হোরিয়া মোসাদিক একজন আফগান মানবাধিকার কর্মী, রাজনৈতিক বিশ্লেষকসাংবাদিক। একজন সক্রিয়তাবাদী ব্যক্তি ও সাংবাদিক হিসেবে তার কাজের জন্য তিনি ব্যক্তিগত হুমকির মোকাবিলা করেছেন। মোসাদিক বর্তমানে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের জন্য কাজ করেন।

মোসাদিক ২০১৪ সালে।
"ধর্মীয় মৌলবাদ এবং আফগানিস্তানে নারী ও মেয়েদের উপর তার প্রভাব" সম্পর্কে হোরিয়া মোসাদিক।

১৯৭৯ সালে সোভিয়েতরা যখন আফগানিস্তানে আক্রমণ চালায় তখন মোসাদিক একজন শিশু ছিলেন.[] মোজাদিক ১৯৯২ সালে কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা অধ্যয়ন শুরু করেন।[] নাজিবুল্লাহর সরকার উৎখাত হওয়ার পরপরই তিনি কলেজে যাওয়া বন্ধ করতে বাধ্য হন এবং আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যান।[] ১৯৯৫ সালে তিনি এবং তার পরিবার পাকিস্তানে আশ্রয় চেয়েছিলেন, যেখানে তিনি ইউনাইটেড প্রেস ইন্টারন্যাশনালের সাংবাদিক হিসাবে ইসলামাবাদে কাজ করেছিলেন।[] মোসাদিক শেষ পর্যন্ত বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ে জনসংযোগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।[]

২০০২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রব্রিটেন, আফগানিস্তানে হামলা করার পর, তিনি তার দেশে ফিরে আসেন এবং কাবুলের অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের জন্য কাজ শুরু করেন, যা কেবলমাত্র ২০০৩ সাল পর্যন্ত খোলা ছিল।[] তারপরে, তিনি বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থায় বিভিন্ন রকম কাজ করেছেন।[] ২০০৪ সালে নিউজউইকের জন্য তিনি রাজনৈতিক ভাষ্য প্রদানও করেছিলেন।[]

মোসাদিকের সক্রিয়তা যারা পছন্দ করতেন না, তাদের কাছ থেকে তিনি হুমকি পেতে শুরু করেছিলেন। ২০০৮ সালে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাকে সপরিবারে লন্ডনে চলে যেতে সাহায্য করেছিল, যেখানে তিনি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার অধীনে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের জন্য কাজ শুরু করেছিলেন।[] তার স্বামীকে গুলি করা হয়েছিল এবং তার মেয়ের মুখে ধারালো অস্ত্রের আঘাত করা হয়েছিল।[] মোসাদিক বলছেন, "যতক্ষণ হুমকিগুলো আমার প্রতি নির্দেশিত হয়েছিল, আমি পরোয়া করি নি কারণ আপনি যখন সিদ্ধান্ত নেবেন যে আপনি কি করতে চলেছেন, তখন আপনি বিপদের বিষয়ে সর্বদা সচেতন থাকবেন। কিন্তু যখন আমার পরিবারের বিরুদ্ধে সব আক্রমণ করা হয়েছে, তখন এটি দেখা বেশ বেদনাদায়ক হয় যে আপনার পরিবার আপনার কর্মের জন্য মূল্য দিচ্ছে।"[]

মোসাদিক বর্তমানে আফগানিস্তান গবেষক হিসেবে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের জন্য কাজ করেন।[] ২০০৮ সালে প্রথম, তিনি এই পদে তাদের জন্য কাজ শুরু করেন।[] অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সদস্য হিসেবে তিনি প্রায়ই লন্ডন থেকে কাবুল যাতায়াত করেন।[] মোসাদিক এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনের জন্য গবেষণা প্রদান করেছিলেন, "ফিলিং ওয়ার, ফাইন্ডিং মিসারী: আফগানিস্তানে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হওয়ার দুর্দশা।"[] তিনি একটি সাক্ষাৎকারে সিএনএন নিউজকেও জানিয়েছিলেন যে, ২০০২ সাল থেকে আফগানিস্তানে মানবাধিকারের উন্নতি খুব ধীরে ধীরে ঘটেছে, এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, সময়ের সাথে সাথে কিছু অগ্রগতি দেখেছে।[]

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Women's in Afghanistan: The Back Story"Amnesty International UK। ২৫ অক্টোবর ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  2. Kappala-Ramsamy, Gemma (১ এপ্রিল ২০১১)। "Amnesty Activists: Meet the People on the Human Rights Frontline"The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  3. "Horia Mosadiq: 'He Said He Would Kill Me If He Ever Saw Me Going to School Again'"The Huffington Post। ২৪ মার্চ ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  4. Moreau, Ron; Yousafzai, Sami (১১ অক্টোবর ২০০৪)। "'Living Dead' No More": 37। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  5. Masami, Ito (১২ জুলাই ২০১২)। "Weak Afghans Need Rights: Activist"Japan Times। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ – Newspaper Source - EBSCOhost-এর মাধ্যমে। 
  6. Latifi, Ali M. (১৪ মে ২০১৫)। "American, 8 Other Foreigners Among 14 Killed in Attack on Kabul Guesthouse"Los Angeles Times। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  7. Mansel, Tim (২০০৮)। "Afghan civil society activist Horia Mosadiq in Bamyan, Afghanistan."UNESCO। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  8. Bhalla, Nita (২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২)। "Afghans Flee War to Face Hunger, Disease in Slums: Amnesty"Reuters। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 
  9. Almond, Kyle (৬ অক্টোবর ২০১১)। "5 Voices: What is Needed for Success in Afghanistan?"CNN। সংগ্রহের তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা