কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে অবস্থিত একটি বিশ্ববিদ্যালয়

কাবুল বিশ্ববিদ্যালয় (কেউ) (পশতু دکابل پوهنتون Da Kābul Pohantūn / দারী پوهنتون کابل Pohantūn-e Kābul) আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে অবস্থিত একটি বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৩১ সালে মোহাম্মদ নাদির শাহের শাসনামলে নির্মাণ করা হয় এবং পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মাদ হাশিম খানের নেতৃত্বে এটি সুদুরপ্রসারী হয়।

কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়
(পশতু) دکابل پوهنتون Da Kābul Pohantūn
(দারী) پوهنتون کابل Pohantūn-e Kābul
লাতিন: Universitas Cabulensis
নীতিবাক্যআফগানিস্তানে শ্রেষ্ঠত্বের পরিষেবা
স্থাপিত১৯৩২ (৯২ বছর আগে) (1932)
আচার্যঅধ্যাপক হামিদুল্লাহ ফারুকী
উপাচার্যঅধ্যাপক রাইহানা পপলজাই[একাডেমিক বিষয়াবলী]
অধ্যাপক মোহাম্মদ হাদি হায়দাতী[প্রশাসনিক বিষয়াবলী]
অধ্যাপক আবদুর রাওফ গোহরি [শিক্ষার্থী বিষয়ক]
অবস্থান,
পোশাকের রঙকাল, লাল এবং সবুজ    
ওয়েবসাইটwww.ku.edu.af
মানচিত্র

বিশ্ববিদ্যালয় এখনও পর্যন্ত যুদ্ধ পরবর্তী দীর্ঘকালীন সময়ে পুনরুদ্ধার করা চেষ্টা করছে। কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২৫,০০ এর শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে অধ্যয়ন করে থাকে যার মধ্যে থেকে প্রায় ৪০% এর উপরে মহিলা রয়েছেন। পুরনো ভবনটি থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরত্বে অবস্থিত প্রধান ভবনটি সংস্কার করা হয়েছিল যার প্রায় একই ধরনের নকশা দ্বারা অঙ্গন করা হয়।

কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য হচ্ছে মূলতঃ শিক্ষার পাশাপাশি গবেষণা, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান হিসাবে তৈরী করা এবং সমৃদ্ধিময় অংশীদারদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধ একটি সম্প্রদায় ও উদ্ভাবনী চিন্তার অনুশীলনের একটি বিশেষ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা।

ইতিহাস

সম্পাদনা
 
Biology class during the late 1950s or early 1960s.

কাবুল বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৩১ সালে মোহাম্মদ নাদির শাহ সরকারের শাসনামল চলাকালে নির্মাণ করা হয় এবং পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মাদ হাশিম খানের নেতৃত্বে এটিকে সুদুরপ্রসারী করে গড়ে তোলা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি উদ্বোধনের ১ বছর পর থেকে দেশটির ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষা কার্যক্রমের দ্বার উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এটি ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের সাথে অংশীদারত্বমূলক কাজের মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছে।[]

পুনর্নির্মাণ

সম্পাদনা
 
Zalmay Khalilzad & Ashraf Ghani in University Library 2005

২০০১ সালের শেষের দিকে তালিবান সরকারকে অপসারণের পরে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আফগানিস্তানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির পুনর্নির্মাণের উপর দৃষ্টিপাত করে। ২০০৪ সালের জানুয়ারী ক্যাম্পাসে মাত্র ২৪ টি কম্পিউটার ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়টি পুনরুদ্ধারের অংশ হিসাবে চারটি বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সাথে অংশীদারত্বমূলতকভাবে কাজ করে যাচ্চে, যেমন: পারডু বিশ্ববিদ্যালয় এবং আরিজোনা বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থী ২২,৭১৭ থেকে ২০০৮ সালে ৫৬,৪৫১ জন পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। ২০০৮ সাল নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ৯,৬৬০ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে যার ২৩৩৬ জন (২৪%) নারী শিক্ষার্থী ছিলেন।

নীতি গবেষণা জাতীয় কেন্দ্র

সম্পাদনা

উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাশনাল সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চ ও ২০০৩ সালে কনরাড অ্যাডেনউর ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত করা হয় এবং আইন এবং পরবর্তীতে রাজনীতি, অর্থনীতি এবং সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগে অনুষদগুলি অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[][]

