সৈয়দ আবুল হোসেন
সৈয়দ আবুল হোসেন (১ আগস্ট ১৯৫১ – ২৫ অক্টোবর ২০২৩) একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ী ছিলেন।[১]
সৈয়দ আবুল হোসেন | |
---|---|
বাংলাদেশের যোগাযোগ মন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ৬ জানুয়ারি ২০০৯ – ৫ ডিসেম্বর ২০১১ | |
পূর্বসূরী | নাজমুল হুদা |
উত্তরসূরী | ওবায়দুল কাদের |
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ৫ ডিসেম্বর ২০১১ – ২৩ জুলাই ২০১২ | |
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ২৫ জুন ১৯৯৬ – ১৬ আগস্ট ১৯৯৭ | |
পূর্বসূরী | কবির হোসেন |
উত্তরসূরী | মোফাজ্জল হোসেন মায়া |
মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ – ২৪ নভেম্বর ১৯৯৫ | |
পূর্বসূরী | শেখ শহীদুল ইসলাম |
উত্তরসূরী | গনেশ চন্দ্র হালদার |
কাজের মেয়াদ ১২ জুন ১৯৯৬ – ৫ জানুয়ারি ২০১৪ | |
পূর্বসূরী | গনেশ চন্দ্র হালদার |
উত্তরসূরী | বাহাউদ্দিন নাছিম |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | মাদারীপুর, পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) | ১ আগস্ট ১৯৫১
মৃত্যু | ২৫ অক্টোবর ২০২৩ ইউনাইটেড হাসপাতাল, ঢাকা, বাংলাদেশ | (বয়স ৭২)
সমাধিস্থল | এনায়েতপুর দরবার শরিফ কবরস্থান সিরাজগঞ্জ জেলা |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
দাম্পত্য সঙ্গী | খাজা নার্গিস হোসেন |
সন্তান | সৈয়দা রুবাইয়াত হোসেন সৈয়দা ইফফাত হোসেন |
শিক্ষা | ব্যবস্থাপনায় স্নাতকোত্তর (১৯৭৪), স্নাতক (সম্মান) ব্যবস্থাপনা (১৯৭২) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
তিনি শেখ হাসিনার প্রথম মন্ত্রিসভায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[২] শেখ হাসিনার দ্বিতীয় মন্ত্রিসভায় তিনি প্রথমে বাংলাদেশের যোগাযোগ মন্ত্রী এবং পরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।[৩]
তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে মাদারীপুর-৩ আসনে মোট চার মেয়াদে সংসদ সদস্য ছিলেন।[৪][৫][৬][৭]
প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাসৈয়দ আবুল হোসেন ১৯৫১ সালের ১ অক্টোবর মাদারীপুরের ডাসার গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম সৈয়দ আতাহার আলী এবং মাতার নাম সৈয়দা সুফিয়া আলী।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে ১৯৭২ সালে স্নাতক এবং ১৯৭৮ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
আবুল হোসেন ১৯৭৯ সালের সেপ্টেম্বরে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরের দরবার শরিফের পীর খাজা কামাল উদ্দিনের মেয়ে খাজা নার্গিস হোসেনকে বিয়ে করেন। এই দম্পতীর দুই মেয়ে সৈয়দা রুবাইয়াত হোসেন ও সৈয়দা ইফফাত হোসেন।[৮]
কর্মজীবন
সম্পাদনাসৈয়দ আবুল হোসেন পড়াশোনা শেষ করার পর সরকারী চাকরিতে যোগদান করেন এবং পরবর্তীকালে ব্যবসায় শুরু করেন। তিনি ১৯৭৫ সালে সাহকো ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড এবং সাহকো এনজিও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি এশিয়ার বোয়াও ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন, যা ২০০১ সালে চিনের হাইনান প্রদেশে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।
রাজনৈতিক জীবন
সম্পাদনাসৈয়দ আবুল হোসেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মাদারীপুর-৩ থেকে প্রথম বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৪]
তিনি ১২ জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম, ২০০১ সালের অষ্টম ও ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মাদারীপুর-৩ থেকে পরপর আরও ৩বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।[৫][৬][৭]
তিনি শেখ হাসিনার প্রথম মন্ত্রিসভায় ২৫ জুন ১৯৯৬ থেকে ১৬ আগস্ট ১৯৯৭ পর্যন্ত স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[২]
শেখ হাসিনার দ্বিতীয় মন্ত্রিসভায় তিনি ৬ জানুয়ারি ২০০৯ থেকে ৫ ডিসেম্বর ২০১১ পর্যন্ত বাংলাদেশের যোগাযোগ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে পরে ৫ ডিসেম্বর ২০১১ থেকে ২৩ জুলাই ২০১২ পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।[৩]
পদ্মা সেতু দুর্নীতি কেলেঙ্কারি ও নির্দোষ প্রমাণ
সম্পাদনা২০১২ সালে বিশ্বব্যাংক অভিযোগ করেছিল যে পদ্মা সেতু গ্রাফট কেলেঙ্কারিতে সৈয়দ আবুল হোসেন একজন ষড়যন্ত্রকারী হিসাবে অভিযুক্ত ছিলেন। [৯] তিনি বাংলাদেশের যোগাযোগমন্ত্রী হিসাবে নিজের অবস্থানের অপব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ২৩ শে জুলাই ২০১২ তিনি মন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেন। [১০] ২০১৪ সালে বাংলাদেশি আদালত এবং দুর্নীতি দমন কমিশন তাকে খালাস দিয়েছিল। [১১][১২]
বিচারক আয়ান নর্ডহিমারের সন্ধানে রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশদের তাদের প্রাথমিক ওয়্যারট্যাপটি ন্যায়সঙ্গত করার পক্ষে পর্যাপ্ত প্রমাণ নেই বলে [১১] যদিও কানাডার নিম্ন আদালত হুসেনকে ইতিমধ্যে খালাস দিয়েছিল বলে ২০১৩ সালে কানাডার মামলাটি বাতিল করা হয়েছিল। [১৩][১৪]
মৃত্যু
সম্পাদনাসৈয়দ আবুল হোসেন ২৫ অক্টোবর ২০২৩ মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে ইউনাইটেড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।[১৫] সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরের দরবার শরিফের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।[১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "সিরাজগঞ্জে দরবার শরিফ প্রাঙ্গণে সৈয়দ আবুল হোসেনের দাফন সম্পন্ন"। দৈনিক প্রথম আলো। ২৭ অক্টোবর ২০২৩। ২৯ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০২৩।
- ↑ ক খ "মাননীয় প্রতিমন্ত্রীগণের নাম ও কার্যকাল, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ"। বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন। ২৯ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ অক্টোবর ২০২৩।
- ↑ ক খ "প্রাক্তন মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী/উপদেষ্টাগণ"। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। ৩ অক্টোবর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০২০।
- ↑ ক খ "৫ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ ক খ "৭ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ ক খ "৮ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ ক খ "৯ম জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা"। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ২০১৬-১১-২৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৯-১৩।
- ↑ "Personal Biography"। ২৫ নভেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ Khan, Sharier; Azad, M Abul Kalam (১১ জুলাই ২০১৪)। "Failed company to get $0.78b Padma job"। The Daily Star।
- ↑ "Zillur accepts Abul Hossain's resignation"। bdnews24। ২৩ আগস্ট ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২৫ অক্টোবর ২০১৫।
- ↑ ক খ "Acquittal sparks call for apology"। The Daily Star (ইংরেজি ভাষায়)। ২০১৭-০২-১২। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০২-০৫।
- ↑ "Abul Hossain: Allegations against me were complete lies | Dhaka Tribune"। www.dhakatribune.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০২-০৫।
- ↑ "Court throws out Padma Bridge case | Dhaka Tribune"। www.dhakatribune.com (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০১৮-০২-০৫।
- ↑ "পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরু"। বাংলা ট্রিবিউন। ২০২২-০৬-২৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২৫।
- ↑ "সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন মারা গেছেন"। দৈনিক ইত্তেফাক। সংগ্রহের তারিখ ২০২৩-১০-২৫।