয়ার পাশা তার আর্মেনীয় সৈনিকদের উপর ব্যর্থতার দায়ভার চাপান। পরবর্তীতে তিনি আর্মেনীয়দের নির্বাসনের কাজ শুরু করেন এবং এর ফলে ব্যাপক সংখ্যক আর্মেনীয় নিহত হয়।[৬][৭][৮][৯]
রাজধানীর সেনাদের নেতৃত্ব, ১৯১৫-১৯১৮
সম্পাদনাসারিকামিশের পরাজয়ের পর আনোয়ার পাশা কনস্টান্টিনোপলে ফিরে আসেন এবং রাজধানীর চারপাশের সেনাদের দায়িত্ব নেন। মিত্রপক্ষের আক্রমণ থেকে রাজধানী সুরক্ষিত আছে বলে তিনি নিশ্চিত ছিলেন।[১০] ব্রিটিশ ও ফরাসিরা কনস্টান্টিনোপলের দিকে অগ্রসর হওয়ার পরিকল্পনা করছিল। ১৯১৫ এর ১৮ মার্চ মিত্রশক্তির একটি নৌবহর দারদানেলিসে আক্রমণ করে। এই আক্রমণের ফলে তুর্কিদের অবস্থান দুর্বল করে তোলে। ফলশ্রুতিতে আনোয়ার অটো লিমান ভন সেন্ডারসের উপর দায়িত্ব অর্পণ করেন। তিনি মোস্তফা কামালসহ গেলিপলিতে সফল প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। পরবর্তীতে মিত্রশক্তির বোমাবর্ষণের ফলে উপদ্বীপের অনেক শহর ধ্বংস এবং নারী ও শিশু নিহত হওয়ার পর আনোয়ার সাম্রাজ্যে অবস্থানরত ফরাসি ও ব্রিটিশ নাগরিকদের জন্য কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প স্থাপনের প্রস্তাব করলে আমেরিকান রাষ্ট্রদূত হেনরি মরগেনথু সিনিয়র তাকে এই পদক্ষেপ থেকে বিরত করেন।[১১]
ইলদিরিম
সম্পাদনাআনোয়ার পাশা সম্প্রতি ফ্রেডরিক স্টেনলি মড কর্তৃক দখলকৃত বাগদাদ পুনর্দখলের উদ্দেশ্যে এরিক ভন ফালকেনহায়নের ইলদিরিম আর্মি গ্রুপের জন্য পরিকল্পনা প্রস্তুত করে।
কৌশলগত কারণে এটি প্রায় অসম্ভব ছিল। তুর্কি সেনাবাহিনী স্বাধীনভাবে পালিয়ে যাচ্ছিল এবং ১৯১৭ এর জুন মাসে যখন আনোয়ার পাশা বৈরুত সফর করেন তখন হত্যাকাণ্ডের আশঙ্কায় সেনাদেরকে তার যাত্রাপথের পাশে আসতে নিষেধ করা হয়।[১২]
ইসলামের সেনা
সম্পাদনা১৯১৭ খ্রিষ্টাব্দে রুশ বিপ্লব ও পরবর্তী গৃহযুদ্ধের ফলে রুশ সেনারা ককেসাস থেকে সরে যায়। একই সময় কমিটি অব ইউনিয়ন এন্ড প্রোগ্রেস বলশেভিকদের বন্ধুত্ব অর্জনে সক্ষম হয় এবং ১৯১৮ এর ১ জানুয়ারি উসমানীয়-রুশ মৈত্রী চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। রুশরা ককেসাস থেকে সরে আসার সময় আনোয়ার বিজয়ের ব্যাপারে ভাবেন। আনোয়ার পাশা দক্ষিণ রাশিয়া দখল করে নেয়ার পরিকল্পনা আলোচনা করলে জার্মানরা তাকে বিরত থাকতে বলে। তিনি ইসলামের সেনা নামক নতুন সামরিক বাহিনী গড়ে তোলার নির্দেশ দেন যাতে কোনো জার্মান অফিসার থাকবে না। তার এই বাহিনী জর্জিয়াকে এড়িয়ে যায় এবং আজারবাইজানের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়। প্রাক যুদ্ধ সীমান্তে থার্ড আর্মিও অগ্রসর হয়।
থার্ড আর্মি ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব আর্মেনিয়ার দিকে অগ্রসর হয়। এটি ককেসাসের যুদ্ধক্ষেত্র প্রস্তুত করেছিল। ককেসাস যুদ্ধক্ষেত্রের কমান্ডার জেনারেল টভমাস নাজারবেকিয়ান ও আন্ড্রানিক ওজানিয়ান আর্মেনিয়ার নিয়ন্ত্রণ নেন। ভেহিব পাশা আর্মেনীয়দের পিছু হটতে বাধ্য করেন এবং ট্রাবজোন অধিকার করেন। রুশ সেনারা এখানে বিপুল পরিমাণে রসদ ফেলে যায়। এরপর সেনারা জর্জিয়ার দিকে অগ্রসর হয়।
নুরি পাশার অধীনে আর্মি অব ইসলাম সামনে অগ্রসর হয় এবং বাকুতে জেনারেল লিওনেল চার্লস ডান্সটারভিলের অধীনস্থ অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ব্রিটেন ও কানাডার সেনাদের আক্রমণ করে। দখলের ছয় মাস পর জেনারেল ডান্সটারভিল ১৪ সেপ্টেম্বর শহর খালি করার আদেশ দেন এবং ইরানের দিকে সরে যান। অধিকাংশ আর্মেনীয় জনগণ ব্রিটিশ সেনাদের সাথে পালিয়ে যায়। উসমানীয় ও তাদের আজারবাইজানিয় মিত্ররা বাকুর যুদ্ধের পর ১৫ সেপ্টেম্বর শহরে প্রবেশ করে।
১০ অক্টোবর উসমানীয় সাম্রাজ্য ও গ্রেট ব্রিটেনের মধ্যে মুড্রোসের যুদ্ধবিরতির পর ত্রিপক্ষীয় আতাত বলে পরিচিত জোটের মাধ্যমে উসমানীয় সেনারা প্রতিস্থাপিত হয়। ককেসাসের এই বিজয় সমগ্র যুদ্ধে ক্ষুদ্র হিসেবে বিবেচিত হয়।
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Harp Akademileri Komutanlığı, Harp Akademilerinin 120 Yılı, İstanbul, 1968, p. 46. (তুর্কি)
- ↑ Muammer Kaylan, The Kemalists: Islamic Revival and the Fate of Secular Turkey, (Prometheus Books, 2005), 75.
- ↑ Handan Nezir Akmese, The Birth of Modern Turkey: The Ottoman Military and the March to WWI, (I.B. Tauris, 2005), 44.
- ↑ Mark Mazower, Salonica, City of Ghosts: Christians, Muslims and Jews 1430-1950, (HarperCollins, 2004), 255.
- ↑ Fromkin, David (২০০১)। A Peace to End All Peace: The Fall of the Ottoman Empire and the Creation of the Modern Middle East। New York: H. Holt। পৃষ্ঠা 119। আইএসবিএন 0-8050-6884-8।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Palmer-Fernandez, Gabriel. Encyclopedia of Religion and War, p. 139. Published 2003, Taylor & Francis. আইএসবিএন ০-৪১৫-৯৪২৪৬-২
- ↑ Tucker, Spencer. "World War I", p. 394. Published 2005, ABC-CLIO. আইএসবিএন ১-৮৫১০৯-৪২০-২
- ↑ Balakian, Peter. The Burning Tigris, p. 184. Published 2003, HarperCollins. আইএসবিএন ০-০৬-০১৯৮৪০-০.
- ↑ Akcam, Taner. A Shameful Act, p. 143. Published 2006, Henry Holt & Co. আইএসবিএন ০-৮০৫০-৭৯৩২-৭.
- ↑ Moorehead, Alan. "Gallipoli", p.79. Published 1997, Wordsworth Editions. আইএসবিএন ১-৮৫৩২৬-৬৭৫-২
- ↑ Moorehead, Alan. "Gallipoli", p.166-168. Published 1997, Wordsworth Editions. আইএসবিএন ১-৮৫৩২৬-৬৭৫-২
- ↑ Woodward, 1998, pp160-1
দেখুন
সম্পাদনা- Fromkin, David (1989). A Peace to End All Peace, Avon Books.
- Woodward, David R "Field Marshal Sir William Robertson", Westport Connecticut & London: Praeger, 1998, আইএসবিএন ০-২৭৫-৯৫৪২২-৬
External links
সম্পাদনা- Enver's biography
- Enver Pasha in 1911 Britannica
- Enver's declaration at the Baku Congress of the Peoples of the East 1920
- Interview with Enver Pasha by Henry Morgenthau - American Ambassador to Istanbul 1915
- Biography of Enver Pasha at Turkey in the First World War website