গঠনপ্রণালী

সম্পাদনা
  • পরিবেশ বিজ্ঞান অনুষদের জন্য তিনটি বিভাগ রয়েছে: পরিবেশ সুরক্ষা বিভাগ, প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ।
  • আইন ও রাজনৈতিক বিজ্ঞান অনুষদে দুটি বিভাগ রয়েছে: আইন ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ, রাজনৈতিক বিজ্ঞান বিভাগ।
  • কম্পিউটার বিজ্ঞান অনুষদ তিনটি বিভাগ রয়েছে: তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ, তথ্য সিস্টেম বিভাগ এবং সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ।
  • অর্থনৈতিক অনুষদের চারটি বিভাগ রয়েছে: পরিসংখ্যান বিভাগ, অর্থ বিভাগ, ব্যবসায় প্রশাসন ও অর্থনীতি বিভাগ।
  • বিজ্ঞান অনুষদের চারটি বিভাগ রয়েছে: জীববিদ্যা বিভাগ, রসায়ন বিভাগ, গণিত বিভাগ এবং পদার্থবিদ্যা বিভাগ।
  • প্রকৌশল অনুষদের জন্য পাঁচটি বিভাগ রয়েছে: স্থাপত্য বিভাগ, সিভিল বিভাগ, মেকানিক্যাল বিভাগ, বৈদ্যুতিক প্রকৌশল এবং শক্তি প্রকৌশল বিভাগ। আনুমানিক ৬০০ জন শিক্ষার্থী একান থাকে শিক্ষা লাভ করছে।
  • ফার্মেসির অনুষদে পাঁচটি বিভাগ রয়েছে: ফার্মাকোলজি বিভাগ, ফার্মাকোলজি বিভাগ, ফার্মাসিউটিকাল কেমিসরি বিভাগ, ফার্মাসিউটিক্স বিভাগ এবং জৈব রসায়ন ও খাদ্য বিশ্লেষণ বিভাগ। এখানে সাত ল্যাবরেটরিজ আছে। আনুমানিক ৪০০ জন শিক্ষার্থী এখানে ক্লাস গ্রহণ করে থাকেন।
  • কৃষি অনুষদের জন্য ছয়টি বিভাগ রয়েছে: কৃষি অর্থনীতি বিভাগ, কৃষিবিদ্যা বিভাগ, পশু বিজ্ঞান বিভাগ, বন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ বিভাগ, উদ্যানবিদ্যা বিভাগ এবং উদ্ভিদ সুরক্ষা বিভাগ।
  • পশুচিকিৎসা বিজ্ঞান অনুষদের জন্য পাঁচটি বিভাগ রয়েছে: প্যারাক্লিনিক বিভাগ, প্রিলেক্লিক বিভাগ, ক্লিনিক বিভাগ, পশুপালন বিভাগ এবং খাদ্য স্বাস্থ্যবিধি বিভাগ।
  • সাংবাদিকতা অনুষদের জন্য দুটি বিভাগ রয়েছে: রেডিও এবং টেলিভিশন বিভাগ এবং প্রিন্টিং প্রেস বিভাগ।
  • ২০১০ সালে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানের আর্থিক সহায়তায় প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে আল্লামা ইকবাল ফকাল্টি অব আর্টস বিভাগটি নির্মানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই ভবনটিতে ২৪টি শ্রেণীক্ষেত্র রয়েছে, দুটি সেমিনার হল, একটি গ্রন্থাগার, দুটি কম্পিউটার ল্যাব, ২০টি ফ্যাকাল্টি অফিস রয়েছে। এটি ১,৪৩,৩৭৯ বর্গফুট (১৩,৩২০.৩ মি) এলাকা জুড়ে অবস্থান করছে। ২০১০ সালের জুলাইয়ে আফগান ও পাকিস্তানি কর্মকর্তাগণ এই ভবনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

গ্রন্থাগার

সম্পাদনা

১৯৯২ সালে লাইব্রেরীতে ২০০,০০০ গ্রন্থ রাখা হয়েছিল, ৫০০০ পাণ্ডুলিপি, ৩,০০০ বিরল বই, সাময়িকী, ফটোগ্রাফ এবং কালিগল্পিক নমুনা সংরক্ষিত ছিল। গৃহযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে, বেশিরভাগ উপকরণ বইয়ের বাজারে বিক্রি করে দেওয়া হয়, কিছু পুড়ে যায় বা নষ্ট হয়ে যায় অথবা হারিয়ে গিয়েছিল।[] দীর্ঘদিন যাবত আফগানিস্তানের জাতীয় গ্রন্থাগার হিসাবে এটি অবদান রেখে আসছে।

উল্লেখযোগ্য প্রাক্তন শিক্ষার্থী

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "Tunes of hope at Kabul University"BBC News। ৬ ডিসেম্বর ২০০১। 
  2. "Activities of Policy Research National Center of Kabul University," Kabul University website ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২২ অক্টোবর ২০১২ তারিখে (accessed 2 January 2013)
  3. National Centre for Policy Research website ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে (accessed 2 January 2013)
  4. "The Situation of Kabul University Library: Its Past and Present"। ৫ নভেম্বর ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০১৭ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা


টেমপ্লেট:Afghan universities